হোজা একবার তার এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে একটা হাঁড়ি চেয়ে আনলেন রান্নার জন্যে। কয়েকদিন পর ফেরত দেয়ার সময় ঐ হাঁড়িটার সাথে আরো একটা ছোট হাঁড়ি যখন দিতে গেলেন, প্রতিবেশী তো অবাক। জিজ্ঞেস করলো, হোজা, দুটো হাঁড়ি দিচ্ছো যে। হোজা বললেন, তোমার হাঁড়ি তোমাকে দেবো না তো কাকে দেবো? প্রতিবেশি বললো, আমার হাঁড়ি! আমি তো একটা হাঁড়ি দিয়েছি। হোজা বললেন, তা ঠিক আছে। কিন্তু হাঁড়িটা একটা বাচ্চা দিয়েছে কি না! মা হাঁড়িটা যেহেতু তোমার, কাজেই এর বাচ্চাটাও তো তোমারই হবে। তাই না?
প্রতিবেশী তো খুশিতে আটখানা। আসলে একটা হাঁড়ি দিয়ে দুটো পাওয়ায় সে এতই দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছিলো যে, হাঁড়ি কীভাবে বাচ্চা দেয়-এ প্রশ্ন তার মনে এলোই না। কয়েকদিন পর হোজা আবারো তার বাড়িতে গেলেন হাঁড়ি ধার চাইতে। এবার প্রতিবেশী বেশ অনেকগুলো হাঁড়ি ধরিয়ে দিলো হোজার হাতে। মনে মনে ভাবলো, ইস, এবার প্রত্যেকটা হাঁড়ির সাথে পাবো একটা করে বাচ্চা হাঁড়ি!
এদিকে হাঁড়ি তো আর ফেরত আসে না। অনেকদিন অপেক্ষা করে করে শেষমেশ প্রতিবেশী একদিন হোজার কাছে গিয়ে তার হাঁড়িগুলো ফেরত চাইলো। মুখ খুব ব্যাজার করে হোজা বললেন, দুঃখের কথা কী আর বলবো ভাই। কাল রাতে বাচ্চা দিতে গিয়ে তোমার হাঁড়িগুলো মারা গেছে। প্রতিবেশী বললো, হাঁড়ি আবার মরে কীভাবে? হোজা উত্তর দিলো, হাঁড়ি বাচ্চা দেয় যেভাবে। অর্থাৎ যে হাঁড়ি বাচ্চা দিতে পারে, সে হাঁড়ি তো মারাও যেতে পারে।
শেষপর্যন্ত কাজীর দরবারে গিয়েও প্রতিবেশী কোনো সুবিধা করতে পারলো না। কাজীও তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এর আগে হাঁড়ি কি বাচ্চা দিয়েছিলো? প্রতিবেশী বললো, হাঁ। কাজী বললেন, তাহলে যে হাঁড়ির বাচ্চা দেয়ার কথা তুমি নিজেই বিশ্বাস করেছো, সে হাঁড়ি মারাও যেতে পারে সেটাও তো তোমাকে মেনে নিতে হবে।
অতএব সামান্য একটু দেখেই বিশ্বাস করবেন না বা মতামত দেবেন না। পুরোটা দেখুন, জানুন, বুঝুন, তারপর সিদ্ধান্ত নিন।