নীল ডায়েরী আর কাঁটাহীন গোলাপ

নীল ডায়েরী আর কাঁটাহীন গোলাপ

মায়া শোনছো!
তুমি যে কাঁটাহীন গোলাপটা দিয়েছিলে! সেটা যত্ন করে আমি রেখে দিয়ে ছিলাম।যানো তোমার দেয়া গোলাপটা আমার কাছে খুব যত্ন সহকারেই আছে।কোন রকম অবহেলা করছিনা বা কখনো করিনি আর করবোও না।
যানো গোলাপটা অনেক শুকিয়ে গেছে।

এমন হয়েছে যে গোলাপটা ধরতে গেলেই ভেঙে যাবে।তাই আমি গোলাপটা কখনো স্পর্শই করিনা;এই ভেবে যদি ভেঙে যায়। যদি তোমার দেয়া শেষ স্মৃতিটা নষ্ট হয়ে যায়।তাহলে তো আমার বেঁচে থাকাটাও কষ্ট হয়ে যাবে।যানো তোমার গোলাপটা হতে আরেকটা ছায়া গোলাপের সৃষ্টি হয়েছে।তুমি হাসছো! এই তুমি একদম হাসবে না।তুমি তো যানো তোমার হাসিটার কতটা পাগল ছিলাম আমি।তোমার হাসিটা দেখার জন্যই কতনা পথ পারি দিয়েছি। কতইনা অপেক্ষা করেছি।তোমার হাসিটা এক নজর দেখব বলে।আজ তুমি হাসছো;হাসবেনা।কারণ তোমার হাসিটা তো আমি দেখতে পারিনা।
দেখতে পারব না;তাই তোমার হাসিটা অসহ্য লাগে এখন!

ওহ ছায়া গোলাপের কথা বলছিলাম তোমাকে।হ্যাঁ তোমার দেয়া গোলাপটা হতে একটা ছায়া গোলাপ হয়েছে! গোলাপটা ডায়েরীর ভাজে রাখতে রাখতে অপর পাশে তোমার গোলাপটার আরেকটা ছায়া সৃষ্ট হয়েছে। আর আমি তার নাম দিয়েছি ছায়া গোলাপ।বুঝলে তো এবার! কোন ডায়েরীটা যানো? ভুলে গেছে?ওহ তুমি এত মন ভুলা কেমনে হলে? তুমি তো এত মন ভুলা ছিলে না।

ডায়েরীটা তো তুমিই দিয়েছিলে! অবাক হচ্ছো যে ;কি মনে নেই? মনে করিয়ে দিচ্ছি! হঠাৎ একদিন তোমার জন্ম দিনে তুমি ডায়েরীটা আমাকে দিয়েছিলে।ডায়েরীটা আমার হাতে দিয়ে বলেছিলে;তোমাকে বলতে না পারা সব কথাগুলো আমি যেন সেখানে লিখি রাখি! সেদিন আমি খুব রাগ করেছিলাম।”তুমি বলেছিলে রাগ করো কেন?যেদিন আমি থাকবোনা ;সেদিন এই ডায়েরীর সাথে কথা বলবে।মানে ডায়েরীতে আমাকে বলা সব কথা লিখে রাখবে “।তোমার কথা শেষ হতেই তো আমি চলে আসছিলাম।তুমি রাগ করবে বলে ডায়েরীটা সাথে নিয়ে আসছিলাম ঠিকি! কিন্তু কি যানো;ডায়েরীটা আমি এক কোণে ফেলে রাখছিলাম কখনো ধরেনি।অবহেলাতে ধুলো জমে গিয়েছিল।কারণ আমি জানতাম তোমার সাথে আমার কখনোই কথা বলা বন্ধ হতে পারেনা।মরতে হলেও যে দু’জন একসাথে মরবো।

তারপর ;তারপর খুব সুখেই কেটে যাচ্ছিল আমাদের পথ চলা।ভালবাসার কোন কমতি ছিল না।ছোট ছোট খুনসুটি গুলো আমাদের ভালবাসাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো।বন্ধু বান্ধবরা আমাদের দেখে হিংসে করতো।আর বলতো আমরা নাকি বেস্ট কাপল।তুমি বন্ধু বান্ধবের এসব কথা গুলো আমার কাছে বলতে; আর হাসতে।আমি অপলকে তাকিয়ে থাকতাম।

তারপর তুমি একদিন! কোন কারণ ছাড়াই আমাকে একটা গোলাপ দিয়েছিলে! “বলেছিলে গোলাপ হচ্ছে ভালবাসার প্রতিক।তুমি বলেছিলে আমার ভালবাসার সব কিছু এটাতে আছে “। সেদিন একটু ঘুরাঘুরি করেছিলাম।তুমি ফুসকা খেতে চেয়েছিলে “কিন্তু তুমি ফুসকা পছন্দ করতে না। যানো আমি অবাক হয়েছিলাম। তুমি হেসে হেসেই বলেছিল, “চলো দু’জনে এক প্লেটে খুব ঝাল দিয়ে ফুসকা খাব “।আমি খুব অপলকে সেদিন তোমার ফুঁচকা খাওয়া দেখছিলাম।একটা মেয়ে এত সুন্দর করে ফুচকা খেতে পারে ;তা আমার যানা ছিল না।তারপর সেদিনের পর তোমার সাথে বেশ কয়েকদিন আমার কথা হয়নি।

আমিও আমার পরীক্ষাই ব্যস্ত হয়ে পরি;আর বাড়িতে একটা কাজে চলে যাই।কিন্তু কয়েকদিন পর ;বন্ধু আশিক একটা চিঠি দেই।বলেছে তুমি দিয়েছ।বিশ্বাস করো;চিঠিটা পড়ার পর আমি স্তব্দ হয়ে পড়ি।আমি নাকি অনেক দিন হসপিটালে ছিলাম।চরম বাস্তবতায় তোমার আমার ভালবাসার সমাপ্তি ঘটলো;তোমার বাবা নামক মানুষটার জন্যে আমরা এক হতে পারলাম না।না তোমার বাবাকে গালি দিচ্ছিনা;যদি তুমি কষ্ট পাও।কারণ তুমি তোমার বাবাকে খুব ভালবাসতে।

কিন্তু দেখো যা ভাবিনি তাই হয়েছে! তোমার সাথে বলা কথাগুলো তোমার অনুপস্থিতে তোমারি ডায়েরীতে লিখি রাখছি। না ডায়েরীটা অযত্নে নেই,পরশ ভালবাসায় আছে;পরম ভালবাসায় আছে তোমার দেয়া শেষ কাঁটাহীন গোলাপ আর তার ছায়া গোলাপটাও।শুধু তুমি নেই পাশে; কিন্তু আমি অনুভব করি;তুমি পাশে আছ।মায়া একদম কাঁদবেনা;দেখ আমি কাঁদছিনা।একটু ঘুমাও আমার বুকে মাথা রেখে তুমি একটু ঘুমাও।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত