-লেখক সাহেব পুজা তো চল আসতেছে।
-সেকি তুমি যাও নাই আনতে স্টেশনে?
– তোমার সমস্যা কি বলবে আমাকে?
– দেখ আরিয়ান ও আমার ছোট বোন তাই আমারও একটা দ্বায়িত্ব আছে।
– তোমার দ্বায়িত্ব তো তুমি পালন করবে আমাকে কেন বলছো?
– আমার উপর কিন্তুু তোমার দ্বায়িত্ব আছে একটা বুজলে?
-হ্যা বুজতে পারছি থাক আর বলবো না। থাকো তোমার যত আজখুবি কল্পনা নিয়ে ।
– আমার লেখালেখি এত সমস্যা তোমার।
– হ্যা একটা জিনিসের সীমা থাকে।
-দেখ রিয়া তুমি তোমার সীমা থেকে সরে যাচ্ছ।
– আমি না তুমি সরে যাচ্ছ তোমার সীমা থেকে।
– তোমার হয়েছে টা আজকাল বলবে আমাকে?
– কিছু না,আমি গেলাম বাহিরে খবরদার যদি কাউকে দেখি তাহলে মেরে ফেলবো।
– তোমার সমস্যাটা কি আমাকে বলবে?
– কেন আমাকে বাহিরে পাঠিয়ে ফসকি নসকি করবে আর আমি কিছু বলবো না।
– রিয়া তুমি এত বারাবারি করছো কেনো?
-তোমার কত সুন্দরী ভক্ত অটোগ্রাফ নিতে আসে বাসায় যদি।
– কি যদি?
– আমি গেলাম আসতে প্রায় ২ ঘন্টার মত দেড়ি হবে।পুজাকে নিয়ে শপিং করে বাসায় ফিরবো।
– ঠিক আছে যাও। তুমি এত বদলে গেলে কেন এই দুদিনে?
– সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে।
– ঠিক আছে ভাববো না। তুমি যে দু-ঘন্টা নাকি রাত দুটায় বাড়ি ফিরবে তা জানি।
আজকে কিছুইতেই লেখালেখি করার মন বসতেছে না।
কত দিন আর সাইন্স ফিকশন লিখবে। এত নাম সবই সায়েন্স ফিকশন লিখে কামিয়েছে আরিয়ান মাহমুদ ওরিন।
সে কয়েকদিন ধরে ভিন্ন গল্প লিখতে চায়। কিন্তুু পরপরই দুটি সাইকো গল্প বেস্ট সেলার হতে পারে নাই।
গত দুবছর থেকে প্রতিটি বই মেলায় একজন ছন্দ বেশি গল্প লেখক বা লেখিকা দুটি সাইকো গল্প বেস্ট সেলারের যায়গা করে নিয়েছে।
তিন বছর আগে প্রথম সাইকো থ্রিলার বই, মৃত্যুভয় ।এত পরিমান বিক্রি হয়েছে যা থ্রিলার ক্যাটাগরিতে বেস্ট সেলার। ঔ সালের বই মেলায় সব থেকে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের নাম, মৃত্যুভয়।
বইটির দ্বিতীয় এবং তৃতীয় খন্ড ছন্দ লেখকের সামনে ঠিকতে পারে নাই। কারন তার বই গুলো মৃত্যুভয় বইয়ের মতই ভয়ংকর এবং বাস্তব। কারন প্রত্যেক পাঠক নিজেকে সাইকোর স্থানে বসিয়ে নিতে পারতো সহজেই।
আসলে প্রতিবার অজানো কোন ইমেল থেকে গল্প গুলো আসতো।
গল্পটির বিক্রি রয়ালিটি পর্যন্ত নিত না সে। শুধুু বলে দিত এই টাকা পরর্বতী বই প্রকাশিত হবে।
আপনাদের তো বলাই হয়নি ছন্দ নামটা কি ছিল।
ছন্দ নাম ছিল।
– এখনো কি করছেন?
– অহ তুমি চলে আসলে এত তারাতারি?
– আহারে দুলাভাই আমি আপনার শালিকা মিম।
– আরে তুমি আসলে কখন? পূজাই বা কই?
-পূজা? কিন্তুু আমি তো একা আসলাম।
-পূজা তো হঠাৎ গতপরশু আফ্রিকা গেছে কি যেন একটা সেচ্ছাসেবক ক্যাম্প যোগদান করতে।
– তাহলে তোমার আপু আমাকে আবার বোকা বানাল।
– না দুলাভাই। আজকে তো তাকে সারপ্রাইজ দিবো আমরা।
– মানে?
– আপু বাড়িতে বসে হঠাৎ অসুস্থ হলো না গত সপ্তাহে ।
– হ্যা তো কি হয়েছে?
– আপনিও না লেখালেখি ছাড়া কিছুই বুজেন না ।
– আপনি বাবা হতে চলেছেন।
– কি বলছো এইসব এটা তুমি আগে বলবে না।
-তোমার আপু হয়তো আজ কোন পার্টিতে যাবে ।
-সেকি আপু এখনো পার্টি যোগদান করে।
– তোমার আপু একটু বদলাই নাই।
– কেন বদলাবে আমি যে বদলাই নাই।
রাত প্রায় পৌনে এগারটা দিকে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে।
– হ্যালো কে বলছেন আপনি?
– মিস্টার আরিয়ান?
– হ্যা বলুন আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
– আমরা একটা গাড়ি ভিতর থেকে একজন নারীর লাশ পেয়েছি গতকাল বিকাল ।
– কাজের কথায় আসুন আপনি।
– আপনি তো জানেন চার বছর আগে এমনই একটি দিনে আপনাকে আমি কল করছিলাম।
– আরে তুমি মিস্টার সুমন।
(পুলিশের একজন সিক্রেট এজেন্ট। তার কাছ থেকেই আইডিয়া নিয়ে প্রথম বইটি লিখেছিল সে।
তাপর পরাপর দুটি বই ব্যার্থ হওয়া আর যোগাযোগ হয়নি। লাস্ট এ বছর বই মেলা যোগাযোগ হয়েছিল।কোনদিন দেখেও নাই আরিয়ান তাকে।)
– চিনতে পারলে?
– আট-মাসে কিভাবে তোমাকে ভুলি বলো?
– তোমাকে ফোন দেওয়ার কারন হলো তোমার ছন্দবেশি লেখক মৃত্যুভয়২ এর তার দ্বিতীয় খন্ডের মত খুনটা হয়েছে।
– কি?
– হ্যা যেমনটা আমার বলা গল্পের প্রথম পর্বের সেই ছেলেটার মৃত্যুর কাহিনী।
– আমি জানি তুমি তার দ্বিতীয় তৃতীয় গল্পটি পড়ো নাই।
কারন সে তার গল্পের প্রথম পর্ব টা তোমার গল্পের মতই।
– আমার নয় তোমার
– হ্যা তুমি যাই বলো না ক্যানো । কারন তুমি ফেসে গেছ আরিয়ান।
– মানে?
-কারন গল্পটা প্রথমে মিথ্যা ছিল আরিয়ান কারন এটি একটি আন্ডারগ্রাউন্ড মিশন ছিল।তোমার গল্প মতই তাকে আমি মেরেছি । আমি বইটি বেস্টসেলার সন্মান পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম।কারন তাহলে আমরা নিজেদের বাচাতে পারবো।এটি কোন পাগল ফ্যান এরকম করেছে তোমার তা হবে।
কিন্তুু দেখো তুমি টিভি দেখ না শুধু বই নিয়ে থাকো। তাহলে সেদিন সত্যটা জানতে পারতে।
– দেখ আসল কথায় আসো?
– হ্যা মৃত্যুভয়২ এর দ্বিতীয় গল্পটির মতই একেও সেইম।ভাবে মেরেছে।
– অহ
– তোমাকে সকালে পার্সেল করে দিয়েছি। তুমি যদি পাশের কন্টিনুয়াস পার্সেল থেকে কস্ট করে বইটি নিয়ে পড়তে
তাহলে খুশি হতাম।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং
মিম দরজা খুলো দাও।
-জ্বী ভাইয়া আমি রান্না ঘরে। মাছ ভাজতেছি ।
– ঠিক আছে খুলে দিচ্ছি।
-কি দুলাভাই কি এখনো সাথে আরও একটা সামলাতে হবে আপনাকে। (পূজা)
– কি বলছো এইসব?
– কি বুজতেছেন না?
দাড়া তো পূজা তোর দুলাভাইর কোন ফ্যান আবার বাসা আসে নাই তো। তা চ্যাক করে নেই কারন তো জানিস লুচ্চা কি করতে পারে।
– দেখ তুমি ইদানিং আমাকে এত সন্দেহ করতেছো কেনো?
– ভাইয়া ইলিশ মাছের ঘ্রান আসতেছে না রান্না ঘর থেকে? (পূজা)
– আজকে তো হাতে নাতে ধরছি তোমাকে চান্দু রেহাই পাবে না।(রিয়া)
– ঠিক আছে গিয়ে দেখ কে রান্না ঘরে (আরিয়ান)
-মিম তুই এখানে? কবে আসলি।
– আপু তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে তুমি মা হতে যাচ্ছ তাই।
– মিম আমি আর আপু দুলাভাইকে সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম।তাইতো পরশু চলে আসছিলাম আজকে জানাবো তাই তোদের মিথ্যা বলে ।(পুজা)
সবাই সবাইকে সারপ্রাইজ দিয়েছি একসাথে।এখন গরম গরম মাছ ভাঁজা দিয়ে রাতের ভোজন তো শেষ করি? (মিম)
– হ্যা ঠিক বলছো চলো খেয়ে নেই।তোমাদের দু-বোন তো মনে হয় বাহিরে খেয়েছো?( আরিয়ান)
– দেখ আরিয়ান প্রচ্চুর ক্ষুদা লাগছে সেই বিকালে বের হইছে।
– বললা তো বাহিরে খেয়ে নিবে দুজনে।
– দেখ ভালো লাগছে কিন্তুু (রিয়া)
-দেখ আপু ঝগড়া বাদ দাও পূজা তো বাহিরে খেয়েছে ওর চিন্তা নাই।আমি সকাল থেকে বাসে জার্নি করে আসছি তো আমি খেয়ে নিচ্ছি যদি তোমরা খাও তাহলে খেয়ে নিও ।
– সবাই খাও তো তোমার আপুর সাথে ঝগড়া হবেই বলো।(আরিয়ান)
হঠাৎ করেই কলিং বেলের শব্দ সাড়ে এগারটায় আবার কে আসলো।
– যাও মিম দরজা খুলে দাও (রিয়া)
– তুমি যাও আমি আগে খাবো।তাপর বাকি কাজ বুজলে আপু।
– পূজা দরজা খুলে হতবাক হয়ে গেল সাথে সাথে সবাই কে ডাকলো