একের পর এক প্রতিযোগিতায় জিতে, খ্যাতি পুরস্কার আর ভক্ত অনুরক্তের ভিড়ে যুবক তীরন্দাজ এত বেশি অহংকারী হয়ে উঠলো যে, গুরুকেও চ্যালেঞ্জ করে বসলো। বহুদূর থেকে নিশানার ঠিক মাঝখানে তীর ছোঁড়ার পর দ্বিতীয় তীর ছুঁড়ে সেটাকেও দুভাগ করে ফেলতে পারে সে। দৃপ্তভঙ্গিতে গুরুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, আপনি কি এমনটি পারবেন? গুরু কিছুই বললেন না। একদিন শিষ্যকে নিয়ে তিনি চললেন পাহাড়ের দিকে।
অনেকটা পথ যাওয়ার পর এসে থামলেন পাহাড়ের ওপরের একেবারে শেষ মাথায়। এগুতে হলে এখন যেতে হবে ঐ দূরের পাহাড়ে। কিন্তু মাঝখানে এক খরস্রোতা নদী, ভয়ংকর গর্জনে বয়ে চলেছে অজানার উদ্দেশ্যে। একটাই উপায়-দুই পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে যে গাছের কান্ডটি তার ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া। অমসৃণ এবং গোলাকার নড়বড়ে ঐ গাছের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতেও যেকোনো বীরপুরুষের আত্মা খাঁচাছাড়া হয়ে যাবে। সেখানে শিষ্যকে বিস্মিত করে দিয়ে গুরু গাছের মাঝখানে চলে গেলেন এবং স্থির দাঁড়িয়ে নিশানা করলেন বহুদূরের এক গাছের আগার এক ছোট ডালকে। মুহূর্তেই গিয়ে বিঁধলো নিশানায়। গুরু এবার আমন্ত্রণ জানালেন শিষ্যকে।
কিন্তু এভাবে নিশানা করা দূরে থাক গাছের ওপর গিয়ে পৌঁছবে কীভাবে তা ভেবেই সে কাঁপতে লাগলো ভয়ে। গুরু তখন বললেন, হাতের ওপর তোমার দখল এসেছে ঠিকই, কিন্তু মনের ওপর নয়। দক্ষ তীরন্দাজ হতে হলে তোমাকে আরো সাধনা করতে হবে। মনের ওপর দখল আনতে হবে।
লেখাটি কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন থেকে সংগ্রহীত