টিফিন ক্যারিয়ার কাধেঁ ঝুলিয়ে কালো রঙের একটা সাইকেলে চড়ে বাবা প্রতিদিন কাজে যেত। আর মা তখন বাড়ির দরযায় দাড়িয়ে তাকিয়ে থাকতেন বাবার চলে যাওয়া পথের পানে।
বাবা আমার একটা সামন্য পিয়নের চাকরি করে। সচিবালয়ের বড়বড় লেখাপড়া জানা স্যুট টাই পড়া বাবুরা চেয়ারে বসে পা দুলিয়ে দুলিয়ে শুধু অর্ডার দেয়, বাবা চাইতেন যেন ঐ চেয়ারটাতে তার ছেলে একদিন বসবে। তাকেও সবাই কুর্নিশ করবে।
তাই সচিবালয়ের ঐ বড় লাটদের মতো আমাকেও ছোটবেলা বাবা স্যুট বানিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতিবার স্যুট টাই পড়ে যখন বাবার সামনে দাঁড়াতাম তিনি মাকে বলতেন “দেখ দেখ শাকিলের মা আমাগো লাটসাবরে কত সুন্দর লাগতাছে। ” আমার গৃহিণী মায়ের চোখে মুখে একটা তৃপ্তির আভা ভেসে উঠত তখন। বাবা আমাকে বুকে জড়িয়ে পিঠ চাপড়ে বলতেন “মানুষ হ বাপ আমার” কিন্তু ছেলে তার মানুষ কি হয়েছে? সে প্রশ্নের জবাবে আমি নিশ্চুপ হয়ে যাই। আমি কোন উত্তর পাইনা। আসলে উত্তর নেই আমার কাছে।
একবার আমার একটা খেলনা গাড়ি খুব ভালো লাগলো। আমাদের মহল্লার যারা একটু আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাদের সবার বাচ্চার কাছেই ঐ খেলনা আছে। আমি দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কানেকানে বললাম যে খেলনাটা আমার চাই। মা না করে দিল। আমি জেদ করে সেদিন রাতে খাইনি।
সকালে ঘুম থেকে বাবা ডেকে তুললেন। আমি ঠোট ফুলিয়ে উঠলাম। চোখ ঘষাঘষি করে তাকাতেই দেখি
বাবার হাতে সেই গাড়ী খেলনা। আমি বাবার গালে তখনই চুমু খেলাম। আমি খুশিতে আত্মহারা। হঠাৎ দেখি রান্নাঘর থেকে মা কিছুক্ষণ পরপর উকি দিচ্ছে। আমি তার কাছে গিয়ে বললাম “তুমি পচা, বাবাই আমাকে ভালবেসে! দেখছো আমার জন্য গাড়ি নিয়া আইছে ” মা কিছু বললেন না, কেবল মুচকি হাসলেন।
গাড়িটার দাম ছিল ১৭ শ টাকা। কি খুব অল্প দাম? না এটা অমূল্য। আমার বাবার সাড়ে ৫ হাজার টাকার বেতনে সংসার চলা একপায়ে দাড়িয়ে থাকা খুটিছাড়া সদৃশ্য ছিল। আমার গৃহিণী মা তার প্রতিমাসের জমানো টাকা থেকে ঐ খেলনাটা কিনে আনেন, যা পরে জানি। এত গেল অল্পস্বল্প ব্যপার।
আমার এসএসসি পরীক্ষার ৩ মাস পর বাবা রোড এক্সিডেন্টে মারা যান। তখনফ্যাটিফিন ক্যারিয়ার কাধেঁ ঝুলিয়ে কালো রঙের একটা সাইকেলে চড়ে বাবা প্রতিদিন কাজে যেত। আর মা তখন বাড়ির দরযায় দাড়িয়ে তাকিয়ে থাকতেন বাবার চলে যাওয়া পথের পানে।
বাবা আমার একটা সামন্য পিয়নের চাকরি করে। সচিবালয়ের বড়বড় লেখাপড়া জানা স্যুট টাই পড়া বাবুরা চেয়ারে বসে পা দুলিয়ে দুলিয়ে শুধু অর্ডার দেয়, বাবা চাইতেন যেন ঐ চেয়ারটাতে তার ছেলে একদিন বসবে। তাকেও সবাই কুর্নিশ করবে।
তাই সচিবালয়ের ঐ বড় লাটদের মতো আমাকেও ছোটবেলা বাবা স্যুট বানিয়ে দিয়েছিলেন। প্রতিবার স্যুট টাই পড়ে যখন বাবার সামনে দাঁড়াতাম তিনি মাকে বলতেন “দেখ দেখ শাকিলের মা আমাগো লাটসাবরে কত সুন্দর লাগতাছে। ” আমার গৃহিণী মায়ের চোখে মুখে একটা তৃপ্তির আভা ভেসে উঠত তখন। বাবা আমাকে বুকে জড়িয়ে পিঠ চাপড়ে বলতেন “মানুষ হ বাপ আমার” কিন্তু ছেলে তার মানুষ কি হয়েছে?
সে প্রশ্নের জবাবে আমি নিশ্চুপ হয়ে যাই। আমি কোন উত্তর পাইনা। আসলে উত্তর নেই আমার কাছে।
একবার আমার একটা খেলনা গাড়ি খুব ভালো লাগলো। আমাদের মহল্লার যারা একটু আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাদের সবার বাচ্চার কাছেই ঐ খেলনা আছে।
আমি দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কানেকানে বললাম যে খেলনাটা আমার চাই। মা না করে দিল। আমি জেদ করে সেদিন রাতে খাইনি।
সকালে ঘুম থেকে বাবা ডেকে তুললেন। আমি ঠোট ফুলিয়ে উঠলাম। চোখ ঘষাঘষি করে তাকাতেই দেখি বাবার হাতে সেই গাড়ী খেলনা। আমি বাবার গালে তখনই চুমু খেলাম। আমি খুশিতে আত্মহারা। হঠাৎ দেখি রান্নাঘর থেকে মা কিছুক্ষণ পরপর উকি দিচ্ছে। আমি তার কাছে গিয়ে বললাম “তুমি পচা, বাবাই আমাকে ভালবেসে! দেখছো আমার জন্য গাড়ি নিয়া আইছে ” মা কিছু বললেন না, কেবল মুচকি হাসলেন।
গাড়িটার দাম ছিল ১৭ শ টাকা। কি খুব অল্প দাম? না এটা অমূল্য। আমার বাবার সাড়ে ৫ হাজার টাকার বেতনে সংসার চলা একপায়ে দাড়িয়ে থাকা খুটিছাড়া সদৃশ্য ছিল। আমার গৃহিণী মা তার প্রতিমাসের জমানো টাকা থেকে ঐ খেলনাটা কিনে আনেন, যা
পরে জানি। এত গেল অল্পস্বল্প ব্যপার।
আমার এসএসসি পরীক্ষার ৩ মাস পর বাবা রোড এক্সিডেন্টে মারা যান। তখনফ্যামিলি ম্যাম্বার আমি আমার ছোট দুই বোন। আমরা পড়লাম অথৈ সাগরে।
মা তখন সংসারের হাল ধরলেন, বাবার পেনশনের টাকায় আর মামাদের থেকে কিছু টাকা এনে মা দুটো সেলাই মেশিন কিনলেন। বাস্তবতা কি তখনই আমাদের বোধে এসে যায়। শত ঝড়ঝাপটা উপেক্ষা করে এই মা আমাকে এইচএসসি পাশ করালেন, ভর্তি হলাম পাবলিক ভার্সিটির ডিমান্ড ওয়ালা সাবজেক্ট এ।
কিন্তু আমার অধপতন হল। অবাধ স্বাধীনতা পেয়ে গেলাম যেন। উঠলাম ভার্সিটি হলে। মাসে মাসে ২ হাজার টাকা নিতে লাগলাম আমার দুখিনী মায়ের কাছে। সময়টা ছিল মাকে উল্টো টাকা পাঠানোর কিন্তু জানিনা কেন যেন আমার মাথায় এই বয়সটা আনন্দ উল্লাসের এমন উদ্ভট চিন্তা জেকে বসল।
একবার একটা নরমাল বাইক কিনার জন্য বাড়িতে মায়ের কাছে টাকা চাইতে গেলাম। মা অনেক বুঝালেন এমন বিলাসিতা আমাদের জন্য নয়। আমাদের জন্য সৌভাগ্যের চাবি কেবল পরিশ্রম। টাকা না পেয়ে চলে এলাম হলে। সব বন্ধুদের বাইক আছে অথচ আমার নেই! ব্যাপারটা আমার মনকে বিষিয়ে তুললো। মায়ের উপর জেদ করে এবার বাড়ির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলাম। ২ দিন পর ছোট বোন আর মা এসে হাজির হলে। সাথে নিয়ে এসেছেন আমার চাওয়া টাকাটা ও। মাকে টাকা কিভাবে পেল জিজ্ঞেস করতে ছোট বোন বলল সেলাই মেশিন একটা বিক্রি করে দিয়েছে মা।
এরপর ও মায়ের অমায়িক হাসি, “তুই খুশি থাক বাপ, মানুষ হ তুই ” এটাই ছিল মায়ের ইচ্ছের শেষ কথা। সেদিন ও আমি মানুষ ছিলাম না। মানুষ হওয়ার ভং ধরেছিলাম।
মার হাত ধরে বললাম “ভার্সিটি থেকে বেরুলেই চাকরি, এই অবস্থার পরিবর্তন হবে মা। আমি করব”
মায়ের অশ্রুসিক্ত চোখ যেন একথা শুনে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। আমাকে জড়িয়ে ধরে সেদিন মা অনেক কাঁদলেন। আমি ব্যাপারটা নরমাল নিলেও রুমমেট খসরু গুরুত্ব দিয়ে বলল “শাকিল চাচিরে আর কাদাইস না, ওনার উপর এমন টাকার প্রেসার দিসনা।”
কে শোনে কার কথা। তাকে জ্ঞান দিতে না করে হুঙ্কার দিলাম। তারপরের ঘটনা আরও করুন। আমি প্রেম করে বিয়ে করে ফেলি আমার অনার্স লাষ্ট ইয়ারে।
আমি বেশ কয়েকমাস দেশের বাইরে ছিলাম, বউকে বলেছিলাম মাকে নিয়ে আসতে এতে সে একা একা ফিল করবেনা। কিন্তু সে সাফ বলে দিল সে তার বাপের বাড়ি কিছুদিন যেয়ে থাকবে তাই আমার মাকে আনবে না সে ।
মায়ের কাছে দোয়া চাইতে গেলাম, প্রথম বিদেশ ট্যুর তাই। মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে বললেন “ভালো থাক বাপ, মানুষের মতো মানুষ হ জীবনে” তখনই মা অসুস্থ ছিলেন। আস্তে আস্তে অসুখ রূপ নিল ভয়াবহ।কিডনী নষ্ট হয়েছে একটা আরেকটাও ভালোনা! ট্যুর থেকে ফিরেই ছুটে গেলাম মায়ের কাছে। জীর্ণশীর্ণ অবস্থা। দেখেই বোঝা যায় খাওয়া দাওয়া হচ্ছেনা ঠিকঠাক। বোনেরাও এল, আমি মাকে জোর করে আমাদের ফ্লাটে নিয়ে এলাম।
ঐ নিয়ে আসা অবধিই, আমার কাজের চাপ বেড়ে গেল। খাওয়া দাওয়াটা কোনমতে করি। তখন মাথায় কেবল টাকা উপার্জনের চিন্মিলি ম্যাম্বার আমি আমার ছোট দুই বোন। আমরা পড়লাম অথৈ সাগরে।
মা তখন সংসারের হাল ধরলেন, বাবার পেনশনের টাকায় আর মামাদের থেকে কিছু টাকা এনে মা দুটো সেলাই মেশিন কিনলেন। বাস্তবতা কি তখনই আমাদের বোধে এসে যায়। শত ঝড়ঝাপটা উপেক্ষা করে এই মা আমাকে এইচএসসি পাশ করালেন, ভর্তি হলাম পাবলিক ভার্সিটির ডিমান্ড ওয়ালা সাবজেক্ট এ।
কিন্তু আমার অধপতন হল। অবাধ স্বাধীনতা পেয়ে গেলাম যেন। উঠলাম ভার্সিটি হলে। মাসে মাসে ২ হাজার টাকা নিতে লাগলাম আমার দুখিনী মায়ের কাছে। সময়টা ছিল মাকে উল্টো টাকা পাঠানোর কিন্তু জানিনা কেন যেন আমার মাথায় এই বয়সটা আনন্দ উল্লাসের এমন উদ্ভট চিন্তা জেকে বসল।
একবার একটা নরমাল বাইক কিনার জন্য বাড়িতে মায়ের কাছে টাকা চাইতে গেলাম। মা অনেক বুঝালেন এমন বিলাসিতা আমাদের জন্য নয়। আমাদের জন্য সৌভাগ্যের চাবি কেবল পরিশ্রম। টাকা না পেয়ে চলে এলাম হলে। সব বন্ধুদের বাইক আছে অথচ আমার নেই! ব্যাপারটা আমার মনকে বিষিয়ে তুললো। মায়ের উপর জেদ করে এবার বাড়ির সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলাম। ২ দিন পর ছোট বোন আর মা এসে হাজির হলে। সাথে নিয়ে এসেছেন আমার চাওয়া টাকাটা ও। মাকে টাকা কিভাবে পেল জিজ্ঞেস করতে ছোট বোন বলল সেলাই মেশিন একটা বিক্রি করে দিয়েছে মা।
এরপর ও মায়ের অমায়িক হাসি, “তুই খুশি থাক বাপ, মানুষ হ তুই ” এটাই ছিল মায়ের ইচ্ছের শেষ কথা। সেদিন ও আমি মানুষ ছিলাম না। মানুষ হওয়ার ভং ধরেছিলাম।
মার হাত ধরে বললাম “ভার্সিটি থেকে বেরুলেই চাকরি, এই অবস্থার পরিবর্তন হবে মা। আমি করব” মায়ের অশ্রুসিক্ত চোখ যেন একথা শুনে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। আমাকে জড়িয়ে ধরে সেদিন মা অনেক কাঁদলেন। আমি ব্যাপারটা নরমাল নিলেও রুমমেট খসরু গুরুত্ব দিয়ে বলল “শাকিল চাচিরে আর কাদাইস না, ওনার উপর এমন টাকার প্রেসার দিসনা।”
কে শোনে কার কথা। তাকে জ্ঞান দিতে না করে হুঙ্কার দিলাম। তারপরের ঘটনা আরও করুন। আমি প্রেম করে বিয়ে করে ফেলি আমার অনার্স লাষ্ট ইয়ারে।
আমি বেশ কয়েকমাস দেশের বাইরে ছিলাম, বউকে বলেছিলাম মাকে নিয়ে আসতে এতে সে একা একা ফিল করবেনা। কিন্তু সে সাফ বলে দিল সে তার বাপের বাড়ি কিছুদিন যেয়ে থাকবে তাই আমার মাকে আনবে না সে ।
মায়ের কাছে দোয়া চাইতে গেলাম, প্রথম বিদেশ ট্যুর তাই। মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে বললেন “ভালো থাক বাপ, মানুষের মতো মানুষ হ জীবনে” তখনই মা অসুস্থ ছিলেন। আস্তে আস্তে অসুখ রূপ নিল ভয়াবহ।কিডনী নষ্ট হয়েছে একটা আরেকটাও ভালোনা! ট্যুর থেকে ফিরেই ছুটে গেলাম মায়ের কাছে। জীর্ণশীর্ণ অবস্থা। দেখেই বোঝা যায় খাওয়া দাওয়া হচ্ছেনা ঠিকঠাক। বোনেরাও এল, আমি মাকে জোর করে আমাদের ফ্লাটে নিয়ে এলাম।
ঐ নিয়ে আসা অবধিই, আমার কাজের চাপ বেড়ে গেল। খাওয়া দাওয়াটা কোনমতে করি। তখন মাথায় কেবল টাকা উপার্জনের চিন্তা। মাকে যে এনেছি তার কথাও যেন ভুলে গেলাম। বউ মাঝে মাঝে মায়ের নামে অভিযোগ দিত। আমি চিরায়ত নিয়ম ভেবে ভুলে যাই।
মার ডায়ালাইসিস করতে প্রতি দুমাস অন্তর ১৩ হাজার টাকা যায়। ব্যাপারটা আমার বউয়ের চোখের বালি হয়ে উঠল । সে ইনিয়ে বিনিয়ে এই আভাস দিচ্ছিল। আমি বুঝেও অবুঝ হয়ে গেলাম। মাকে বললাম অনেক কিছু। মা অবাক হয়ে আমাকে দেখতেন। বউয়ের করা অভিযোগ গুলো নিয়ে প্রায় রাতেই চেচামেচি হওয়া শুরু হল। আমার বৃদ্ধা মা পাশের রুমে শুনে আমায় ডেকে বলত “বউমাকে বকা দিসনা বাপ” কিন্তু গভীর রাতে তার নীরব ক্রন্দন ঠিকই আমি শুনতাম, আমি যে তার নাড়ি কাটা ধন।
গত মাসে গিয়েছিলাম মালয়েশিয়া, একটা কনফারেন্সে যোগ দিতে। আমার সাথে দেশের আত্মীয়দের কথা হতনা বললেই চলে। গবেষণা মূল প্রোজেক্ট যার মূল শর্ত এটাই। গতকাল রাতে দেশে ফিরে এলাম। অনেকদিন পর মার জন্য একটা কাতানের শাড়ি কিনে এনেছিলাম কিন্তু এসেই শুনে মা নেই। “মা কই?” জিজ্ঞাসা করি বউকে। “মা ত আগের বাসায় চলে গেছে” বউয়ের এমন উত্তর শুনে আমি বিস্ময় নিয়ে জিজ্ঞেস করি “মানে? ” “মা গত সপ্তাহে চলে গেছে” আমার বুঝতে আর বাকি রইলনা কি হয়েছে। ঠাস করে বউয়ের গালে চর মেরে বাসা থেকে বেরিয়ে এলাম মাকে খুজতে ।
খবর নিয়ে জানলাম মা একটা বৃদ্ধাশ্রমে আছে। ঠিকানা নিয়ে
গেলাম সেখানে।
মা বিছানায় শুয়ে আছে। ঘুমাচ্ছে বোধহয়। আমি মার পাশে বসে হাতটা ছুঁতে ই মা জেগে উঠলেন। “শাকিল, তুই
বাপ? ”
আমি দেখলাম মা চশমাটা পড়ে নিয়ে আমার দিকে তাকালেন।! তার হাতগুলো কাঁপছে।
“শাকিল, ভাল আছস বাপ? ” আমি অনেক চেষ্টা করেছি বিশ্বাস করেন কিন্তু কান্না ধরে রাখতে পারিনি। মাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কাদছি। আশ্রমের সবাই আমাকে দেখছে।
“কাঁদিস না বাপ, কি হইছে”
মা কে নিয়ে ভালো একটা রেস্টুরেন্ট গেলাম আশ্রম থেকে নিয়ে। মা কিছুই খেলনা বলল বাসায় গিয়ে ভাত খাবে, অনেকদিন নাকি বাড়ির খাবারের স্বাদ পায়নি মা। বউকে বুঝিয়ে বললাম যে আমার মার যেন বিন্দু কষ্ট না হয়। বউ আমার বুদ্ধিমতি হলে এহেন কোন কাজ আর সে করবেনা।
বৃদ্ধাশ্রমে মাকে যখন “চল মা বাসায় চল” মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল “তোদের পৃথিবীতে আমি বেমানান খুব ” আমি বললাম “তাহলে সে পৃথিবীকে তোমার মানানসই বানিয়ে নিব মা” মা মৃদু হাসলেন আর বললেন “বাপ আমার মানুষ হইছে” আমি মায়ের হাতে চুমু দিলাম আর বললাম “মাফ করে দিও মা, আমি অপরাধী” মা আমায় বুকে টেনে নিল। পরম শান্তি অনুভূত হল আমার পোড়া কলিজায়।