জোর করে বিয়ে

জোর করে বিয়ে

তুমি কী চাও , আমাকে এই বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়া হোক???

—আর আপনি যদি এই বাড়ির মালিক হন????
—মানে??? কী বাজে বকছ মাথা ঠিক আছে তোমার????
—আমার মাথা ঠিক আছে, আর এই বাড়িটা আমার নামেই আছে। আমাকে বিয়ে করলে আমার জিনিস মানেই আপনার।
—দেখ এসব আবেগী কথা বাদ দাও, আমি চাইনা তোমার বাবা যে বিশ্বাস নিয়ে আমাকে এই বাড়িতে থাকতে দিয়েছে তা নষ্ট হোক বা সে মনে কষ্ট পাক।
—বাবা কখনই কষ্ট পাবেনা, বরং সে খুশিই হবে।
—তুমি আবেগের বষে কথা বলছ, এখন তুমি তোমার পড়াশোনায় মন দাও। আর কালথেকে এখানে আসতে হবেনা পড়তে। আমি তোমাদের বাড়ি গিয়েই পড়িয়ে আসব।

এখন বাসায় যাও। মুখটা ভার করে চলে গেলো মায়া। ও হ্যা পরিচয় দিয়ে নিই। আমি শিমুল, একটা বাইং হাউজে তে কাজ করি। তাই এই শহড়ে থাকি। বাবা মা কুষ্টিয়া গ্রামের বাড়ি থাকেন। আর যার সাথে এতখন কথা বললাম সে আমার বাড়িয়ালার মেয়ে। নামটা মায়া। দেখতেও বেশ মায়াবি, নামের সাথে মিল আছে। কিন্ত যথেষ্ট চঞ্চল আছে। বেশ কিছু দিন ধরেন ও আমাকে ভালবাসে কথাটা আকার ইঙ্গিতে বোঝাচ্ছিল, আমি বুঝেও এড়িয়ে গেছি। কিন্তু আজ মেয়েটা সরাসরিই বলে দিল। কোন দিন ম্যাসে থাকার অভ্যাস ছিলনা তাই চাকরিটা পাবার পরে ম্যাসে উঠে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। তাই বাসা খুজতে থাকি। কিন্তু ব্যাচেলার বলে কেও ভারা দিতে রাজি না। অবশেষে এক কলিগের মাধ্যামে এই বাসাটার খোজ পাই। দুই রুমের ছোট্ট একটা বাসা ছাদের এক কোনে। বাড়িয়ালা অনেক ভাল তাই তিনি খুব সহজেন আমাকে বাসা ভাড়া দিতে রাজি হন।

তিনি যে বিশ্বাসে আমাকে তার বাড়িতে থাকতে দিয়েছে, সে বিশ্বাস আমি কীভাবে নষ্ট করি???? বাসাটা পেয়ে বেশ খুশি হয়ে ছিলাম, ছাদের উপর হওয়াই ছাদে যাওয়া নিয়েও চিন্তা নেই। দিন গুলো খুব ভাল যাচ্ছিল, এক দিন ছুটির দিন বাড়িওয়ালার বাসায় গেলাম ভাড়া দিতে। গিয়ে শুনি উনি নাকী বাইরে গেছে, চলে আসবে। আমাকে বসতে বললেন তাঁর স্ত্রী। আমি সোফাই বসলাম, পাশের ছোফাই একটা মেয়ে খাতা কলম নিয়ে কী যেন করছে। একটু লক্ষ করতেই দেখি পরিসংখ্যানের অংক করছে। কিন্তু মেলাতে পারছে না মনে হয়। কিছুখন লক্ষ করার পর বললাম কী অংক মিলছে না???? কিছুখন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে মাথা দিয়ে ইশারা করে না বলল।

—আমি কী হেল্প করতে পারি????

কীছু না বলে খাতাটা এগিয়ে দিল। অংকটা করে বুঝিয়ে দিলাম। মুখটা দেখে মনে হচ্ছে বেশ খুশি হয়েছে। এরপর তার সাথে পরিচিত হলাম, সেদিনই জানতে পারি মেয়েটার নাম মায়া, বাড়িয়ালা এক মাত্র মেয়ে, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে পড়ে। আরো কয়েকটা অংক বুঝিয়ে দিলাম। বাড়িয়ালা আংকেল আসলে তাকে ভাড়াটা দিয়ে চলে আসি।

পরের দিন সন্ধায় বাড়ি ফেরার পর আমার ডাক পরে বাড়িয়ালার বাড়িতে।যেয়ে শুনি মায়াকে পড়াতে হবে, বলেন। আমি তাঁকে অনেক বুঝালাম যে সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত থাকি আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি নাছোড় বান্দা।
অবশেষে রাজি হলাম। অফিস থেকে ফেরার পর সে আমার রুমে গিয়ে পড়ে আসবে। তারপর থেকে প্রতিদিন মায়া আমার রুমে গিয়ে পড়ে আসত। এভাবেই চলতে লাগল দিন। মাস দুয়েক যেতেই বুঝতে পারলাম মেয়েটা আসলে খুব চঞ্চল, তবে বেশ মেধাবি এইটা প্রথমেই বুঝছিলাম। খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। মাঝে মাঝে তাঁদের বাড়িতে ভাল কিছু রান্না হলে আন্টি মায়া পড়তে আসার সময় পাঠিয়ে দিত। এতে করে প্রতিদিনের নিজের রান্না করা খাবার খাওয়া লাগত না। মাঝে মাঝে ভিন্ন সাধ পেতাম।

তারো মাস খানিক পর থেকে শুরু হল মায়ার আকার ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা, সে আমাকে পছন্দ করে। এখন আর ও পড়তে আসে না, সেদিন নিষেধ করার পরে আমিই গিয়ে পড়িয়ে আসি। নিজের বাড়িতে তেমন কিছু বলতে পারে না। মাঝে মাঝে খাতাই লেখার মাঝে লিখে দেই। আমিও সহজেই এড়িয়ে যায়। একদিন পড়িয়ে ফিরে আসার সময় পেছন থেকে ডাক দিলেন বাড়িয়ালা আঙ্কেল।

—তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।
—জী বলুন।
—আসলে মায়া আমার এক মাত্র মেয়ে।

কখন ওর কোন আবদার বা চাওয়া আমরা অপুর্ন রাখিনি আজ ও সবচেয়ে বড় কিছু চেয়ে বসেছে। আমি অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু সে বুঝতে চাই না। আর আমরাও ভেবে দেখলাম ও যা চাই সেটা পেলে যদি ও সুখি হয় তবেই আমাদের ও সুখ। তাই আমরা মায়াকে তোমার হাতেই তুলে দিতে চাই। যদি তোমার কোন আপত্তি না থাকে।

—দেখুন মায়া এখন যা করছে তা ও আবেগের বষে করছ, আমি চাইনা আবেগের বষে ও কোন সিদ্ধার্ন্ত নিক। আর আমি আমার বাবা মায়ের ইচ্ছাতেই বিয়ে করব, তাদের অবাদ্ধ কখনই হয় নি হবও না। তাঁরা যা চাইবে তাই হবে। আপনি মায়াকে বোঝান ওর এখনো পড়া শেষ হয়নি, এখন এসবের ভিতর গেলে নিজেরই ক্ষতি হবে। আমি আসি বলেই রুম থেকে বের হতেই দেখি মায়া দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো, আড়ালে দাঁড়িয়ে হয়ত সব শুনেছে।

আজ এক সপ্তা হল মায়াকে পড়াতে গেলে আর আগের মতন কথা বলেনা, চুপচাপ অংক করে। দেখে বেশ ক্লান্ত লাগে মনে হয় কত দিন ধরে না খেয়ে আছে, চোখের নিচেও কালো দাগ ফুটে উঠেছে। এভাবে আরো কয়েক দিন চলে গেলো, আঙ্কেল এসে বাবার ফোন নাম্বার চাইল। কিছু না ভেবেই দিয়ে দিলাম। দুদিন পরে অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে মায়াকে পড়াতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। আমার বাবা-মা বসে আছে মায়াদের বাড়ি, তাঁরা এখানে কীভাবে??? আর আমাকে না জানিয়ে????? সামনে যেতেই

—কীরে কেমন আছিস???? (মা)
—এইতো ভাল তোমরা এখানে?
—তোর শ্বশুর সব বলছে, দেখ বাবা তোরা সুখি হলেই আমাদের সুখ। আমরা চাই আজই তোদের বিয়ে হোক। তোর শ্বশুর কাজী ডাকতে গেছে।যা বউমার সাথে গিয়ে কথা বল, কাজী আসলেই বিয়ে। আর কীছু না বলে মায়ার রুমের দিকে হাটা দিলাম, নক করলাম।

—নক করতে হবে না চলে আসেন। হবু বউয়ের ঘরে আসতে অনুমতি লাগে না। ভেতরে ঢুকে দেখি মায়া আয়নার সামনে বসে সাজছে। আমাকে দেখে বলল
—দেখুন তো আমাকে বউ সাজে কেমন দেখাচ্ছে?????
—এসব কী পাগলামি মায়া????
—এখনো আপনার পাগলামি বা আবেগ মনে হচ্ছে????
—তা নয় তো কী???
—সে যায় মনে করেন, আপনার বাবা মাও রাজি, এখন। আপনিই তো বলছিলেন তাঁরা যা বলবে তাই করবেন।
—যাই হোক, পড়াশোনা শেষ না করলে তোমাকে আমি বিয়ে করব না। সামনে পরিক্ষা, এখন পড়ছ বিয়ে নিয়ে। এখন বিয়ে হলে তোমার পড়া মাথায় উঠবে।

—ঠিক আছে আজ তো আমাদের বিয়ে, আজ বিয়ে হলেও আমরা যে যার মতন আলাদা থাকব, আমার পড়া শেষ হলে তখন সব হবে। আর তখন যদি আপনার মনে হয় আবেগের বষে আমি বিয়ে করেছি তখন আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েন। আমি কিছু বলব না। এর পর আর কিছু বলার ছিল না। রাতেই কাবিন করে বিয়ে হয়ে গেলো। দুজন দুজনের মতন আলাদা থাকতে লাগলাম।

দুদিন পরে মায়াকে পড়াতে গেলাম, কিন্তু সে পড়বে না। যেহেতু আমরা আলাদা থাকছি সেহেতু সে অন্য টিউটরের নিকট পড়বে। সে আবেগের বষে যে সিদ্ধান্ত নেই নি তার প্রমান দিবে সে। আর আমি যাতে তার প্রতি দুর্বল না হয়ে পরি। তবে আমার আড়ালে আমার খেয়াল ঠিক রাখে, আমি অফিসে বেড় হয়েগেলে নিজে এসে বিছানা গোছাবে রুম পরিস্কার করবে। মাঝে মাঝে জামা কাপড়ও পরিস্কার করে দেই। বেশ ভালই লাগে, দিন দিন যেন ওর মায়াতে জড়িয়ে পরছি…. হাজার হলেও বউ বলে কথা। দেখতে দেখতে মায়া পড়ালেখা শেষের দিকে।

বর্ষার দিন, অনেক দিন হল বৃষ্টিতে ভেজা হয় না। আজকের বৃষ্টি তেখে ভেজার লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই অফিস থেকে বের হয়ে রিকসা না নিয়ে, পাশের দোকান থেকে একটা পলি ব্যাগ নিয়ে তার ভেতর মোবাইল আর মানিব্যাগ ঢুকিয়ে বৃষ্টির মাঝে হাটতে হাটতে বাড়ি ফিরলাম। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে দিলাম ঘুম। সকালে ঘুম ভাংতেই দেখি বিছানা থেকেই উঠতে পারছি না। শরিল জ্বরে পুরে যাচ্ছে। কোন করমে উঠে নাশতা করে ঔষধ খেয়ে আবার ঘুমালাম। সন্ধার দিকে জ্বর কমলে বাইরে গিয়ে খেয়ে এসে ঔষধ খেয়ে শুয়ে পরলাম। পরের দিন ঘুম ভাংতেই দেখি জ্বর আবার বাড়ছে, ওরকমই শুয়ে থাকলাম। দুপুরে মাথায় ঠান্ডা কিছুর স্পর্শ পেতেই ঘুম ভেংগে গেলো। তাকিয়ে দেখি মায়া মাথাই পানি দিচ্ছে। আমার দিকে একবার তাকিয়ে পানি ঢালাতে মন দিল কিছুখন পরে মাথা মুছে দিয়ে খাবার নিয়ে এলো, নিজে হাতে খাইয়ে দিচ্ছে আর বলছে

—আমি না হয় অভিমান করে আছি, তাইবলে এরকম অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকবেন??? একবার তো বলতেও পারতেন। যদি কিছু হয়ে যেতো??

নিজে সামনে না আসলেও খবর তো ঠিকই রাখি। প্রতিদিন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আপনার অফিস যাওয়া দেখি। তারপর রুমে এসে সব কাজ করে দিয়ে যাই। কিন্তু আজ দুদিন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকলাম কিন্তু আপনাকে অফিসে যেতে দেখলাম না। তাই সকাল থেকেই মনের ভেতর কিরকম করছিল, কিছু হয়নি তো না কোথাও গেলেন। তাই চাবি দিয়ে প্রতিদিনের মতন দরজা খুলে রুমে এসে দরজা খুলতেই দেখি বিছানাই শুয়ে আবলতাবল বকছেন। এখনতো কাবিন করে বিয়ে করা বউ, একবার বলতে তো পারতেন আপনি অসুস্থ। জানেন কত টেনশন হচ্ছিল। কিন্তু যার জন্য এত টেনসন করি সে বুঝলে হয়।

কথা গুলো বলছে আর নিজ হাতে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে। চোখ দুটো দিয়ে অঝড়ে পানি ঝড়ছে পাগলিটার। মোছার চেষ্টাও করছে না নিজের হাত দিয়ে মুছে দিলাম চোখ দুটো। পাগলিটার ঠোটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল। বলতে গেলে এবারই প্রথম স্পর্শ করলাম। এই পাগলিটা আমার জন্য এত ভাবে??? নিজেকেই প্রশ্ন করলাম। এত চিন্তা করে। রোজ আমি অফিসে গেলে রুমে এসে নিজ হাতে সব কাজ করে দিয়ে তার পরে কলেজে যাবে। আমার আগোচরেই আমার সব খোজ নিবে, আর আমি ওর এসব কাজকে আবেগ বলে উরিয়ে দিতাম এতদিন???? দেকেও না দেখার ভান করতাম। আসলেই কী আবেগ ছিল না আমার বোঝার ভুল???? খাওয়া শেষ হতে আমাকে শুইয়ে দিয়ে চলে গেলো। কিছুখন পরে বই নিয়ে ফিরে এলো এসেই

—আমি পাশের ঘরে পড়ছি কিছু লাগলে ডাকবেন।
—আচ্ছা যাও।

বিকেলের দিকে জ্বর অনেক টা কমে এলো। রাতটা আজ মায়া আমার সাথেই ছিল। সকাল হতে বেশ সুস্থ বোধ করলাম। মায়া আজ নিজ হাতে রান্না করছে। মাঝে শ্বশুর শ্বাশুরিও এসে দেখে গেছেন। রান্না শেষে আজো নিজ হাতে খাইয়ে দিল, বউটা আমার খুব ভাল। দুপুরের দিকে ফোনটা বেজে উঠল, দেখি স্যারের ফোন। দুদিন অফিসে যাইনি বলে হয়ত ফোন করছে। স্যারকে সবটা খুলে বললাম, স্যার পুরোপুরি সুস্থ হলে অফিস যেতে বলেই কেটে দিলেন। ফোন রাখতেই মায়া এসে জিগেস করল

—কে ফোন দিয়েছিল???
—অফিস থেকে স্যার ফোন দিয়েছিল।
—কী বললেন???
—সুস্থ হলে অফিস যেতে, আর বউকে নিয়ে ঘুরতে।

কথাটা বলতেই মায়া লজ্জা পেয়ে চলে গেলো। এই প্রথম আমার মুখে বউ কথাটা শুনেই মনে হয় লজ্জা পাইছে।
বিকেল হতেই মায়াকে ডাক দিলাম…

—মায়া এদিকে এসো তো। সেই যে বউ কথাটা শুনে লজ্জা পেয়ে পাশের রুমে গেছে আর আসেনি সামনে মাথা নিচু করে রুমে এলো।

—কিছু বলবেন??? টেবিলের উপর একটা প্যাকেট দেখিয়ে বললাম যাও রেডি হয়ে আসো ঘুরতে যাব এখন
—কী আছে ওতে।
—প্যাকেট খুললেই দেখতে পাবে, জলদি কর।

প্যাকেট টা নিয়েই চলে গেলো। আপনারা ভাবছেন কী আছে??? একটা শাড়ি, অনেক আগেই কিনেছিলাম, ভাবছিলাম যেদিন ওকে তুলে আনব সেদিন দিব। ঘন্টা খানিক পরে সে ফিরে এলো। পরনে কালো শাড়ি, ম্যাচিং হিজাব। অনমনেই বলে ফেললাম “”মাসআল্লাহ”” কত সুন্দর লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।

—সব ঠিক আছে কিছু একটা মিসিং….
—কী মিসিং???? টেবিলের ডয়ার থেকে কিছু একটা বের করে মায়ার সামনে হাটু গেরে বসে বললাম
—-ডান পা টা দেখি….
—কেন কী করবেন???
—আহা, এত কথা বল কেন, যা বলছি কর। মায়া পা এগিয়ে দিতেই পাটা ধরে আমার হাটুর উপর রাখলাম, হাতে থাকা নুপুর পরিয়ে দিলাম। পড়ান হতেই মায়া বলল

—নুপুর, কেথায় পেলেন????
—চুরি করে আনছি হয়ছে, খালি বেশি কথা বলে।
—বাহ রে….
—তোমার জন্য কিনছিলাম, এখন চল দেরি হচ্ছে…

সারা বিকাল ঘুরলাম, সন্ধাই খেয়ে বাসাই ফিরলাম। আজ মায়াকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে অনেক খুশি এতটা খুশি হতে আগে কখনো দেখি নি আমি। এরকম ভাবেই অসতে আসতে আমাদের মাঝের দুরত্ব কমতে লাগল সাথে ভালবাসা বাড়তে লাগল। মায়ার পড়াশোনা শেষ হতেই অনুষ্ঠান করে তুলে নিলাম। এখন সে আড়াল থেকে নয় সামনে থেকেই সব করে। সবসময় কড়া নজরে রাখে। ছুটির দিনে বাইরে ঘোরা বিভিন্ন কাজে ওরে সাহায্য করা এই আমার কাজ নামাজের সময়টা বাদ দিলে। মাঝে মাঝে মায়াকে রান্নাকরেও খাওয়াতে হয়। মায়ের থেকে রান্না শিখেছিলম। একা থাকার সময় বেশ কাজে দিয়েছিল।

অনেকে বলে রান্না মেয়েদের কাজ তাদের বলব আরে ভাই রান্না একটা শিল্প ছেলে মেয়ে বলে কোন কথা নেই।
লক্ষ করেন বড় বড় হোটেলের রান্না পুরুষরাই করে। অনুষ্টান বাড়ির রান্নাও পুরুষরাই করে। মায়া আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দেই যেদিন আমি রান্না করি। মাঝে মাঝে আবদার করে সেগুলো পুরন করতে হয়। এখন আমি ভাবি এত বড়লোকের মেয়ে কী দেখে আমাকে ভালবাসছিল??? মন বলে ভালবাসা গরিব বড়লোক দেখে হয়নারে পাগলা, চেহারা দেখেও না হলেও তা টিকে না। ভালবাসতে মন লাগে মন। এখন ওর নতুন আবদার ওর মেঘাকে লাগবে। কী বুঝলেন না??? আরে ভাই সবটা কী বুঝিয়ে বলতে হয়??? নিজেই বুঝে নেন। পাগলির এই আবদারটা খুব তারাতারিই পুরন করতে হবে দোয়া করবেন।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত