ভদ্র ছেলে

ভদ্র ছেলে

আহহহহ আজ কতদিন পর কলেজে যাবো তার ঠিক নেই। আম্মুকে বলেছি সকাল সকাল ডেকে দিতে। এখনো ডাকছে না কেন। মন হয় সকাল হয়নি । আরেকটু ঘুমাই। কিরে রিয়া আজকে একাই যাচ্ছিস সাগরকেনিয়ে যাবিনা.? নাহ..ওই বান্দরের সাথে আমি যাবোনা কেন ও আবার কি করলো যা করেছে তা বলা যাবেনা। অমি এখন যাই আচ্ছা যা অত:পর আম্মু আমাকে ডাকতে এলো। আমি ঘুম থেকে উঠলাম। রিয়ার সাথে কি হইছে কে রিয়া কার রিয়া কিসের রিয়া থাপ্পর খাবি নাকি বলবি কিছুই হয়নি।

ওর কাছে থেকে টাকা পাবো নিয়ে নিও তো কিসের টাকা আমার কাছ থেকে ধার নিয়েছে আচ্চা এখন খেয়ে কলেজে যা ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে কলেজের দিকে রওনা দিলাম। কেমন জানি লাগতেছে। আবার ভয়ও লাগতেছে। যদি ওই জ্বিন আমারে ধরে নিয়ে যায়। তাহলে আমার বউ এর কি হবে। আরে ধেৎ আমি তো বিয়ে ই করিনি। কলেজে পৌছে গেলাম। সবাই সবার সাথে কত গল্প করতেছে। আর আমি শালা মাইয়া খুজতেছি। একটাও পরি পাচ্ছিনা। ফেসবুকে কত পরি দেখি বাট এখানে তো পাচ্ছিনা। আরেহহসাবার একটা পাইছি। আহহহ কি সুন্দর। যেভাবেই হোক কথা বলার ব্যবস্থা করতে হবে। ওররে আল্লাহ সিড়ি দিয়ে নামতেছে। এটাই সুযোগ। গেলাম কাছে দিলাম ধাক্কা। মেয়েটা কেমন জানি রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। যাক এখন একটু ভাব নিতে হবে। আরে আছে আছে কি আছে ওইযে এখন বলবেন বাড়িতে মা বোন আছে নাকি। তাই বললাম আছে। বাট বোনও নাই বউও না। ওপরের ফ্লোর একটা মেয়ে থাকে ওরে আপু বলি।

ওফফফফ…ওই আপনি রেডিওর মতো বকবক শুরু করলেন কেন। আপনি কি চোখে দেখেন না দেখিতো তাহলে ধাক্কা মারলেন কেন দেখছিলাম তাই খেয়াল করিনি কি দেখছিলেন চাঁদের পরি দিনের বেলায় চাঁদের পরি কোথায় কোথায় পেলেন এই তো আমার সামনে তুমি এত সুন্দর কেন আমিতো দেখেই ক্রাশড এই আপনার কি লজ্জা শরম কিছুই নাই প্রেম করতে হলে ওটা থাকতে নেই সরেন তো আমার ক্লাশের দেরি হয়ে যাচ্ছে আচ্ছা যাও তবে নামটা বলে যাও একটা হাসি দিয়ে বলল..মেঘা আল্লাহরেএএএএএএ কি সুন্দর হাসি আমিতো আবার ক্রাশড। এইবার মনে হয় প্রেমটা হয়ে যাবে। এই মেয়ের পিছনে এখন আঠার মতো লেগে থাকতে হবে তাহলেই হবে ক্লাসে গেলাম । হায় আল্লাহ এতো ছাত্র-ছাত্রি কেন । শুনেছি কলেজে নাকি বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকেনা। কিন্তু এখন তো দেখছি কথাটা ভুল।

এখন বসবো কোথায়। দাড়িয়ে আছি। স্যার দারিয়ে থাকতে দেখে একটা জায়গা দিলেন। মেয়ের পাশে। আরেএএএএএএএএব্যাস এতো মেঘা। হাই মেঘা আল্লাহরে আপনি এখানেও হাজির জি আপনার টানে এখানেও চলে আসলাম কি চান আপনি ভালোবাসা দেখেন আমাদের বাসা আব্বুর নামে তার সাথে যোগাযোগ করেন আরে আমি লাভ এর কথা বলেছি সেটাও আমি জানিনা। বাসাটা নিলে আপনার লাভ হবে নাকি লস হবে আল্লাহরে এ কার পাল্লায় পরলাম আমি। ও আল্লাহ উপর থাইকা দড়ি নাইমা দাও আমি উইঠা যামু। তোমার নাম্বার দাও তো কেন আমরাতো বন্ধু তাইনা আচ্ছা ঠিক আছে দাও ০১৮…….. থ্যাংকু হয়েছে হয়েছে এবার মন দিয়ে ক্লাস করেন আহহহ কত খুশি খুশি লাগতেছে। শেষ পর্যন্ত একটা পরি পাইলাম । চাঁদের পরি। বাসায় চলে আসলাম। রাতে ফোন দিলাম। হ্যালো কে তোমার জামাই কে রে তুই খাইছে আমারে তুই তুকারি শুরু করছে।

আমি সাগর এত রাতে কি চাই একটু কথা বলতে চাই তারাতারি বলো আই লাভ ইউ লাভ ইউ টু বাই(বলে ফোনটা কেটে দিলো) কি শুনলাম আমি নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছিনা। সারারাত আর ঘুম হলোনা। পরদিন সবার আগে কলেজে গেলাম কেউ আসে নাই। অয়েট করতেছি তার জন্য। কখন যে আসবে কে জানে। সময় কাটতে চায়না। অনেকক্ষণ পর চাঁদের পরির দেখা পেলাম। মেঘা ঐ মেঘা কি কাল রাতে কি বলেছিলা একটু আবার বলোতো কেন কি হয়েছে..ওটাতো আমি সবাইকে বলি কিছুনা আচ্ছা চলো। তারপর থেকে মেঘা যেখানেই যেত আমাকে নিয়ে যেত। আস্তে আস্তে বিষয়টা আমার কাছে পেইন লাগলো। ফুসকা খেলো..টাকা কে দিবে..আমি। আইসক্রিম খেলো টাকা কে দিবে.আমি। সব কিছুর টাকা আমাকেই দিতে হয়।

মেঘা আমার সাথে খুব মিস্টি করে কথা বলে। বাবু..ওগো..এগুলা বলে ডাকে। আর এটা শুনে আমিতো ফিদা। কিন্তু এদিকে আমার পকেট গরের মাঠ হয়ে যাচ্ছে। ঠিক করলাম তার কাছে থেকে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কালকে ফাইনাল প্রপোজ করবো। পরদিন কলেজে গেলাম। মেঘাও আসলো। আমি মেঘার কাছে গেলাম। একটা ফুল সামনে বাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে বললাম আই লাভ ইউ ঠাসসসস চোখটা খুলে দেখি ওমা এতো অন্য একটা মেয়ে। মেঘা কই। কি লজ্জা ! কি লজ্জা। হারামজাদা..আমাকে চিনিসনা জানিসনাপ্রপোজকরলি। তোর তো সাহস কম না আপু আপনাকে বলিনি হ্রামি আবার কথা বলিস। ওই তোরা একটু এদিকে আয় তো আপু ওদের ডাকতে থাকেন আমি নাই। বলেই দিলাম দৌড়। কি করে কি হয়ে গেল। আল্লাহই ভালো জানে কপালে কি আছে। কি করা যায়। অনেক ভেবে একটা বুদ্ধি বের করলাম। একটা কাগজে সুন্দর করে আই লাভ ইউ লিখে একটা জাহাজ বানিয়ে মেঘার দিকে উড়ে দিলাম।

এইরেএএএএএএএ সর্বনাশ করেছে। এ কার কাছে পড়লো। মেয়েটা কাগজ টা নিয়ে লেখাটা দেখে আমার দিকে আসছে। আমার তো অবস্থা খারাপ। এখন কি করি। এটা কি এটা আই লাভ ইউ কিহহ তোর এত বড় সাহস। দাড়াতোকে দেখাচ্ছি মজা। বলেই মেয়েটা প্রিন্সিপাল স্যারের রুমের দিকে গেল। এখন আমার কি হবে। একটু পর আমাকে ডাকা হলো। তারপর উত্তম মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিল। আমার খুব কান্না করতে ইচ্ছে করতেছে। কাদতেও পারতেছিনা। আল্লাহরে আমি কারে কি ভাবছিলাম। ভাবছিলাম চাঁদের পরি বাট এখন দেখতেছি ফাঁদের পরি। কি যে করি। এইবার ওকে ডেকে সামনে বসিয়ে প্রপোজ করবো।

এই মেঘা শোনো বলো গো চলো ফুচকা খেতে যাই চলো মেঘা তোমাকে একটা কথা বলব বলো বাবু আমি না তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি আই লাভ ইউ এটা কি বলতেছো বাবু হুমম সত্যি বলেতেছি কিন্তু বাবু আমার তো হাজব্যান্ড আছে হ্রামি তাইলে এতক্ষন বাবু কি গো ওগো করতেছিলি কেন এভাবে কথা বলতেছো কেন সেদিন লাভ ইউ টু বলেছিলি কেন আমি তো সব ফ্রন্ডদেরই বলি হ্রামজাদি তোর বিয়ে হইছে তার পরেও আমার সাথে এভাবে ধেই ধেই করে ঘুরে বেড়াস কেন..আজ থেকে আমার সাথে আর কথা বলবিনা আচ্ছা ফুচকা খাওয়াতে ডেকে আনলা সেটা খাওয়াও ওরররে হ্রামি রে এই বার বুঝছি কেন আমার সাথে এত লুচুপুতু করেছিস শোন।

এতদিন তোকে যা খাওয়াছি হিসাব করে সব টাকা নিয়ে আসবি ছোটলোক খাওয়ায়ছিস ফেরত নেওয়ার জন্য হুহু আর এখন যা আর তোরে খাওয়াতে পারমুনা কত্ত বড় হ্রামি। স্বামি থাকতেও কেমন লুচুপুতু করে। হ্রামজাদি তোর স্বামি তোরে প্রতিদিন পিটাইবো দুয়া করি। অনেক হইছে আর না। আর প্রেম করমুনা। এই প্রেম করতে চাওয়ার জন্য আমার ইজ্জতে কালি লাগছে। অনেক মেয়ের কাছে আমার ইজ্জত শেষ। যাইহোক সব বাদ। আজকে থেকে আমি ভদ্র ছেলে। ভদ্র ছেলেরা প্রেম করেনা। তাই আমি করমুনা। দোয়া কইরেন আর যাতে প্রেমে না পরি ওk??

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত