লিফটের ভিতরটা নরম আলোয় মোড়া। পাশের স্টেনলেস স্টিলের পাতে ঢাকা দেওয়ালে নিজের মুখের প্রতিফলন দেখতে পেল ঐশানী। ভীষণ রকম বিধ্বস্ত এলোমেলো হয়ে আছে ওর চোখমুখ। প্রায় এক ঘন্টা আগে দোতলার মিসেস দত্ত কথাটা ওকে জানিয়েছে। কিন্তু চাইলেই কি আর অফিস থেকে বেরোনো যায়। বিশেষ করে এইসব প্রাইভেট কোম্পানিতে।গত চল্লিশ মিনিটের অক্লান্ত চেষ্টাতে হাতের কাজটা শেষ করে ফাইল জমা দিয়ে মিস্টার দস্তিদারের অনুমতি মিলেছে।
ছোট্ট সুহানির মুখটা মনে করে ঐশানীর দুচোখ জলে ভরে উঠছে বারবার। মেট্রো তে বসে যথা সম্ভব নিজের আবেগ কে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে সে। এরমধ্যে কমলা কে বোধহয় বার দশেক ফোন করেছে কিন্তু যথারীতি সুইচ অফ। টেনশনে হাত পা ক্রমশ যেন ঠান্ডা হয়ে আসছে। মিসেস দত্ত যে কি বললেন এখনো ঠিক মেলাতে পারছেনা সে। গত ছমাস ধরে একটানা এক বছরের সুহানি কে দেখাশোনার কাজ করছে কমলা। প্রথমে আয়া সেন্টারের মাধ্যমে ঢুকেছিল। দুমাস পর ঐশানীর কথাতেই সে সেন্টার ছেড়ে দিয়েছিল। কমলার চোখে মুখে একটা অদ্ভুত সততা আর ভরসার ছাপ আছে। তাছাড়া কাজও খুব আন্তরিক ভাবে করে। ঐশানী কিছুতেই হাতছাড়া করতে চায়নি কমলা কে তাই অনেক বুঝিয়ে তাকে সেন্টার ছাড়তে বাধ্য করেছিল।
কিন্তু সেই কমলা নাকি সুহানি কে কোলে নিয়ে আজ আধঘন্টা আগে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে গেছে। এটা কি ভাবে সম্ভব? তার ওপরে ফোন টাও বন্ধ করে রেখেছে। এখনি ব্যাপার টা তার স্বামী সোমকের কানে দিতে চাইছেনা ঐশানী। ব্যাপার টার পেছনে প্রকৃত কারনটা কি সেটা প্রথমে নিজে জানতে চেয়েছে সে।
রাস্তা যেন আর শেষ হচ্ছে না। মাত্র পাঁচটা স্টেশন কিন্তু কি ভীষণ সময় লাগছে যেন আজ। প্রবল উদ্বেগে ঐশানীর শরীর অবশ হয়ে আসছে। যাইহোক মেট্রো থেকে নেমে অটো ধরে ফ্ল্যাটের সামনে নামলো সে। তারপর সোজা সিকিউরিটির কাছে গিয়ে জানতে চাইলো,
“সোমনাথ শোনো কমলা মানে আমার আয়া কি বাচ্চা কে নিয়ে বেরিয়েছে কিছুক্ষণ আগে? ”
একটু হতচকিত হয়ে সে বলল,
“হ্যাঁ ম্যাডাম বেরিয়েছে। এখনো ফেরেনি।”
অধৈর্য ভাবে ঐশানী বলল,
“তুমি কিছু বললে না? আমাকে একটা ফোন করতে পারতে? ”
“না মানে তেমন কিছু তো আপনি কোনোদিন বলেন নি।”
আমতা আমতা করে সোমনাথ বলল।
“উফ্ আমি কি বলবো। তোমার এটুকু বুদ্ধি থাকবেনা। ”
ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল ঐশানী।
সোমনাথ ব্যস্ত হয়ে টুলটা এগিয়ে দিয়ে বলল,
“ম্যাডাম বসুন। একটু শান্ত হন। এক্ষুনি চলে আসবে। আমি বলছি চিন্তা করবেন না।”
সোমনাথের কথায় ঐশানীর কেমন সন্দেহ হয়। মনেহচ্ছে ও সব জানে। আর ধৈর্য রাখতে পারছেনা সে। যদি না ফেরে কমলা। কমলার বস্তিটা অবশ্য সে চেনে। কিন্তু এতক্ষণ এই গরমে সুহানী কে নিয়ে কোথায় যেতে পারে? সোমকের কানে কথাটা গেলে আর উপায় নেই। একা আয়ার কাছে বাচ্চা রেখে অফিস করাতে ঘোর আপত্তি ছিল তার। ঐশানী কে অন্তত দুবছরের জন্য চাকরিটা ছাড়তে বলেছিল। ঐশানী তো নিজে চাকরি ছাড়তে চায়নি। কিন্তু এখন কি হবে। এক এক সেকেন্ড যাচ্ছে আর ঐশানীর বুকের ভেতর টা তোলপাড় হচ্ছে। নাহ্ সোমনাথ কেই চেপে ধরতে হবে।ও নিশ্চয়ই কিছু জানবে।
কাতর গলায় ঐশানী সোমনাথ কে বলল ,
“প্লিজ সোমনাথ তুমি যদি কিছু জানো আমায় বলো। দাদা এখনো কিছু জানে না। জানলেই পুলিশকে কল করবে। তোমাকে কিন্তু পুলিশ সবার আগে জেরা করবে।
ওর কথায় সোমনাথ একটু ভয় পেয়ে যায়। এমনি তে সে একটু সহজ সরল ভীতু স্বভাবের। একটু চুপ করে থেকে রলল
“ম্যাডাম কমলা বাচ্চাকে ওর বাড়ি নিয়ে গেছে।ওর ছেলেটার খুব জ্বর। ফোন এসেছিল। অবস্থা ভালো নয়।”
সোমনাথের কথায় আকাশ থেকে পড়ে ঐশানী।
কোনমতে বলল,
“কমলার ছেলে আছে নাকি? ওর স্বামী নাকি বিয়ের পর থেকেই নিরুদ্দেশ। ও তো বাবা কে নিয়ে থাকে। বাবা খুব অসুস্থ এটা বলেছিল।”
“না ম্যাডাম ওর স্বামী আছে। তবে সে খুব অত্যাচার করে। তার আরও একটা সংসার আছে। ওর ছেলের বয়স তিন বছর। আমার বাড়ির কাছেই থাকে। ছোট বাচ্চা থাকলে সেন্টার কাজ দেয় না। তাই ওসব বলেছিল। ও কাজ না করলে চলবে না যে।”
এতক্ষণে যেন একটু ভরসা পাচ্ছে ঐশানী।একটা হদিশ যেন মিলছে। কিন্তু যতক্ষণ না বাচ্চা টাকে কাছে পাচ্ছে ভীষণ অস্থির লাগছে।এবার সে ব্যস্ত হয়ে বলল,
“সোমনাথ আমাকে একটু কমলার বাড়ি নিয়ে যাবে।”
“কিন্তু ম্যাডাম আমি ডিউটি ছেড়ে কিভাবে যাবো। আপনি একটু বসুন বলেছে চলে আসবে।”
“না না আমায় যেতেই হবে।তুমি একটা রিক্সা ডেকে ঠিকানাটা বলে দাও।”
“আচ্ছা সেটাই ঠিক আছে।” রিক্সায় ঐশানী কে তুলে দিল সোমনাথ।
খুব বেশি দূর নয়। স্টেশন রোড ছাড়িয়ে বাঁদিকে খাল পাড়ের বস্তি। রিক্সা টা একেবারে কমলার বাড়ির সামনে দাঁড়ালো। তাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে ঐশানী সামনের ঘর টার দিকে এগিয়ে গেল। টালির চালের ঝুপড়ি ঘরটার সামনে বেশ লোকজন জমা হয়েছে । ঐশানী কে দেখে বেশ কিছু উৎসাহী চোখ ঘুরে ঘুরে দেখছে। এ পাড়ায় সে বেশ বেমানান। বাইরে থেকেই সে বুঝতে পারছে কিছু একটা ভেতরে ঘটেছে না হলে এই অবেলায় এতটা জটলা হতো না।
ঐশানী কে আসতে দেখে লোকজন সরে ভেতরে ঢোকার রাস্তা করে দেয়। ঐশানী ব্যস্ত হয়ে এক মহিলা কে জিজ্ঞেস করলো,
” কমলা ভেতরে আছে তো?”
মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো সে।
ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখল ছোট্ট ঘরটার মধ্যে প্রায় ছয় সাত জন পুরুষ মহিলা দাঁড়িয়ে রয়েছে। চৌকির ওপরে চিটচিটে বিছানায় শুয়ে আছে একটা বছর তিনেকের রোগা ছেলে। প্লাস্টিকের টুলে বসে একজন ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করছেন। ভীড়ের মধ্যে ঐশানীর চোখ গেল কমলার দিকে।ছেলের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আর কোলের মধ্যে চুপ করে কমলার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ছোট্ট সুহানি। ঐশানীর বুকের মধ্যে টা হু হু করে উঠলো। তার মেয়ে টা এই ভাবে এই পরিবেশে রয়েছে ।
একটু এগিয়ে কমলা বলে ডাকতেই সে ভীষণ ভাবে চমকে ওঠে। তারপর ঐশানীর কাছে এগিয়ে এসে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল কমলা। চোখের জলে তার বুক ভেসে যাচ্ছে । ঐশানী আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে সুহানী কে কোলে নিয়ে নিল। হঠাৎ ঐশানীর পায়ের কাছে বসে তার পা জড়িয়ে ধরলো কমলা।
“আমাকে ক্ষমা করে দাও বৌদি। খুব বড় অন্যায় করে ফেলেছি। এই ভাবে তোমাকে না বলে সুহানী কে এখানে নিয়ে আসা আমার একদম উচিত হয়নি । তবে দেখো একবারও কোল থেকে ও কে নামাই নি।”
প্রবল জ্বরে অচেতন ছেলেটা কে পরীক্ষা করতে করতে ডাক্তার বিরক্তির সাথে বললেন,
“আহঃ আমায় একটু দেখতে দাও ।কান্নাকাটি বাইরে গিয়ে করো।”
কোনমতে নিজেকে সামলালো কমলা। ঐশানী এখনো একটা কথাও তাকে বলেনি।
ছোট্ট সুহানি কে বুকে নিয়ে ঘরের বাইরে আসবে এমন সময় সে শুনতে পেল ডাক্তার বলছে,
” দেড় ঘন্টার ওপরে অজ্ঞান রয়েছে। এখনি হসপিটালে দেওয়া দরকার । অবস্থা একদম ভালো বুঝছিনা।”
ডাক্তারের কথাটা শুনে ভাঙাচোরা ছোট ঘরে কান্নার রোল উঠলো। কমলা চিৎকার করে ছেলের পায়ের কাছে আছড়ে পড়লো। কথাটা শুনে ঐশানী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো। কমলার ওপরে রাগটা যেন ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছে ।
এক মা হয়ে সে যেন অনুভব করতে পারছে কমলার অসহায়তা। পিছিয়ে এসে ডাক্তার কে ঐশানী নিচু গলায় জিজ্ঞেস করলো,
” কি বুঝলেন ডাক্তার বাবু।”
দরজা দিয়ে বেরোতে বেরোতে ডাক্তার বললেন “এখুনি অক্সিজেন দেওয়া দরকার। তিনবছরের বাচ্চা এতক্ষণ সেন্সলেস হয়ে আছে। সরকারি হসপিটালে কত দ্রুত যে ব্যবস্থা নেবে সেটাই চিন্তার।”
বেশ চিন্তিত মুখে ডাক্তার বাবু কথা গুলো বললেন। ঐশানী ডাক্তারের কথার ইঙ্গিত বেশ ভালোই বুঝতে পারলো। কমলা ছেলের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে অঝোরে কেঁদে চলেছে। ঐশানীর কোল থেকে সুহানি কমলার দিকে চেয়ে দুহাত বাড়িয়ে কান্না শুরু করে দেয়। ঐশানী আশ্চর্য হয়ে যায়। এতক্ষণ পর মায়ের কোলে এসে ও সুহানি কমলার কাছে যাবে বলে কাঁদছে। ছেলেটার এই অবস্থা তেও কমলা আজ সকালে কাজে গেছিল। এখন যেন সে অনুভব করতে পারছে কতটা নিরুপায় হয়ে সে সুহানি কে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছিল।
কমলার অচেতন ছেলেটার দিকে তাকিয়ে ঐশানীর বুক কেঁপে উঠলো। যদি চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। যদি আর কোনদিন জ্ঞান আর না ফেরে।কমলার জীবনে তো ছেলেটাই সম্বল।
ধীর পায়ে ঐশানী এগিয়ে যায় কমলার দিকে। কাছে যেতেই সুহানি প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ল কমলার কোলে। বাচ্চা টাকে কোলে নিয়ে কমলা হাউমাউ করে কেঁদে উঠল । ঐশানী কমলার গায়ে হাত রেখে বলল,
” এখন সময় নষ্ট করলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। চলো ট্যাক্সি ডাকতে বলো। আমার চেনা নার্সিংহোম আছে। ওখানে তোমার ছেলের চিকিৎসা হবে।”
ছলছল চোখে কমলা বলল,
” সে তো অনেক খরচ।”
কমলার গায়ে হাত বুলিয়ে ঐশানী বলল, “চিকিৎসার সব দায়িত্ব আমার। তুমি শুধু ছেলেকে নিয়ে চলো।”
কমলা কি বলবে বুঝতে না পেরে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল।
ঝড়ের বেগে একটা ছেলে ঘরে ঢুকে বলল,
“দিদি ট্যাক্সি এসে গেছে। চলো চলো। ”
ঐশানী তৎপর হয়ে কমলার শীর্ণকায় অসুস্থ ছেলেটাকে কোলে তুলে নিল।
এক মহিলা এগিয়ে এসে বলল,
” দিদি আপনি পারবেন না। ওকে আমায় দিন।”
“কেন পারবো না খুব পারবো।”
ঐশানী ছেলেটাকে কোলে নিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে ট্যাক্সি তে উঠে পড়ল। সুহানি কে কোলে নিয়ে কমলা গিয়ে বসলো ওর পাশে।
হুহ করে ট্যাক্সি ছুটছে। ঐশানী ফোনে তার পরিচিত ডাক্তারের সাথে কথা বলে ভর্তির সব ব্যবস্থা পাকা করে নিল।
নার্সিংহোমে পৌঁছানো মাত্র ভীষণ তৎপরতার সাথে কমলার ছেলের চিকিৎসা শুরু হয়ে গেল। আই সি ইউ তে ভর্তি করে নেওয়া হল। ঐশানী ডাক্তারের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত। কমলার সামনেই সে বারবার ডক্টর কে বলেছে
“যা করতে হয় তাই করুন। খরচের কথা ভাববেন না। শুধু ছেলেটাকে সুস্থ করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিন ডক্টর।”
সুহানি কে বুকে জড়িয়ে মন্ত্র মুগ্ধের মতো শুধু ঐশানীর কথা শুনেছে কমলা। কমলার প্রতিবেশীরাও ঐশানী কে দেখে বাকরুদ্ধ হয়েছে ।
এখন নার্সিংহোমের করিডোরের বেঞ্চে কমলা ঐশানী ও ওদের সঙ্গে আসা আরো অনেকে বসে রয়েছে। কমলার কোলে ছোট্ট সুহানি ঘুমিয়ে কাদা। ভেতরে কমলার ছেলে বিট্টুর চিকিৎসা চলছে। প্রবল টেনশনে রয়েছে সবাই । এখনো জ্ঞান ফিরে আসার খবর আসেনি। এর মধ্যে কমলা ঐশানী কে বলল ,
“বৌদি সুহানির খাবার সময় হয়ে গেছে । কি করি বলোতো।”
ঐশানী অবাক হয়ে যায়। এই প্রবল টেনশনের মধ্যে ও কমলার মাথায় এটা আসছে। এক অপার মুগ্ধতায় তাকিয়ে থাকে সে কমলার দিকে। তারপর বলল,
” একদিন একটু দেরিতে খেলে কিছু হবেনা। আগে খবর টা পাই।”
বলতে বলতে ঐশানীর পরিচিত ডক্টর মুখার্জি হাসি মুখে এগিয়ে এলেন। তারপর বেশ খুশির সাথে ঐশানী কে বললেন,
“যাক্ বিপদ কেটে গেছে। জ্ঞান ফিরেছে। তবে এখনো কারন টা ডিটেক্ট করা যায় নি। হাই ফিভার থেকেও এমন হতে পারে। আরো কিছু সময় দেরি হয়ে গেলে কিন্তু সত্যি বিপদ ছিল।”
ডক্টরের কথায় বুকের ভেতরের জমাট উদ্বেগ টা ঝেরে ফেলে দিয়ে আপ্লুত হয়ে ঐশানী বলল,
“অনেক অনেক ধন্যবাদ ডক্টর । আপনি আজ সাহায্য না করলে কি যে করতাম।সরকরি হসপিটালে এত দ্রুত কিছুতেই হতো না।”
“একটু পরে এক এক করে আপনারা ভিতরে আসুন।”বলতে বলতে পেশেন্টের ঘরে ঢুকে গেলেন ডক্টর মুখার্জি।
কমলা এবার মাটিতে বসে ঐশানীর পা জড়িয়ে ধরে। কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে,
“বৌদি তুমি ভগবান। তুমি না থাকলে বিট্টু কে আমি ফিরে পেতাম না।”
শশব্যস্ত হয়ে ঐশানী দুহাতে কমলা তুলে বলল,
” একি একি কি করছো। এটা নার্সিংহোম সবাই দেখছে। ছেলেকে দেখে এসো কমলা। সুহানি কে দাও আমি খাইয়ে আনছি।”
“বৌদি এখানে তো অনেক খরচ।” কাতর হয়ে কমলা বলল।
“বলেছি না খরচের দায়িত্ব আমার। ”
তারপর কমলা কে কাছে টেনে নিয়ে ঐশানী বলল,
“তুমি আমার মেয়ের মা হতে পারো। আর আমি তোমার ছেলের জন্য এটুকু করতে পারি না।”
এক অদ্ভুত ভালো লাগার অনুভূতি যেন ছড়িয়ে পড়ছে ঐশানীর সারা শরীরে। হাত টা বাড়িয়ে দেওয়াতে যে এত সুখ তা সে কোনদিন ভাবতেই পারেনি।