-এই শুনছো। (অর্পা)
> হুম বলো (হৃদয়)
-আমার টাকা লাগবে পাঁচশো (অর্পা)
> ড্রয়ারে আছে নিয়ে নাও। (হৃদয়)
-পাঁচশো টাকা কেনো লাগবে, জানতে চাইলে না।
> টাকার প্রয়োজন সবার রয়েছে,তুমি তো আমার স্ত্রী তোমার টাকার প্রয়োজন হয়েছে,সেইজন্য তুমি চেয়েছে,এখানে জানতে চাওয়ার কি আছে?
-তুমি এমন কেনো?
> কেমন আমি।
-আমি কিছু চাইলেই সেটা তুমি জানতে না চেয়ে দিয়ে দাও।
> তুমি আমার স্ত্রী,আর তোমার উপর আমার বিশ্বাস আছে অনেক।
-হু বুঝেছি,তোমার কাজ কি শেষ হয়েছে,তাহলে সবাইকে খেতে দিবো।
> আরেকটু সময় লাগবে,তুমি বাবা মা,আর অন্যদের খেতে দাও আমি একটু পরে খাচ্ছি।
অর্পা ড্রয়ার থেকে পাঁচশো টাকা নিয়ে নিলো।কারন
বাড়ির পাশ দিয়ে যখন কোন আইসক্রিম বিক্রেতা যায় তখন বাড়ির দুই ছোট ছেলে,
অর্পাকে এসে বলে ভাবি ভাবি,
আইসক্রিম খাবো।
অর্পার কাছে টাকা না থাকাই অর্পা ওদের আইসক্রিম কিনে দিতে পারে না,,
তখন ওরা রাগ করে চলে যায় ওর কাছে থেকে।
আর সারাদিন অর্পার কাছে আসে না।
এখন থেকে আর কোন সমস্যা হবে না,
এখন তো অর্পার কাছে টাকা আছে।
এখন ওরা বলতেই ওদেরকে অর্পা আইসক্রিম কিনে দিতে পারবে।
অর্পা আর হৃদয়ের বিয়েটা পারিবারিক ভাবে হয়েছে।
ওদের পরিবারের সবাই এখন অর্পাকে অনেক ভালোবাসে,
কারন অর্পা সবার মনে যায়গা করে নিয়েছে।
অর্পার ব্যবহারে পরিবারের সবাই অনেক খুশি।
পরিবারের সবার মুখে একি কথা অর্পার মতন লক্ষী মেয়েই হয় না।
অর্পা বাড়ির সবাইকে ডেকে নিয়ে খেতে দেই,
-বউমা হৃদয় কোথাই, ওকে তো দেখছি না (মা)
> ও বসে থেকে অফিসের কাজ করছে,কাজ শেষ হলে চলে আসবে, আপনারা সবাই খেয়ে নিন (অর্পা)
-ভাবি তুমিও আমাদের সাথে খেয়ে নাও (সাকিব)
> আমি তোমার ভাইয়ের সাথে খেয়ে নিবো, তুমি এখন খাও(অর্পা)
বাড়ির সবার খাওয়া শেষ করে,শুধু হৃদয় ,আর অর্পা বাদে।
বাড়ির সবার খাওয়া শেষে,
অর্পা খাবার টেবিলে বসে আছে খাবার নিয়ে,হৃদয়ের জন্য,
কিন্তু হৃদয়ের কোন খবর নাই।
অনেকক্ষণ বসে থাকার পরে হৃদয় আসলো।
-এতোক্ষন লাগলো তোমার কাজ শেষ হতে। (অর্পা)
> অফিসে কাজের চাপ বেশি,সেইজন্য অফিস শেষে বাড়িতেও এসে কাজ করতে হয়। (হৃদয়)
– সবসময় তো বলো কাজের চাপ বেশি, কখনো বলেছো,আজকে কাজের চাপ কম,না খেয়ে কাজ করতে বসেছে,
এখন খেয়ে নাও।
> তুমি খেয়েছো।
-না ।
> আমার জন্য না খেয়ে আছো।
-সেটা তো তুমি জানই।
> পাগলী একটা।
অর্পা আর কিছু বলে না,
হৃদয়ের মুখে পাগলী ডাক শুনতে অর্পার ভালই লাগে।
অর্পা খাবার বেড়ে দেই,
দুজনে এক সাথে বসে খাবার খেয়ে নেই।
খাবার খেয়ে হৃদয় রুমে এসে আবার অফিসের কাজে মন দেয়।
কালকে ছুটির দিন তবুও হৃদয় অফিসের কাজ করে।
আজকে অফিসের কাজ শেষ করতে পারলে কালকে একটু আরাম পাওয়া যাবে।সেইজন্য
মনোযোগ সহকারে অফিসের কাজ করতে থাকে হৃদয়।
-এখনো তোমাকে অফিসের কাজ করতে হবে (অর্পা)
> কি করবো বলো,এখন কাজ শেষ করতে পারলে কালকে একটু বিশ্রাম নিতে পারবো। (হৃদয়)
– ল্যাপটপ বন্ধ করো,আর এখনি শুয়ে পড়বে। নইতো তোমার ওই ল্যাপটপ ভেঙ্গে ফেলবো।
> কাজ না করলে তো টাকা আসবে না।
-এই নাও পাঁচশো টাকা এখন কাজ বন্ধ করে শুতে চলো,রাত জেগে কাজ করতে হবে না (অর্পা)
হৃদয় অর্পার অভিমান দেখে মনে মনে মুচকি হাসে।
মেয়েটা যেমন ভালো,তেমন রাগী।
হৃদয় ল্যাপটপ বন্ধ করে,অর্পার দেওয়া পাঁচশো টাকা হাতে নেই।
-এই তোমার না পাঁচশো টাকা লাগবে,তাহলে তুমি কেনো টাকাটা আমাকে দিয়ে দিচ্ছো। (হৃদয়)
>সারাদিন তো অফিসেই বসে থাকো,আমাকে দেবার মতন সময় তোমার আছে বলে মনে হয়না।
-তাই বলে টাকা দিয়ে দিবে।
> কিছুক্ষন আগেই তো বললে কাজ না করলে তুমি টাকা পাবে না,
তোমাকে কাজ করতে হবে না, আমাকে একটু সময় দাও,সময়ের বিনিময়ে তোমাকে টাকা দিলাম।
তোমার তো সময়ের অনেক দাম।
হৃদয় বুঝতে পারে অর্পার অভিমান,অার রাগের কারন।
হৃদয়ের থেকে অর্পার একটু সময় চাই,
কিন্তু হৃদয় কি করবে অফিসের কাজের চাপের জন্যই তো সে অর্পাকে সময় দিতে পারে না।
হৃদয় ভাবে এখন থেকে ওকে একটু সময় দিতে হবে।
সারাদিন তো কাজ নিয়েই পড়ে থাকি।
-এই নাও তোমার টাকা। (হৃদয়)
>লাগবে না টাকা, তোমার কাছেই রাখো।
-রাগ করো না,আর এমন হবে না, টাকাটা এবার নাও।
হৃদয় অর্পাকে টাকাটা দিয়ে অর্পাকে জড়িয়ে ধরে।
হৃদয়ও কিছু বলে না,
সব মেয়েরাই তো চাই তাদের স্বামী তাদেরকে ভালোবাসুক,
কাজের ফাকে ফাকে তাদেরকে একটু সময় দিক।
হৃদয় অর্পাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,
হৃদয়ও হারাতে চাই না অর্পাকে।
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।
হারিয়ে যায় স্বপ্নের দেশে।
পরের দিন,
-ভাবি ভাবি ভাবি,আইসক্রিম খাবো,আজকে কিনে দিতেই হবে (সাকিবও তানিয়া)
> আইসক্রিম বিক্রেতাকে থামতে বলো আমি আসতেছি (অর্পা)
অর্পা রুমে এসে টাকা নিয়ে যায়।
সাকিবও তানিয়াকে অর্পা আইসক্রিম কিনে দেয়।
-ভাবি তুমিও নাও (তানিয়া)
> আচ্ছা নিচ্ছি (অর্পা)
-ভাবি আম্মু বলেছে আইসক্রিম খেলে ঠান্ডা লেগে জ্বর চলে আসবে,
সেইজন্য আম্মু আইসক্রিম কিনে দেয় না,আর আইসক্রিম খেতে দেখলে মারবে বলেছে।(অর্পা)
> তোমরা আমার রুমে গিয়ে আইসক্রিম খাও,তাহলে তোমার আম্মু দেখতে পাবে না তোমাদের,আর তাহলে তোমাদেরকে মার খেতে হবে না (অর্পা)
তানিয়া আর সাকিব,দুজনেই অর্পার দুইগালে দুইজন চুমু দিয়ে চলে যায়।
আর
এটা দেখে অর্পার দুচোখে একটু জ্বলের অার্বিভাব হয়।
অর্পা বুঝতে পারে
এরা দুইজন অর্পাকে অনেক ভালোবাসে,
অর্পা ওদের ভালোবাসা দেখে আনন্দিত হয়ে যায়।
অর্পাও একটি আইসক্রিম কিনে বাড়ির ভিতরে চলে আসে।
-কি ব্যাপার একা একা আইসক্রিম খাচ্ছো,আমাকে কি দেখতে পাচ্ছো না (হৃদয়)
> আমি কি জানতাম নাকি,তুমি আইসক্রিম খাবে এখন।(অর্পা)
-এখন তো জানলে,তানিয়া, আর সাকিব কে ঠিকই আইসক্রিম কিনে দিলে, আর আমার বেলাতে শুন্য,আমাকে তুমি একটুও ভালোবাসো না (হৃদয়)
> হু,তোমাকে ভালোবাসতে আমার বইয়েই গেছে,
আর এখন তো আইসক্রিম বিক্রেতা চলে গেছে,তুমি আমার টাই নাও।(অর্পা)
-তাহলে তোমার তো আর খাওয়া হবে না।
> আমি অন্যদিন খাবো।
-একটা আইসক্রিম দুজনেই ভাগ করে খাবো,তাহলে তোমার ও আমার দুজনের খাওয়া হয়ে যাবে। (হৃদয়)
”
> আমি ভাগ করে আইসক্রিম খাবো না (অর্পা)
-কেনো? (হৃদয়)
> আমার টাকার আইসক্রিম খেলে আমি একাই খাবো,পারলে নিজের টাকা দিয়ে কিনে খাও।
-কিইইইইইই বললে,তোমার টাকার আইসক্রিম।
> হ্যাঁ আমার টাকার আইসক্রিম।
-তার মানে তুমি ভাগ করে আইসক্রিম খাবে না।
>না ভাগ করে আমি আইসক্রিম খাবো না,খেলে আমি একাই পুরোটা খাবো,নইলে তুমি একাই পুরোটা খাবে।
-না আমি তোমার আইসক্রিমটা দুজনে ভাগ করে খাবো।
> না আমি তাহলে দিবো না,
কথাটি বলেই অর্পা নিজের রুমের দিকে দৌড় মারলো আইসক্রিম নিয়ে,
আর হৃদয়ও দৌড় দিলো অর্পার পেছন পেছন,
সে আজকে অর্পার থেকে আইসক্রিম নিবেই।
হৃদয়ের বাবা মা সেটা দেখে অনেক খুশি,ও তারাও হাঁসতেছে।
হৃদয়ের বাবা মা অনেক খুশি,
কারন কারনেই আজকে তাদের পরিবার অনেক সুখি,
তারা নিজেও অনেক সুখি,অর্পার মতন মেয়েকে নিজের ছেলের বউ বানাতে পেরে।
এভাবে হাসি,খুশি, অভিমানের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে তাদের দিনগুলো।
___সমাপ্ত___
বিদ্র:-গল্পটা কাল্পনিক-ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে