আমি ক্ষেত থেকে বাড়ি ফেরার পর মা বললো, “হেডমাস্টার আইছিলেন, তোরে যাইতে কইছে।” এই সময়ে হেডস্যার নিজে বাসায় এসেছিলো, তাও আবার আমাকে ডাকতে! আমি একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম, কোন সিরিয়াস কিছু কিনা। মাকে জিজ্ঞেস করতে মা জবাব দিলো, “যা, গেলে জানতে পারবি।” সন্ধ্যা হয়ে এসেছে, আমি তাড়াতাড়ি সাইকেলটা নিয়ে স্যারের বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
আমাদের পাশের গ্রামেই হেডস্যারের বাসা। আমি পৌছাতেই স্যারকে সালাম দিয়ে বললাম, “স্যার কষ্ট করে আমার বাসায় গিয়েছিলেন, আমাকে খবর দিলেই তো চলে আসতাম।” স্যার বললেন, “গিয়েছিলাম তোর মায়ের সাথে কথা বলতে। তুই বিয়ে করবি।” আমি অবাক হয়ে স্যারে মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। স্যার নিজেই আমার দ্বিধা দূর করতে বলতে শুরু করলেন, “এই শাহানার বাপকে নিয়ে আর পারি না। আজও কি কান্ডটাই না করে বসেছিলো। আমি না থাকলে তো মেয়েটার জীবনটাই নষ্ট হয়ে যেতো।”আমি জিজ্ঞেস করলাম,“স্যার, আবারও।”স্যার জবাব দিলেন,“হ্যাঁ।”
শাহানা আমাদের স্কুলের নবম শ্রেনীর ছাত্রী। খুব গরীব ঘরের অতি মেধাবী ছাত্রী। এ যেন গোবরে পদ্ম ফুল।
ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পেয়েছিলো, ক্লাস এইটেও পেয়েছে। ওকে নিয়ে আমরা শিক্ষকরা খুব আশাবাদী, ও মেট্রিকে স্ট্যান্ড করবে। ভালো রেজাল্ট করে ভার্সিটিতে পড়বে। অনেক বড় হয়ে ওর মত গরীব ঘরের মেয়েদের জন্য আদর্শ হবে।
কিন্তু ওর বাবার কারণে তা বোধহয় আর হবে না। অতটুকু বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলেই যেন বাঁচে।
অভাবের সংসার তাই বলে কি দুবেলা খাবার দিতে পারবে না?
আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে ওকে বিনা খরচে পড়ার সুযোগ দিয়েছি, তাছাড়া বোর্ড থেকে অল্পকিছু টাকাও বৃত্তি পাচ্ছে, মেয়েকে আর কটা বছর পড়ালে মেয়ে অনেক বড় হতে পারবে তা এ লোকটাকে কে বোঝাবে?
ইতোমধ্যে আমরা দুবার মেয়েটার বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছি। অন্যকেউ হলে হয়তো গোপনে বিয়ে হয়েই যেতো। কিন্তু স্কুল ফাস্ট মেয়ে বলে ওর প্রতি আমাদের আলাদা নজরদারি ছিলো প্রথম বিয়ে ঠিক হবার পর থেকেই। ওর বাড়ির পাশের ছাত্র-ছাত্রীদের বলে রাখা, শুধু ওই নয়, স্কুলের যে কোন ছাত্রীরই বাল্যবিয়ে ঠেকাতে আমরা শিক্ষকরা উদ্যোগ নিচ্ছি।
আজ তৃতীয়বারের মত ওর বিয়ে ভাঙ্গা হলো। শুক্রবার ছিলো বলে বাসায় ছিলাম বলে আমি জানতে পারিনি। স্কুলের হেডস্যারের একই গ্রামে শাহানাদের বাসা। তাই স্যারই হয়তো লোকজন নিয়ে বিয়ে বন্ধ করেছেন ।
এ নিয়ে অনেক কথাও শুনতে হয়েছে শাহানার বাবার কাছে। মেয়ে বড় হলে ভালো ছেলে পাবে না, এখন অভাবের সংসারে তাকে খাওয়াবে কি? ইত্যাদি সহ অনেক শ্রাব্য-অশ্রাব্য কথা।
আমি এখন জানতে পারলাম।
স্যার আমায় বললেন,“তুই মেয়েটাকে পড়াবি। ওর মেধা ভালো, ও সুযোগ পেলে অনেকদূর যেতে পারবে। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে ওর বাবা আবার ওর সম্বন্ধ ঠিক করে বিয়ে দিয়ে দেবে। তখন ওর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। মেয়েটা গরীব ঘরের হওয়ায় প্রতিবারই বেমানান অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে। তাদের কারোর সাথে বিয়ে হয়ে মেয়েটাকে সারাজীবন রান্নাঘরেই পড়ে থাকতে হবে আর পড়ালেখা বন্ধ হওয়াটা নিশ্চিত। আমি তোর মায়ের সাথে কথা বলেছি। তোর মা অমত করেনি। তাই তোকে ডেকেছি, তোর কি ইচ্ছা?”
আমি ভাবছি কি জবাব দেবো। মেয়েটা আমার ছাত্রী। অল্প বয়স। যেখানে আমরাই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করছি সেখানে আবার আমাকেই বিয়ে করার কথা বলা হচ্ছে। অবশ্য এর পেছনে যুক্তিও আছে। কারণ আমি বিয়ে না করলেও মেয়েটার বিয়ে হয়তো ওর বাবা কারণে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। ছেলেবেলায় আমি স্কুলে থাকতেই আমার বাবা মারা যান। তখন থেকেই এই হেড স্যার অভিভাবকের মত পথ দেখিয়েছেন, অনেক সাহায্য করেছেন। আগে স্যারের ছাত্র ছিলাম, এখন তাঁর সহকর্মী। দুবছর হলো স্কুলে শিক্ষকতা করছি।
আগেও যেমন স্যারে কথা মেনে চলতাম, এখনও মেনে চলি। কয়েকটা সেকেন্ডের জন্য চোখ দুটো বন্ধ করে শাহানার মুখটা মনে করার চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে ছাত্রী থেকে বউ রূপে ভেবে দেখছি, কেমন দেখায়। ও দেখতে ভালো, মেধাবী, শুধু বয়স অল্প এই একটা কারণে অন্তর সাড়া দিচ্ছে না। তবুও আমি হেডস্যারকে বলে দিলাম, “আপনি যা ভালো মনে করেন তাই করেন।” স্যার আমার সম্মতি পেয়ে ওই দিন রাতেই শাহানার বাবার সাথে পাকাকথা দিয়ে ফেললো। পরের সপ্তাহেই খুব সাদাসিদে ভাবে আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো। নেই কোন আয়োজন, লাগেনি কোন যৌতুক, তার সাথে জামাই চাকরি করে আমার শ্বশুর তো সেই খুশি। কিন্তু বিয়ের পর শাহানাকে বাবার বাড়িতেই রেখে দিয়েছি। ওখানে থেকে পড়ালেখা করুক আমার বাসায় এলে শুধু শুধু স্বামী-সংসারের দ্বায়িত্ব বাড়বে ওর ওপর,তারচেয়ে বরং দেড়বছর পর মেট্রিক দেয়ার পর বাসায় তুলে নেবো।
বিয়ের পর কেমন যেন বদলে গেছি আমি। মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি লাগে। আমি যেন বিয়ে নামক ফরমালিটির মাধ্যমে এই ছোট্ট মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেছি। এখন ওর প্রতি অন্যরকম দৃষ্টিতে তাকানো হয়ে যায়, চোখে চোখ পড়তেই দুজনেই লজ্জা পাই, আগে কখনো ওর সাথে কথা বলতে এমন হতো না। শাহানাও আগে আমাকে ডাকতে কোন সংকোচ করতো না, আমার সাবজেক্টে কোন প্রবলেম হলে নিঃসংকোচে অফিসে বা অন্য কোথাও দেখাতো। এখন তো আমাকে ডাকতেও লজ্জা পায়। বিয়ের কয়েকদিন পর দেখি ও কয়েকবার কিছু বলতে চাইছে, কিন্তু লজ্জায় বলতে পারছে না। বিষয়টা খেয়াল করে আমি নিজেই জিজ্ঞেস করলাম, কিছু বলবে? শাহানা দৃষ্টি নিচের দিকে নামিয়ে বললো, “আম্মা আপনার জন্য টিফিন পাঠিয়েছে।” আমি বললাম,“ঠিক আছে, টিফিন পিরিয়ডে দুজন একসাথে খাবো।”
ওর আমার প্রতি লজ্জা, সংকোচটা ভাঙানো দরকার। তাই টিফিন পিরিয়ডে ওকে ডেকে একটা খালি রুমে দুজনে খেতে বসলাম। ওকে বললাম, এতো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। সবাই জানে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তুমি আমার বউ। এছাড়া তুমি আগেও যেমন ছাত্রী ছিলে, এখনও স্কুলে আমার ছাত্রী। মন দিয়ে পড়ালেখা করবা। কোন কিছু লাগলে আমাকে বলবা। একটুও লজ্জা করবা না। ও বললো,“ঠিক আছে।”
ভালোই চলছিলো আমাদের সময়গুলো। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন আমাদের স্কুলে দেখা হতো। মাঝে মাঝে আমি শ্বশুরবাড়িতে যেতাম। আবার মা যখন বৌকে দেখতে চাইতো তখন ওকে টিফিনে কিছুসময়ের জন্য বাসা থেকে ঘুরিয়ে আনতাম। আমি শাহানার প্রতি কতটা দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম তা শুক্রবারে দেখা না হলেই বেশি টের পেতাম। শাহানাও আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে, আমি টের পাই ওর চোখে মুখে। মানুষের চোখে অনেক কিছু প্রকাশ পায়। এভাবে ভালোই চলছিলো আমাদের দিনগুলো।
বিয়ের কয়েকমাস পরের কথা। একদিন দেখি শাহানার মন খারাপ। আমি ওকে ডেকে জিজ্ঞেস -করি কি হয়েছে? ও প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়েও বলে- কিছু না। আমি বুঝতে পারি কিছু তো একটা হয়েছে, নয়তো ওকে এমন লাগছে কেন? ওর চাচাতো ভাইবোনেরাও একই স্কুলে পড়তো। তাদের একজনকে ডেকে জিজ্ঞেস করি ওদের বাসায় কিছু হয়েছে নাকি? জানতে পারি- শ্বশুর শাশুড়ির সাথে ঝগড়া করেছে। তাও শাহানাকে নিয়ে। বিষয়টা এমন, শ্বশুর চায় না তার মেয়ে বিয়ের পর বাপের বাড়িতে থাকুক। আমি সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে গেলে, আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে অনেক কথা বলে। পোড়া কপাল তার, মেয়ে বিয়ে দিয়েও মেয়ে পোষা লাগছে।
আমি অবাক হই, ইনি কি শাহানার বাবা? বিয়ের পর শাহানার যখন যা লাগে আমিই দেই। ও মুখ ফুটে কিছু চায় না, তবুও ওকে হাত খরচের টাকা দেই, পোষাকসহ সব খরচই আমি দেই। আমার শ্বশুরকে শুধু তার মেয়েকে তিনবেলা ভাত খেতে দিতে হচ্ছে। তাতেই তার এত বিরোধ?আমার খুব রাগ হয়। মানুষ এত খারাপ হয় কি করে? আমি শাহানাকে বলি,“যাবে আমার সাথে? তোমাকে আর এ বাড়িতে থাকতে হবে না। চলো, নিজের বাড়িতে চলো।” শাহানা -একটু দাড়ান, বলেই ব্যাগ গোছাতে শুরু করে। ও শুধু বই খাতা স্কুল ড্রেস আর আমি যে পোষাক দিয়েছি তাই নিলো। বাবার দেয়া কিছু নিলো না। তখনই বুঝলাম, আমার রাগের চেয়েও ওর ভেতর চাপা কষ্টটা অনেক বেশি ভারি। দুজনেই অভিমানে ওই গৃহ ত্যাগ করলাম।
শাহানাকে আমার মা কোন কাজ করতে দিতো না। অবশ্য দুইজন থেকে সদ্য তিনজনে পরিনত হওয়া সংসারে তেমন কোন কাজ ছিলো না। তবুও রান্নাবান্নায়, ঘরদোর পরিষ্কার, কাপড়চোপড়, হাসমুরগি ইত্যাদি টুকটাক কাজ শাহানা করতে চাইতো। মা ওকে কাজ করতে দেখলে প্রায়ই ধমক দিতো, ছোট্ট বউ, তোর না পরীক্ষা, যা পড়তে বস।
শাহানার নাকি মায়ের মুখ থেকে ছোট্ট বউ শুনতে, আর ধমক পেতে খুব ভালো লাগতো।
এ বাড়িতে আসার পর ও আগের চেয়ে ভালো আছে। কিন্তু সমস্যাটা বেধেছে পড়া এবং দাম্পত্য নিয়ে। আমরা স্কুলের মেট্রিক পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বলতাম, তার ছেলেমেয়েরা যেন রাত ১-২টা পর্যন্ত পড়ে। বা ১২ টায় ঘুমালে ৫ টায় ডেকে দিবেন। কিন্তু আমি স্যার হয়ে নিজেই রাতের বেলা ওর পড়ার সময় নস্ট করে ফেলছি। আসলে এক ঘরে স্বামী-স্ত্রী থাকলে জৈবিক চাহিদা জেগে ওঠাই স্বাভাবিক, যেটা আমার অতরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করা সম্ভব হতো না। চাহিদা পূরণ না পর্যন্ত আমার ঘু্মই হতো না। কিন্তু পরে কেমন খারাপ লাগতো, প্রতিদিন এই সময় নষ্টের কারণে ওর রেজাল্ট খারাপ হবে না তো। এই ভয়েই ওকে মেট্রিক পর্যন্ত শ্বশুরবাড়িতে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা তো আর হলো না। তাই দিনের বেলায় ওর প্রতি আরো বেশি খেয়াল রাখতাম।
আমাদের সংসার, ওর পড়ালেখা সবকিছু ভালোই চলছিলো। ও মেট্রিকে ভালো রেজাল্ট করেছে। কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায়ও ভালো রেজাল্ট করে পাস করেছে। কাছাকাছি একটা কলেজেই অনার্স ভর্তি হয়েছে ও। কারণ দূরের ভালো কলেজে পড়তে গিয়ে দুজন দুজনকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হবে। ওকে ছাড়া যে আমার সবকিছু স্তব্ধ মনে হয়। কিন্তু এতগুলো বছরে একবারও বাবার বাড়িতে যায় নি। অভিমানে যায় নি। আমি তাকে বলেছিলাম, তোমার মন চাইলে যেতে পারো। ও বলেছিলো, যে বাড়িতে ভাতের খোটা শুনতে হয়েছে, সেখানে যাবার ইচ্ছা আমার নেই। শুধু মাকে দেখতে ইচ্ছা করে।
শাহানার ছোট দুই ভাই ছিলো। ওরা হাইস্কুলে উঠেছে। স্কুলের অভিভাবক সম্মিলনে ওদেরকে বলে দিয়েছি মাকে যেন আসতে বলে। ওদেরকে মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে স্কুলে থেকেই নিয়ে যেতাম শাহানার জন্য। আবার নিয়ে আসতাম। জানি না, শ্বশুর জানতে পারলে রাগ করবে কিনা, কারণ সেদিন রাগারাগি করে ও বাড়ি থেকে আসার পর থেকে যোগাযোগ বন্ধ।
আমার শাশুড়ি অভিভাবক সম্মিলনের অনুষ্ঠানে এলে শাহানাকেও নিয়ে আসি। তাদের দুজনের অনেক দিন পর দেখা হয়। দুজনেই কেঁদে ফেলে। শাশুড়ি আমাদের বারবার ও বাড়িতে যেতে বলে। কিন্তু আমরা যখন তাকে সেদিন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেতে চাই তখন শাহানাকে বলে, তোর বাবা জানতে পারলে রাগ করবে। আরো কয়েকটা বছর কেটে গেছে আমাদের প্রথম সন্তান হবার পর বুঝতে পারি বাবা হবার অনুভূতি কেমন। তখন আনন্দে কেমন জানি সব অভিমান দূর হয়ে যায় শাহানার বাবার প্রতি। ছেলের আকিকার আগে সব অভিমান ভুলে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে শ্বশুরকে বলে
আসি- অনেক তো হলো, এবার সবকিছু ভুলে দুজনে নাতিকে দোয়া করে আসবেন। আপনার মেয়েও আপনার জন্য অপেক্ষায় আছে। আকিকার দিন শ্বশুর শাশুড়ি দুজনেই আমাদের বাড়িতে আসে, তারপর থেকে আমাদের মধ্যে আর কোন দূরত্ব নেই। আসা যাওয়া চলছে। সেই দিন আরেকটা জিনিস শিখেছি, ভালো ব্যবহার দিয়ে খারাপ সম্পর্ককেও জোড়া লাগানো যায়। যদি নিজের মধ্যে ইগো ধরে রাখতাম তবে কখনো আমাদের সম্পর্ক ভালো হতো না, কাউকে না কাউকে আগে হাত মেলাতেই হবে।
শাহানা কাছাকাছি একটা প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষিকতা করছে। আমাদের চার জনের সংসারে কোন অভাব নেই। দুজনের ইনকাম, বাবার জমি থেকে আসা ফসল ইত্যাদিতে ভালোই চলে যায়। ওর ছোট দুই ভাই বড় হয়েছে, আমরা তাদের লেখাপড়ার খরচ দেই। কারণ আমরা না দিলে হয়তো শ্বশুরের বেশিদূর পড়ানোর সামর্থ্য নেই। শাহানা ভাইদের পড়ার খরচ দেবার পাশাপাশি বাবা মারও দেখাশোনা করে। মাঝে মধ্যে টাকাও দেয়। এতে আমারও ভালো লাগে। কারণ এটা মনে হয় যে, প্রত্যেক বাবারা বুঝুক, মেয়েকে পড়ালে শুধু খরচই হয় না, ভবিষ্যতেও কাজে লাগে। যেন শাহানাকে দেখে অন্য মেয়ের বাবারা তাদের মেয়েকে শিক্ষিতা করতে অনুপ্রাণিত হয়।