অনিকেত বেশ শব্দ করে হাততালি দিয়ে বলল-এবার,এবার…
পরী অনিকেতের দিকে তাকাল। বলল-কি?
-এবার সেই ঘটনা বলব,সেই।
-সেই সেই না করে ঘটনাটা কি,বলবে?
-আমি এখন চা খাব। মামা চা দাওতো।
-আমি ভাবলাম কি না কি বলবে?
পরী সোনালি হলুদ বর্ণের শাড়ি পরেছে। কপালে পড়েছে হালকা লাল রংয়ের টিপ। ভেবেছিল,তোমাকে খুব সুন্দর খুব লাগছে-এই ধরণের কিছু বলবে। তার খুব রাগ রাগ লাগছে। এখন পর্যন্ত ঠিক মত তাকায় নি অনিকেত। এত করে সাজাটায় ঠিক হয়নি মনে হয়।
-আজ কি হয়েছে শুন?
পরী কিছু বলল না। অনিকেত বলতে লাগল-বাসা থেকে বের হয়েছি। যেই পাগলা বাবার মোড়ে এসেছি,দেখি একটি মেয়ে আকাশে উড়ছে। আমিতো দেখে হতবাক। এ কিভাবে সম্ভব,কিছুতেই বুঝতে পারলাম না।
-তোমার এসব আজগুবি কথা বলা বন্ধ করবা? সবসময় ফাজলামি ভাল লাগে না।
-আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে চল,মেয়েটা এখনও বোধহয় আছে।
এই বলে অনিকেত দাড়ায়।
-কি হল?
-মেয়েটাকে দেখবে চল।
পরীও উঠল।তার একদিন কি ফাজিলটার একদিন।
-তুমি সত্যি যাবে?
-এমন সুযোগ নষ্ট করতে চাই না। উড়ন্ত বালিকাতো আর সবসময় দেখা যায় না।
অনিকেত মনে মনে বলল,খাইছে আমারে। পরী যে সত্যি সত্যি হাটা শুরু করবে,ভাবতে পারেনি।
-উড়তে উড়তে মেয়েটা একেবারে আমার সামনে এসে দাঁড়াল। বলল,আমি জলপরী। আমিতো অবাক। এতটাই অবাক যে মুখ দিয়ে কথা বলা বন্ধ হয়ে গেছে।
-কি,আপনার চোখ মনে হয় আকাশে উঠে গেছে।
-না,তার উপরে হবে বোধহয়।
-আপনি পরীকে ভুলে যান।আমি আপনাকে খুব ভালবাসি।আমাদের জলপরীর দেশে নিয়ে যাব।
আমি হু হা করে হেসে উঠলাম।বললাম-আমার পরী ভুবন সেরা।তার মত এমন সুন্দর মেয়ে আমি কখনো দেখিনি।আর তোমার মত এমন ধবল জলপরীর জন্য তাকে ভুলে যাব।তা হতে পারে না।
বলার মাঝে মাঝে অনিকেত পরীর দিকে তাকিয়েছে। মেয়েটা মনে হচ্ছে বহু কষ্টে হাসি চেপে রেখেছে। পরী বলল-এরপর কি হল?
-বললাম সময় কম। আমার জীবনের একমাত্র অবলম্বন আমার পরী বসে আছে। এখন কিছুতেই আপনার সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করতে পারি না। এই বলে তোমার কাছে চলে এলাম।
পরী বলল-তোমার কথা অনুযায়ী, এখানেই থাকার কথা।
-তাইতো,বোধহয় চলে গেছে।
-আমি তোমাকে একটা সাজেশন দেয়,তুমি গল্প লেখা শুরু কর। তোমার এসব আজগুবি কথা বললে খ্যাতিমান লেখক হয়ে যেতে পার।
অনিকেত মাথা নিচু করে আছে। বলল-সরি।
এইসময় পরী চিৎকার দিয়ে বলল-ঐ ঐ দেখ,জলপরী উড়ছে।
অনিকেতের আকাশে তাকাতে ইচ্ছে করল না। নিজের জালে সে নিজেয় ধরে পড়ছে।
-ঐ এভাবে নিচে তাকিয়ে কেন?জলপরী খুব হাসছে ,দেখ।
অনিকেত বলবে অনেক হয়েছে, ঠিক তখনি আকাশের দিকে তাকিয়ে চমকে গেল। সত্যিই এক জলপরী উড়ছে।কিছুতেই কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।