“Hello তীর্থ আমার আজ হবেনা গো!shoppingটা অন্যদিন করি বুঝলে?যা চাপ অফিসে বেরোতে পারবনা তাড়াতাড়ি।”
“Ok তবে আমি সোজা অফিস থেকে বাড়ি যাব।তুমি প্লিজ ফেরার পথে আমার জামা গুলো ধোপাবাড়ি থেকে এনো অরুন্ধতী।তোমার ফেরার পথে পড়বে।”
ফাইলের চাপে তখন অরুন্ধতীর যায় যায় অবস্থা!পুজো এসে গেল প্রায় shoopingটা এখোনো করা হলোনা।বিয়ের পর প্রথম পুজো সবার জন্য কিনতে হবে।কিন্তু সময়টাই যে পাচ্ছে না,অফিসে কাজের চাপ এত বেশী!!
বাড়িতে ঢুকল যখন ঘড়ির কাঁটা 8:30 পেরিয়েছে।দরজা খুলতেই শাশুড়ির মুখ কালো।
—-“এইভাবে চলবেনা ছোটবৌমা।রোজ লেট,সারাদিন বাইরে কাটালে বিয়েটা কেন করলে বুঝিনা!লোকেরা আর চাকরি করেনাতো,”
—-“আসলে মা ট্রেনটা লেট ছিল।কি বৃষ্টি জায়গায় জায়গায় জল দাঁড়িয়ে গেছে”
সালোয়ারটা change করে পড়ি কি মরি করে রান্নাঘরে ঢুকেই দেখে বড়জার মুখে শ্রাবণের আঁধার।আসলে রাতের রান্না করার দায়িত্বটা অরুন্ধতীর।যেহেতু সকালে তেমন কোন কাজ করতে পারেনা অফিস যায় বলে…রাতে ফিরে যত শরীর খারাপই করুক রান্নাটা করে।যাতে সংসারে শান্তি থাকে..মনে মনে প্রমাদ গুনে চলে অরুন্ধতী,
“Sorry গো দিদিভাই আজ লেট হয়ে গেল আসতে।তুমি রান্না বসাতে গেলে কেন আবার?যাও তুমি ঘরে যাও আমি করছি,বলেছিনা সারাদিন এতো খাটো রাতে তোমার rest”
–“না থাক,আমার ছোট ছেলে।তাকে তো আর রাত এগারোটায় খেতে দিতে পারিনা।দায়টা আমার বেশী।থাক্ তুই রেস্ট নে।কত কাজ করেছিস!আমাদের housewifeদের আর কি কাজ বল?”
বিদ্রুপটা শূলের মত বুকে বিঁধল অরুন্ধতী;বিনা বাক্য ব্যয়ে ঘরের দিকে পা বাড়ালো।অপরাধবোধ কাজ করছে ভিতরে।ইসস একটা রান্নার লোক রেখে দেবে নিজের টাকায়। সত্যিই তো ওরা সব করবে?
পেটে ছুঁচোয় ডন মারছে,টিফিনে দুটো রুটি খেয়েছে সেই কোন দুপুরে,খাওয়া নেই আর কিছু।আজ এখানে নিজের মা থাকলে…বুক ঠেলে তীব্র একটা কান্না তখন বানভাসি হতে চায়।পিছন থেকে বড়জা ভাসুরের উপর তেজ দেখায় অরুন্ধতীকে শুনিয়ে শুনিয়ে।
—- “শোনো ছেলের জন্য private tutor দেখো বুঝলে?এখন থেকে রাতের রান্নাটাও তো আমাকেই করতে হবে।ছেলেকে পড়ানোর সময় নেই।বাড়িতে তো বিনাপয়সার ঝি এনেছো বিয়ে করে।”
রাতের খাওয়াটা গলা দিয়ে নামছিল না অরুন্ধতীর।কোনক্রমে খেয়ে উঠে পড়েছিল।মধ্যরাত্রি এখন,খাটের পাশের জানালাটা দিয়ে আসা সাদা চাঁদের আলো ধুয়ে দিয়ে যাচ্ছে তীর্থর সারাটা শরীর মশারির জাল বেয়ে!!অঘোরে ঘুমিয়ে আছে তীর্থ।অরুন্ধতী চোখ বন্ধ করে তখন অভিনয় করে চলে ঘুম নামানোর।কই?অফিসে তো তীর্থও চাকরি করে।কেউ তো ওর দিকে আঙুল তোলেনা বাজার করেনা বলে?রেশন তোলে না বলে?সব দায় কি বাড়ির বৌটার?
তীর্থর মাসতুতো বোনের বন্ধু অরুন্ধতী।সেই সূত্রে পরিচয়,প্রেম…শাশুড়ির কোন কালেই অরুন্ধতীকে পছন্দ ছিলনা।
গায়ের রঙ শ্যামলা,তার উপর চাকরি করে।তাঁর চিরকালের শখ ছিল ছেলে যখন এত টাকা মাইনে পায় তখন এমন বৌমা আনবেন যাকে দেখে পাড়ার লোক বলে “হ্যাঁ এই হলো সুন্দরী”!বাড়ির কাজ করবে।,ছেলের সেবা করবে।পেপারে বিজ্ঞাপনও নাকি দিয়েছিলেন।”ফরসা;ঘরোয়া;প্রকৃতসুন্দরী”পাত্রী পাওয়ার জন্যে।মাঝে গন্ডগোলটা বাঁধালো তীর্থ।কোথা থেকে অরুন্ধতীকে পছন্দ।না আছে গায়ের রঙ না জানে তেমন কাজ।আদবকায়দা জানেনা।অরুন্ধতীর মা এত ফরসা আর মেয়েটাকে দ্যাখো!বাপের রঙ পেয়েছে।নিমরাজি হয়েছিলেন তীর্থর মা বিয়েতে।বিয়ের পর থেকেই বাড়ির কাজ যেহেতু তেমন করা সম্ভব হয় না অরুন্ধতীর, প্রাণপনে চেষ্টা করে এসেছে যাতে সবার মন রাখা যায়।জা শাশুড়িকে দামি শাড়ি মাঝেমধ্যেই।ঘুরতে গেলে কাউকে একটা টাকাও খরচ করতে দেয়না অরুন্ধতী।মাঝে
মাঝেই বাড়ির সবার জন্য এটা সেটা কিনে তো আনছেই।উপরন্তু সংসারে টাকা দেওয়া,শাশুড়িকে হাতখরচ..শনি রোববারের পুরো রান্নার দায়িত্বটা কাঁধে নিয়েছে।তাও সবার মন পেল কই?ওটার জন্য বোধহয় ভাগ্য লাগে।
পরদিন ভোরে উঠে রোজকারের মত ঝটাপট স্নান করে ঠাকুরের ফুল তুলে,বাসী ঠাকুরঘর মুছে নিজের তীর্থর আর বড় ভাসুরের টিফিন বানিয়ে বাড়ির সকলের জন্য সকালের চা করে যখন সকাল আটটার ট্রেনটার লেডিস সিটে উঠল বুক ধরফর করছে।কোনক্রমে সালোয়ারটা গলিয়ে ভেজা চুলটা খুলেই দৌড়েছে।চুল দিয়ে টপটপ জল পড়ে ভিজিয়ে দিয়ে ওর পিঠ।ট্রেনটা চলতে শুরু করেছে যখন window সিটটায় বসে ঘুমের দেশে অরুন্ধতী।রাত করে শোয় ভোরে ওঠা।ঘুমটাই ঠিকঠাক হয়ই না।
অফিসে গিয়ে তখন ওকে দেখে শুরু হয়ে গেছে পলিটিক্স।মহিলা কলিগরা জট পাকিয়ে আড়েআড়ে দেখে অরুন্ধতীকে আর সস্তার ভাঁড়ামি!
—–“দেখো সালোয়ারের রঙটা দেখো!ছিঃ শ্যামলাদের এই রঙ মানায় নাকি?চুলটাও ঠিকঠাক আঁচরায়না।কি কাজ ওর শ্বশুরবাড়িতে?ঐ তো মুখের সামনে খাবার পায়।তাই সেজে আসতে পারেনা।ঐ তো রূপ!একটু না সাজলে কি লাগে ওকে ও নিজে জানেনা?”
—–“ওর বরটাকে দেখেছো?কি handsome!কি করে ঐ ছেলে এই মেয়েকে পছন্দ হলো?মতিভ্রম হয়েছিল।ঐ তো টাকা income ছাড়া কোন গুনই নেই।তবে ছলাকলা ভালোই পারে।দেখোনা?
অফিসারকে পুরো হাতে রেখেছে শয়তান মেয়ে”
সব কথাই কানে আসে অরুন্ধতীর কিন্তু কিছুই বলেনা।ওরা জানেনা টাকা ইনকাম করাটা এতটা সহজ নয় একান্নবর্তি সংসারে থেকে,শরীর আর মনের উপর দিয়ে কি যায় অরুন্ধতীই জানে।অফিসে পলিটিক্স;বাড়িতে পলিটিক্স!মেয়েরাই যদি মেয়েদের এত পিছনে লাগে তবে চলবেটা কি করে?কারোর ভালো কেউ দেখতে পারেনা।husband সুন্দর অথচ বৌ টা সাধারণ?এ যেন বড় আজব!উল্টোটা হলে কই?কেউ তো কিছু বলে না?কেন বাইরের রূপ না দেখে মনটা দেখে বুঝি কাউকে পছন্দ করা যায়না?
সবার মন যুগিয়ে চলতে চলতে ও আজ ক্লান্ত।রোজ নৈহাটি থেকে কৃষ্ণনগর ডেইলি প্যাসেঞ্জারি।
লোকে বলে টাকা ইনকাম।টাকাটাই ঘরে আসে শুধু।শরীর মন দুটোই ক্ষয় হয়ে যায়।
সেদিন রাতে তরকারিতে নুনটা বেশী পড়ে গিয়েছিল,যা হয় মাথার ঠিক নেই।ভুল করে দুবার দিয়ে ফেলেছিল।
—— “ছোটবৌমা রান্না করতে ইচ্ছে করেনা তাও করো,দেখো কি হলো?থাক মা আমি করে নেবো এবার থেকে।এইভাবে রান্না আমার সংসারে হয়নি।আমরা সবাই খাওয়াটা অল্প খাই কিন্তু ভালো করে খাই।”
শ্বশুর তখন হাত রেখেছে অরুন্ধতীর মাথায়
“বুঝি মা মাথার ঠিক নেই।যা সব একেকটা অফিসে থাকে!ত্রাস পুরো,যা ঘুমো রাত হয়েছে অনেক।”
রাতে ঘরে ঢুকেই অরুন্ধতীর মাথায় হাত রেখে কেঁপে ওঠে তীর্থ।বাঁপাশ হয়ে শুয়ে অরুন্ধতী,শরীরটা জ্বরে পুরে যাচ্ছে।
জ্বরটা বেশ কয়েকদিন ভুগিয়েছিল।চলে গিয়েও মানুষকে দুর্বল করে দেয়।বাপের বাড়িতে থাকতে পারেনি বেশীদিন।ও বাড়িতে শাশুড়িমার বাতের ব্যথাটা খুব বেড়েছে,তবে বাড়ির গন্ডগোলটা কুরুক্ষেত্রের আকার নিচ্ছিল বেশ
কয়েকটাদিন ধরে।বড় জা হীনমন্যতায় ভোগে চাকরি করেনা বলে।তার logic সে এত সুন্দরী হয়ে বাড়িতে বসে আর তার জা রূপে তার ধারে কাছে না থেকেও রোজ কাঁধে ব্যাগ নিয়ে অফিস যাবে,আর ও তখন আনাজ কাটবে সাবেকি বঁটিটায়।অরুন্ধতীর সালোয়ার নিয়ে কম অশান্তি হয়নি।শাশুড়ির মত ছিলনা।শ্বশুর আর ভাসুরই জোর করে পরতে বলেছিল।trainএ জার্নি!শাড়িতে অসুবিধা হবে একটু।বড়জার মুখ থমথমে,”সে পরতে পারেনি।বাইরে,একবছর।তার জা এসে সেই সুবিধাটা পেয়ে গেল,ঐ মেয়ের মুখ দেখলে হবেনা।ভয়ানক মেয়ে”
অরুন্ধতী বোঝেনা ওরা কেন এমন ভাবে?housewife মানে সে কারোর থেকে কমা না,এক হাতে সংসারটাকে সামলাচ্ছে!কিন্তু ওরা নিজেরাই যদি হীনমন্যতায় ভুগে এসব করে তবে কি করে চলে?
ওদিকে অফিসে কয়েকজন মেল-কলিগ বিদ্রুপ শুরু করেছে কদিন ধরে,”কাজে মন নেই,এরা চাকরি করে কেন?বাড়ি বসে ভাত রাঁধলেই পারেতো,ছুটি হলো কি হলো না ছুটছে বাড়ি যাওয়ার জন্য”
তীর্থ বাড়ির কোন ঝামেলাতে থাকেনি কোনোদিন।বোঝে অরুন্ধতী,অরুন্ধতীও দোষ দেয়না তার জন্য!কি করবে?মেয়েলি ঝামেলা,ও কি বলবে,বললেই ব্যাপারটা আরো ঘোলাটে হবে?কিন্তু ইদানিং ঘটনাটা অন্য দিকে গড়াতে শুরু করেছে।অফিসের কোন এক কলিগের সাথে অরুন্ধতীর নাম জড়িয়ে বেশ কয়েকদিন আগে কথা বলেছিল বড়জা।এড়িয়ে গেছে অরুন্ধতী,আজকাল ব্যাপারটা বাড়ছে!যদিও তীর্থ জানে এসব মিথ্যে তাও…একটা লজ্জার তো থেকেই যায়।
—“অরু জানিস আমায় দেখে বিয়ের আগে সবাই বলত সিনেমায় নামতে,কি গায়ের রঙ ছিল আমার।এখন তো কিছুই নেই”
—–“কেন দিদিভাই এখনও তো দারুন আছো।নামলে না কেন সিনেমায়?”
—“ঐ সব সময় ছেলেদের সাথে ঢংলানি বাপু আমার পোষাবে না,মুখে রঙ চড়িয়ে ঘুরে বেড়াও।আমার বাড়িতে শাসন ছিল।তুই ভালো পারিস এগুলো”
—-“দিদিভাই মেন্টালিটিটা change করো।একটা ছেলের সাথে কথা বলছি মানে সে আমার প্রেমিক
না।”
—–“থাম থাম সবই বুঝি অরু,একটা কাউকে না ধরলে তো আজকাল টেকা যায়না।ভালোই করেছিস,বরও থাকল সাথে আরেকটা।চাকরি এই জন্য করিনি আমি।এসব আমার দ্বারা হবেনা”
মাথায় তখন আগুন জ্বলে অরুন্ধতীর।এত বছরের পরিশ্রমকে নোংরা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে মহিলাটি।মুখটা খুলতে বাধ্য হলো ও
—-“আজকালকার দিনে চাকরি করতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় দিদিভাই।হাতের মোয়া
না।চাকরি পেলে তুমিও ছাড়তেনা।পাওনি তাই বলছো।যে যা না পায় তা নিয়ে কাহিনী বানায়।আমার বৌদি মা কই তারাও তো চাকরি করেনা।এসব তো বলেনা।তারা তাদের সংসার নিয়ে ভীষণ happy..তুমি depressionএ ভোগো কেন?”
সেদিনের পরে নৈহাটির শরৎপল্লীর হালকা
সবুজ রঙের বাড়িটাতে অনেক ঝড় হয়ে গেছে।যতদিন চুপ ছিল অরুন্ধতী সব ঠিক চলছিল কিন্তু যেদিন থেকে ও মুখ খুলল চেনা বাড়িটা আজ অচেনা ঠেকে।মনে মনে গুমরে গুমরে খানিকটা মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছিল অরুন্ধতী,বাড়ি অফিস কোনো জায়গায় একটুকুও শান্তি পায়নি, বিনিদ্র রজনী কেটে গেছে মাসের পর মাস।মুখে কিছু বলেনি কিন্তু সব দেখেছে তীর্থ।মাকে বুঝিয়েছে মা বোঝেনি উপরন্তু বলে এসেছে “বৌ এর পা চাটা ছেলে,আমার সামনে ঐ মেয়ের ওকালতি করতে আসবিনা”।
তারপর একদিন বাধ্য হয়েই অরুন্ধতীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল,বাবা ই বলেছিল।
কারণ বাড়িতে থেকে আলাদা হওয়াটা বড্ড বাঁধবে নিজের ই।
সেদিন বোধহয় 7ই মাঘ,শীতের একটা পাতাঝরার দিনের শেষ বিকেল।পাকাপাকি ভাবে নৈহাটির শরৎপল্লীর হলদে সবুজ বাড়িটার চৌকাঠ পেরিয়ে নতুন পৃথিবীতে যাওয়ার পালা।বড্ড কষ্ট হচ্ছিল অরুন্ধতীর,যে বাড়িটায় আলতায় পা রেখে ঢুকে একদিন নিজেকে বলেছিল এইটা ওর নতুন দুনিয়া আজ সেখান থেকে বিদায় নেওয়ার পালা।তীর্থ গাড়িতে বসে,ছেলেরা কাঁদতে পারেনা কিন্তু অনুভূতি গুলো তো বদলায় না।যাওয়ার সময় ভাসুর আর শ্বশুর গেটে দাঁড়িয়ে হাত নেড়েছিলেন যতদূর চোখ যায়,বোধহয় চোখটা শুকনো ছিলনা,তীর্থ তাকায়নি;তাকালে যেতে পারবেনা।শাশুড়ি আর জা ঘরে খিল আটকে।
নতুন বাড়িতে তখন চাঁদ ছুঁয়ে যায় পায়েসআলো।ওদের চোখে ঘুম আসেনা।
— “তীর্থ,আমি আসতেই তোমাকে সবার থেকে আলাদা করে দিলাম বল?”
——“অরু কাউকে একটা বাড়ি ছাড়তেই হতো।তোমায় নিয়ে না হয় আমিই ছাড়লাম।বাবা দাদা অনেক চেষ্টা করেছিল সব ঠিক করার।হলো না তো”
——“পাড়ার লোক ভাবছে আমি ইচ্ছে করে করলাম।সবাই ভাবছে আত্মীয় স্বজন সবাই”
—–“ভাবতে দাও।ওরা আসল কথা জানেনা।দুএকজনকে দিয়ে সারাটা দুনিয়া বিচার করে।”
—–“আর ও বাড়িতে আমার লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়া হবেনা।গত মাসেই নতুন সিংহাসন কিনলাম জানো ঠাকুরঘরের জন্য”
—–“একবাড়িতে অশান্তি করে না থেকে আলাদা থাকাটা বোধহয় অনেক বেশী সম্মানের।রোজ বাড়িতে ঝগড়া।মার তোমাকে পছন্দ নয়।বৌদি তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে,এই নিয়ে দাদা বৌদিকে বোঝায়…রোজ বাড়িতে ঝগড়া,তুমি কাঁদছ রোজ…একটা দূষিত পরিবেশ..ওখানে কি পুজো হবে বল?দাদার ছেলেটা কি শিখবে?”
সাবেকি বাড়িটায় অরুন্ধতীর শ্বশুরের চোখে তখন ঘুম নেই।বাড়িটা বড্ড ফাঁকা লাগে আজ…সকালের চায়ের কাপে অরুন্ধতী মেখে থাকে জানালার পাশে।ওদের ঘরটা তখন স্মৃতি মেখে একলা পড়ে..তীর্থর রেখে যাওয়া সাইকেল ওষুধের রাংতা অন্ধকার নামায় চিলেকোঠায়,ছেলেমেয়ে যতদিন ছোট থাকে ততদিনই বোধহয় ভালো!
নতুন বাড়িতে তীর্থর কাঁধে মাথা রেখে অরুন্ধতী নক্ষত্র দেখে চলে আকাশে মাঘের শীতে জানালার ওপারে..অরুন্ধতী নক্ষত্র!!তীর্থ গুনগুনিয়ে গিয়ে চলে মেঘদূতের ঠিকানায়…
“দিবসও রজনী তোমাতে সজনী-
বাড়িঘর, মাখামাখি।
ব্যাকুলও বাসরে, যে আলো দুঃখ,
সে আলোতে আমি থাকি,
তুমি যাও…
যে শুধু তোমারই থাকে
বাড়ি ফিরে এসো সন্ধ্যে নামার আগে। “