একটি শেষ বিকেলের গল্প

একটি শেষ বিকেলের গল্প

রেস্টুরেন্টে একা একটা বাচ্চা ছেলেকে একটা মেয়ে মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে ব্যাপারটা বেস কৌতুহলি হয়ে লক্ষ করছে সবাই। হয়তো সবাই ভাবছে রাস্তার একটা টোকাই ছেলেকে একটা মেয়ে কিভাবে রেস্টুরেন্টে নিয়ে এসে খাওয়াতে পারে। তাও আবার নিজ হাতে। সবার চোখে মুখে যখন বিস্ময় কাজ করতেছে ঠিক অপরদিকে হিয়ামের মুখে হাসি। হিয়াম এই রেস্টুরেন্টের মালিকের ছেলে। বিদেশে গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করে দেশে এসেছে। বাবার অবর্তমানে কিছুদিন হলো রেস্টুরেন্টের দেখাশোনা করছে। যেদিন থেকে হিয়াম রেস্টুরেন্টের দেখাশোনার দায়িত্বে আছে সেদিন থেকে ও মেয়েটিকে লক্ষ করছে। প্রথমদিকে খুব অবাক হতো। আস্তে আস্তে সেটা ভালো লাগায় পরিনিত হয়েছে।

মেয়েটির নাম কণা, কণা ইসলাম ইসমাম। এই শহুরে নতুন। আর সে অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ে। বাবার চাকরি বদলির কারনে এই শহুরে আসা। তবে কণা মেয়ে হিসেবে যথেষ্ট ভালো। রেস্টুরেন্টের বিল মিটাতে কণা হিয়ামের দিকে এগিয়ে যায়। বলল….

–বিল কত হয়েছে..?

হিয়াম তাকিয়ে আছে কণার দিকে। কণা তার ভ্যানিটিব্যাগ থেকে মাথা নিচু টাকা বের করছে। টাকা বের করে হিয়ামের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল….

–বিল কত হয়েছে বললেন নাতো?

হিয়াম কিছুটা আমতা আমতা করে বলল….

-আপনার বিলতো ঐ প্রতিদিন একই, ১৪০ টাকা দিন।

টাকা মিটিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে যায় কণা। হিয়াম সেদিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

‘হিয়াম ভাই আপুর সাথে আপনাকে দারুণ মানাবে কিন্তু।’

আচমকা রেস্টুরেন্টে একটা ছেলে কণ্ঠ শুনে তাকায় হিয়াম। দেখে এলাকার এক ছোট ভাই কথাটি বলল। হিয়াম কিছুটা লজ্জা পেলো। পরক্ষনেই বলল….

–ধুর পাগল তেমন কিছুনা।

-বুঝি হিয়াম ভাই সবই বুঝি, হি হি হি…

–উফফফ যাতো।

-আচ্ছা যাচ্ছি, লজ্জা পেতে হবেনা।

–তুই যাবি নাকি….

কথা শেষ না হতেই ছেলেটি হাসতে হাসতে চলে গেলো। লজ্জা ভাবটা এখনো কাটেনি হিয়ামের। কি মনে করে যেন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গেলো হিয়াম। যাওয়ার আগে একজনকে দায়িত্বটা দিয়ে গেলো। বের হয়ে আশেপাশে দেখলো কণা আছে কিনা। কিছুদূর যেতেই দেখলো কণা হেঁটে হেঁটে কই যেন যাচ্ছে। হিয়াম কণার কাছে যায়। পিছন থেকে গলা খাকরি দিয়ে ডাক দেয়….

–শুনছেন?

কণা পিছন ফিরে তাকায়, বলে….

-আমাকে বলছেন?

–হ্যা আপনাকে।

-জি বলুন?

–হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি?

কণা কি যেন ভাবলো। আবার মুখে কিঞ্চিত হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বলল….

–চলুন।

-কি দিয়ে শুরু করব বুঝতে পারছিনা। উমম…আচ্ছা আপনার নামটা জানতে পারি?

