‘আমি তোমাকে কী করেছি যে, তুমি আমাকে খামছি দিলে। আবার মুখ টিপে হাসছো, শরম করে না তোমার? তুমি আমার সঙ্গে কখখনো এমন করবে না বলে দিলাম। আমি খুব কষ্ট পাই।’
‘-ইশ্, এমন করবো না আবার! এখন কষ্ট পাও কেনো? তুমি যে সেদিন আমাকে একটা বকা দিয়েছিলে মনে নেই? বকা দেওয়ার সময় তোমার শরম কোথায় ছিল, গাছের পাতায়? আমি একটু দুষ্টুমি করলাম, এতেই বলছো, ‘কষ্টপাই’। তুমি যে আমাকে দেখলে মুখটা চোখা করে বকা দেও, ভেঙচাও, তখন? তোমার বকা বুঝি খুব মিষ্টি লাগে মধুর মতোন! সেদিনের বকা দেওয়ার কথা মনে নেই তোমার?’
-ঢের মনে আছে। আমি এমনি এমনি তোমাকে বকা দিইনি, তুমি আমাকে শুধু শুধু চিমটি কেটেছিলে তাই ছোট্ট একটা বকা দিয়েছিলাম। তোমাদের বাড়ি এসেছি বলে বেশি ফেরাই দেখাও, নাহ্? তুমি যখন আমাদের বাড়ি যাবে তখন আমিও তোমাকে এমনে এমনে দেব, মনে রেখো।’
-ইশ্সে রে, কী করবা তুমি? থুতু দিবা? ভয় দেখাবা? পানি ছিটিয়ে দিবা? খামছি দিবা? পারলে দিও। আমি এতো বোকা না, আমার অনেক বুদ্ধি আছে। আমি কখনও একা একা তোমাদের বাড়ি যাবো না, দাদির সাথে যাবো। আমাকে কিছু করলে, আমি সাথে সাথে বলে দেবো দাদিকে। তখন দাদি তোমাকে যে কী করবে জানো তুমি?’
‘-এহ্, কী করবে আমাকে? খেয়ে ফেলবে? তোমার দাদি আমাকে তোমার চেয়ে বেশি আদর করেন। তিনি আমাকে কিচ্ছু করবেন না। দাদিই তো বলেছেন, ‘আমি যে খুব লক্ষ্মী একটা মেয়ে। আর তুমি যে একটা দস্যি’, এটা তো সবাই জানে, তুমি জানো না?’
‘-হ জানি, জানি। তবে যে আমাকে ভয় দেখায়-খামছি মারে, দাদি তাকে কখনো আদর করেন না, কান মলে দেন। দাদির কানমলা! হেহ্, এক ডলাতেই চোখ থেকে রস বেরিয়ে আসবে। ডলা খেয়ে যখন গাধার মত ভ্যাঁ-ভ্যাঁ করে কাঁদবে, তখন আমি কোমর দুলিয়ে নাচবো আর টেটেঙ-টেটেঙ-টেঙ-টেঙ করে গান গাইব, বুঝছ এবার?’
‘-তুমি কিন্তু আমার সাথে বেশি দুষ্টুমি করছ। আমি এখনই দাদির কাছে গিয়ে বিচার দেব। আমার সঙ্গে বেশি শয়তানি করলে দাদি তোমার কান ছিঁড়ে ফেলবে, হু।’
‘-আচ্ছা, তাহলে এখন আমি তোমার মুখে এক লোটকা থুতু মারবো আর একটা খামচি দেবো, দেখি দাদি আমাকে কী করে, হেহ্?’
দুষ্টু ছেলের মুখে এমন কথা শুনে মেয়েটি রাগে কান্না জুড়ে দিল। মেয়েটির কান্না শুনে বড়রা ছুটে এসে ‘কী হয়েছে, কে মেরেছে’ বলতেই ছেলেটি ড্যাবা ড্যাবা চোখে তাকিয়ে বলল, ‘আমার কোনো দোষ নাই।’