রানু আজ একটু অন্যরকম ভাবে সেজেছে।সে আজ মাথায় তেল দিয়ে মাঝ বরাবর সিথী করেছে।রানু আয়নায় একবার নিজেকে দেখে নিল।নিজেকে দেখে তার মুখে একটু হাসি ফুটে উঠল।এবার ও মেস থেকে বের হলো।তারপর একটা রিক্সা নিয়ে রেস্টুরেন্ট এর দিকে রওনা হলো।রেস্টুরেন্টে ঢোকার পর সে সামির কে দেখতে পেল।সামিরের কাছে গিয়ে সে বসল।
সামির বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রানু দিকে।ও হয়ত এই প্রথম কোনো মেয়েকে দেখল যে পাএর সামনে মাথায় তেল দিয়ে মাঝে সিথী করে এসেছে।সাধারণত এখনকার যুগে পাএীরা অতিরিক্ত মেকাব করে আছে।যার ফলে তাদের সৌন্দর্য ঠিক বোঝা যায় না।রানু খুব একটা দেখতে সুন্দর নয়।তার উপর আবার তেল দিয়েছে তাই তাকে মোটেই সুন্দরী মেনে হচ্ছে না।সামির বলল কেমন আছেন?রানু বলল জি ভাল।কত নম্বর পাএী দেখতে এসেছেন?সামির রানুর প্রশ্নে একটু বিবরত হলো।কোন পাএী এমন কথা জিঙ্গাসা করতে পারে তার ধারণার বাহিরে ছিল।সে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল তিন নম্বর।আগের গুলো কেন রিজেক্ট করেছেন।আসলে আগেরে ২ জনের মধ্যে একজনের বিএফ ছিল।
আর একজনকে আমার পছন্দ হয়নি।পছন্দ হয়নি কেন মেয়ে দেখতে খারাপ?এরকম প্রশ্নে আবার বিবরত হয় সামির।সামির বলে মেয়ে দেখতে ভালো ছিল।কিন্তু কার কাকে ভালো লাগবে নাকি মন্দ লাগবে তা তার একান্তই নিজের ব্যাপার তাই নয় কি।রানু বলল তা অবশ্য ঠিক।আপনার আমার সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে বলতে পারেন?সামির বলল আপনি গল্পের বই পড়তে ভালোবাসেন।হ্যা ভালোবাসি।কার লেখকের গল্প পড়তে পছন্দ করেন?বিভূতিভূষণ বন্দোপ্যাধায়ের।ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন? ভিষণ পছন্দ করি।সামির বলল আমার সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে বলতে পারেন।রানু বলল আপনার কোনো রিলেশন ছিল? সামির বলল যদি বলি না তাহলে কি বিশ্বাস করবেন?বিশ্বাস করা না করাটা একান্তই মনের ব্যাপার মন যদি বলে হা ছেলেটা সত্য কথা বলছে তাহলে বিশ্বাস করব আর মন যদি বলে মিথ্যা বলছে তাহলে বিশ্বাস করব না।সামির বলল আজ তাহলে উঠি।রানু বলল ঠিক আছে।
আপনার চার নম্বর পাএী দেখতে যাওয়ার জন্য অগ্রিম শুভকামনা রইল।হাহাহা।ভালো থাকবেন সামির সাহেব।সামির এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল রানু চলে যাওয়ার দিকে।সামিরের কাছে মেয়েটাকে অদ্ভুত মনে হলো।রানু মনে মনে ভাবছে ছেলেটার সাথে যেভাবে কথা বলেছ তাতে মনে হয়না সে আমাকে পছন্দ করবে। তারউপর আবার মাথায় একগাদা তেল দিয়ে গেছিলাম।কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে রানু মা ওকে ফোন দিয়ে বলেছে ছেলে ওকে পছন্দ করেছে।রানু ভেবে পাচ্ছে না কেন ওকে পছন্দ করল সামির।ও মাকে বলল সামিরের সাথে ও আর একবার দেখা করতে চায়।কিছুদিন পর সামির রানু সাথে দেখা করল।আজ রানু কোনো কথা বলতে পারছে না।এই প্রথম ওর এরকম হচ্ছে।সামির হঠাৎ বলল আজ এত শান্ত কেন?বোবা জীন ধরেছে নাকি?হাহাহা।রানু আজ অবাক হচ্ছে এই ছেলে মজাও করতে পারে।আজ চার নম্বর পাএী দেখতে আসলাম।যান কেউ আমার জন্য শুভ কামনা করেছিল তাই চার নম্বর পাএী দেখতে আসলাম।
রানু মনে হচ্ছে কেন সেদিন ঐকথা বেলেছিলাম তাই আজকে আমার সাথে এত মজা করছে।রানুর হঠাৎ খুব রাগ হলো তাই সে বলল আপনাকে আমি বিয়ে করব না।এত রাগ করছ কেন আমি তো তোমার সাথে একটু মজা করলাম তাই বলে আমাকে বিয়ে করবে না।রানু বলল আমার একজনের সাথে রিলেশন আছে।সামির হাহাহা করে হেসে উঠল।তোমার কার সাথে কোনো রিলেশন নেই এটা আমি জানি তাই মিথ্যা বলে লাভ নেই।আমার উপর এত রাগ করছ কেন?তার আগে বলুন আপনি আমাকে তুমি করে কেন বলছেন।আমার বউকে আমি তুমি করে বলল না তো আপনি করে বলল নাকি।একথায় রানু একটু লজ্জা পেল।তোমার মতো সাহসী মেয়ে লজ্জা পাচ্ছে এটা কল্পনা করতে পারছি না।তবে তোমাকে দেখতে কিন্তু ভালো লাগছে।আমি আপনার বউ হতে চাই না।আপনি আমাকে কেন পছন্দ করেছেন বলেন তো? তোমার সাহসীকতায় মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।আর তোমার মেকাববিহীন মুখ আর তেল চুল আমার অনেক পছন্দ হয়েছিল।তবে আজকে তোমায় বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে।
মেয়ে তোমাকে যদি বলি তোমার চুলে তেল দিয়ে দেওয়ার অধিকারটুকু আমায় দেবে।যদি মাঝরাতে তোমায় হঠাৎ জাগিয়ে তুলে বলি চল বাহির থেকে হেটে আছি।তখন তুমি ঘুম ঘুম চোখে বলবে এখন এতরাতে। তারপর বাহিরে যেয়ে দেখবে আজ আমাবস্যা তখন বলবে এই অন্ধকারে হাটব কিভাবে।আমি বলব সোডিয়াম বাতির আলো আছে তো রাস্তায়।আমারা একটু দূরত্ব রেখে যখন হাটব তখন হঠাৎ কারেন্ট চলে যাবে পুড়ো শহরো তখন তোমার হাতটা খুব শক্ত করে ধরে বলল আমি আছি তো তোমার পাশে।হবে কি আমার ইচ্ছেগুলোকে পুরণ করার সাথী।রানু বলল হতে পারি যদি কেউ ভালোবেসে হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে সারাজীবন।