আজ আবারও…
গত কাল ও চলে গিয়েছিল… ভেবেছিলাম হোস্টেলে থাকবে। কিন্তু থাকলো না। আমাকে নিরাশ করে দিলো। যা হাউক.. আজ আমাদের প্রথম ক্লাশ শুরু হবে। এর মাঝে দুটা ব্যাচে সবাইকে ভাগ করা হল।
আমারতো মহা ভাগ্য। ও আমার ব্যাচে পড়েছে। পৃথিবীতে এতো আশ্চর্য কখনো আমি হইনি। কিভাবে সম্ভব হল এটা। নিজেকে এই সময়ে সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ মনে হচ্ছে।
একে তো আমি ভাবিই নি য়ে ও আজ আবার আসবে। দ্বিতীয়ত ও আমার ব্যাচে। অসাধারণ লাগলো। কি করবো। কেমন যেন অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। অন্যরকমের একটা ভালো লাগা কাজ করলো।
এই ঘটনাটা ঘটার পর আমি ক্লাশ থেকে বেরিয়ে গেলাম। মনের ভিতর শরিফউদ্দিনের কলারটিউন বেজে উঠলো। নিজেকে এক অন্য মানুষ মনে হল। অসাধারণ একটা অনুভুতি কাজ করলো। বাইরে বিরিয়ে একটা দোকানে চলে গেলাম। সেখান থেকে সবার জন্য চকলেট কিনলাম। শুধু ওর জন্য কিনলাম “কেটবেরী ডেইলী মিল্ক”। ডেইলী মিল্ক চকলেটটা হাতে যখন নিলাম। বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার হাতটা কাপতে ছিল। কেমন যেন ভয় লাগতে ছিল। কেন যেন নিজেকে একটু দুর্বল মনে হচ্ছিল।
হল রুমে আসলাম আবার। সবাই সাবার মতো বসে আছে। আমার সবার প্রথমে খেয়াল হল ওর দিকে। কেন যেন মনে হলো এই যে এই মাত্র চোখে চোখ পড়ল। মনে হলো কেমন যেন একটা ভালো লাগার শূন্যতা অনুভব করলাম। পুরো পাগলামো। অসাধারণ একটা মুহুর্ত। নিজেকে হিন্দি সিনেমার নায়কের রোমান্টিক সিনে কল্পনায় চলে আসি।
আমি আর আরেক জন ফ্রেন্ড মিলে সাবাইকে চকলেট দিলাম।
সবাই জিঙ্গেস করলো কেন?
কি করাণ?
কেন সবাইকে মিষ্টি মুখ করা হল।
আমি বললাম এই প্রথম আমার জীবনে অসাধারণ একটা অনুভুতি পাইছি। অন্যরকমের একটা ভালোলাগা পাইছি যা কখনো আগে হয়নি। তাই….
ডেইলী মিল্ক চকলেটা ওর হাতে আমি দিতে পারিনি। সাহস হচ্ছিল না। ওর আপন বোড় বোন ছিল। আর তাছাড়া মেয়েদের সাথে কখনো-ই কথা বলাতম না। কিভাবে দিব?..
একটা মেয়েকে বল্লাম- আপু আপনি এই জিনিসটা ওই যে মেয়েটা তাকে একটু দিয়ে দেন।
মেয়েটি বলল- আচ্ছা দিচ্ছি। দাও.. বলে ফিক করে একটা হাসি দিল।
এখন অন্য রকম লাগছে আমার। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে। কেন জানেন… ও চকলেটা হাতে নিয়েছে। আমার দিকে তাকালো। তার সে পাগল করা হাসিটা দিল। অনুভুতি চরমে উঠে গেল। কেন যেন আমি আর আমি নাই মনে হচ্ছিল। একটা অসাধারণ মুহুর্ত। সবাই কেমন যেন একটা গুঞ্জন করলো। কিন্তু আমার কিচ্ছু খেয়াল নাই। শুধু ও কি করছে, কিভাবে করছে সেদিকেই আমার খেয়াল।
ও চকলেট এর প্যাকেটা ছিড়লো। কেমন যেন আড়চোখে আমার দিকে তাকালো। একটু ভাঙ্গলো। আর এ একটু খানি মুখে দিলো। মনে হলো এর চাইতে সুন্দর কিছু হতে পারে না। ওর মতো এতো সুন্দর করে কেউ খেতে পারে না। আমাকে আজ বড় সার্থক মনে হচ্ছে।
আল্লাহ তায়ালার অসাধারণ কিছু রহমতের একটা জিনিস একখানে মনে হচ্ছে। আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুধু এই মুহুর্তে একটাই চাওয়া…. ও যেন আমার হয়ে রয় সব সময়।
কিন্তু কিছুই বলতে পারছি না তাকে। বলতে পারছি না এই মেয়ে শোন আমি তোমাকে ভালোবাসি। খুব খুব বেশি ভালোবাসি। শুধু তাকেই দেখেই যাচ্ছি। তবে হ্যা আমি এই জীবনে প্রথম কারো উপর ক্রাশ খাইলাম এইভাবে। কারো উপর ক্রাশ খাইলে এতো দারুণ অনুভুতি হয় জানতাম না…..
চলবে…..
লিখেছেনঃ – ফাহাদ মাহমুদ