পাশের বাসার নিধি আপু

পাশের বাসার নিধি আপু

ছাঁদে বসে বসে গিটারটা নিয়ে গান
গাইতেছিলাম, হঠাৎ পাশের বাসার দিকে
চোখ দুইটা গেল। কী দেখছি আমি সপ্ন নাকি সত্যি, একটা মেয়ে
কেমনে এত্তগুলা কিউট হয়। তার উপরে
একটা মোটা ফ্রেমের চশমা পরে আছে, আমার
আবার এমনিতেই চশমা পড়া মেয়েদের গুলারে
দেখলে চোখ সরে না।
তার উপরে এত্ত কিউট মেয়ে, মনে হয় চশমাটা
তার জন্যই বানানো হয়েছে।
হা করে তাকিয়ে আছি তো আছিই, হঠাৎ
মেয়েটা আমার দিকে তাকাতেই আবার গিটার
বাজানোতে মন দিলাম।

হঠাৎ মনে হল কে যে ডাকতেছে, ওমা কী
কপাল আমার ওই মেয়েটাই তো ডাকতেছে।
– ওই পিচ্চি একটু আগে হা কইরা কী দেখছিলা (মেয়েটা)।
– হায় হায় মেয়েটা তার মানে আমারে তাকাই থাকতে দেখছিল।
– কই নাতো কিছু দেখি নাই, আমিতো গিটার
বাজাইতেছি, কী দেখলাম আবার।
– ঐ পিচ্চি মিথ্যা বলো কেন আমি মাত্র দেখলাম
তুমি তাকাইলা (মেয়েটা)।
– তাকাইছি ভাল কথা, আপনি এমন পিচ্চি পিচ্চি
করতেছেন কেন।

দেখছেন আমি কত্ত বড়, ১১ তে পড়ি।
– হা হা হা, হয়েছে হয়েছে পিচ্চি আমি ১২ তে পড়ছি, তোমার নামটা কী পিচ্চি। (মেয়েটা)
– দূর ভাল লাগে না আবার পিচ্চি বলে, নিজেতো
একটা চশমিশ (মনে মনে) আমি সাহরিয়া, আপনার নামটা কী?
– আমার নাম নিধি, এখন টা টা পিচ্চি , আম্মু ডাকতেছে।
– কী সুন্দর নাম একদম মনের মধ্যে গেঁথে গেল আহা, আবার ভাল ও হইল আমার থেকে বড়
ভাবা যায় না। তারপর রুমে এসে ফুল ভলিউমে
গান শুনছিলাম আর ডান্স দিতাছি।

হঠাৎ আমার কিউট আম্মাজানের ডাক
সাহরিয়া একটু এই দিকে আয় তো বাবা।
হ্যা মা আসিতেছি।
এসেই তো আমার চোখ কপালে উঠে গেল।
ওই তো সেই চশমিস মানে নিধি আপু।
– এইটা হল তোর আন্টি গতকাল রাতে পাশের বাসাই ভাড়া আসছে, আর একদিক দিয়া আমার
আগে একই কলেজে পড়তাম, সালাম কর হতচ্ছারা।
– আস্ সালাম ওয়ালাই কুম, হায় হায় আন্টিরে দিতে নিধি আপুরে দিছি, সমস্যা নেহি এক বছরের বড়। তার পর আন্টিরে সালাম করলাম।

– এটা ওনার মেয়ে নিধি, পাশের মহিলা কলেজে
ভর্তি হইছে, ওর কলেজ এর পরেই তোর কলেজ,
ও এখান কার কিছু চেনেনা তাই তুই যাবার সময়
নিধিরে নিয়ে যাবি।
– আমি শুধু মাথা নারলাম।
– তুই ওরে একটু তোর রুমে নিয়ে যা, আমরা দুই
বান্ধবী একটু গল্প করি।
– হুমমমমমমম, আসেন আপু। আল্লাহ জানে কী কপালে আছে, চারিদিকে না কত জিনিস ছড়াই ছিটাই আছে।
– ছি ছি ছি ওই পিচ্চি এইটা রুম না এইটা গোয়াল ঘর হুমমমমমমম (নিধি)।
– পিচ্চি পোলা তো তাই এমন, আপনি তো বুড়ি
একটা গুছাই দেন না।

– কী বল্লা চোখ দুইটা গরম করে।
– হি হি হি না না কিছু না এমনি।
– ওই তুমি সিগরেট খাও নাকি কিসের গন্ধ ।
আন্টিইইইইই।
– বলার আগেই মুখ চেপে ধরছি, ও মা কী নরম ঠোঁট আর মুখ খানা। ওই আপনারে কে বলছে আমি সিগরেট খাই দেখছেন না কত কিউট ঠোঁট,
আর গন্ধ কই পাইলেন আমি তো মাত্র চকলেট খাইছি,,মুখ ধরেই কথা গুলো বললাম,
সরি সরি মুখ ছেরে দিয়ে।

এই দেখেন চকলেট, যেমনে চিৎকার দিছিলেন
আম্মু শুনলে আমারে আচ্ছা মতো ক্যালানি দিত।
আর হ্যা আর পিচ্চি বলবেন না আমার নাম সাহরিয়া নাম ধরে বলবেন।
– হি হি আচ্ছা তোমার হাত এত্ত নরম কেন
মেয়েদের মতো। (নিধি)
– আমি ও হেঁসে দিলাম,, আচ্ছা আমি ও তুমি করে বলি কেমন।
– ওকে বল।
– তোমার নামটা কিন্তুু ফাটাফাটি, কেমন হৃদয়
টাচ করানো নাম। বিয়ে কররে তো এই নাম
দেখেই করব।

– তাই বুঝি, তো তোমার এমন পঁচা নামটা কে
রাখছে শুনি। (নিধি)
– জানিনা তখন পিচ্চি ছিলাম তো কে রাখছে
চিনি নাই হি হি।
এর মধ্যেই নিধির মা ওরে ডাক দিল আর ও
আমার চুলে একটা টান দিয়ে দৌড়ে চলে গেল।
– কেমন বজ্জাত মেয়েরে বাবা, কিন্তুু আর যাই
হোক এমন বউ হইলে জীবনে আর কিচ্ছু দরকার নেই।
পরেরদিন সকাল সকাল নিধি আপুদের বাসার সামনে দাঁড়াই আছি,
মন যে আর মানিতেছে না কখন কিউট এর
ডিব্বাটারে দেখমু।

হঠাৎ উপর থেকে আন্টির ডাক সাহরিয়া উপরে
আস।
গেলাম উপরে গিয়ে দেখি একি আমার কিউট
নিধিটা এইটা কী পড়ে আছে।
একটা থ্রি কোয়াটার আর একটা গেঞ্জি পড়ে বসে আছে আর চশমা তো আছেই।
কত্ত যে কিউট লাগছে আমি নিজে ও জানি না।
– তো পিচ্চিটা এত্ত সকাল সকাল কেন শুনি (নিধি)।
– না মানে মা বলল তোমারে নিয়ে কলেজে যাইতে তো তাই আসছি।

– ওই পোলা এখন ৭ টা ৩০ বাজে বুঝলা।
– ও মা হ্যা তাই তো, মনে হয় আমার ঘড়ির টাইস ঠিক ছিল না, তা হলে আমি এখন আসি কেমন।
– একি কই যাও বাবা (আন্টি)
– না মানে আন্টি আমি টাইম না দেখেই চলে আসছি তো তাই।
– তো এসেই যখন পড়েছ এখান থেকে খেয়ে দেয়ে কলেজে যাবে,।
– না না আন্টি আমি খেয়ে এসেছি।
– থাক না মা দেখছ না বাবু কত টাইম মেন্টেন করে, খেয়ে তো আসছে বটেই (নিধি)।
– সালার মিথ্যা কথা ক্যান বললাম খিদাই পেঁট চোঁ চোঁ করছে।

– তোমার মা ফোন দিছিল তুমি নাকি সেই ৬ টার দিকে না খেয়েই বের হয়ে আসছ, তাই বলছি চুপচাপ খেয়ে নাও, (আন্টি)
– সম্মানটা মনে হয় গেলরে এইবার।
– বাব্বা ৬ টার দিকে থেকে এসে বসে আছ গুড গুড, মতলব কী শুনি (নিধি)।
– চুপ থাক তো নিধি এমনি না খেয়ে ছেলেটার মুখ খানা শুকিয়ে গেছে।
– এই না হলে আমার শ্বাশুরি, (মনে মনে)।
-সাহরিয়া তুমি একটু নিধির রুমে গিয়ে বস, আমি খাবার নিয়ে আসছি, নিধি তুই ও ফ্রেস হয়ে আয় এক সাথে খাবি। (আন্টি)
– আচ্ছা আন্টি আংকেল কই।
– ওহহ তোমার আংকেল একটু কাজের চাপে বাইরে গেছে ৭ দিন পর আসবে।
– ওহহহহহহ ঠিক আছে, বলে নিধির রুমে গেলা।

এত্তো গুলা পুতুল কম করে হলে ও ২৫ টা হবেই দুইটা ইয়া বড় বড়।
বেডের উপর দেখলাম নিধির ফোন তাই চুপি চুপি নাম্বারটা নিলাম আর ফোনটা রেখে দিলাম।
রাতে ফোন দিব। এদদিন ও দিক দেখছি অনেক সুন্দর করে সাজানো।
এর মধ্যে আন্টির ডাকে খেতে গেলাম আমার কিউটিটা ও আছে, আহা কত সুন্দর করে খাচ্ছে ওই ঠোঁটে একটা পাপ্পি দিয়া মরলে ও জীবন ধন্য।
সব শেষে বেড়িয়ে পড়লাম কলেজের উদ্দেশ্যে।
আর সেই স্কুল লেবেল থেকেই ফাঁকি বাজ ছিলাম, কত্ত যে স্কুল ফাঁকি দিয়ে নদীর পারে বসে থাকছি।
নিধির কলেজের কাছে এসে নিধিকে বললাম
আচ্ছা আপু কলেজে যাবা।
– হুমমমমমমম, কলেজে যাওয়ার জন্যই তো আসছি।

– না মানে বলছিলাম, আমি কলেজে যাব না নদীর পারে যাব, একদিন কলেজে না গেলে
কোন কী ক্ষতি হবে। না মানে এমনি বলছিলাম।
– ফাঁকিবাজি তাই না যাও কলেজে, না হলে আন্টিরে বলে দেব, যে তুমি কলেজ যাও না।
– দূর বইলা ও তো এক বিপদে পড়ছি, চলে আসছিলাম হঠাৎ নিধির ডাক ওই পিচ্চি, যেতে
পারি বাট জায়গাটা ভাল না হলে কিন্তুু আন্টিরে
বলে দিব হুমমমমমমম।
– হি হি মনের মধ্যে তো ঢাকঢোল বাঁজতেছে,
আচ্ছা চলো।
– ওয়া এত্ত সুন্দর যায়গা (নিধি)
– মেয়েটা কেন এত্ত সুন্দর বুঝি না, কত্ত
কিউট কইরা হাঁসে সব কিছুই যেন তার সুন্দর্যটা
কাছে হার মানবে।

– আমি হা করে তার দিকে তাকাই আছি।
– ওই কী দেখ ওমন করে শুনি (নিধি)।
– একটা কথা বলব আপু,
– হুমমমমমমম।
– তুমি না একটা কিউট এর ডিব্বা, আচ্ছা তুমি
এত্ত কিউট কেন।
– দূর গাধা, ওই আমি নৌকাতে চরব।
– কী এখন নৌকা পামু কই,
– নৌকা আনবা নাকি আন্টিরে,
– হুমমমমমমম আনছি। মাম্মা একটু আমাগো নিয়ে ঘুরবেন।
– ১০০ টাকা লাগব।

– কীইইইই আমার কাছে ৬৫ টাকা আছে, চলেন না মামা পিলিজ।
– না না পারমু না।
– কী আর করার লজ্জা সরম হত্যা কইরা নিধি আপুর কাছে গিয়া কইলাম,
আপু ৩৫ টাকা হবে আপনার কাছে।
– কেন শুনি।
– না মানে আমার কাছে ৬৫ টাকা আছে, আর নৌকা ওয়ালা মামা ১০০ টাকা নিবে।
– কীইইইই, একটা মেয়েরে বেরাইতে আনছ আর টাকা নাই।
– বেরাইতেই তো আনছিলাস, চরাইতে তো আর না, তারাতারি টাকা দেন না হলে অন্য জনে নিয়া নিব।।
– ওকে ওকে এই ধরো নাও টা ১০০ টাকা দিল।
এই ধরেন ৬৫ টাকা।

– কেন ৬৫ টাকা কেন দিচ্ছ,
– বারে আমি তো তোমার কাছ থেকে ৩৫ টাকা চাইলাম, তাইলে ৬৫ টাকা ফেরত দিতে হবে না।
– হয়েছে টাকা লাগবে না এখন যাও নৌকা দিয়ে আস।
– আচ্ছা আনছি, এখন নৌকার মধ্যে বসে আছি দুই জনে। কেমন বাচ্চাদের মতো পানি নরতেছে
,এই জন্যই ভাবি সুজন সখি আর এমনি এমনি
কানের সোনা চায়নাই।
– যাই হোক সেদিনের মতো বাসাই আসলাম।
– রাতে খেয়ে দেয়ে ১০ টার দিকে ফোন দিলাম প্রথম বারে ধরল।
– হ্যালো! কে বলছেন। (নিধি)
– আমি পাশের বাসার ভূত তোমার ঘার মটকাবো
হা হা হা।

– ওই ফাজিল একটা চর দিব, নাম্বার কই পাইলা হুমমমমমমম।
– ওই যে সকালে নিছি, একটা কথা ছিল আপু।
– হুমমমমমমম বলো।
– তোমারে না দেখতে মন চাইতিছে আচ্ছা আমি তোমার বাসার নিচে যাই, তুমি একটু বারান্দাই আসবা পিলিজ।
– না আসতে পারব না।
– ওকে আমি যাচ্ছি কিন্তুু , বলেই টুট টুট টুট
এক দৌড়ে বাসার নিচে গেলাম গিয়ে দেখি আমার কিউটি টা দাঁড়াই আছে। তাকইয়া আছি তো আছিই, কই থেকে যে একটা কুকুর ঘেঁউ ঘেঁউ করতে করতে আমার এই দিকেই আসল।
আমি ভয়ে এক লাপে পাশের আর গাছে ওঠে গেছি।
নিধি আপু তো হেঁসে হেঁসে শেষ।

আহা তার এমন হাঁসির জন্য আমি শত শত
কুকুরের তাঁরা খাইতে ও রাজি।
সেদিনের মতো ওই খানেই শেষ।
তার পরে আস্থে আস্থে আমদের আরো অনেক
ভাল সম্পর্ক হলো।
সকালে কলেজ ফাঁকি দিয়ে নৌকাই ঘোরা,
রাতে চোরের মতো দেখা করা আইসক্রিম
নিয়ে গিয়ে দেওয়া।
ভালই চলছিল আমাদের সব কিছু।
কিন্তুু কেডাই জানিত সুখ এই ফাঁডা কপালডা
দিয়া পড়িয়া গেছিল।

নিধি আপুর বাবার আবার বদলি হইল, যেদিন
আপু চলে গেছিল আমারে জরাই ধরে কাঁদছিল
মনে হয় আমারে ভালবাসার কথাটা বলতে পারছিল না সেই জন্য।
আমি ও কাঁদছিলাম অনেক কিন্তুু লুকিয়ে লুকিয়ে কিছু বলতে পারছিলাম না।
কি বলব বুঝতে পারছিলাম না, আপুরা চলে
গেল সিলেট। আমাদের এখান থেকে অনেক দূরে।
আমার দুনিয়া কেমন অন্ধ হয়ে আসছিল
কিছু ভাল লাগছিল না আপটারে ছারা।
আমার নিধি আপুটা, এমন করে ৫ দিন হয়ে
গেল, কিছুই ভাল লাগছে না, আপুরে ফোন দিলাম আর বললাম আমি সিলেট যাচ্ছি, বলে ফোনটা কেটে দিলাম।
আম্মুর কাছে থেকে কিছু টাকা নিলাম
আর ছুটলাম।

– পিছন থেকে আম্মু বলল কই যাবি এত্ত সকালে।
– একটা কথাই বলছিলাম তোমার হবু বউমারে আনতে যাচ্ছি।
বলেই দৌড়….
দীর্ঘ ১২ ঘন্টার পর সিলেট এসে গেছি,
দূর থেকে দেখলাম নিধি আপু দাঁড়ই আছে,
মনে হল আমার জন্যই দাঁড়ই আছে,
চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে
কেমন কিউট বাবুটা আমার রোগা হয়ে
গেছে।।

আর এক পা ও না দাঁড়ইয়া দৌড়ে গিয়ে আপুরে
জরাই ধরলাম আর বলতে লাগলাম,
অনেক ভালবাসি আপু তোমারে অনেক ভালবাসি, তুমি আসার পর আমার দুনিয়াটা অন্ধকার হয়ে গেছিল।
যাই হোক তোমাকেই আমার চাই ব্যাস।
আজকেই তুমি আমার সাথে যাবা।
ফোনটা বের করে আম্মুরে ফোন দিলাম আর
বললাম তোমার বউমারে পেয়ে গেছি,
তোমার বান্ধবীরে বইল তার মেয়ে তার হবু জামাইয়ে লগে আছে। টুট টুট টুট
– ওই ফাজিল আগে ক্যান বলিস নাই আমারে ভালবাসিস, আমিও তোরে অনেক ভালবাসি
পিচ্চি।

– আবার পিচ্চি, আচ্ছা আপু একটা কথা বলব।
– হুমমমমমমম,,
– তোমার ওই নরম ঠোঁটে একটা পাপ্পিইই বলার আগেই দিয়া ফেলছে।
ওই হইছে এবার চলো ট্রেন ছেরে দিছে,, আবার
দৌড়দিলাম একটা নতুন,, করে জীবনটা সাজানোর উদ্দেশ্যে, আর সাথে আছে আমার
কিউট নিধি আপুটা।

সমাপ্ত

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত