বিয়ের রাতেই জামাইকে বলে দিলাম,দেখেন আমি কিন্তু অতিরিক্ত টাকা খরচ করা পছন্দ করিনা।সবাই আমায় কৃপন বলে যদিওবা তাতে আমার কিচ্ছু আসে যায় না।স্বামী আমার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে ঢোক গিললেন।
আমি মৃদ্যু হাসি দিয়ে বললাম আবার বলবেন না যেন টাকা খরচ করে পার্লরে কেন সেজেছি।বিয়ে তো একবার ই আসে তাইনা?এই যে আপনার বাসা থেকে যে যে উপহার দিয়েছেন আমি কিন্তু কাউকে দিতে পারবোনা।এগুলা আমি ৬-৭বছর ব্যবহার করতে পারবো। বর আমার কথায় মুচকি হাসি দিল। হাসছেন কেন? সে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,এ হাসির কারণ পরে এক সময় বলবো।
-আচ্ছা সে যাই হোক,আপনার আপনজনকে কিছু উপহার দিলে প্লিস আমায় দেখিয়ে দিবেন না।বুঝেন ই তো টাকা খরচ করা একদম ই পছন্দ না।
বিয়ের ৫মাস যাবার যাবার পর বুঝলাম আমার বর ও আমায় বুঝে।আমায় কৃপন বলে না।সে আসলে বুঝে আমি টাকা খরচ করা পছন্দ করিনা। বছর গড়াতে না গড়াতে আমার স্বল্প খরচের দুনিয়া আমার বাচ্চার আগমন হতে চলেছিল।বাচ্চার আশার খবর শুনে বাচ্চার বাপ ভাবলেন আমায় এক খানা শাড়ি উপহার দিবেন। দোকানে গিয়ে শাড়ি পছন্দ করে দাম দেখলাম ৮হাজার টাকা। মনে মনে ভাবলাম নিজের জন্য ই তো।এখানে খরচ করা যেতেই পারে। বাচ্চার বাপ দোকানদার কে উদ্দেশ্য করে বললেন,টেকসই হবে তো?
-জ্বী স্যার খুব উন্নতমানের শাড়ি।
বাচ্চার বাপ আবার জিজ্ঞাসা করলেন,৭০বছর টিকবে? দোকানদার হেসে বললেন হ স্যার। রাস্তায় আসতে আসতে বাচ্চার বাপ আমায় বলছে,বউ কখনো তোমায় কিচ্ছু দিতে পারিনাই।তুমি খরচ করা পছন্দ করো না তাই দিতে সাহস করিনাই।আজ এত সুন্দর খবর দিলা না দিয়ে পারলাম না।নেও এই শাড়ি। সামনে ভাবলাম দুইটা ইদ আসছে।এই শাড়ি টা সেই দুই ইদে পইরো কেমন? আমি অবাক হয়ে জামাইর দিকে তাকিয়ে আছি।
সে আবার চোখ ছানাবড়া করে বললো বউ আমাদের সন্তান ছেলে হউক বা মেয়ে হউক।একদিন তো তার বিয়ে হবে তাইনা? হুম হবে। বর আমার হাত ধরে বললো,সেই বিয়ের দিন কিন্তু এই শাড়ি টা পরতে ভুলবানা কেমন? আমি ভ্রু বাঁকিয়ে বললাম, আমার বাচ্চার বিয়া কেন?তোমার বিয়া,তোমার নাতীর বিয়া,পুতির বিয়া সবারটায় আমি এই শাড়ি ই পরুম। বাচ্চার বাপ হেসে বললো, এই কারনেই এত ভালোবাসি।
আমি:এখন বুঝছি বিয়ার রাতের তোমার হাসির কারণ।
-বাচ্চার বাপ: কি বুঝলা?
আমি শাড়ি টা তার মুখ বরাবর মেরে বললাম,তুই আমার মতন কিপ্টা না, তুই হইলি হার কিপ্টা।এই বলে চলে আসতে নিলাম, পিছন থেকে শুনতেছি সে বলেই যাচ্ছে ,বউ আস্তে যাও।
ভাবলাম কিপ্টা হলেও আমাকে কত্ত কেয়ার করে। আমি তাকিয়ে মৃদ্যু হেসে বললাম,আমি ঠিক আছি।আস্তেই যাচ্ছি বর আমায় আরো পুলোকিত করে বললো,আস্তে না গেলে ওই জুতা ছিড়ে যাবে।বাচ্চার বিয়েকে কেন্দ্র করেই ওই জুতা কিনা।ওর বিয়ে নিয়ে আমার কত প্লান প্রোগ্রাম। জুতা ছিড়ে গেলে ওর বিয়েতে শাড়ির সাথে কি পরবা বলো?