–সবাই কণা বলেই ডাকে, এই শহুরে নতুন। কিছুদিন হলো এসেছি।

-আর স্টাডি?

–অনার্স তৃতীয় বর্ষ।

-আচ্ছা গুড আর আমি হচ্ছি….

–হিয়াম আহমেদ। বাবার মায়ের একমাত্র ছেলে। বিদেশ থেকে গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করে দেশে এসেছেন। এখন বাবার অবর্তমানে রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করছেন তাইতো?

এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে ফেলে কণা। হিয়াম থমকে দাঁড়ায়। অবাক হয়ে বলে….

-আপনি এতসব জানেন কি করে? হাউ ইট পসিবল?

–হুম সেটাই, আমি আপনার সাহেদ আংকেলের মেয়ে।

-সাহেদ আংকেল সাহেদ আংকেল…উমম ও তারমানে আপনি আমাদের পাশের বাসার ভারাটিয়া সাহেদ আংকেলের মেয়ে?

–জি।

-সরি মিস্টেক।

–আরে না সরি বলার কিছু নেই।

-হুম, বাট আপনি আমাকে চিনেন অথচ প্রতিবেশী হিসেবে আমি চিনলাম না ব্যাপারটা কি ভালো দেখায়?

–খারাপো না, চিনবেন কি করে। আশেপাশে তো খেয়াল করেননা। সকালে ঘুম থেকে ওঠেন ১০ টায়। বাসায় ফেরেন রাত ২ দুটায়।

-মানে?

–আব্বুর সাথে আপনাদের বাসায়য় গিয়েছিলাম। আংকেল সব বলেছে।

-আমাকে তো তেমন কিছুই বলেনি।

–বলার সময় পাবে কখন?

-তাও ঠিক। এখন কোথায় যাবেন?

–বাসায় যাব, আপনিতো আবার রাত দুটোয় যাবেন রাইট?

হিয়াম হাসলো, মাথা চুলকিয়ে বলল….

–উহু…আমিও বাসায় যাব।

কণা চোখ বড়বড় করে তাকালো। মুচকি হেসে বলল….

-সত্যি নাকি মজা করছেন?

–এটা কি মজা করার মতন কথা?

-হতেও পারে।

–না বাসায় যাব?

-কেনো?

–আজ থেকে আশেপাশের সব খেয়াল করব।

-আর রেস্টুরেন্ট?

-সেটা অন্য কেউ দেখবে।

-আপনারর কথা গুলো বেশ গোছানো, কিন্তু মানুষটা আংশিক অগোছালো।

–কিভাবে?

-সেটা আপনার রুমে গিয়েই বুঝতে পারছিলাম।

–ঐযে, সকাল ১০ টা আসি ২ টায় যাই। মা-য়ই সব করে।

-নিজে করার চেষ্টা করবেন এখন থেকে। আন্টি বয়স্ক মানুষ। আর একটা কথা বলব? খুব হাসি পাচ্ছে কিন্তু।

–বলুন শুনি?

-আপনি নাকি কাপড়-চোপর ধোয়ার আলসিতে পারফিউম মেরে চলেন?

–এই এটা কিন্তু একদম বাড়াবাড়ি… আমি অগোছালো বাট অতটা অমন না।

-হি হি হি…তাহলে আন্টি যে বলল?

–আমি মোটেও অমননা যে পারফিউম মেরে চলাবো।

-উহু চলেন।

–মা… মা… মানে..?

হিয়ামের মুখের অবস্থা দেখে কণা হাসছে। শব্দ করেই হাসছে। সামান্য কথা নিয়ে ছেলেটা কত সিরিয়াস হয়ে পরেছে। কণা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতন অবস্থা। হিয়াম বলল….

–হাসুন হাসুন, আমাকে ফাঁদে ফেলে হাসা হচ্ছে এখন।

-ওরে আল্লাহগো আমি শেষ হাসতে হাসতে। আরে আপনিনা, সরি মজা করছিলাম।

–কিইইইই…?

-হুম মজা করছিলাম।

বলেই হেসে দেয় কণা। নিজের কর্মকাণ্ডে নিজেই লজ্জা পায় হিয়াম। আবার বলল….

–সত্যিই কি মজা ছিলো? নাকি….

-আরে সত্যি পাগল।

–আমি পাগল?

-হা হা হা বাদ দিনতো। আমার পেট শেষ, মাগো…

–পেটতো খারাপ তো হবেই, একজনের ইজ্জত পাঞ্চার করতে চাইছেন যে।

-উফফফ আর হাসায়েননাতো…আমি সরি।

–ইটস ওকে….

দুজনেই বাসার কাছে চলে এসেছে। বিনিময় করে দুজনা চলে যাওয়া শুরু করে। কণা হাসতে হাসতে চলে যায়। হিয়াম বাসায় চলে আসে। দৌড়ে মায়ের কাছে চলে যায়, বলে….

–আচ্ছা মা সত্যি করে বলোতো, তুমি কণাকে কি বলেছো?

-পাশের ভাড়াটিয়ার মেয়ে কণা?

–হ্যাঁ, ওকে কি বলেছো?

-কই কিছুনা তো, তবে জানিস মেয়েটা খুব ভালো। কথার কথায় হাসে। খুব মিষ্টি একটা মেয়ে।

–ও যে বলল, তুমি বলছো আমি নাকি কাপর চোপড় ধোয়ার আলসিতে পারফিউম মেরে চলি?

-আরে সে হয়তো মজা করছে। আর তুই ওকে চিনিস কিভাবে?

–আজকেই পরিচয় হলো।

-পছন্দ করিস নাকি? (মুচকি হেসে)

–এখানে পছন্দের কথা আসলো কিভাবে?

-হতেও পারে, হলে বলিস আমরা কথা বলবো।

–তুমি না….

বলেই নিজের রুমে চলে গেলো হিয়াম। এক এক করে সব শার্ট, টি-শার্ট দেখলো, না সব ঠিক আছে। তেমন গন্ধ নেই, আর কণা মজা করলো।

রাত ১০ টা। কবিতা লেখার চেষ্টা করছে হিয়াম, পারছেনা। বারবার কণার সেই হাসি মুখের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠছে চোখের সামনে। একটু পর অপরিচিত এক নাম্বার থেকে কল আসল হিয়ামের ফোনে। ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলতেই অপরপাশ থেকে মিষ্টি কণ্ঠে বলে…..

-কবিতা লিখছিলেন বুঝি?

–কণা? নাম্বার পেলেন কোথায়?

-আপনার ডায়রিতে পেয়েছি। সব কবিতা পড়া শেষ।

–তারমানে আমার ঘর তল্লাশি করা শেষ?

-হুম, তিনদিন থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে এসব করছি হি হি হি…

–ওরে চুন্নি।

-ঐ খবরদার একদম চুন্নি বলবেন না। হুউউউ….

–আচ্ছা।

-কবিতা লিখছেন?

–চেষ্টা করছি, পারছিনা। কেউ একজন বড্ড জ্বালাতন করছে।

-কে সে, ধরে বেধে রাখুন।

–তাকে তো বাধা যায়না, মনের ছোট ঘরে ঠাই দেওয়া যায়।

কণার বুকটা আচমকাই মোচর দিয়ে উঠলো। কেনো, সে জানেনা। বলল….

–কে সে বলুননা?

-আপনি।

–মানে?

-বাদ দিন মজা করছিলাম।

–কালকে ফ্রি আছেন?

-হুম কয়েকদিন চারপাশ খেয়াল করব।

–আমাকে সাথে নিবেন?

-হুম নিব।

–আচ্ছা রাখি, আম্মু ডাকছে।

বলেই ফোন কেটে দিলো কণা। আর হিয়াম অবাক হয়ে আছে। কণা ওকে ফোন করবে এটা কল্পনাও করতে পারেনি। আবার ওর কবিতাও নাকি পড়ে। ইন্টারেস্টিং!

কণার গায়ে শাড়ি। হিয়ামের সাথে ঘুরতে বের হবে। অবশ্য শাড়িটা হিয়ামের জন্যই পড়া। কারন গতকাল রাতে যখন হিয়াম মাইডেতে পোস্ট করছিলো…’যে মেয়ে শাড়ি পরতে পারে, তারসাথে লক্ষ মাইল হাটতেও আমার কোন আপত্তি নেই।’ হিয়াম বাসা থেকে বের হয়ে কণাকে দেখে থমকে যায়। বুকটা ধুক করে উঠলো। শাড়িতে কণাকে এভাবে দেখবে ভাবতে পারেনি। কণাকে ভয়ংকর সুন্দর লাগছে। হিয়াম ভাষা হারিয়ে ফেলছে। অস্ফুট সুরে বলল….

–চলুন।

মুহূর্তেই কণার মুখটা মলিন হয়ে যায়। ও ভাবছিলো হিয়াম ওর প্রশংসা করবে তা না করে উল্টা বলল চলুন। কণার ইচ্ছে হচ্ছে হিয়ামকে ল্যাং মেরে ফেলে দিতে। রাস্তায় কত ছেলে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলো আর হিয়াম একটুও কিছু বললোনা, আজব! হিয়াম বলল….

–রিকশা নিব?

-লক্ষ মাইল হাটতে না চেয়েছেন?
–মানে?

-কালকে আপনার মাইডেতে দেখলাম’যে মেয়ে শাড়ি পরতে পারে, তারসাথে লক্ষ মাইল হাটতেও আমার কোন আপত্তি নেই।’

–ওটাতো ফান পোস্ট।

-তারমানে আপনার সব-ই ফানপোস্ট।

–আরে সেটা না, তবে….

-কি?

–আপনার সাথে কোটি মাইল হাটতেও আমার আপত্তি নেই।

-ঢপ দিচ্ছেন?

–একদম না, একটা কথা বলবো?

-অনুমতি নেওয়ার কি আছে।

–আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে। সুন্দর বললে ভুল হবে ভয়ংকর সুন্দর। ভাগ্যিস আমি হার্টের রোগিনা, নইলে নির্ঘাত হার্টএ্যাটাক করতাম।

লজ্জা পায় কণা। লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে সে। মুচকি হেসে আস্তে করে বলে…..

–ধন্যবাদ।
-শুধু ধন্যবাদ?
–আর কি চান?
-কিছুনা।
–বলুননা?
-পরে বলব।

এভাবে আস্তে আস্তে চলতে থাকে ওদের পথ চলা। একসাথে ঘোরাঘুরি। রিকশায় চলাচল করা। ফুসকা খাওয়া। নদীর পার দিয়ে হেঁটে চলা। রাত জেগে কথা বলা। চ্যাটিং করা। মান অভিমান করা। ট্রুথ আর ডেয়ার খেলে একজনের সাথে আরেকজনের রিলেশনশিপ স্টাটাস দেওয়া। ব্যাপারটা দুজনেরই ভালো লাগে। বাট কেউ কাউকে বলেনা। এতদিনে হিয়াম কণাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। কণাও তার ব্যতিক্রম না। ও সবসময় চায় হিয়াম ওর মনের কথা বলুক। আর ওদের দুজনের এই ব্যাপারটা হিয়ামের মা বেশ লক্ষ করেছে। এবং বুঝতে পারে। হিয়ামের সাথে কথা বলে জানতে পারে হিয়াম কণাকে ভালোবাসে। মাকে আর পায়কে। হিয়াম না করারা সত্বেও হিয়ামের বাবাকে সব খুলে বলে। হিয়ামেরর বাবা সব শুনে অবাক হয়ে যায় যে এতদিনে তার ছেলে একটা মেয়েকে পছন্দ করেছে।

কণার মন খারাপ। বড্ডত মন খারাপ। ওর বাবা মা ওকে আজ বিয়ের কথা বলেছে। সামনে সপ্তাহ এংগেজমেন্ট। কণার কান্না পাচ্ছে। বারবার চোখের সামনে হিয়ামের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলোর কথা মনে পরছে। ও যে হিয়ামকে বত্ত ভালোবাসে। এখন ওরা দুজন দুজনকে তুমি করে বলে। কণার ফোনে হিয়ামের একটা মেসেজ আসলো….

‘বিকেলে নদীর পারে আসবা? আমি অপেক্ষা করব। কিছু বলার ছিলো। আর হ্যা একটা শাড়ি পরে এসো।’

কণার চোখ থেকে টুপ পরে এক ফোটা অশ্রু গরিয়ে পরলো। ও জানে হিয়াম কি বলবে। ও সব বুঝতে পারে।

শেষ বিকেলে নদীর পারে যায় কণা। ও ইচ্ছে করেই দেরি করে গিয়েছে। যাতে ওর চোখের পানি হিয়াম দেখতে না পারে। হিয়াম বলল….

–এত দেরি করলে যে?

-অপেক্ষা করতে কষ্ট হয় নাকি?

–না, ভালো লাগে। মন খারাপ কেনো?

-উহু না, এমনি।

–কান্না করছো কেনো? ওতো সুন্দর চোখে কি কান্না মানায়?

-আমাকে যে কাঁদতে হবে।

–যদি বলি কাঁদতে দিবনা?

-সেটাতো সম্ভবনা।

–সম্ভবনা যেখানে একশো, সেখানে পুরো বিষয়টা তুমি জানোনা।

-কঠিন কথা বলবেন নাতো।

–রেগে যাচ্ছ?

-তাই কি মনে হয়?

–হয়তো রাগার বৃথা চেষ্টা করছেন।

-তাহলে বললেন কেন রেগে যাচ্ছি।

–কথার ওলোট পালোট হয় মাঝেমাঝে।

-আমার স্মৃতি গুলো ওলোট পালোট হয়ে গেছে।

–সব ঠিক আছে, আগে জানো পুরোটা।

-বাসায় যাব।

“আমি যেন বলি আর তুমি যেন শোন,
জীবন জীবনে তার শেষ নেই কোন।
দিনের আলো, আর কত রাত চন্দ্রাবতি
আলো হয়, মেঘ হয় কথা যাই বলি।

রাত হলে, রাত গভীর হলে…
তোমায় মনে পড়ে, ভীষন মনে পড়ে।
শব্দের পাখিরা ঘুমিয়ে গেলে….
চারপাশে কেবল শূন্যতা।
নক্ষত্ররাও ঘুমিয়ে গেল, নিশ্চিত নিরবতায়,
তোমায় মনে পড়ে, ভীষন মনে পড়ে।”

-খুব সুন্দর হয়েছে।

বলেই কেঁদে দিলো কণা। মেয়েটা বড্ড বোকা। ও হয়তো জানেনা এংগেজমেন্টটা হিয়ামের সাথেই হবে। হিয়াম কণার কাছে যায়। দু’হাতে পরম আবেশে কণার গাল দুটো আকরে ধরে। কণা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে। চোখ বেয়ে শ্রাবণ মেঘের মতন অশ্রু ঝরছে। হিয়াম আস্তে করে বলে….

-পাগলি এত হারানোর ভয় কেনো?

–জানিনা তোমাকে হারাতে চাইনা।

-সামনে সপ্তাহে এংগেজমেন্টা আমাদের। এতটা পাগলি তুমি, যাচাই না করেই চোখের জল ফেলছো?

কণা অবাক হয়ে যায়। ও ভাবে আমি সত্যি সত্যি বোকা। এবার সত্যি সত্যি শব্দ করে কেঁদে দেয় সে। হিয়ামের বুকে কিল দিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ওকে। হিয়ামো পরম আদরে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় কণাকে।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত