তিন দিন পরে আমার বিয়ে। বিয়েতে আমার একদম মত নেই। শুনেছি পাত্রী অনেক ইসলামিক মাইন্ডের! কারও সামনে বের হয় না। তাকে নিয়ে কিভাবে আমি আমার জীবন কাটাবো তা চিন্তা করতেও গাঁ ঘিন ঘিন করছে! বিয়েটা বাবা মায়ের পছন্দে হচ্ছে। আমারও যে পছন্দের কোন মেয়ে আছে বা কোন গার্ল ফ্রেন্ড আছে তা কিন্ত না। এরকম কোন কিছু সাথে আমি কখনো জড়াইনি। তবে আমার স্বপ্ন ছিল এমন কোন জীবনসঙ্গিনী পাব যাকে নিয়ে সারা শহর রিক্সা দিয়ে ঘুরব, তার পড়নে থাকবে নীল শাড়ি, খোপায় থাকবে লাল গোলাপ আর আমি পড়ব নীল পাঞ্জাবী। ধ্যাৎ! সব কিছু গুড়েবালি। মেয়েটা নাকি হাত, পা মোজা সহ ইয়া মোটা আলাখাল্লা ছাড়া বাইরে বের হয় না। কি জঘন্য! এরকম মেয়েকেই পছন্দ করল বাবা মা। তাদের মুখের উপর কিছু বলতেও পারছি না।
এর মধ্যে বাবা দুবার স্ট্রোক করছেন। উত্তেজিত হবেন ভেবে বাবার ইচ্ছার কাছে নিজেকে কুরবানি দিয়ে দিলাম। বিয়ের তোড়জোড় চলছে বাড়িতে। আমার ছোট বোনের মন খারাপ। সে এরকম মেয়েকে নাকি ভাবী হিসেবে মেনে নিতে চায় না। আমরা ভাই-বোন চুপচাপ! বিয়েতে যখন আমাদের মানে আমাকে আর আমার বৌকে একসাথে করা হলো তখন আমি আকাশ থেকে পড়লাম। এ আমি কি দেখছি! এটা কি আমার বৌ নাকি ভূত! বিয়েতে কেউ পর্দা করে? আজিব তো। বিয়েতেও হাত, পা মোজা সহ একেবারে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা। মানে কি? মাও দেখি খুশিতে গদগদ! অবশ্য আমার কিছু আত্মীয় এরই মধ্যে কানা ঘুষা শুরু করে দিছে। শুনেছি মেয়েটার নাম আয়িশা। নামটাও কিরকম গেঁয়ো!! বাসর ঘরে ঢুকতে ইচ্ছে করছে না। ভাবীরা জোর করে ঢুকিয়ে দিল।
গিয়ে দেখি ২০ হাত লম্বা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে মনে হচ্ছে বৌকে না ঘোমটা দেখতে আসছি, এই যে। ঘোমটা কি সরানো যায়?? (আমি) (কোন সাড়া নাই) ঠিক আছে এরকমই বসে থাকেন। আমি ঘুমালাম। (ঘোমটা সরিয়ে) আসসালামু আলাইকুম। (মনে করেছিলাম পূর্ণিমা দেখব এত দেখি অমাবস্যা) কি হলো সালামের জবাব দিলেন না যে?? ওয়ালাইকুম সালাম। এখন ঘুমান আমি খুব টায়ার্ড। আসুন ২ রাকাত নফল নামায পড়ি। আর আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। এই মেয়ে শোন। আমার এসব ন্যাকামি একদম ভাল লাগে না। তুমি যা ইচ্ছা কর। আমাকে কোন বিষয়ে জোর করবে না। জোরাজোরি করা আমি একদম পছন্দ করিনা। অহ। জ্বি আচ্ছা। একটু পর পেছনে তাকিয়ে দেখি সে নামাযে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটা আহামরি সুন্দরী না হলেও তেমন একটা খারাপ না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তার টেবিলে যেই যাব। অমনি গেঁয়োটা এসে হাজির, আসসালামু আলাইকুম। বার বার সালাম দেয়ার মানে কি। যত্তসব! ফযরের নামায পড়ার জন্য আপনাকে ডাকলাম কিন্তু…! কি? তোমাকে না বলছি এসব না করতে? ধ্যাৎ সকালটাই মাটি করে দিল!! মার ডাকে নাস্তার টেবিলে গেলাম, আজকে সব আয়িশা মা করেছে রে জাহিদ। (হাসিমাখা মুখে মা বলল) এই কথা শুনে খাবার মুখে দিতেও ইচ্ছে করছে না। সোহানা তো উঠে চলে গেছে। আয়িশা মুখ মলিন করে দাঁড়িয়ে আছে। আমি হালকা নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম। ইদানীং বাইরের খাবার খাওয়ার মোটেও ইচ্ছা হয় না। গেঁয়ো মেয়েটার হাতের রান্না অনেক ভালই বলতে হয়। তারপর কেন যে তাকে একদমই সহ্য করতে পারিনা! বিয়ের ৬ মাস পর বাবা মারা গেলেন।
