বজ্জাত বোরখাওয়ালি মেয়ে

বজ্জাত বোরখাওয়ালি মেয়ে

– নাম কি?(আমি)
– জি টহা?(মেয়ে)
– কি নাম বললা?(আমি)
– ট হা?(মেয়ে)
– অদ্ভুত নাম আপনার নামটা আমি আর জিবনেও কোথাও শুনি নাই?(আমি)
– আপনার নাম কি?(টহা)
– সানভি।(আমি)
– কি বললেন?(টহা)
– সানভিই?(আমি)
– অদ্ভুত আপনার নামটাও আমি কোথাও শুনি
নাই।(টহা)
– আচ্ছা টহা আপনি যে বললেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন এর প্রুফ কি আর কি জন্য আমাকেই ভালোবাসলেন।(আমি)
– আপনার নাম আপনার গল্প আর আপনি যে ছেকা খাইছেন তাই।আর যদি প্রুফ চান তাহলে ভিডিও কলে আসুন আমি আমার হাত কাটি সুইসাইড করি তাহলে হয়ে যাবে বিশ্বাস। (টহা) মেয়েটাকে দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। আর দেখাই যাক কতটা ভালোবাসে আমাকে। আপনারাও একটু দেখেন মেয়েরা সত্যি ভালোবাসতে পারে কিনা। আমি বললাম,

– ওকে কল দেন আমি দেখবো কতটা ভালোবাসেন আমাকে।(আমি)
– কিন্তু আমার শর্ত আছে।(মেয়ে)
– কি শর্ত?(আমি)
– আমি তো সুইসাইড করবো কিন্তু যদি আপনি আমাকে আটকাতে চান তাহলে আই লাভ ইউ বলবেন কেমন?আপনি তো আর আমার সামনে থাকবেন না তাই।(মেয়ে)

– আচ্ছা।(আমি)

মেয়েটা ভিডিও কলে আসলো। আমিও গেলাম। মেয়েটা প্রথমে আমাকে দেখলো। আমি দেখতে একেবারে খারাপ না শ্যামলা গায়ের রং এবং আমি আনস্মার্ট চুলগুল বড় তবে স্পাইক করে রাখি না জেল দেই চুলে তবে স্টাইলিশ না। এবার মেয়েটার বর্ননা দেই। আমি তাকে দেখলাম। সে এক মায়াবি চেহারা ফর্সা লম্বা দেখে তো মনে হয় আমার চাইতেও লম্বা আমিতো মাত্র ৫ ফিট ৬ ইন্চি। মেয়েটার চুলগুলা খুবই সুন্দর এবং বড়।আমি ক্রাশ খাইছি কিন্তু এর আগে একটা ছেকা খাইছি তাই আমার তেমন প্রতিক্রিয়া হলো না। মেয়েটা দেখতে খুবই সুন্দর তবে আমার মতো বান্দরের সাথে কেনো প্রেম করবে বুৃঝতে পারলাম না। মেয়েটা বললো,

– আমিই টহা।(টহা)
– আমি সানভি।(আমি)
– আপনি তো দেখতে ভালোই যতটা খারাপ বলছিলেন অতটাও খারাপ না।(মেয়ে)
– ধন্যবাদ।(আমি)
– এবার হাত কাটি?(মেয়ে)
– আচ্ছা কাটেন দেখি কত ভালোবাসেন আমাকে।(আমি)

মেয়েটা একটা ব্লেড হাতে নিলো তারপরব্লেডটা হাতের ওপর ধরলো। একটু জোরে চাপ দিতেই হালকা হালকা রক্ত বের হতে লাগলো। আমি কিছু না বুঝেই বললাম,

– I love you..I love you please stop.

মেয়েটা থেমে গেলো। আমি যানতাম না কেও আমার জন্য মরতে পারে। আর নিলিমার জন্য তো আমি মরতে চাইছিলাম। মেয়েটাকে কিভাবে ফিরিয়ে দেই। মেয়েটাকে দেখলাম আবারো। চোখে পানি হাত দিয়ে অল্প অল্প রক্ত বের হচ্ছে। আমি বললাম,

– পাগল আপনি??(আমি)
– না আমি টহা?(টহা)
– আপনি তো আরেকটু হলে মরে যেতেন।(আমি)
– আমি যানি আমি মরতাম না আপনি ঠিকই বলতেন।(টহা)
– কিভাবে?(আমি)
– আপনি যে ছেকা খাইছেন তাই।(টহা)
– হুম খুব জানেন?(আমি)
– সত্তি বলেন না ভালোবাসবেন আমাকে?? (টহা)
– হুমম সত্তিই ভালোবাসবো।(আমি)

মেয়েটার চোখে পানি দেখে আমিও কেদে ফেললাম। জিবনে প্রথম কাওকে পেলাম যে আমার জন্য মরতে গেছিলো।

– তুমি হাতে ব্যান্ডেজ লাগাও?(আমি)
– লাগাবো না তুমি লাগিয়ে দাও এসে। (টহা)
– কিভাবে যাবো তোমার বাসা তো অনেক দুর।(আমি)
– উপরের তলায় চলে এসো।(টহা)
– মানে?(আমি)
– মানে আমি সেই বোরখাওয়ালি যার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছিলে?(টহা)
– তার মানে কি এতোদিন মিথ্যা বলছো? (আমি)
– এতোদিন কই মাত্রতো দশদিন।(টহা)
– কিন্তু তুমি তো বলছিলা তোমার নাম রোহি(আমি)
– ওইটাও আমারই নাম।(টহা)
– ওহ আচ্ছা….
– তুমি আসবা এখন আমার হাতে সত্তিই অনেক ব্যাথা করতাছে।(টহা)
– দাড়াও আসতাছি।(আমি)

চলুন যেতে যেতে বলে ফেলি কাহিনি কি। টহা এই আমাদের বাসায় ভাড়া থাকে। দুই মাস হইছে আসছে। প্রথম দিনই ধাক্কা খাইছিলাম তার সাথে। কিছু বলে নাই। সবসময় বোরখা পড়ে বাইরে বের হতো ঘরে গেলেও ওরনা দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতো। আন্টিকে জিজ্ঞেস করছিলাম কেনো। আন্টি বলে জানিনা তোমার সামনে গেলেই এমন করে। গিয়ে বেল বাজালাম,

– দরজা খোলা আছে।(টহা)

আমি ঝটপট ওর রুমে ঢুকলাম ওকে দেখবো তাই কিন্তু ও দেখি ওরনা দিয়ে মুখ ঢেকে রাখছে। ব্যান্ডেজ এর কাপর আর স্যাভলন নিয়ে আসছি। সাথে এক বোতল পানি। আমি কিছু না বলে ওর হাতটা ধরলাম। রক্ত অলরেডি বিছানায় পরে চাদর নষ্ট করে ফেলছে। আমি ওর হাতটা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলাম।

তারপর বললাম,

– এইযে মিস বোরখাওয়ালি একটু আপনার ওরনাটা সরান মুখটা একটু দেখি।(আমি)
– উহু পারলে নিজেই সরিয়ে দেখেন।(টহা) আর কি করার উনার ওরনাটা সরিয়ে মুখটা দেখলাম। অদ্ভুদ এক মায়া কাজ করছে। ভিডিও কলের চাইতে বাস্তবে আরো বেশি সুন্দর সে। আমি বললাম,

– এই মিথ্যে নাটকটা করার কি দরকার ছিলো সরাসরি বললেই পারতে ভালোবাসো। (আমি)
– তখন তো আর টহাকে পেতে না তখনতো রুহিকে পেতে তাইনা?(টহা)
– হুম এখন তো দুজনকেই পেয়ে গেছি।(আমি)
– এই শোনোনা?(টহা)
– হুম বলো?(আমি)
– নিল চুরি কিনা দিবা?(টহা)
– না ট হা কিনে দিবো?(আমি)
– দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত