নিভৃতের নিশিকন্যা

নিভৃতের নিশিকন্যা

যদি বলি মস্তিষ্কের গভীরের সব নিউরন গুলো শুধু তোমার একটু ভালবাসার অপেক্ষায় আছে।।। কয়েক বছর আগের কথা, তখন আমি এক বেসরকারি ভার্সিটি থেকে বি এস সি করছি। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছি বলে নিজের চলার জন্য দুইটি টিউশনিও করাতাম। সামনে ইদুল ফিতর তাই ভার্সিটি বেশ কিছুদিন আগে বন্ধ হলেও টিউশনির জন্য আমাকে থেকে যেতে হয়। মাসের শেষ অব্দি পড়িয়ে যখন টিউশনি থেকে বেতন নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিব তখন ইদের জন্য আর মাত্র চারদিন বাকি। সময়মত স্টেশনে এসে বসে আছি। একটু পরেই ট্রেন ছেড়ে দিবে। টিকেট কেটেছি কিন্তু ভিড়ের কারনে ট্রেনে উঠেও নিজের সীট অব্দি পৌছাতে পারলাম না।

গেটেই দাড়িয়ে আছি। এমন সময় দেখলাম এক মেয়ে দুটো বড় বড় সুটকেস নিয়ে ট্রেনের দিকে এগিয়ে আসছে। অনেক চেষ্টা করেও সে তাড়াতাড়ি আসতে পারছে না। নিজে চিন্তা করতে লাগলাম মেয়েটিকে সাহায্য করব কিনা। চিন্তা করতেই ট্রেন থেকে নেমে আমি মেয়েটির কাছে গিয়ে সুটকেসগুলো নিয়ে ট্রেনে উঠিয়ে দিলাম। মেয়েটি আমাকে কিছু না বলে ট্রেনে উঠে গেল। মেয়ে বলে সামনের লোকজন তাকে ভেতরে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দিল। একটু আগে এই লোকেরাই আমি ভেতরে যেতে চাইলেই বলল, যাওয়ার জায়গা নেই। অনেকটা হাসি পেল লোকদের কর্মকান্ড দেখে। আর মেয়েটিও কেমন যে তাকে সাহায্য করলাম অথচ সে একটি সহানুভুতিও দেখালো না।

নিজের কপাল মনে করে আমি ট্রেনে উঠে গেটেই দাড়িয়ে থাকলাম। ট্রেন ছেড়ে দিল। অনেকদিন পর বাসায় যাচ্ছি এটা ভাবতেই মনটা ভাল হয়ে গেল। মা বাবা আর বড় ভাইয়া ভাবিকে কতদিন পর দেখব এসব ভাবতে ভাবতে অনেকটা সময় কেটে গেল। শুধু আফসোস একটাই যে বাসায় যাওয়ার সময় এর আগে দিনের বেলায় যেতাম কিন্তু আজ রাতে যেতে হচ্ছে। একটু পরে টাঙ্গাইল স্টেশন আসলে লোকের ভিড় অনেকটা হালকা হয়ে এলো। আমি এবার ভেতরে যেতে পারলাম। টিকিটে সীট নাম্বার অনুযায়ী সীটে যেতেই দেখি সেই মেয়েটি সীটে বসে আছে। আমি দেখলাম সে ফোনে ব্যস্ত। কিছু বলতে যাব কিন্তু এক অজানা সংকোচের কারনে বলতে পারছি না। তবুও একটু সাহস সন্ঞ্চয় করে আমি মেয়েটাকে বললাম, এই যে মিস, এই সীটটা আমার।

ও একটু বিরক্ত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে কানের ইয়ারফোনটা খুলে বলল, কিছু বললেন কি? আমার অবাক হওয়ার পালা শেষ হয়নি। তাই আবার তাকে বললাম, বলেছিলাম যে এই সীটটা আমার। ও এবার চোখটা ছোট করে বলল, এই সীটে কি আপনার নাম লেখা আছে নাকি? এরকম ট্যারা একটা উত্তর পেয়ে মেয়েটার ওপর অনেক রাগ হতে লাগলো। তবুও রাগটা চেপে রেখে তাকে আমার টিকিটটা দেখালাম। এবার বলল, আমাকে কি আপনার টিটি মনে হয় যে টিকিট দেখাচ্ছেন। যান অন্য কোথাও গিয়ে বসুন। আমাকে আর বিরক্ত করবেন না বলেই আবার কানে ইয়ারফোন গুজে দিল। রাগের সীমা আমার পেড়িয়ে গেছে। অজানা কারনবসত মেয়েদেরকে কেন জানি খারাপ ভাবতাম কিন্তু আজ ব্যপারটা পাকাপক্ত হল।

মেয়েটাকে এই চলন্ত ট্রেনের মাঝে কিছু বলতেও পারছি না তাই রাগ হয়ে আবারও গেটের কাছে এসে দাড়লাম। জমুনা সেঁতু পার হওয়ার সময় এক শীতল বাতাস যেন মনটাকে ঠান্ডা করে দিল। রাতের বেলা ট্রেনের মৃদু আলোতে সামনের অন্ধকার নদীটাকে যে এতটা কাছের মনে হতে পারে, এটা এভাবে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। জমুনা সেঁতু পার হওয়ার পরেই এক বৃদ্ধকে অন্য বগী থেকে এই বগীতে আসতে দেখলাম। টিকিট মনে হয় কাটতে পারে নি তাই সীট পাচ্ছে না হয়তো। উনি যখন সামনে এগিয়ে গেলেন তখন দেখলাম সেই মেয়েটি সীটটা ছেড়ে দিল এবং বৃদ্ধকে বসতে বলল। বৃদ্ধের অনেক নিষেধ সত্যেও মেয়েটি সেই বৃদ্ধকে বসিয়ে দিল।

বৃদ্ধও যেন অনেকটা সস্তি পেল। এটা দেখে মেয়েটার ওপর যে রাগ ছিল তা মুছে গেল মুহুর্তেই। আসলে সব মেয়ে মনে হয় খারাপের পাল্লায় পরে না। কিন্তু মেয়েটা আমার সাথে ভালভাবে কথা বলতে পারত। মেয়েটার মধ্যে মানবতা আছে কিন্তু আমার সাথে ওভাবে কথা বলার মানে কি? আগ বাড়িয়ে সাহায্য করতে গিয়েছিলাম এটাই কি আমার ভুল? আর ভাবতে পারলাম না এতকিছু। তাই আবার সামনের অন্ধকার পরিবেশ দেখাতে মন দিলাম। ঠিক এর কিছুক্ষন পরেই পিছন থেকে কে যেন ডাকলো। ঘুরে দেখি মেয়েটা। বলল, এই যে মিস্টার, গেট থেকে সরে আসুন তো। আমি একটু বাতাস পেতে চাই। মেয়েটা এমনভাবে বলল যেন অর্ডার করছে।

আমি বললাম, আপনি তো পাশের গেটে দাড়িয়েও বাতাস পাবেন। শুধু শুধুই আমাকে সরে আসতে বলছেন কেন? ও এবার অনেকটা রাগিমুখে বলল, আপনি সরে আসবেন নাকি আমি অন্য কোন ব্যবস্থা করব? মেয়েটার ওপর এতো পরিমান রাগ হল যে যদি এক মুহুর্ত ওখানে থাকি তো ওকে মুখ দিয়ে বলেই সব শেষ করে দিব। কিন্তু কোন ঝামেলায় পরতে চাই না তাই অনেকটা রেগেই সেখান থেকে বগির অন্যপাশের গেটে চলে আসলাম। যতটুকু সম্ভব মেয়েটিকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। অন্য সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করতেই ট্রেন নাটোরে পৌছে গেল। কিন্তু অনেকক্ষন হল ট্রেন ছাড়ছে না। একটু পরে মাইকে শোনা গেল যে সামনে রেললাইনে সমস্যা হওয়ায় ট্রেন আর সামনে যেতে পারবে না। অগত্যা এই রাতের মধ্যেই ট্রেন থেকে নেমে যেতে হল। স্টেশন থেকে বের হয়ে সামনে বাস ধরব এরকম চিন্তা করেই যখন হাটছি তখন মনে হল পেছন থেকে কেউ ডাকছে।

পেছন ফিরে দেখলাম, সেই মেয়েটি তার সুটকেস গুলো অনেক কষ্ট করে নিয়ে হাটছে। অনেক সমস্যা হচ্ছে তার। আমি আশে পাশে তাকালাম নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে মেয়েটা আমাকেই ডাকছে কি না। একটু পরে মেয়েটাই কাছে এসে বলল, কখন থেকে ডাকছি, আপনি কি কানে কম শোনেন? আবারও রাগটা উঠে গেল। মনে মনে ভাবছি মেয়েটার সমস্যা কি। রাগটা মনে গেথে রেখে মেয়েটাকে বললাম, এই যে ভাইয়া, এই যে ভাইয়া বলে যদি ডাকেন তাহলে কি করে বুঝবো যে আমাকে ডাকছেন? আমাকে কি জাতির ভাই মনে হয় নাকি? আর কেনই বা ডাকছেন? মেয়েটা এবার অনেকটা ভাব নিয়ে বলল, দেখছেন যে একটা মেয়ে একা এতকিছু নিয়ে যেতে পারছে না, তাকে কি সাহায্য করা আপনার দায়িত্বের মধ্যে পরে না? আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম কথা শুনে।

বললাম, আপনি সাহায্য কিভাবে আশা করেন তাও আবার আমার কাছ থেকে? ট্রেনে সীটে বসতে দিলেন না। উঠার সময় সুটকেসগুলো তুলে দিলাম কিন্তু কোন সহানুভুতি পেলাম না। এরপর কেউ কি সাহায্য করতে চাইবে আপনার? মেয়েটি বিন্দুমাত্র লজ্জিত না হয়ে বলল, ঠিক আছে আপনাকে সাহায্য করতে হবে না শুধু সুটকেসগুলো নিয়ে আমায় দিনাজপুরের একটি বাসে তুলে দিন। আমি এবার সোজাসোজি উত্তর দিলাম, আমি পারবোনা। মেয়েটা এবার অনেকটা রাগ দেখিয়ে বলল, কেন পারবেন না? আমি বললাম, কারন আমিও দিনাজপুরেই যাব। মেয়েটি এবার একটু হেসে বলল, ভালই তো, তাহলে তো একসাথে যাওয়া যাবে।

আমি এবার ছোট করে বললাম, আমি আপনার সাথে যাব না। মেয়েটি হাসি মুখ কোথায় উড়িয়ে দিয়ে রাগি মুড এনে বলল, আপনি নিয়ে যাবেন নাকি আমি আপনার অন্য কোন ব্যবস্থা করব? মেয়েটার এরকম কথা শুনে আমি একটু পিছনে ঘুরে নিজের কপালে হাত দিয়ে মারছিলাম। মনে মনে ভাবছি, কি ব্যবস্থা করবে মেয়েটি? সালার বিপদে পরেছে নিজেই আবার রাগও দেখাবে। এই মেয়ে তো দেখছি ভদ্রতাও জানে না। নিজের জেলার মেয়ে তাই ফেলে আসতেও কেমন যেন লাগবে। তাই নিয়ে আসব মেয়েটিকে ভাবলাম শুধু মেয়েটি যদি একটু ভদ্রতা জানতো। নিজের কপালকে দোষ দিয়ে যখন সামনে ঘুরলাম তখন মেয়েটা বলল, কি সিদ্ধান্ত নিলেন? অনেক রাগের জন্য এবার হেসে ফেললাম রাগ কন্ট্রোলের জন্য। এরপর একটা সুটকেস নিয়ে বললাম, চলুন। মেয়েটা এবার আমার পিছন পিছন আসতে লাগলো।

নাটোর বাসস্টান্ড পৌছাতে পৌছাতে মেয়েটি অনেকক্ষন ধরে কি সব বলছিল যে তার বাবা নাকি কি অফিসার। তার এক চাচ্চু আবার ওসি। বুঝলাম না এসব বলে কি লাভ হবে তার। তবুও বলেই চলেছে। বাসস্টান্ডে এসে এক বেন্চির উপর বসলাম। অনেক দুরত্ব বজায় রেখে মেয়েটাও বেন্চিতে বসল। একসময় মেয়েটা বলল, কই এখনো বাস আসছে না কেন? এই আপনার কোন কুমতলব নেই তো? এরকম আরও কিছু বলতে যাবে তখন নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে একটু জোর গলায় বললাম, আপনি কি একটু চুপ করে থাকতে পারেন না? আর কুমতলব থাকলে কি করবেন আপনি? আপনার বাবা চাচা এসে বাচাবে আপনাকে? এসব শুনে মেয়েটা অনেকটা চুপ হয়ে গেল। মুখটা কেমন যেন শুকিয়ে গেল।

একটু পরেই বাস আসতে শুরু করল। হাত নাড়িয়ে বাস থামানোর চেষ্টা করছি আমি। কিন্তু থামছে না। এদিকে আবার বেন্চিতে বসতেই দেখি মেয়েটি মাথা নিচু করে বসে আছে। আমি পানির বতলটা সামনে এগিয়ে দিয়ে বললাম, সরি, আসলে ওভাবে বলা আমার ঠিক হয় নি। একটু পানি খেয়ে নিন। মেয়েটি পানির বতলটি নিয়ে নিজের মুখ চোখে একটু পানি দিল। তারপর আবার আমার কাছাকাছি এসে বসল। আমি বললাম, একটু দুরত্ব রেখে বসুন নয়ত আবার কখন বলবেন যে আমিই আপনার কাছে এসে বসেছি। মেয়েটি এবার কিছু বলল না। তবে সরেও গেল না। একটু পরে কয়েকটা বাসের মধ্যে একটা বাস থামলো।

আমরা ওই বাসে উঠলাম। দিনাজপুরে যখন পৌছালাম তখন বাজে রাত ৩:৫০। সকাল হতে আরও প্রায় দুঘন্টা বাকি। এতোক্ষন ধরে মেয়েটার সাথে কোন কথাই হয় নি। মেয়েটাকে বললাম, এখনো তো সকাল হয় নি আপনি বাড়ি যাবেন কিভাবে। কোন কথা বলল না। আমি আবারও বললাম, কাউন্টারেই বসে থাকুন। সকাল হলে চলে যাবেন। আমি আসি। এবার মেয়েটি একটু আমার দিকে তাকালো। সেই চাউনীতে কি ছিল জানি না তবে চোখ দুটি যেন বলল, আমায় একা রেখে যাবেন না। অগত্যা আমিও থেকে গেলাম। একটু সকাল হতেই তাকে রিকশায় উঠিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম। আমিও আমার গন্তব্যের জন্য পা বাড়ালাম। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে মেয়েটা একবারের জন্য ধন্যবাদ জানালো না।

তাই মেয়েটিকে ভুলে যেয়ে সামনের দিকে যা করব তার প্লান করতে লাগলাম। বাসায় এসে বাবা মা ভাইয়া অনেক খুশী হল। সবার সাথে ভালমন্দ কথা হল। ইদের পরেই এক চাচাতো বোনের বিয়ে। তাই মোটামোটি কিছু দায়িত্ব পরল আমার উপরে। ইদে অনেক ভাল লাগল। পরেরদিন থেকেই বোনের বিয়ের কাজকর্ম শুরু করছি। কিন্তু বোনের হলুদে এমন কাউকে দেখলাম যাকে কোনভাবেই এখানে আশা করিনি। সেই মেয়েটি এসেছে বরের পক্ষ থেকে। আমাকে দেখে সেও অবাক হয়েছে ভালই। হলুদে একটু মজা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু এই মেয়েটির জন্য কিছুই হল না। পরেরদিন বিদায়ে মেয়েটি অনেক জালিয়েছে আমায়। আপুকে বিয়ের দিনে সাজানো শেষ হলে আমি কিছু জরুরী কাজে আপুর রুমে আসলাম। এসে দেখি বরপক্ষের অনেক মেয়েই আপুকে ঘিরে বসে আছে।

দেখলাম ওই মেয়েও ভেতরে আছে। আশ্চর্যের ব্যপার হল এখনো আমরা একে অপরের নাম জানি না। আমি আসতেই মেয়েটি বলল, এই সবাই সরে যাও, দেখছো না ভাবের বস্তা আসছে এদিকে। অনেকটা লজ্জায় পরে গেলাম আমি। রাগ হল আবারও কিন্তু বরাবরের মত কিছুই করতে পারলাম না আমি। মেয়েটি এভাবে বলার পর সবাই মেয়েটাকে আর আমাকে দেখছে। আমি তখন আপুকে কিছু না বলেই চলে আসি বিয়ের আসর থেকে। কেমন যেন রাগ লাগলো নিজের ওপর। মনে হল মেয়েটাকে সাহায্য করাই সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে। রাতে যখন বাসায় আসলাম তখম বাবা মা সবাই জিজ্ঞেস করল কোথায় ছিলাম আমি। বিদায়ের সময় আপু নাকি খুজছিল আমায়। এসময় ভাবি বলল, আপুর সাথে আরও একজন খুজছিল কিন্তু না পেয়ে মনটা একটু খারাপ হয়েছিল মনে হয়।

একটু অবাক হয়ে ভাবিকে জিজ্ঞেস করলাম, কে সে? তখন ভাবি শুধু এটুকু বলল, দেখতে শুনতে ভালই মেয়েটা। শুধু বলল, পরেরবার দেখা হলে নাকি নিজের অনেক কথা বলার আছে তার। এটা বলেই একটা পানির বতল এগিয়ে দিল আমার দিকে আর বলল, মেয়েটা দিয়েছে। বতলটা দেখে আমি এবার নিজেই বতল হয়ে গেলাম। এই বতলটাই আমি ওই মেয়েটাকে দিয়েছিলাম পানি খাওয়ার জন্য। পরে আর ফেরত নেয়া হয়নি। বুঝতে পারলাম ওই মেয়েটাই খোজ করছিল আমার। কিন্তু এখানকার কেউ কি জানে ওই মেয়েটির জন্য আমি আজকে ছিলাম না। আর দেখা হলে কি এমন বলবে আমায়। আবারও অপমান। আবারও সবার সামনে লজ্জায় ফেলবে এই তো। এসব চিন্তা করতেই আমি রুমে চলে আসলাম। পরেরদিনে সবাই আমাকে বউভাতে আপুর শশুরবাড়ি যেতে বললে আমি না করতে পারলাম না।

ওখানে যেয়ে দেখি ওই মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে থাকছে। আমার তার সাথে কথা বলে নিজের মানসম্মান নষ্ট করার কোন ইচ্ছে নেই তাই যতটুকু পারছি ইগনোর করছি তাকে। কিন্তু একসময় সে আমার হাত ধরে সাইডে নিয়ে এলো। এরকম অবস্থায় আমি মানসম্মানের ভয়ে কিছু বলতে পারছি না। এভাবে দুজনকে আলাদাভাবে দেখলে কে কি মনে করবে এটা ভাবতেই আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। মেয়েটা এবার বলল, সমস্যা কি আপনার হুম? এভাবে বারবার ইগনোর করছেন কেন? একটু কথা বলতে চাচ্ছি দেখেই ভাব নেওয়া শুরু করেছেন? আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, দেখুন, আমি কখনও ভাব নেই না। আর আপনি যা বলবেন তারাতারি বলুন এভাবে আলাদাভাবে আমাদের কেউ দেখলে অনেকে অন্য কিছু ভাবতে পারে। তাই প্লিজ আপনি তারাতারি বলুন।

মেয়েটি বলল, অন্য কিছু কি ভাববে হ্যা? আর ভাবলে সমস্যা কোথায়? আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে বললাম, আপনি কি পাগল, কি বলছেন এসব? ও বলল, যা বলছি ঠিক বলছি। আমি এই মেয়ের থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য মেয়েটার পিছনে চোখ করে বললাম, এমনিই কথা বলছিলাম, অন্য কিছু না। তখনি মেয়েটি পেছনে তাকালো আর এই সুযোগে আমি আবার সবার মাঝে দৌড়ে চলে এলাম। একটু পরে মেয়েটা আমাকে দেখে হাসতে হাসতে শেষ। এরপর মেয়েটাকে আর কিছু বলার সুযোগ দিলাম না আমি। কিন্তু তবুও আসার সময় মেয়েটা আমার হাতে একটা চিরকুট ঢুকিয়ে দিয়েছিল। চিরকুট টা নেওয়ার সময় তার হাতের নিচে আমার হাত ছিল। কেমন যেন শরীরটা শিহরে উঠেছিল আমার।

তখনি প্রথম মনে হয় মেয়েটিকে ভালভাবে দেখেছিলাম। কালকেশী চুল, চোখে টানা কাজল, ঠোটে হালকা মিস্টি কালারের লিপস্টিক দিয়ে মেয়েটিকে এতটা সুন্দর লাগবে, তা আমি কখনও ভাবতেই পারিনি। এভাবে কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম জানি না তবে মেয়েটি যখন তার হাতটা ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য চোখের সামনে হাত নাড়ালো তখন আমার হুশ ফিরলো। কেমন যেন আবারও লজ্জা পেলাম, আর মেয়েটিকে দেখলাম মুখ ঘুড়িয়ে দৌড়ে পালালো। মনে হয় সেও লজ্জা পেয়েছে। ভুলেই গেছি মেয়েটার ওপর আমি রেগে ছিলাম। বাসায় এসেও আমি কেমন যেন ঘোরের মাঝে কাটাতে লাগলাম। শুধু মেয়েটার কথাই ভেবে যাচ্ছি। তখনি মনে পড়ল চিরকুটের কথা। বের করেই দেখলাম,

এই যে মিস্টার ভাবের বস্তা, কোন কিছু বলার তো সুযোগ দিলেন না। সত্যি বলতে সেদিনের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়ার কথা আমি ভেবেছিলাম কিন্তু এখন ভাবছি আপন মানুষদের ধন্যবাদ দেওয়াটা কেমন যেন বেমানান। মনে করলাম আপন মানুষ হিসেবে আপনার দায়িত্ব ছিল এটা। আর সত্যি বলতে ট্রেনে আপনাকে রাগিয়ে অনেক মজা পেয়েছিলাম আমি। তাই বিভিন্ন কথা বলে রাগাতে খুব ভাল লাগতো আমার।

রাগলে আপনার চেহারা কেমন যেন লাল হয়ে যায়। মনে হয় নিজে গিয়ে আপনার গুলুগুলু গালটা একবার টেনে দেই কিন্তু চেষ্টা করেও পারিনি। তবে পরেরবার অবশ্যই করব হুম। আর আপনি তখন রাগ করবেন না যেন। পরেরবার দেখার অপেক্ষায় রইলাম। আর হ্যা সবচেয়ে বড় কথা, অন্য কোন মেয়েকে এভাবে ইনোসেন্টলি সাহায্য করবেন না। সবাই ভাল হয় না আমার মত আবার ভাল হলেও প্রেমে পরে যেতে পারে। তাছাড়া আপনি যে বোকা তাতে সবকিছুই সম্ভব। আমি চাই না অন্য কেউ আপনার মত বোকা ছেলের প্রেমে পরুক। ভালো থাকবেন।

ইতি,
নিভৃতের নিশিকন্যা….

চিঠিটা পরে মনের মধ্যে এতদিন ধরে মনে যেই লাড্ডুটাকে যত্ন করে বড় করেছিলাম সেই লাড্ডুটা কেমন যেন ফাটাশ করে ফেটে গেল। আমি তো বাতাসে উড়ছি রিতিমত। মেয়েটার এই বাচ্চামি স্বভাবটাকেই কেন জানি খুব ভাল লাগল। বুঝতে পারছি আমি মেয়েটার প্রেমের সাগরে সাঁতার কেটে কোন কুল পাচ্ছি না। অল্প একটু সময়ে মেয়েটাকে এভাবে ভালবাসব এটা ভাবতেই পারিনি। তখনি আবার মনে হল, আচ্ছা মেয়েটা আমার সাথে মজা করছে নাতো। এটা ভাবতেই মনটা কেমন যেন গোমড়া হয়ে গেল।

মনে মনে ভাবলাম, মেয়ে মানুষের কথা বলা যায় না। হতেও পারে আবার অপমানের জন্য এই পরিকল্পনা করেছে। তাই নিজেকে আরও সাবধান থাকতে হবে। কিন্তু মন আবারও বলল, এটা নিশ্চয়ই মেয়েটার মনের ভালবাসা। এটা কোন মিথ্যে নাটক নয়। এরকম দোটানার মধ্যে পরে শেষে চিরকুটটা আমার ডায়রীতে সাজিয়ে রাখলাম। ভাবলাম যদি সত্যি সে আমাকে ভালবেসে থাকে তবে সে আমার হবেই। পরোক্ষনে মনে হল মেয়েটার নামটা এখনো জানি না। ইচ্ছে হল আপুকে জিজ্ঞেস করে নামটা শুনি কিন্তু পরে ভাবলাম আমিও নাহয় একটু অপেক্ষা করি তাকে ভালভাবে জানার জন্য।

এরপরে ইদের ছুটি কাটিয়ে আবার এই ব্যস্ত শহরে চলে আসি। একদিন রাতে “অপেক্ষায় আমি” এই নামের এক আইডি থেকে রিকুয়েস্ট আসল। প্রোফাইল দেখে রিয়েল মনে হল। তাই একসেপ্ট করলাম। পরেরদিন মেসেজ আসল, হাই। আমি হেলো বললাম। এরপর নিত্যদিনের বিভিন্ন কথা নিয়ে এই অচেনা আইডির সাথে কথা হত। একটা সময় আমরা অনেক ফ্রি হয়ে গেলাম। তার সাথে আমার শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় কথাই হত। তাই একদিন আমি তার নাম জানতে চাই। সে বলল, এতদিন যখন নাম জানতে চাই নি তখন এখন আর শুনতে হবে না। কখনও দেখা হলে বলব। এরকম কথা শুনে আমিও আর জোর করলাম না। এক ভেকেশনে আমি বাড়িতে আসলাম। বাড়িতে আসতেই মা বলল আমাকে নাকি আপুর বাসায় যেতে হবে। অনেকদিন হল আপুর সাথে ভালমত কথা হয় নি তাই আমিও আপুর বাসায় যাওয়ার জন্য রাজী হলাম।

আপুর বাসায় যেয়ে দুলাভাইর সাথে অনেক কথা হল। একটু পরেই দেখলাম বাসায় অনেক সরগোল হচ্ছে। আপুকে জিজ্ঞেস করলে আপু বলল, তোর দুলাভাইর কাজিনরা এসেছে। এটা শুনেই আমি ছাদে চলে গেলাম। শেষ বিকেলে সুর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে তখনি দেখলাম এক মেয়ে ছাদে আসল। হ্যা, মেয়েটি সেই কেশওয়ালী। যাকে দেখে প্রথম কোন মেয়েকে ভালবেসেছি। প্রথম কাউকে নিজের ভাললাগার কটোরে আবদ্ধ করেছি। মেয়েটি আমার পাশে আসল। আমি উঠে আসতে চাইলে সে বলল, আজও কি রেগে আছেন। আমি ভদ্রতা দেখিয়ে বললাম, না, তবে এভাবে দুজন একসাথে আলাদাভাবে কথা বলতে পারি না। ছাদে কেউ এসে পরলে অন্য কিছু মনে করবে।

তখন মেয়েটি বলল, অন্য কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে নিজের মানসম্মানে লাগে না? ফেসবুকে কতজনের সাথে কথা বলেন আপনি। আমি বললাম, আমি শুধু একজনের সাথেই অজানাভাবে কথা বলি। তাছাড়া শুধু বন্ধুদের সাথেই কথা বলি। মেয়েটি বলল, হ্যা, কিন্তু সেই অজানাজনের এখনো নামটাই জানতে পারেন নি। কত বোকা আপনি ভাবুন একবার। আমি এবার চোখটা সরু করে তাকে বললাম, আপনি কিভাবে কানলেন এসব? তাকিয়ে দেখি মেয়েটা মুচকি হাসছে। আমি আবারও বললাম, তবে কি আপনি সেই আইডি চালাতেন। মেয়েটি বলল, বাহ আপনি তো খুব চালাক কত সহজেই ধরে ফেললেন বলেই হাসতে লাগলো।

আমি রেগে এবার তাকে বললাম, আমার সাথে এরকমভাবে মজা নিয়ে আপনি ঠিক করেন নি। আর কত লজ্জা দেবেন আমায়? আর কতই অপমান করবেন? মেয়েটির হাসি মুখটা যেন ধীরে ধীরে কালো হতে লাগলো। আপনি আর কখনই কথা বলবেন না আমার সাথে। বলেই যখন চলে আসছিলাম তখন পেছন থেকে হাতটা টেনে ধরে মেয়েটি বলল, আমি সত্যি শুধু বুঝতে চেয়েছিলাম আপনি কেমন। তাছাড়া আমি সত্যি আপনাকে অনেক ভালবাসি। ভালবাসার মানুষকে শুধু একটু জানতে চাওয়ার জন্যই আমি এটা করেছি। এটা কি খুব বড় অপরাধ করে ফেলেছি? আমি বললাম, ভালবাসার মানুষকে বিশ্বাস করতে হয়, ধোকা দিয়ে সেই মানুষকে জানার জন্য ভালবাসার দরকার পরে না। বলেই হাতটা ছাড়িয়ে চলে আসি আমি। পেছনে মেয়েটি অনেক কেঁদেছিল। আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি আজ।

অনেক ভালবেসে ফেলেছিলাম তাই এটা মেনে নিতে পারিনি। সে আমাকে জানাতে পারতো বিষয়টা। পরেরদিন সকালেই আমি বাসায় চলে আসি। আপু দুলাভাই হয়তো কিছু বুঝতে পেরেছিল। এর পরে বছর গুলো কেটে যায়। পড়াশুনা শেষ করে আজ আমি একজন সার্ভিস হোল্ডার। আজ আমি প্রতিষ্ঠিত। তবে দিন পাল্টেছে। দুঃখিত, একটু ভুল বললাম। দিন আগের মতই আছে। পাল্টেছে আশে পাশের মানুষ গুলো। তবে হ্যা, ওই মেয়েটিকে ছাড়া এখনো অন্য কাউকে ভালবাসতে পারিনি। বাড়ি এসেছি আজ অনেক দিন পর। আপু দুলাভাই, আমি এসেছি বলে বাসায় এসেছে। আপু দুলাভাই আমাকে একটু পাশে ডেকে এনে বলল, আর কতদিন ফাহিম? এভাবে আর কতদিন নিজেকে কষ্ট দিবি? আমি বললাম, তোমরা কি বলছো আমি বুঝতে পারছি না। আপু বলল, তুই ভাল করেই জানিস আমি তায়্যিবার কথা বলছি। মেয়েটা এখনো তোর অপেক্ষায় আছে।

অনেক ভাল ভাল বিয়ে সে ক্যান্সেল করেছে। একবার তো পালিয়ে আমাদের বাসায় চলে এসেছে সে। যে তোকে এতোটা ভালবাসে তাকে কিভাবে কষ্ট দিতে পারলি তুই। আর মেয়েটির মাঝে খারাপ কি? একটু পরে দুলাভাই বলল, দেখ ভুল ত্রুটি সবাই করে। সেও তোমার সাথে হয়তবা কোন ভুল করেছে যার জন্য তুমি তাকে খারাপ ভাবছো। কিন্তু আমি দেখেছি ভাই সে তোমাকে কতটা ভালবাসে। দিনের পর দিন সে কিভাবে আড়ালে কাঁদে এটা আমি দেখেছি ভাই। আমি নিশ্চিন্তে বলতে পারি এই ভালবাসার কাছে তার করা ভুলগুলো কিছুই নয় ভাই কিছুই নয়। এসব শুনে আমি আর স্থির থাকতে পারলাম না। মেয়েটির নামটা আজ জানতে পেরেছি আমি।

তায়্যিবা। আমিও তো জিবনে এই একজনকেই মন থেকে ভালবাসি। এখনো যে মনে প্রানে তাকেই চাই। এসব চিন্তা করতেই আমি আপু দুলাভাইকে জড়িয়ে ধরি। তাদের জিজ্ঞেস করলাম সে কোথায় এখন? তারা বলল, বাসায় আছে। আমি এবার তাদের বললাম, তুমি এই বোকা মেয়েটাকে ফোন দিয়ে বল যে, যদি আমাকে পেতে চায় তবে এখনি যেন স্টেশনে আসে। এখন নয়টা বিশ বাজে। দশটায় ট্রেন। যদি সত্যি ভালবেসে থাকে তাহলে এর আগে এসেই আমার সাথে দেখা করবে। আপু বলল, দশটার মধ্যে একটা মেয়ে কিভাবে আসবে? আমি বললাম, তুমি বলেই দেখো না।

আমি এখন স্টেশনে দাড়িয়ে আছি। একটু আগেই দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী ট্রেনটি চলে গেল। এর পরেই এক মেয়ে স্টেশনে আসলো। যখন দেখল ট্রেন চলে গেছে তখন ওভারব্রীজে উঠে রেলিং ধরে কাঁদতে লাগলো। নাহ, অনেক কাঁদিয়েছি তাকে। মেয়েটি যে আমারই অর্ধাঙ্গিনি হতে যাচ্ছে। তার কষ্টে যে আমারও অনেক কষ্ট হয়। তখনি উপরের কথাটুকু বললাম।

যদি বলি মস্তিষ্কের গভীরের সব নিউরন গুলো শুধু তোমার একটু ভালবাসার অপেক্ষায় আছে। তবে কি এ ফাকা বুকের হাহাকার শুনে ঝাপিয়ে পড়বে আমার বুকে। মেয়েটি মাথা উঠিয়ে আমায় দেখে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। এতোটাই শক্ত করে ধরল যে আমি বুঝতে পারলাম হারানোর ভয়টা কত বেশি হয়। আমিও আমার দুহাত বাড়িয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলাম।

এবার মেয়েটি একটু জোরে কেঁদে দিল। কাঁদতে কাঁদতে বলল, ভুল করেছি। অনেক কষ্ট পেয়েছি। এবার কি ক্ষমা করা যায় না। তোমায় ছাড়া বুঝেছি আমি যে আমার বাঁচা মরা প্রায় সমান। এবার ফিরিয়ে দিও না। আমি যে বাঁচতে পারব না। আমি তার মাথায় চুলে হাত বুলিয়ে বললাম, ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এতো কষ্ট করে আসিনি এখানে। আমাদের শুরুটা স্টেশনেই হয়েছে। তাই একসাথে এই স্টেশন থেকেই আবারও শুরুটা করতে চাই। তবে আমি এর শেষ চাই না। কারন তুমি আমার জিবনে প্রথম কোন নারী আর আমি চাই তুমি শেষ হয়ে আমার জিবনে থাকো।

তোমাকে ভালবেসেছিলাম চিরকুটের সেই লিখাগুলি থেকেই কিন্তু একটু যাচাই করে নিচ্ছিলাম আসলেই আমার অপেক্ষায় তুমি থাকতে পারবে কিনা? মেয়েটি বুকে মাথা রেখেই বলল, তো কি বুঝলেন এখন? বুঝলাম, আমি তোমাকে পেয়েছি। তুমি শুধুই আমার মস্তিষ্কে বাস করা সেই নিভৃতের নিশিকন্যা। আর আমার প্রথম ভালবাসা। এটা শুনে অনেকক্ষন ধরে ও কেঁদেই চলেছে। মেয়েটা এখনো আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। আমি বললাম আর কতোক্ষন থাকবে এভাবে? এটা শুনে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। একটু পরেই আপু দুলাভাই এসে বলল, পাবলিক প্লেসে ভাল সিনেমা দেখিয়েছিস, এখন বাড়ি চল। এখন আরও অনেক কিছুই করতে হবে। আপু দুলাভাই এসব বলেই হাসতে শুরু করল।

মেয়েটা অনেকটা লজ্জা পেয়ে বুকে মাথাটা গুজে দিল। আমি তার কানে ফিসফিস করে বললাম, তোমার পুরো নামটা কি এবার জানতে পারি মিস তায়্যিবা ফেরদৌসি। ও এবার মাথা উঠালো। প্রথম কোন মানবীকে হাস্যমুখে কাঁদতে দেখলাম। সৌন্দর্যতা আমি বুঝতে শিখেছি এটুকুই বিবেচিত হল। রবীন্দ্রনাথ মনে হয় হৈমন্তীকে এরকম সৌন্দর্য দিয়েই সাজিয়েছিল। অনেকক্ষন তাকিয়ে আছি তার দিকে। এটা দেখে তায়্যিবা লজ্জা পেল অনেক। মাথা নিচু করে নিল। না বলে থাকতে পারলাম না, ওরে আমার লজ্জাবতী রে….

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত