‘এই বাবু ওঠ দেখ কতো সকাল হয়ে গেছে,।অফিসে যাবিনা,? ‘ওকে এক টানে নিজের উপর ফেলে দিয়ে বললাম, ‘হু যাবো তো কিন্তু এখন না পরে, এখন আমি আমার বউ টাকে আদর করব,।’এই পাজি ছেলে সারাদিন-রাত আমার সাথে শয়তানি করেও তোর মন ভরেনা এখন আবার শুরু করে ছিস,। ‘না মন ভরে না, এতো সুন্দর বউ থাকলে কি আর বউ কে আদর করা ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতে ইচ্ছে করে বল,? ‘তাই না, এখন তারাতারি উঠে ফ্রেস হয়েনে অফিসে যাবার জন্য , নাহলে দুষ্টামি করা তোর বের করবো,! ‘উঠতে উঠতে বললাম,’হু জানি জানি, একটু শান্তিতে বউ কে আদর ও করা যাবেনা,’উম্মা’ ‘তেড়ে এসে বলল, ‘দাড়া শয়তান আজ তোরে মজা দেখাছি,।
‘ও আমার কাছে আসার আগেই এক দৌড়ে ওয়াস রুমে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম, ‘ওয়াসরুমের বাইরে দাড়িয়ে মেয়েটা মিঠ মিঠ করে হাসছে আর ভাবছে “পাগল একটা”। এতো সময় যে দুই জনের কথা হচ্ছিলো তাদের সম্পর্কটা এতো সময় নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন,।হু ওরা স্বামী স্ত্রী , । ছেলেটা হলো কাব্য আর যে মেয়েটা এতো সময় ধরে ছেলেটাকে বকা দিচ্ছিলো তার নাম কথা,।কাব্য কথার বাবার কম্পানিতে চাকরি করে,। ‘এদের বিয়ে হয়েছে প্রায় ৬ মাস আগে, কিন্তু এদের ভালোবাসার সম্পর্কটা ছিলো অনেক দিনের, আচ্ছা আগে এদের ভালোবাসার গল্পটা বলে নিই,।
‘কোনো একদিন কাব্য তার সাইকেলে চেপে বাড়িতে আসছিলো, সময়টা প্রায় রাত নটা হবে, কাব্য প্রতিদিন এই সময়েই বাড়িতে ফেরে, আবার কোনো কোনো দিন আরো রাত হয়ে যায়,। ‘আসলে কাব্যের নিজের বলতে কেউ নেই, ও যখন খুব ছোটো তখন ওর মা আর বাবা ডাকাত দের হাতে নিহত হয়।তারপর থেকে কাকার কাছে মানুষ হয় ও,। কিন্তু ওর ভাগ্যটা অত ভালোনা তাই ওর কাকিমা কিছু দিন পর থেকেই ওকে সহ্য করতে পারতো না, ওর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন থেকে ওকে একটা দোকানে কাজ করতে হয়। কোনো দিন এমনও আসে যে ওকে সারাদিন না খেয়েও কাটাতে হয়। আর বলে রাখা ভালো যে কাব্য এখন কলেজে নতুন ভর্তি হবার জন্য পরীক্ষা দিয়েছে। এতো কষ্ট করে কাজ করার পরেও পড়াশোনা করে। বিকেলে কাজ করে আর সকালে পড়াশোনা।
‘আচ্ছা এবার গল্পে ফেরা যাক,। রাতের বেলা বাড়ি ফেরবার সময় হঠাৎ মাঝ পথে ওর সাইকেলের চেন পড়ে যাওয়াতে ওকে থামতে হয়ে,। ‘ও চেল তুলে দাড়াতেই হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে কাব্যকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘প্লিজ আমাকে একটু সাহায্য করবেন,? ‘প্রথম দেখাতেই অবার দৃষ্টিতে কাব্য মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে,। ‘কাব্যর সাথে এই প্রথম এমন হয়েছে,।মানে ও কোনো মেয়ের দিকে এমন মুগ্ধ দৃষ্টিতে এর আগে কখনো তাকিয়ে থাকেনি,।
‘পুরো অন্ধ কারের মধ্যেও মেয়ে টাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে,।একটা সাদা রঙের জামা পড়া, আর জামার পেছনে পরি দের যেমন ডানা থাকে ঠিক তেমনি,।কিন্তু এতো রাতে মেয়েটা কোথা থেকে আসছে, আর কিই বা সাহায্য চায় কাব্যর কাছে,।এটা বুঝতে পারছে না কাব্য। ‘মেয়েটা আবারো বলল, ‘কি হলো বলুন সাহায্য করবেন কিনা, । ‘এবার কাব্যের ভাবনার ছেদ ঘটলো, ও একটু থতমত খেয়ে বলল, ‘কি সাহায্য লাগবে আপনার,। আসলে আমি একটা বাচ্চাদের ফেস্টিবল থেকে আসছিলাম, কিন্তু মাঝ পথে কিছু খারাপ লোক আমার পিছু নিয়েছে,।ওই দেখন ওরা ওই খানে দাড়িয়ে আছে,।’তাই বলছি আপনি যদি আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দেন তো আমার খুব উপকার হয়,।’সামনে কিছু গুন্ডা টাইপের লোককে দেখিয়ে মেয়েটি কথাটা বলছিলো,?
‘কব্য সেই দিকে একবার তাকিয়ে দেখলো, হ্যা এই লোক গুলোকে মাঝে মাঝে এই রাস্তাতে ঘোরা ফেরা করতে দেখেছে কাব্য,।কিন্তু এই মেয়েটা যেমন বলছে ওরা ঠিক তেমন না, ‘ওই লোক গুলোর সাথে একদিন কথা হয়েছে কাব্যের, কাব্য যেই দিন অনেক রাতে বাড়িতে ফিরছিলো, হঠাৎ কিছু লোক ওকে রাস্তায় ধরে টাকা নেবার চেষ্টা করছিলো,তখন লোক গুলো ওকে সাহায্য করেছিলো, আর এটাও জেনে ছিলো যে এই রাস্তা চুরি- ডাকাতি , আর মাঝে মাঝে খুন ও হয়।আর এই ব্যাপারটা কাব্যের ও অজানা চিলোনা, কিন্তু কাজের জন্য ওকে এই রাস্তা দিয়েই আসা জাওয়া করতে হতো,। আর ওই লোকগুলো পুলিশের লোক, ওরা প্রতি দিন রাতে রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় যাতে সবাই একটু শান্তিতে থাকতে পারে,।
‘আমার মনে হয় ওরা ময়েটাকে একা দেখে হয়তো ভেবেছিলো যদি তার কোনো বিপদ হয় , তাই হয়তো ওর পিছু নিয়েছিলো, । ‘আচ্ছা আপনার বাড়ি কোথায়, । জায়গাতে,। ‘জায়গাটা কাব্যের বাড়ির কিছুটা আগেই তাই কাব্য আর কিছু না বলে মেয়েটাকে সাইকেলে বসতে বলল,। ‘কাব্য সাইকেলে চালাছে কোনো কথা বলছেনা, আসলে কাব্যের সাথে এমন কোনো দিন হয়নি, যে একটা মেয়ে তার সাথে কথা বলেছে কিম্বা তার সাথে পাশাপাশি হেটেছে,। ‘কিন্তু আজ প্রথম একটা মেয়ে কাব্যকে বিশ্বাস করে তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলছে,।এটা ভেবে কাব্য অনেক খুশি ।
‘অপর দিকে মেয়েটা কাব্যের সাইকেলের পছেন বসে ভয়ে মনে মনে ভবছে যে এই ছেলে টাকে কি বিশ্বাস করা ওর ঠিক হলো, । ও যদি কিছু উল্টোপাল্টা করে, ।এমন অনেক কথা ভাবছে, । ‘কিন্তু কিছুখন পর মেয়েটার ভাবনা ভুল করে দিয়ে কাব্য মেয়েটার বাড়ির সামনে এসে সাইকেল থামিয়ে দিলো,। মেয়েটা সাইকেল থেকে নেমে কোনো কথা না বলে সোজা দৌড়ে বাড়ির ভেতর চলে গেলো, । ‘মেয়েটার এমন আচরনে কাব্য একটু কষ্ট পেয়েছে , কারন এতো কষ্ট করে সাইকেল চালিয়ে সে মেয়েটাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিলো,। কিছু না হোক একটা ধন্যবাদ তো কাব্যের প্রাপ্য ছিলো । ‘কাব্য আর সেখানে দাড়িয়ে না থেকে বাড়িতে চলে আসলো, ।
‘অনেক দিন পার হয় গেছে , ‘কিন্তু ওদের দুই জনে এর আর দেখা হয়নি,। ‘কাব্যও মেয়েটার কথা ভুলে গেছে, ।’আজ কাব্য কলেজের পরীক্ষার রেজাল্ট পেয়েছে সে কলেজে চান্স পেয়েছে, এটা নিয়ে কাব্য অনেক খুশি, নতুন কলেজে , নতুন জায়গা, জায়গাটা কেমন হবে , সেখান কার লোক গুলো কেমন হবে এটা নিয়ে কাব্যের অনেক কৌতুহল,।আর এই কৌতুহল টা নিয়ে সে অনেক উত্তেজিত ।
‘আজ কলেজে ভর্তি হয়ে বাড়িতে ফিরে সে একটু বিছানাতে গা এলিয়ে দিয়ে কলেজের কথা ভাবছিলো, হটাৎ কাব্যের কাকিমা এসে ওকে অনেক বকা দিলো আরো অনেক ধরনের কথা শোনালো , কারণ এই মাসে কাজের টাকা বাড়িতে না দিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছে সে। ‘কলেজের প্রথম দিন গিয়েই সে বুঝতে পেরেছে , যে কলেজের সম্পর্কে তার যা ধারণা ছিলো সেই গুলো সব ভুল,।কিন্তু এখানেই তাকে পড়তে হবে । ‘প্রায় কয়েক মাস কেটে যাবার পর একদিন কলেজে কাব্য সেই মেয়েটাকে দেখতে পেলো, কিন্তু মেয়েটা মনে হয় কাব্যকে দেখেনি,। তা নাহলে আজ হয়তো তার সাথে কথা বলতো, ।
‘এর পর থেকে প্রায় দিনি মেয়েটাকে কাব্য কলেজ ক্যাম্পাসে দেখতে পেতো ।এমন ভাবে দেখতে দেখতে মেয়েটাকে তার ভালো লাগতে শুরু করে ।কিন্তু কাব্য জানে ওর এই ভালো লাগাটে তার নিজের মধ্যে রাখতে হবে,।তার ভালোলাগাটা কোনোদিনো প্রকাশ পাবেনা,।
‘আজ কলেজে গিয়ে কাব্য একটা গাছের নিচে বসে ডায়েরিতে কিছু লিখছে,।তখনি কেউ একজন কাব্যের পাশে এসে বসলো । কাব্য পাশে তাকাতে একটু অবাক হয়ে গেলো , কারন তার পাশে সেই দিনের মেয়েটা বসে আছে। ‘হ্যালো আমি কথা , আপনি? ‘মেয়েটার প্রশ্নে কাব্যের ধ্যান ভাঙ্গলো,’হ্যালো , আমি কাব্য, ‘কেমন আছেন’ ‘ভালো, আপনি কেমন আছে, ? ‘ভালো, তা আপনি প্রতি দিন এমন করে একা এখানে বসে কি করেন, ? ‘না তেমন কিছু করিনা, আর একা থাকি কারন কেউ আমার সেথে কথা বলেনা, কোনো বন্ধুও নেই আমার তাই একাই থাকতে হয়।
‘আচ্ছা আমি যদি আপনার বন্ধু হতে চাই তাহলে কি আপনার কোনো আপত্তি আছে, ? ‘না আপত্তি থাকবে কেনো,। ‘আচ্ছা আজ থেকে আমারা বন্ধু, শুধু বন্ধুনা অনেক ভালো বন্ধু, ঠিক আছে, ? ‘আচ্ছা, । ‘আর হ্যা সেই দিনের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,।’ কেবল না বললেন যে আমরা বন্ধু, তাহলে ধন্যবাদ কেনো দিচ্ছেন । ‘ সেই দিন তো আমার বন্ধু ছিলেন না তাই, ।হিহিহিহিহিহিহিহি ‘ হাসিটা দেখে কাব্য আর কিছু বললতে পারল না।মেয়েটা হাসলে তার গালে টোল পরে, আর তার সুন্দয্যটা কয়েক গুন বাড়িয়ে দেয়।,
‘এর পর থেকে তারা প্রায় সব সময়ই এক সাথে থাকে, এটা দেখে অনেকেই অনেক কথা বলে কিন্তু তাতে ওদের দুই জনের কিছু যায় আসেনা, । ‘ওরা জানে এখন কার মানুষের কাজি হলো গুজব রটানো, । ‘এমন ভাবে অনেক কটা দিন চল গেলো, এখন তারা এক অপরকে তুই করে সম্বোধন করে, কথা বাক্যের পরিবারের কথা শোনার পর থেকে কাব্যকে সব সময় চোখে চোখে রাখে অনেক খেয়ার রাখে কাব্যের।
‘কাব্য এখন কথাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে , কথার কেয়ারিং গুলো কাব্যের অনেক ভালো লাগে।কিন্তু ভয়ে ভালোবাসার কথাটা কাব্য কথাকে বলতে পারেনা, । ও ভাবে কথা যদি কোনো দিন তাকে ভালোবাসার কথা বলে ।সেই দিন কাব্য কথাকে আপন করে নেবে, ।
‘আর অপর দিকে কথাও কাব্যকে অনেক ভালোবাসে, ।কাব্য নামের বোকা গাধা টার সাথে থাকতে থাকতে সেও মনের ভুলে কখন যে কাব্যকে ভালোবেসে ফেলেছে , সেটা সে নিজেও বুঝতে পারেনি , । কিন্তু সে মেয়ে বলে তার ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে পারেনা ।কথাও অধীর আগ্রহে বসে আছে যে কখন কাব্য তাকে ভালোবেসার কথাটা বলবে,।কিন্তু তার প্রতীক্ষা শেষ হয়না,। “এর পর আরো অনেক দিন চলে গেলো, কিন্তু কথা আর কাব্যের প্রতীক্ষা শেষ হয়না, । ‘কথা আর থাকতে না পেরে ঠিক করল যে সেই আগে তার মনের কথাটা কাব্যকে বলে দেবে,। তাই আজ কথা কাব্যকে একটা পার্কে ডেকে পাঠাল। ‘কথা অনেক ক্ষণ ধরে পার্কে বসে আছে কাব্যের অপেক্ষায় ।কিন্তু কাব্যের আসার কোনো খোজি নেই,। ‘ওই তোর আসতে এতো দেরি কেনো হলো হু,?
‘আর বলিস না বাড়ি থেকে বের হচ্ছি এমন সময় কাকিমা একটা কাজ দিয়ে দিলো, তাই লেট হয়ে গেলো,। ‘ও, । ‘কাব্য আর কথা দুই জনেই পাশাপাশি বসে আছে কেউ কোনো কথা বলছেনা, ।তাই কাব্য আগে কথা বলল, , ‘কিরে নিজে ডেকে এনে এখন নিজেই চুপ চাপ বসে আছিস কেনো, ? ‘কথা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল, তোকে কিছু কথা বলতে চাই, । ‘তার কথা শুনতেই তো আসলাম, বল কি বলবি, ?’দেখ তুই ভালো করেই জানিস যে আমি সব কথা সোজাসুজি বলতে পছন্দ করি, ? ‘হ্যা এতো দিনে তো সেটা ভাল করেই বুঝতে পেরেছি,। তো কি বলবি বল, ? ‘আমি তোকে অনেক ভালোবাসি কাব্য, ।প্লিজ আমাকে একটু ভালোবাসবি, ?
‘পরিস্থিতির আকস্মিকতাই কাব্য যেনো বোবা হয়ে গেছে, ।ও কিছু বলতো পারছে না, । ও শুধু কথার দিকে তাকিয়ে আছে, ।এটা দেখে কথা আবার বলল, ‘কির কিছুতো বল, এমন চুপ করে থাকিস না কাব্য প্লিজ,। ‘তুই সত্যি আমাকে ভালোবাসিস, ? আমার সাথে মজা করছিস নাতো , ? ‘আমি তোকে সত্যি ভালোবাসি, বিশ্বাস নাহলে আমার চোখের দিকে তাকা একবার, । ‘ কাব্য কথার চোখের দিকে তাকিলো , আজ কাব্য কথার চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা দেখতে পেলো, ।আগেও দেখেছে কিন্তু আজ কথার ভালোবাসাটা যে কতোটা গভীর সেটা আজ সে প্রথম বুঝতে পেরেছে, । ‘কিরে বল ভালোবাসবি আমাকে, ? ‘তোকেতো সেই প্রথম দিন থেকেই ভালোবাসি কিন্তু ভয়ে বলতে পারিনি , । ‘কি তার মানে তুইও আমাকে ভালোবাসিস,? ‘হু অনেক, ।
‘ছেড়ে যাবি নাতো কোনো দিন, ? ‘না কোনো দিন ছাড়বো না, ? কিন্তু আমাকে কি তোর পরিবার মেনে নেবে, । ‘ওটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবেনা, । ‘এর পর থেকে ওদের ভালোবাসার দিন শুরু হয়েছিলো, । ‘প্রায় তার পাঁচ বছর পর ওদের বিয়ে হয় , । এই পাঁচটা বছর অনেক ভালোভাবে কেটেছে ওদের, । মাঝে মাঝে কলেজ পালিয়ে ঘুরতে জাওয়া, ফুচকা-আইসক্রিম খাওয়া, । শিতের সকালে খালি পায়ে ঘাসের উপর হাটা, মাঝে মাঝে কথা বাইনা করতো যে কাব্যের পায়ের উপর পাদিয়ে হাটবে, । , কাব্যর ও এটা অনেক পছন্দের একটা জিনিস, তাই কাব্যও কথাকে নিজের পায়ের উপর নিয়ে হাটতো, ।
‘বিয়ের দিন বাসর রাতে কথা কাব্যের কাছে একটাই জিনিস চেয়েছিলো , যে কাব্য যেনো কোনো দিনো তাকে ছেড়ে না জায়, যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে যেনো সেটা কথার সাথে সেয়ার করে।আর তারা যেনো একে অপর কে তুই কর ডাকে। কারণ তারা স্বামী স্ত্রী হবার আগে খুব ভালো বন্ধু, । আর বন্ধুতের সম্পর্কটা এই পৃথিবীর সব থেকে বড়ো সম্পর্ক । কাব্যও কথাকে কথা দিয় ছিলো সে ওর সব ইচ্ছেতে রাজি। ‘এবার বাস্তবে ফেরা যাক, । ‘ওই তোর ফ্রেস হওয়া হলো নাকি, । ‘হু হলো, । ‘তারপর কাব্য ফ্রেস হয়ে খেয়ে অফিস যাবার জন্য বের হবে, তাই কথাকে ডাকছে, । ‘ওই কথা , কোথায় তুই, ?’ওই এতো জোরে জোরে চেল্লাছিস কেনো, ।
‘তুই জানিস না যে আমি টাই বাধতে পারিনা, ? ‘হু জানিতো, ।দে টাইটা, । ‘কথা কাব্যের পায়ের পাতার উপর উঠে কাব্যকে টাই বেঁধে দিচ্ছে আর কাব্য কথাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আছে, । ‘নে তোর টাই বাঁধা শেষ, । ‘এখনো কাজ শেষ হয়নি তো,। ‘আবার কি, ? ‘কথা জানে যে কাব্য এখন কি করবে , তাও ওকে জিজ্ঞেস করলো, । ‘হু দেখাছি কি, । ‘আস্তে আস্তে কাব্য তার মুখটা কথার মুখের কাছে নিয়ে আসলো, এটা দেখে কথা নিত্যদিনের মতো আজও চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো, । কিছু সময় পর কাব্য কথাকে ছেড়ে দিলো, ।তারপর অফিস যাবার জন্য বেরিয়ে পড়ল, ।
‘এমন ভাবে অনেক কটা দিন চলে গেলো, ।আজ হঠাৎ সকালে কথা বলল যে ওর শরীর খারাপ লাগছে, ।তাই কাব্য ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো, । ‘ডাক্তার কথাকে দেখে বাইরে আসতেই ।কাব্য ডাক্তার কে জিজ্ঞেস করলো, । ‘ডাক্তার ওর কি হয়েছে, । ‘আরে এতো ব্যস্ত হবার কিছু নেই, আপনি বাবা হতে চলেছেন, আর এই সময় এমন একটু হয়, । ‘কিইইইইই, । ‘কথাটা বলেই কাব্য কথার কাছে চল গেলো, । ‘আজ কাব্য অনেক খুশি , ওর খুশি দেখে কথাও বেপারটা একটু বুঝতে পেরেছে , ।তাই সে বালিশ দিয়ে তার মুখটা লোকাল, ।
‘এর পর থেকে কাব্য কথাকে কোনো কাজ করতে দিতোনা, সব সময় অনেক খেয়াল রাখতো, । ‘কথাকে সেই কখন ওটি তে নিয়ে গেছে , এখনো বের হয়নি ডাক্তার, কিছু কি হলো, এমন অনেক কথা ভাবছে কাব্য, ‘হটাৎ ডাক্তার এসে ওকে বলল, যে কাব্য বাবা হয়েছে, একটা ফুটফুটে মেয়ের বাবা হয়েছে সে । আর মা মেয়ে দুই জনি ভালো আছে, । ‘হ্যা আজ সকালে কথার শরীরটা অনেক খারাপ ছিলো তাই কাব্য কতাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে, । ‘ডাক্তার চোলে যেতেই কাব্য ভেতরে গেলো, প্রথমে কথার কাছে গিয়ে দেখলো কথা ঘুমিয়ে আছে, । আর তার পাশে একটা ফুটফুটে বাচ্চা শুয়ে আছে, । মেয়েটা একদম তার মায়ের মতোই হয়েছে, । ‘কি দিখছো, । ‘দেখছি আমাদের মেয়েটা তার মার মতো হয়েছে, । ‘তাই, । ‘হু,।
‘এর পর থেকে কথা আর কাব্যের সংসারে আরো একটা ভালোবাসা বড়ো হচ্ছে , । তাদের নামের সাথে মিল রেখে মেয়ের নাম রাখেছে, কবিতা, । তারা দুই জনেই কবিতাকে নিজের থেরেও বেশি ভালোবাসে, । ‘ডায়েরিটা পড়ে কবিতা জোরে জোরে কান্না করতে লাগলো,। ‘হ্যা এতো সময় কবিতা তার বাবার লেখা ডায়েরিটা পড়ছিলো, ।ডায়েরির উপর পাতাতে বড়ো বড়ো করে লেখা কাব্য কথার ডায়েরি,। ‘আজ কাব্য বা কথা দুই জনের মধ্যে কেউ বেঁচে নেই, ।কবিতার যখন তিন বছর বয়স তখন একটা দুর্ঘটনার শিকার হয় তারা দুই জনেই, ।
‘আজ কবিতার বয়স প্রায় ১৫ বছর, ।কবিতা এখন তার নানার বাড়িতে থাকে, । কথা তাদের এক মাত্র মেয়ে ছিলো তার মৃত্যুর পর কবিতাকে তারা নিজের কাছে এনে রেখেছে, কবিতাকে অনেক ভালোবাসে তারা, । কিন্তু কবিতার বাবা মায়ের জায়গাটা পূরণ করতে পারেনা, ।
‘কবিতা যখন থেকে বুঝতে শিখেছে , ।’তখন থেকেই প্রতিদিন রাতের বেলা ঘুমানোর সময় কথা এক বার করে তার বাবার লেখা ডায়েরিটা পরে আর অনেক কান্না করে, । ‘আর বাবা মার আদর-শাষন গুলো মিস করে,।
‘ওর যখন খুব মন খারাপ হয় তখন ছাদে গিয়ে সব থেকে উজ্জ্বল দুইটা তারা দের সাথে কথা বলে, ।ও বিশ্বাস করে ওর বাবা মা ওর সাথেই আঠে, । ওই উজ্জ্বল তারা দুটোই ওর বাবা মা,। তারা দুটোর সাথে কথা বললে কবিতার খুব ভালোলাগে,। ‘কিছু খন এমন ভাবেই কাঁদতে কাঁদতে গভীর ঘুমে হারিয়ে যায় কবিতা।