সেই শোকে মাও বেশিদিন বাঁচলেন না। আমার পরিবারে নেমে এল শোকের ছায়া। আমি আর সোহানা সারাদিন বাইরে থাকি। রাতে ঘরে ফিরি। সারাটা দিন আয়িশা ঘরে একা থাকে। একবার আমার ফ্রেন্ডসরা বায়না ধরে আমার বাসায় আসতে। আয়িশাকে না জানিয়ে তাদেরকে বাসায় আসার অনুমতি দিয়ে দেই। যখন আমার বন্ধুরা আসে আমি দরজা খুলতে গেলাম অমনি আয়িশা দৌড়ে বেডরুমে চলে গিয়ে দরজা ভেতর থেকে নক করে দিল। আমার বন্ধুদের আপ্যায়ন করার জন্য ডাকাডাকি করছি কিন্তু সে দরজা খুলছে না। আমার ডাকাডাকি শুনে আমার বন্ধুরাও এসে ডাকা শুরু করল। যখন জোড়ে ধাক্কাতে লাগলাম, দরজা ভাঙ্গার উপক্রম তখন সে দরজা খুলল। দরজা খুলার পর যা দেখলাম তাতে আমি যতটুকু না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছে আমার বন্ধুরা।
আয়িশার আপাদমস্তক ঢাকা!! আমি খুব অপমানবোধ করলাম, এগুলার মানে কি? বোরখা পড়ছ কেন ঘরের মধ্যে? এক্ষুণি খোল! খুলে আমার বন্ধুদের নাস্তা দাও। তারা আজ এত আশা নিয়ে আসছে তোমাকে দেখবে আর তুমি এসব ঢং করতেছ?? (আমি) আমি বেপর্দা বের হবনা। নাস্তা দিব কোন সমস্যা নাই কিন্তু এভাবেই যাব। কি আমার মুখের উপর কথা? আমি তোমার স্বামী। আমি যা বলব তাই করবা। অবশ্যই আপনি যা বলবেন আমি তাই করব কিন্তু আল্লাহর হুকুম অমান্য করে নয়। আমার বন্ধুদের জন্য সে দিন তাকে আর কিছু বলিনি। সোহানাকে অনেক কষ্টে রাজি করালাম আমার বন্ধুদের আপ্যায়ন করার জন্য। বন্ধুরা যাওয়ার পর সে আমাকে অনেক বুঝায় এরকম উচ্ছৃঙ্খল (তার মতে) জীবন থেকে আল্লাহর পথে ফিরে যেতে। সেদিন রাতে অনেক ঝগড়া হয়। রাগের মাথায় একপর্যায় গায়ে হাত তুলে ফেলি!! সে দিন সারা রাত জায়নামাযে বসে কেঁদেছে! তারপরও আমার একটুও মায়া হয়নি।
এরপর থেকে আয়িশার উপর চলতে থাকে আমার শারীরিক আর মানসিক নির্যাতন! এত অত্যাচার সহ্য করার ক্ষমতা দেখে মাঝে মাঝে আমিও অবাক হই। তারপরও একটা দিন আমার কাছে তালাক চায়নি। উলটা তার পরিবারের কাছে আমার সুনাম করত। আমি যা কখনো ওর সাথে করিনি বা বলিনি তা তার মায়ের কাছে বলত। এরই মধ্যে আমার চাকরীটা হঠাৎ করে চলে যায়। বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে চলতে থাকে সংসার। সোহানারও বিয়ে দিতে হবে। এসব কিছু নিয়ে আমি খুব ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকি। আয়িশা আমাকে সান্ত্বনা দেয়। বোকা মেয়েটা আমাকে কোরআন এর আয়াত শুনায়। সে বলত, আল্লাহ বলেছেন, “আল্লাহ রিযক সম্প্রসারিত করেন যার জন্য ইচ্ছে করেন, আর যার জন্য চান সীমিত পরিমাণে দেন। তারা পার্থিব জীবনে আনন্দে মেতে আছে অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবন অতি নগণ্য বস্তু।” (সূরা আর রা’দ আয়াত ২৬) আমি কাজ না করলেও নাকি আল্লাহ রিযক দিবেন।
যত্তসব হাস্যকর বাণী শুনাতো। এসব শুনে আমার মাথা আরও গরম হয়ে যেত। রাগে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতাম। সারা রাত বারে (ক্লাব) পড়ে থাকতাম! একদিন বাইরে থেকে এসে দেখি আয়িশা অনেক সেজেগুজে বসে আছে, আজ আপনাকে একটা খুশির সংবাদ দিব। (আয়িশা) আমার আবার খুশির সংবাদ! হাহ। বল কি বলবে। আমি মা হতে চলেছি। (লজ্জায় মাথা নিচু করে বলল) কি? এটা খুশির সংবাদ? ফালতু কোথাকার! কি বলছেন আপনি? কে না মা হতে চায়। আর আপনিও বাবা হবেন। এর চেয়ে আর কি খুশির খবর থাকতে পারে? (কান্না বিজরিত কন্ঠে) এটা আমার জন্য মোটেও খুশির খবর না। অভাবের সংসারে আবার আরেকজন! সোহানার বিয়েটাও এখন ও দিতে পারিনি। এর মধ্যে উনি আসছে খুশির সংবাদ নিয়ে। এই বাচ্চা তুমি রাখবেনা। কালকের মধ্যেই এব্রোশন করায়ে আস! আমি পারব না। এটা আল্লাহর দেয়া আমানত।
আমি আল্লাহর একটা অশেষ নিয়ামতকে খুন করব? অভাবের তাড়নায় আমি এত বড় পাপ করতে পারব না। আল্লাহ বলেন, “দরিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিযক দেই আর তোমাদেরকেও, তাদের হত্যা মহাপাপ।” (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত ৩১) আমি পারব না আল্লাহর আদেশকে অমান্য করতে। কি মুখের উপর কথা। কথায় কথায় জ্ঞান দেয়া আমাকে? এই মূহুর্তে আমি লাত্তি মেরে একে শেষ করে দিতে পারি। কিন্তু তা আমি করব না। আমি তোমাকে তিন দিনের সময় দিলাম। এই কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। সে এব্রোশন করায়নি তাই প্রায় আমি তাকে মারধর করতাম। গভীর রাতে কান্নার আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গত দেখতাম সে জায়নামাযে বসে কাঁদছে। তার যখন আট মাস তখন সে একদিন আমায় বলল, সোহানা ইদানীং ছেলেদের বাসায় নিয়ে আসে যখন আপনি বাসায় থাকেন না। আমি বারণ করায় সে আমার গাঁয়ে হাত তুলেছে আজ। (আয়িশা) তোর সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি। তুই আমার বোনের নামে আমার কাছে বদনাম করছিস?
এই বলে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে এলোপাথাড়ি লাথি দেই। সে ব্যথায় ছটফট করতে থাকে। যখন দেখলাম রক্তে সারা ফ্লোর ভিজে গেছে তখন আমার টনক নড়ে! সোহানাকে যখন ডাকতে যাব তখন দেখি একটা ছেলেকে নিয়ে অন্তরঙ্গভাবে বাইরে থেকে ঘরে ঢুকতেছে! আমাকে অসময়ে ঘরে দেখে সে বিপাকে পড়ে যায়! একটু আগে আমি আমার বোনের নামে অপবাদ দেয়ায় কি জঘন্য একটা কাজ করে ফেললাম! দৌড়ে গিয়ে আয়িশাকে নিয়ে হসপিটালে গেলাম। এই প্রথম আয়িশার জন্য আমার ভেতরটা নাড়া দিয়ে উঠল! তার জন্য সুপ্ত অনুভূতি জাগ্রত হল। এই প্রথম ওর প্রতি আমার ভালবাসা অনুভব করলাম। টের পেলাম চোখ বেয়ে অজরে পানি ঝরছে! বুঝতে লাগলাম অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি ওর সাথে! ডাক্তার বলল অবস্থা খুব সিরিয়াস।
তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে এরকম হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিল ডাক্তার। লজ্জায় আমি কিছুই বলতে পারিনি শুধু বলেছি, “বলতে পারব না।” আয়িশায় উপর আমার অকথ্য নির্যাতনটা হয়তবা উনি টের পেয়েছেন। টের পাওয়ারই কথা কারণ আয়িশার সারা শরীরে আমার আঘাতের চিহ্ন যে স্পষ্ট ফুটে আছে! আমার খুব অস্বস্তি লাগছিল। অপারেশন শেষ হবে আর আমি দৌড়ে গিয়ে আমার বউকে জড়িয়ে ধরে মাফ চাইব। চিৎকার দিয়ে বলব, “প্রচন্ড ভালবাসি তোমায় আয়িশা। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।” আমি জানি সে আমাকে ফিরিয়ে দেবে না। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার মলিন মুখে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। আর যা বললেন আমি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। ডাক্তার বলল, আমার নাকি ফুটফুটে একটা মেয়ে হয়েছিল। হয়েছিল মানে? (আমি) দুঃখিত মা মেয়ে কাউকে বাঁচাতে পারিনি! আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না।
আয়িশার লাশ ধরে অনেক কান্নাকাটি করেছি। চিৎকার দিয়ে বলেছি, “আমাকে একা রেখে যেও না। ফিরে আস প্লিজ। অনেক বেশি ভালবাসব তোমায়। আমকে একটিবার সুযোগ দাও।” শুনেনি আমার কথা! সেদিন রাতে আয়িশাকে স্বপ্নে দেখি। সে আমাকে হাসিমুখে বলছে, “আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব। আপনাকে ছাড়া আমি জান্নাতে একপাও আগাব না। কথা দিলাম। আর কাঁদবেন না আমার যে অনেক কষ্ট হয়। আমার জন্য দোয়া করুন। আর আপনি তাওবা করুন।” তখনই মসজিদে গিয়ে অনেক কান্নাকাটি করি। আমার কান্নার আওয়াজে ঈমাম সাহেব আসেন। জিজ্ঞেস করেন আমার কান্নার হেতু। আমি সব কিছু খুলে বললাম। উনি বললেন; আল্লাহ বলেছেন, গুরুতর শাস্তির আগে আমি তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই লঘু শাস্তি আস্বাদন করাবো যাতে তারা (অনুশোচনা নিয়ে) ফিরে আসে।” (সূরা আস-সাজদাহ আয়াত ২১) এটা আপনার জন্য সেরকমই যাতে আপনি আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে পারেন। আমি পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলাম যা আমার স্ত্রীও জানত না।
আল্লাহ বলেন, “(এটা শিক্ষা দেয়) যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা চাও, আর অনুশোচনাভরে তার দিকেই ফিরে এসো, তাহলে তিনি একটা নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তোমাদেরকে উত্তম জীবন সামগ্রী ভোগ করতে দিবেন, আর অনুগ্রহ লাভের যোগ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তিনি তার অনুগ্রহ দানে ধন্য করবেন।” (সূরা হুদ আয়াত ৩) আমি মদ খেতাম!! আল্লাহ বলেন “যে ব্যক্তি অসৎকাজ করে কিংবা নিজের আত্মার প্রতি যুলম করে, অতঃপর আল্লাহ হতে ক্ষমা ভিক্ষে করে, সে আল্লাহকে অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু পাবে।” (সূরা আন নিসা ১১০) আমি আরও জঘন্য কাজ ও করেছি। আল্লাহ আরও বলেন, তিনি তার বান্দাহদের তাওবাহ ক্ববূল করেন, পাপ ক্ষমা করেন আর তিনি জানেন তোমরা যা কর।” সূরা আশ শূরা ২৫) আয়িশা আমাকে হিদায়াতের পথে নেয়ার জন্য অনেক বুঝিয়েছিল। (কান্না বিজরিত কন্ঠে) হিদায়াত দেয়ার মালিক আল্লাহ। কেউ কাউকে হিদায়াত দিতে পারেনা।
তিনি বলেন, “তুমি যাকে ভালবাস তাকে সৎপথ দেখাতে পারবে না, বরং আল্লাহই যাকে চান সৎ পথে পরিচালিত করেন, সৎপথপ্রাপ্তদের তিনি ভাল করেই জানেন।” (সূরা আল ক্বাসাস ৫৬) এরপর উনি বুঝিয়ে বললেন তাওবা করার পর আর পাপ কাজে জড়ানো যাবে না। আয়িশার মৃত্যুর দুু’দিন পর হঠাৎ একদিন রাতে কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। সোহানার ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ আসছিল।গিয়ে দেখি সোহানা জায়নামাযে বসে হাউমাউ করে কাঁদছে। আমি যখন জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে? সে বলল, ভাইয়ারে ভাবীকে স্বপ্নে দেখছি!! সে অনেক সুন্দর একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। সে আমাকে বলছে “এখন ও সময় আছে বোন। ফিরে এস আল্লাহর পথে।” এর কিছুক্ষণ পর দেখি আমি দাউদাউ করে আগুনে জ্বলছি। আমার চিৎকার কেউ শুনছে না। তখনই ঘুম ভেঙ্গে যায়।
বুঝতে বাকি নেই স্বপ্নটা কি ছিল। আমি তাওবা করেছি ভাইয়া আর পাপের দিকে পা বাড়াবো না। এটা শুনে আমি আর স্থির থাকতে পারিনি। ভাই বোন একসাথে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি!! কিছুদিন পর সোহানাকে একটা দ্বীনদার ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেই। আর সেই আমি আজ সব কিছু ছেড়ে মসজিদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করি। আর অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকতে প্রিয়তমার সাথে জান্নাতে একসাথে থাকার!!