—হঠাত ফেইসবুকে ঢুকতেই দেখি রোকসানার ম্যাসেজ
–কিরে শয়তান পরিক্ষা কেমন দিলি….???
–হ্যা রে পেত্নি পরিক্ষা তো বেশ ভালই দিলাম। তুই কেমন দিলি রে পেত্নি…???
–তোরে না না করছি আমাকে পেত্নি বলবি না হুম…..???
–তাহলে প্রথমে আমাকে শয়তান বললি কেন…???
–আমিই বলেছি…?? কই না তো
–অই তুই ভাল করে দেখ কানি
–অই চুপ শয়তান…!! কি করিস..??
–কারেন্ট নাই তাই ছাদে বসে আছি। তুই কি করিস…???
–টিভি দেখছি
–অহহ আচ্ছা। আচ্ছা রোকসানা আমার একটা চাহিদা তুই পূরণ করবি…???
–কি চাহিদা…???
–আমাদের বন্ধুত্ব আজ ৭ মাসে দাঁড়ালো কিন্তু এই ৭ মাসে আমি তোকে একবারের জন্যও দেখতে পাই নি। তোর একটা ছবি দিবি প্লিজ…??
–আসিফ আমি তোকে কতবার বলব যে আমার ছবি দিব না। তারপর ও কেন চাস তুই….???
–যতবার তোর কাছে চেয়েছি ততবার ই তুই আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিস।কেন এইরকমটা করছিস কেন…??
–এর কোনো উত্তর নেই
–কেন থাকবে না….??
–জানি না
–ফোন নাম্বারটা ও দিলি না
–না দিব না
–কেন দিবি না….?? আমি কি খুব খারাপ….??? বাজে….??
–না ঠিক তা নয় তবে…..
–তবে কি বল
–নাহ কিছু না।এনিওয়ে আমি গেলাম
–কই যাস…???
–ডিনার করব বাই
–আচ্ছা বাই
কথা হচ্ছিল রোকসানার সাথে। রোকসানা আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড।ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব হওয়ার অনেক কাহিনি রয়েছে। আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড ফাহিমের বন্ধু ও। ফাহিম ওর পিকচারে প্রায় লাইক দিত।তো আমার নিউজফিডে তা চলে আসত। আইডিটা ভাল লাগাতে আমি প্রথমে পোক মারা শুরু করি। অত:পর ওই আইডি থেকে আমাকে অনেক কিছু বলত মেয়েটা। যেমন এই আপনি পাগল কিনা,পোক মারেন কেন ইত্যাদি।
কিন্তু মেয়েটা আমার ম্যাসেজের খুব বেশি উত্তর দিত না। কিন্তু আমি হাল ছাড়ি নি।অনেক কষ্টে ওকে আমার ফ্রেন্ড বানিয়েছি।ওর নাম রোকসানা।এখন আমাদের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক কিন্তু ওর সমস্যা একটা ই।ও আমাকে ওর ছবি দিতে চায় না।মাঝে ওর উপর এতটাইবিরক্ত হয়ে যাই যে কথা বলতে আর ইচ্ছা করে না।কিন্তু আমি তা করতে পারি না কারন আমি রোকসানার প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পরেছি।যার কারনে রোকসানাকে তেমন কিছুই বলতে পারি না। এইভাবে যেতে যেতে কলেজ জীবন শেষ করে ফেললাম কিন্তু তবুও রোকসানার একটা ছবি ও পেলাম না। ভার্সিটিতে আডমিশন টেস্ট দিতে হবে। মাত্র এইচ.এস.সি শেষ করেছি।এখন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে হবে।ঢাকার সেরা কোচিং সেন্টারগুলোর মধ্যে একটি হলো ইউ.সি.সি। তো ফার্মগেট শাখারটায় ভর্তি হব চিন্তা করে ফেললাম।কাল ভর্তি হতে যাব। রাতে ফেইসবুকে রোকসানাকে নক করলাম—হঠাত ফেইসবুকে ঢুকতেই দেখি রোকসানার ম্যাসেজ
–কিরে শয়তান পরিক্ষা কেমন দিলি….???
–হ্যা রে পেত্নি পরিক্ষা তো বেশ ভালই দিলাম।তুই কেমন দিলি রে পেত্নি…???
–তোরে না না করছি আমাকে পেত্নি বলবি না হুম…..???
–তাহলে প্রথমে আমাকে শয়তান বললি কেন…???
–আমিই বলেছি…?? কই না তো
–অই তুই ভাল করে দেখ কানি
–অই চুপ শয়তান…!! কি করিস..??
–কারেন্ট নাই তাই ছাদে বসে আছি।তুই কি করিস…???
–টিভি দেখছি
–অহহ আচ্ছা।আচ্ছা রোকসানা আমার একটা চাহিদা তুই পূরণ করবি…???
–কি চাহিদা…???
–আমাদের বন্ধুত্ব আজ ৭ মাসে দাঁড়ালো কিন্তু এই ৭ মাসে আমি তোকে একবারের জন্যও দেখতে পাই নি। তোর একটা ছবি দিবি প্লিজ…??
–আসিফ আমি তোকে কতবার বলব যে আমার ছবি দিব না।তারপর ও কেন চাস তুই….???
–যতবার তোর কাছে চেয়েছি ততবার ই তুই আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিস।কেন এইরকমটা করছিস কেন…??
–এর কোনো উত্তর নেই
–কেন থাকবে না….??
–জানি না
–ফোন নাম্বারটা ও দিলি না
–না দিব না
–কেন দিবি না….?? আমি কি খুব খারাপ….??? বাজে….??
–না ঠিক তা নয় তবে…..
–তবে কি বল
–নাহ কিছু না।এনিওয়ে আমি গেলাম
–কই যাস…???
–ডিনার করব বাই
–আচ্ছা বাই
কথা হচ্ছিল রোকসানার সাথে।রোকসানা আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড।ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব হওয়ার অনেক কাহিনি রয়েছে।আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড ফাহিমের বন্ধু ও। ফাহিম ওর পিকচারে প্রায় লাইক দিত।তো আমার নিউজফিডে তা চলে আসত। আইডিটা ভাল লাগাতে আমি প্রথমে পোক মারা শুরু করি।অত:পর ওই আইডি থেকে আমাকে অনেক কিছু বলত মেয়েটা। যেমন এই আপনি পাগল কিনা,পোক মারেন কেন ইত্যাদি।
কিন্তু মেয়েটা আমার ম্যাসেজের খুব বেশি উত্তর দিত না। কিন্তু আমি হাল ছাড়ি নি।অনেক কষ্টে ওকে আমার ফ্রেন্ড বানিয়েছি।ওর নাম রোকসানা।এখন আমাদের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক কিন্তু ওর সমস্যা একটা ই।ও আমাকে ওর ছবি দিতে চায় না।মাঝে ওর উপর এতটাইবিরক্ত হয়ে যাই যে কথা বলতে আর ইচ্ছা করে না।কিন্তু আমি তা করতে পারি না কারন আমি রোকসানার প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পরেছি।যার কারনে রোকসানাকে তেমন কিছুই বলতে পারি না। এইভাবে যেতে যেতে কলেজ জীবন শেষ করে ফেললাম কিন্তু তবুও রোকসানার একটা ছবি ও পেলাম না। ভার্সিটিতে আডমিশন টেস্ট দিতে হবে। মাত্র এইচ.এস.সি শেষ করেছি।এখন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে হবে।ঢাকার সেরা কোচিং সেন্টারগুলোর মধ্যে একটি হলো ইউ.সি.সি।তো ফার্মগেট শাখারটায় ভর্তি হব চিন্তা করে ফেললাম।কাল ভর্তি হতে যাব। রাতে ফেইসবুকে রোকসানাকে নক করলাম
–কেমন আছিস..???
–এইতো ভালোই তুই…???
–হুম আমিও।তোকে একটা কথা বলব
–কি ছবি চাই আমার এটাই তো…???
–আরে নাহ।অন্যকিছু
–বাব্বাহ অন্যকিছু…??? তা অন্যকিছুটা কি শুনি…???
–আমি কালকে ফার্মগেট শাখার ইউ.সি.সি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে যাব
–হুম যাবি সেটাতো খুব কথা কিন্তু এতে আমাকে জানাবার কি হলো…???
–না মানে তোর বাড়ি তো যাত্রাবাড়ি। যদি অইখানে ভর্তি হোস সেইজন্য বললাম
–হুম
–কি হুম….???
–বুদ্ধি তো ভালোই আছে দেখা যায়
–মানে কি…???
–আপনি কি ছোট্ট খোকা যে বুঝেন না হুম…???
–বুঝি না বলেই তো জিজ্ঞাসা করছি
–আমি যদি অইখানে ভর্তি হই তাহলে আপনি আমাকে দেখতে পারবেন।এই জন্যই তো আমাকে বলছেন তাই না স্যার….???
–ইয়ে না মানে………
–হুম বুদ্ধ আমি ওখানেই ভর্তি হয়েছি
–কি..???
–হুম্মম্মম্ম
–সত্যি রোকসানা…???
–আরে হ্যা রে বোকা
–আমি কালকে ভর্তি হতে যাব।তোদের কালকে ক্লাস আছে..???
–হুম আছে
–তাহলে চল কালকে দেখা করি…???
–জ্বি না স্যার এত সহজেই নয়
–কেন কেন…???
–এমনি
–আচ্ছা গেলাম
–কই..??
–মরতে
–আসিফ….. (রাগের ইমো দিয়ে)
–আরে না গোসল করব
–ও আচ্ছা যা
–বাই
–বাই
আমি চলে গেলাম গোসল করতে।সারাদিন কেটে গেল। রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে বেড়িয়ে পড়লাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।জ্যাম অতিক্রম করে প্রায় ২ ঘন্টা পর ফার্মগেট গিয়ে নামলাম।কোচিং সেন্টারে গিয়ে ভর্তিও হয়ে আসলাম। রোকসানাকে তো চিনি না তাই আর দেখা করতে পারলাম না।রাতে ফেইসবুকে নক করলাম রোকসানাকে
–দোস্ত ভর্তি হয়ে আসছি আজকে
–হুম তোকে দেখেছি।কালো প্যান্ট,চ্যাক শার্ট, চোখে চশমা
–অই তুই আমাকে ডাক দিলি না কেন….???
–এমনি হাহা
–চুপ পেত্নি
–হুম
–কাল ক্লাস তো আছেই।চলনা কালকে দেখা করি প্লিজ প্লিজ
–জ্বি না
–উফফ আমি তোকে কালকে ঠিক ই খুঁজে বের করব দেখিস
–যদি না পারিস….???
–যদি পারি তখন…???
–যদি পারিস তাহলে তুই যা চাইবি তাই পাবি
–সত্যি তো দিবি….???
–হুম দিব
–অকে কাল তোকে বের করব ই
–আচ্ছা
–গেলাম।ঘুমাবো
–আচ্ছা গুড নাইট
–গুড নাইট
ঘুমিয়ে পড়লাম রাতে। সকালে একটু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গেলাম।১০ টায় ক্লাস শুরু হবে।তাই খেয়ে দেয়ে সকাল ৮ টায় রওয়ানা দিলাম ঢাকা ফার্মগেট এর উদ্দেশ্যে। কারন সোনারগাঁ থেকে ঢাকা যেতে কমপক্ষে ২ ঘন্টা লাগবে।
প্রায় দুইঘন্টা পর ফার্মগেট ইউ.সি.সি কোচিং সেন্টারে চলে আসলাম।তখন সময় ৯:৫৫। আর মাত্র ৫ মিনিট পর ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।যেহেতু আগে থেকেই ক্লাস রুম কোনটা সেটা বলে দিয়েছে তাই নিজের রুমে যেতে অতটা কষ্ট হল না। আমার ক্লাসে ঢুকে পড়লাম।অনেক নতুন নতুন মুখ দেখতে পেলাম।আমি যখন রুমের গেটের সামনে তখন সবার নজরটা ঠিক আমার দিকে ছিল।মনে হচ্ছে আমি সার্কাস দেখাচ্ছি আর সবাই খুব মজা করে দেখছে।গিয়ে একটা ছেলের পাশে বসে পড়লাম।ছেলেটার সাথে প্রথমে পরিচিত হয়ে নিলাম। কারন কাওকেই তো আমি চিনি না। ছেলেটার নাম রওনক। দেখতে খুব সুন্দর।মনে হচ্ছে লেখা পড়ায় ও ভাল। তবে আমার আরেকটা মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল রোকসানাকে খুঁজে বের করা।তবে আমি মনে করি রোকসানা আমার ক্লাসেই কোথাও আছে।কারন আমি ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এবং রোকসানাও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার। সো একসাথেই আছি হয়তবা।
–আচ্ছা রওনক তুমি কোন কলেজ থেকে এসেছ….???
–ডক্টর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ।কেন বলত….???
–একটা সাহায্যর দরকার ছিল
–কি সাহায্য বল….???
–আচ্ছা তুমি কি রোকসানা নামের কাওকে চিনো…???
–কোন রোকসানা….???
–ফেইসবুক আইডির নাম “”নীল পরী নিলাঞ্জনা””….??? তোমাদের কলেজেই তো পড়ে….???
–অহ এই রোকসানার কথা বলছ….???
–হ্যা
–ও তো আমাদের এই কোচিং সেন্টারেই আছে
–কিহ…??? কোনটা…???
–ওই যে দেখ দ্বিতীয় বেঞ্চের লাস্টের মেয়েটা আমি রোকসানাকে দেখলাম।ও যে এত সুন্দর আমার কল্পনার বাইরে ছিল
–আচ্ছা আসিফ আমি বুঝতে পারছি না যে তুমি কেন ওর কথা জিজ্ঞাসা করছ…..???
–আসলে আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড। দেখার খুব ইচ্ছা ছিল তাই জিজ্ঞাসা করলাম
–অহ আচ্ছা অত:পর আমাদের ক্লাস শেষ হয়ে গেল।বাইরে বের হবার পর আমি রোকসানাকে হাতে ইশারা করলাম দাড়াবার জন্য।দেখলাম রোকসানা দাড়িয়েছে। আমি ওর সামনে আসলাম।
–কিরে পেত্নি কেমন আছিস….???
–কিহ….?? কে আপনি….???
–বাব্বাহ আমাকে চিনতে পারছেন না মিস রোকসানা….??
–কে….কে….কে রোকসানা…..???
–নিজের নামটাই ভুলে গেলি….??
–স্যরি আমি রোকসানা না।নিশ্চয় আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে এই কথা শুনে আমি নিজেই কনফিউশনে পরে গেলাম যে ও আসলেই রোকসানা কিনা….!!! তাহলে কি রওনক আমাকে মিত্থা বলল….??? কিছুই মাথায় আসছে না।হঠাত কোত্থেকে যেন একটা মেয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়ানো মেয়েটাকে বলল
–কিরে রোকসানা তুই না বলেছিলি আজকে আসিফকে দেখাবি…??? কই আসিফ….???
–অইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই চুপ কর এই কথা শুনে আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটাই রোকসানা
–এই যে আপু।আমিই আসিফ
–ও ভাইয়া আপনি ই আসিফ…??? আসিফুর রহমান ফারাবি…???
–জ্বি আপু আমিই ফারাবি
–ভাইয়া আপনার কথা রোকসানা আমাদেরকে অনেক বলেছে।আপনি নাকি খুব ভাল,ওর নাকি অনেক কেয়ার করেন।
–হাহাহা ও একটু বাড়িয়ে বলেছে
–ভাইয়া আপনি নাকি রোকসানাকে পছন্দ করেন…???? ওর এমন প্রশ্ন শুনে আমি তো লজ্জা পেয়ে গেলাম।কি বলব কিছুও বুঝতে পারছি না
–না মানে আসলে………
–জ্বি বুঝেছি বুঝেছি আর বলতে হবে না। একটা কথা বলব ভাইয়া…???
–হ্যা বল
–রোকসানাও কিন্তু আপনাকে পছন্দ করে ভাইয়া এটা বলেই মেয়েটা সোজা দৌড়।মনে হল দুইদিনের অনাহারী বাঘ মনে হয় তাড়া করেছে তাকে। পরে বুঝতে পারলাম রোকসানা মেয়েটাকে তাড়া করেছে
–অই হারামি দাড়া তুই…!! তরে মাইরা ফালামু আজকে…! দাড়া বলছি ২ মিনিট পর রোকসানা আমার সামনে আসল
–এহহেম এহহেম…..!তা এখন ও কি বলবি তুই রোকসানা নস…..???
–স্যরি
–হুম চল অইখান টায় বসি
–আচ্ছা চল খুব সুন্দর একটা বসার জায়গা ছিল অইখানে। আমরা গিয়ে অইখানে বসে পড়লাম।বসার পর আমি রোকসানার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
–কিরে আসিফ এইভাবে কি তাকায়া থাকবি নাকি কিছু বলবি…???? হঠাত এমন কথা শুনে আমি একটু লজ্জা পেয়ে গেলাম
–না মানে তোকে খুব সুন্দর লাগছে তো তাই দেখছি
–হয়েছে হয়েছে আর পাম দিতে হবে না
–পাম না সত্যি
–হুম
–আচ্ছা তোর ওই ফ্রেন্ডের নাম কি..??
–কোনটা….??
–ওই যে কথা বলে গেল ওইটা….???
–ওর নাম মৌ
–মেয়েটা দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর।বিয়ে করতে পারলে হত রে
–কি বললি তুই….??? (সামান্য কান্নামিশ্রিত কন্ঠে)
–বললাম যদি মৌ কে বিয়ে করতে পারতাম
–আমি উঠছি
–কোথায় যাবি….???
–বাসায় চলে যাব
–এত তাড়াতাড়ি….???
–হুম ভাল লাগছে না
–আচ্ছা ঠিক আছে যা তাহলে কিন্তু একটা কথা বলে যা
–কি কথা বল
–কাল দেখা হচ্ছে তো…???
–জানি না
আমার উত্তর না শুনেই রোকসানা বাসার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে বসে পড়ল। আমি বুঝতে পেরেছি ও অনেক রাগ করেছে।কারন কোনো মেয়েই চায় না নিজের পছন্দের মানুষকে অন্যকেও ভালোবাসুক। কিন্তু আমি এখন রাগ ভাংগাবো না।কালকে মনের কথাটা বলেই রাগটা ভাংগিয়ে দিব।পরে আমি নিজেও গাড়িতে উঠে বাসায় চলে আসলাম।রাতে ফেইসবুকে রোকসানাকে নক করলাম
-রোকসানা…??
–বল
–কি করিস
–কিছু না
–মন খারাপ…???
–না
–তাহলে…???
–কিছু না
–তোকে তো খুঁজে বের করেছি।এইবার আমার উপহার…???
–কি চাস…??
–তোকে চাই
–মানে…??????????
–আমি তোকে চাই
–আরে সেটাই জিজ্ঞাসা করছি যে কেন চাস….??
–বিয়ে করব
–কাকে…???????
–তোকে
–নাহহহহ
–কেন….????
–মৌ কে বিয়ে কর গিয়ে যা
–কিন্তু আমার যে তোকে চাই
–চুপ শয়তান
–ভালোবাসি
–কাকে….???
–তোকে
–অইইই চুপ কর
–একটা কিস কর তাইলে চুপ করমু
–কি বললি তুই শয়তান….????
–কিস মি বেবি
–শয়তান,কুত্তা,বিলাই
–ঠোটে কামড় দিমু কিন্তু
–বাই শয়তান
–আরে আরে কই যাস…??
–খুশিতে নাচতে যাই
–আমিও যামু
–চুপ যা ভাগ
–অই…….????
–বাই
–অকে বাই
আমি বুঝতে পেরেছি রোকসানা কেন এত খুশি।যাক অবশেষএ আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে।কারন রোকসানাও আমাকে ভালোবাসে।এখন কালকে শুধু বলার অপেক্ষা পরেরদিন কোচিং গেলাম ঠিক ই কিন্তু ক্লাস করি নি। বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর অপেক্ষা করছিলাম কখন রোকসানা আসবে। প্রায় ১২তার সময় রোকসানা কোচিং থেকে বের হল
–কিরে আসিফ তুই এইখানে…??? ক্লাসে ছিলি না কেন….???
–তোর জন্য
–আমার জন্য মানে…???
–তোর রাগ ভাংগানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি
—কে রাগ করেছে….??
–তুই
–কার উপর…????
–আমার উপর
–হুহ আমার বয়েই গেছে (মুখ ভেংচি কেটে)
–তাহলে চল সংসদ ভবনের দিকে যাই
–ওখানে গিয়ে কি করব…..???
–আহা যাবি তো
–না তোর সাথে যাব না
–দেখ ভাল হবে না বলছি
–আচ্ছা ঠিক আছে চল
–চল
একটা রিকশা নিয়ে সোজা চলে গেলাম সংসদ ভবনের সামনে।রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিলাম।সংসদ ভবনের সামনে বসার জায়গা রয়েছে। ওখানে দুইজন বসে পরলাম।অবশ্য শুধু যে আমরাই ছিলাম ওখানে ঠিক তা নয়।আমাদের মত আরো অনেকেই ওখানে বসে ছিল
–কিরে আসিফ আমাকে এইখানে নিয়ে আসলি কেন….????
–এনেছি মনে চেয়েছে তাই
–কেন এনেছিস সেইটা বল।বাসায় যেতে হবে
–আমি এখন যা বলব তার সবটাই সিরিয়াসলি নিবি
–আচ্ছা নিব বল
–রোকসানা আমি এতদিন তোর সাথে অনেক চ্যাট করেছি,অনেক কথা বলেছি,তোর অনেক কেয়ার করেছি কিন্তু কেন আমি এইগুলো করেছি সেইটা কি তুই জানিস….???
–না জানি না তো।তুই বল কেন করেছিস…???
–জানিস রোকসানা তোর সাথে কথা বলার পর থেকে আমি অন্যকোনো মেয়ের সাথে কথা বলি নি,তাদের দিকে তাকাই নি।আমার মনে হয় আমি তোর প্রতি দূর্বল হয়ে পরেছি
–মানে কি বলতে চাস তুই….???
–সোজা ভাবে বলব নাকি আর একটু প্যাচাবো……?????
–চুপ সোজাভাবে বল
–রোকসানা আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছি কথাটা বলার পর রোকসানা আমারদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
–রোকসানা কিছু বল
–কি বলব….????
–জানিনা (অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে) আমি বুঝতে পারছি রোকসানা কাঁদছে
–কিরে কাঁদছিস কেন…??? (ওর মুখটা আমারদিকে এনে)
–জানিনা
–তার মানে তুইও আমাকে ভালোবাসিস…..????
–এতদিনে কি এইটুকুও বুঝতে পারিস না তুই……???(কান্নাকরতে করতে)
–আমি তো বুঝেছি কিন্তু ভয় পেতাম
–কিসের ভয়…???
–যদি তোকে হারাই….???
–এখনো কি ভয় পাচ্ছিস হারাবার…..???
–না এখন আর ভয় পাচ্ছি না হঠাত মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চলে আসল। হাটু গেড়ে বসে সবার সামনেই চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম “”Roksana I Love You”” তখন সবার দৃষ্টি আমাদের দিকে ছিল। রোকসানা খুব লজ্জা পাচ্ছিল
–আসিফ চুপ কর…..!!! সবাই দেখতে পাচ্ছে তো……!!
–রোকসানা তুমি কি আমার বাবুর আম্মু হবে…..????
–আরে হ্যা হব হব।এখন প্লিজ চুপ করে বস প্লিজ আমি চুপ করে রোকসানার পাশে বসে পড়লাম। আমার এই অদ্ভুত কান্ড দেখে সবাই হাসছিল
–আসিফ এইটা কি করলা তুমি….??? আমার তো লজ্জা করছে এখন
–এইটা কোনো ব্যাপার না
–হুম শয়তানের হাড্ডি
–I love you Roksana
— হুম আমিও
–মানে কি….???? আমি যেইটা বললাম ওইটা বল
–পারব না
–কেন….?????
–লজ্জা লাগে
–প্লিজ বল রোকসানা প্লিজ
–আচ্ছা বলছি বাবা বলছি
–জলদি
–i love you too Asif
অত:পর আমি রোকসানার হাতটা শক্ত করে ধরলাম। রোকসানাও শক্ত করে ধরে রাখল আমার হাত। শুরু হলো ভালোবাসার নতুন সম্পর্ক।এক ই বন্ধনে আবদ্ধ হলো দুইজন। বেচে থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা,সফল হউক সবার ভালোবাসা।
–কেমন আছিস..???
–এইতো ভালোই তুই…???
–হুম আমিও।তোকে একটা কথা বলব
–কি ছবি চাই আমার এটাই তো…???
–আরে নাহ।অন্যকিছু
–বাব্বাহ অন্যকিছু…??? তা অন্যকিছুটা কি শুনি…???
–আমি কালকে ফার্মগেট শাখার ইউ.সি.সি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে যাব
–হুম যাবি সেটাতো খুব কথা কিন্তু এতে আমাকে জানাবার কি হলো…???
–না মানে তোর বাড়ি তো যাত্রাবাড়ি। যদি অইখানে ভর্তি হোস সেইজন্য বললাম
–হুম
–কি হুম….???
–বুদ্ধি তো ভালোই আছে দেখা যায়
–মানে কি…???
–আপনি কি ছোট্ট খোকা যে বুঝেন না হুম…???
–বুঝি না বলেই তো জিজ্ঞাসা করছি
–আমি যদি অইখানে ভর্তি হই তাহলে আপনি আমাকে দেখতে পারবেন।এই জন্যই তো আমাকে বলছেন তাই না স্যার….???
–ইয়ে না মানে………
–হুম বুদ্ধ আমি ওখানেই ভর্তি হয়েছি
–কি..???
–হুম্মম্মম্ম
–সত্যি রোকসানা…???
–আরে হ্যা রে বোকা
–আমি কালকে ভর্তি হতে যাব।তোদের কালকে ক্লাস আছে..???
–হুম আছে
–তাহলে চল কালকে দেখা করি…???
–জ্বি না স্যার এত সহজেই নয়
–কেন কেন…???
–এমনি
–আচ্ছা গেলাম
–কই..??
–মরতে
–আসিফ….. (রাগের ইমো দিয়ে)
–আরে না গোসল করব
–ও আচ্ছা যা
–বাই
–বাই
আমি চলে গেলাম গোসল করতে।সারাদিন কেটে গেল। রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে বেড়িয়ে পড়লাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।জ্যাম অতিক্রম করে প্রায় ২ ঘন্টা পর ফার্মগেট গিয়ে নামলাম।কোচিং সেন্টারে গিয়ে ভর্তিও হয়ে আসলাম। রোকসানাকে তো চিনি না তাই আর দেখা করতে পারলাম না।রাতে ফেইসবুকে নক করলাম রোকসানাকে
–দোস্ত ভর্তি হয়ে আসছি আজকে
–হুম তোকে দেখেছি।কালো প্যান্ট,চ্যাক শার্ট, চোখে চশমা
–অই তুই আমাকে ডাক দিলি না কেন….???
–এমনি হাহা
–চুপ পেত্নি
–হুম
–কাল ক্লাস তো আছেই।চলনা কালকে দেখা করি প্লিজ প্লিজ
–জ্বি না
–উফফ আমি তোকে কালকে ঠিক ই খুঁজে বের করব দেখিস
–যদি না পারিস….???
–যদি পারি তখন…???
–যদি পারিস তাহলে তুই যা চাইবি তাই পাবি
–সত্যি তো দিবি….???
–হুম দিব
–অকে কাল তোকে বের করব ই
–আচ্ছা
–গেলাম।ঘুমাবো
–আচ্ছা গুড নাইট
–গুড নাইট
ঘুমিয়ে পড়লাম রাতে। সকালে একটু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গেলাম।১০ টায় ক্লাস শুরু হবে।তাই খেয়ে দেয়ে সকাল ৮ টায় রওয়ানা দিলাম ঢাকা ফার্মগেট এর উদ্দেশ্যে। কারন সোনারগাঁ থেকে ঢাকা যেতে কমপক্ষে ২ ঘন্টা লাগবে।
প্রায় দুইঘন্টা পর ফার্মগেট ইউ.সি.সি কোচিং সেন্টারে চলে আসলাম।তখন সময় ৯:৫৫। আর মাত্র ৫ মিনিট পর ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।যেহেতু আগে থেকেই ক্লাস রুম কোনটা সেটা বলে দিয়েছে তাই নিজের রুমে যেতে অতটা কষ্ট হল না। আমার ক্লাসে ঢুকে পড়লাম।অনেক নতুন নতুন মুখ দেখতে পেলাম।আমি যখন রুমের গেটের সামনে তখন সবার নজরটা ঠিক আমার দিকে ছিল।মনে হচ্ছে আমি সার্কাস দেখাচ্ছি আর সবাই খুব মজা করে দেখছে।গিয়ে একটা ছেলের পাশে বসে পড়লাম।ছেলেটার সাথে প্রথমে পরিচিত হয়ে নিলাম। কারন কাওকেই তো আমি চিনি না। ছেলেটার নাম রওনক। দেখতে খুব সুন্দর।মনে হচ্ছে লেখা পড়ায় ও ভাল। তবে আমার আরেকটা মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল রোকসানাকে খুঁজে বের করা।তবে আমি মনে করি রোকসানা আমার ক্লাসেই কোথাও আছে।কারন আমি ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার এবং রোকসানাও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার। সো একসাথেই আছি হয়তবা।
–আচ্ছা রওনক তুমি কোন কলেজ থেকে এসেছ….???
–ডক্টর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ।কেন বলত….???
–একটা সাহায্যর দরকার ছিল
–কি সাহায্য বল….???
–আচ্ছা তুমি কি রোকসানা নামের কাওকে চিনো…???
–কোন রোকসানা….???
–ফেইসবুক আইডির নাম “”নীল পরী নিলাঞ্জনা””….??? তোমাদের কলেজেই তো পড়ে….???
–অহ এই রোকসানার কথা বলছ….???
–হ্যা
–ও তো আমাদের এই কোচিং সেন্টারেই আছে
–কিহ…??? কোনটা…???
–ওই যে দেখ দ্বিতীয় বেঞ্চের লাস্টের মেয়েটা আমি রোকসানাকে দেখলাম। ও যে এত সুন্দর আমার কল্পনার বাইরে ছিল
–আচ্ছা আসিফ আমি বুঝতে পারছি না যে তুমি কেন ওর কথা জিজ্ঞাসা করছ…..???
–আসলে আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড। দেখার খুব ইচ্ছা ছিল তাই জিজ্ঞাসা করলাম
–অহ আচ্ছা অত:পর আমাদের ক্লাস শেষ হয়ে গেল।বাইরে বের হবার পর আমি রোকসানাকে হাতে ইশারা করলাম দাড়াবার জন্য।দেখলাম রোকসানা দাড়িয়েছে। আমি ওর সামনে আসলাম।
–কিরে পেত্নি কেমন আছিস….???
–কিহ….?? কে আপনি….???
–বাব্বাহ আমাকে চিনতে পারছেন না মিস রোকসানা….??
–কে….কে….কে রোকসানা…..???
–নিজের নামটাই ভুলে গেলি….??
–স্যরি আমি রোকসানা না।নিশ্চয় আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে এই কথা শুনে আমি নিজেই কনফিউশনে পরে গেলাম যে ও আসলেই রোকসানা কিনা….!!! তাহলে কি রওনক আমাকে মিত্থা বলল….??? কিছুই মাথায় আসছে না।হঠাত কোত্থেকে যেন একটা মেয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়ানো মেয়েটাকে বলল
–কিরে রোকসানা তুই না বলেছিলি আজকে আসিফকে দেখাবি…??? কই আসিফ….???
–অইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই চুপ কর এই কথা শুনে আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটাই রোকসানা
–এই যে আপু।আমিই আসিফ
–ও ভাইয়া আপনি ই আসিফ…??? আসিফুর রহমান ফারাবি…???
–জ্বি আপু আমিই ফারাবি
–ভাইয়া আপনার কথা রোকসানা আমাদেরকে অনেক বলেছে।আপনি নাকি খুব ভাল,ওর নাকি অনেক কেয়ার করেন।
–হাহাহা ও একটু বাড়িয়ে বলেছে
–ভাইয়া আপনি নাকি রোকসানাকে পছন্দ করেন…???? ওর এমন প্রশ্ন শুনে আমি তো লজ্জা পেয়ে গেলাম।কি বলব কিছুও বুঝতে পারছি না
–না মানে আসলে………
–জ্বি বুঝেছি বুঝেছি আর বলতে হবে না। একটা কথা বলব ভাইয়া…???
–হ্যা বল
–রোকসানাও কিন্তু আপনাকে পছন্দ করে ভাইয়া এটা বলেই মেয়েটা সোজা দৌড়।মনে হল দুইদিনের অনাহারী বাঘ মনে হয় তাড়া করেছে তাকে। পরে বুঝতে পারলাম রোকসানা মেয়েটাকে তাড়া করেছে
–অই হারামি দাড়া তুই…!! তরে মাইরা ফালামু আজকে…! দাড়া বলছি ২ মিনিট পর রোকসানা আমার সামনে আসল
–এহহেম এহহেম…..!তা এখন ও কি বলবি তুই রোকসানা নস…..???
–স্যরি
–হুম চল অইখান টায় বসি
–আচ্ছা চল খুব সুন্দর একটা বসার জায়গা ছিল অইখানে। আমরা গিয়ে অইখানে বসে পড়লাম।বসার পর আমি রোকসানার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
–কিরে আসিফ এইভাবে কি তাকায়া থাকবি নাকি কিছু বলবি…???? হঠাত এমন কথা শুনে আমি একটু লজ্জা পেয়ে গেলাম
–না মানে তোকে খুব সুন্দর লাগছে তো তাই দেখছি
–হয়েছে হয়েছে আর পাম দিতে হবে না
–পাম না সত্যি
–হুম
–আচ্ছা তোর ওই ফ্রেন্ডের নাম কি..??
–কোনটা….??
–ওই যে কথা বলে গেল ওইটা….???
–ওর নাম মৌ
–মেয়েটা দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর।বিয়ে করতে পারলে হত রে
–কি বললি তুই….??? (সামান্য কান্নামিশ্রিত কন্ঠে)
–বললাম যদি মৌ কে বিয়ে করতে পারতাম
–আমি উঠছি
–কোথায় যাবি….???
–বাসায় চলে যাব
–এত তাড়াতাড়ি….???
–হুম ভাল লাগছে না
–আচ্ছা ঠিক আছে যা তাহলে কিন্তু একটা কথা বলে যা
–কি কথা বল
–কাল দেখা হচ্ছে তো…???
–জানি না
আমার উত্তর না শুনেই রোকসানা বাসার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে বসে পড়ল। আমি বুঝতে পেরেছি ও অনেক রাগ করেছে।কারন কোনো মেয়েই চায় না নিজের পছন্দের মানুষকে অন্যকেও ভালোবাসুক। কিন্তু আমি এখন রাগ ভাংগাবো না।কালকে মনের কথাটা বলেই রাগটা ভাংগিয়ে দিব।পরে আমি নিজেও গাড়িতে উঠে বাসায় চলে আসলাম।রাতে ফেইসবুকে রোকসানাকে নক করলাম
-রোকসানা…??
–বল
–কি করিস
–কিছু না
–মন খারাপ…???
–না
–তাহলে…???
–কিছু না
–তোকে তো খুঁজে বের করেছি।এইবার আমার উপহার…???
–কি চাস…??
–তোকে চাই
–মানে…??????????
–আমি তোকে চাই
–আরে সেটাই জিজ্ঞাসা করছি যে কেন চাস….??
–বিয়ে করব
–কাকে…???????
–তোকে
–নাহহহহ
–কেন….????
–মৌ কে বিয়ে কর গিয়ে যা
–কিন্তু আমার যে তোকে চাই
–চুপ শয়তান
–ভালোবাসি
–কাকে….???
–তোকে
–অইইই চুপ কর
–একটা কিস কর তাইলে চুপ করমু
–কি বললি তুই শয়তান….????
–কিস মি বেবি
–শয়তান,কুত্তা,বিলাই
–ঠোটে কামড় দিমু কিন্তু
–বাই শয়তান
–আরে আরে কই যাস…??
–খুশিতে নাচতে যাই
–আমিও যামু
–চুপ যা ভাগ
–অই…….????
–বাই
–অকে বাই
আমি বুঝতে পেরেছি রোকসানা কেন এত খুশি।যাক অবশেষএ আমার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে।কারন রোকসানাও আমাকে ভালোবাসে।এখন কালকে শুধু বলার অপেক্ষা পরেরদিন কোচিং গেলাম ঠিক ই কিন্তু ক্লাস করি নি। বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর অপেক্ষা করছিলাম কখন রোকসানা আসবে। প্রায় ১২তার সময় রোকসানা কোচিং থেকে বের হল
–কিরে আসিফ তুই এইখানে…??? ক্লাসে ছিলি না কেন….???
–তোর জন্য
–আমার জন্য মানে…???
–তোর রাগ ভাংগানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি
—কে রাগ করেছে….??
–তুই
–কার উপর…????
–আমার উপর
–হুহ আমার বয়েই গেছে (মুখ ভেংচি কেটে)
–তাহলে চল সংসদ ভবনের দিকে যাই
–ওখানে গিয়ে কি করব…..???
–আহা যাবি তো
–না তোর সাথে যাব না
–দেখ ভাল হবে না বলছি
–আচ্ছা ঠিক আছে চল
–চল
একটা রিকশা নিয়ে সোজা চলে গেলাম সংসদ ভবনের সামনে।রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিলাম।সংসদ ভবনের সামনে বসার জায়গা রয়েছে। ওখানে দুইজন বসে পরলাম।অবশ্য শুধু যে আমরাই ছিলাম ওখানে ঠিক তা নয়।আমাদের মত আরো অনেকেই ওখানে বসে ছিল
–কিরে আসিফ আমাকে এইখানে নিয়ে আসলি কেন….????
–এনেছি মনে চেয়েছে তাই
–কেন এনেছিস সেইটা বল।বাসায় যেতে হবে
–আমি এখন যা বলব তার সবটাই সিরিয়াসলি নিবি
–আচ্ছা নিব বল
–রোকসানা আমি এতদিন তোর সাথে অনেক চ্যাট করেছি,অনেক কথা বলেছি,তোর অনেক কেয়ার করেছি কিন্তু কেন আমি এইগুলো করেছি সেইটা কি তুই জানিস….???
–না জানি না তো।তুই বল কেন করেছিস…???
–জানিস রোকসানা তোর সাথে কথা বলার পর থেকে আমি অন্যকোনো মেয়ের সাথে কথা বলি নি,তাদের দিকে তাকাই নি।আমার মনে হয় আমি তোর প্রতি দূর্বল হয়ে পরেছি
–মানে কি বলতে চাস তুই….???
–সোজা ভাবে বলব নাকি আর একটু প্যাচাবো……?????
–চুপ সোজাভাবে বল
–রোকসানা আমি তোকে ভালোবেসে ফেলেছি কথাটা বলার পর রোকসানা আমারদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
–রোকসানা কিছু বল
–কি বলব….????
–জানিনা (অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে) আমি বুঝতে পারছি রোকসানা কাঁদছে
–কিরে কাঁদছিস কেন…??? (ওর মুখটা আমারদিকে এনে)
–জানিনা
–তার মানে তুইও আমাকে ভালোবাসিস…..????
–এতদিনে কি এইটুকুও বুঝতে পারিস না তুই……???(কান্নাকরতে করতে)
–আমি তো বুঝেছি কিন্তু ভয় পেতাম
–কিসের ভয়…???
–যদি তোকে হারাই….???
–এখনো কি ভয় পাচ্ছিস হারাবার…..???
–না এখন আর ভয় পাচ্ছি না হঠাত মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চলে আসল। হাটু গেড়ে বসে সবার সামনেই চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম “”Roksana I Love You”” তখন সবার দৃষ্টি আমাদের দিকে ছিল। রোকসানা খুব লজ্জা পাচ্ছিল
–আসিফ চুপ কর…..!!! সবাই দেখতে পাচ্ছে তো……!!
–রোকসানা তুমি কি আমার বাবুর আম্মু হবে…..????
–আরে হ্যা হব হব।এখন প্লিজ চুপ করে বস প্লিজ আমি চুপ করে রোকসানার পাশে বসে পড়লাম। আমার এই অদ্ভুত কান্ড দেখে সবাই হাসছিল
–আসিফ এইটা কি করলা তুমি….??? আমার তো লজ্জা করছে এখন
–এইটা কোনো ব্যাপার না
–হুম শয়তানের হাড্ডি
–I love you Roksana
— হুম আমিও
–মানে কি….???? আমি যেইটা বললাম ওইটা বল
–পারব না
–কেন….?????
–লজ্জা লাগে
–প্লিজ বল রোকসানা প্লিজ
–আচ্ছা বলছি বাবা বলছি
–জলদি
–i love you too Asif
অত:পর আমি রোকসানার হাতটা শক্ত করে ধরলাম। রোকসানাও শক্ত করে ধরে রাখল আমার হাত। শুরু হলো ভালোবাসার নতুন সম্পর্ক।এক ই বন্ধনে আবদ্ধ হলো দুইজন। বেচে থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা,সফল হউক সবার ভালোবাসা।