টেবিলটার এককোনায় পড়ে আছে ওয়ালথারটা। চকচক করছে বাইরের আলোর প্রতিবিম্বতে। আর পাশে ছোট্ট একটা ল্যাবের মতো অ্যালুমিনিয়াম-কাঁচে ঘেরা একটা কেবিন। স্নাইপার রাইফেল, রিভলবার, বিভিন্ন টাইপের মেশিনগান। এ যুগে আরো অনেক কিছু আছে হয়তো। অনেক টেকনোলজি এসেছে অস্ত্রে, কিন্ত বুলেটের আগুন ঝরানোটা এম আর নাইনের অনেক পছন্দ।
হ্যাঁ মাসুদ রানার কথাই বলছিলাম। বিসিআই হঠাৎ করেই মেসেজ দিয়েছে সকালে। দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই “এজেন্টস অব ডি” নামে একটা এলিট স্পাই ফোর্স গঠন করেছে। প্রোফাইলগুলো অনেকক্ষণ সময় নিয়ে পড়েছে। এদের ভেতর দুজনকে, তার কাছাকাছি বয়সের পুরুষকে পারফেক্ট মনে হলো। রিশাদ এবং জাহেদ। আনআর্মড কমব্যাট আর সময়ে ট্রিগার টিপে দেওয়ার ক্ষিপ্রতা দেখে মনে হয়েছে এরা ভবিষ্যৎ এ খুব বড়ো মাপের স্পাই হবে। তার চেয়েও আশার কথা রণিন নামে হাইস্কুল পড়া কিশোর, যার কাছে অতিপ্রাকৃত শক্তি আছে তাকে কিভাবে যেনো অল্প সময়ে দক্ষ করে তোলা হয়েছে ট্রেণিং দিয়ে। এতো অল্প বয়সে দেশে সর্বকনিষ্ঠ এজেন্ট তৈরি করে প্রশাসনিক মহলে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ডিজিএফআই। তবে কালো কেউটে ছদ্মনামে এজেন্ট আরমিন নামে একটা মেয়ে বেশ নজর কেড়েছে। এবং প্রশংসার দাবীদার ব্যঘ্রমানব ওরফে কমান্ডার শরীফ আর তুখোড় গোয়েন্দা শামীম। আইটি স্পাই হিসেবে বাহবা পাওয়ার যোগ্য আসিফ আর সাদিয়া যারা কান, নাকের মাধ্যমে আর স্নায়ু দিয়ে অতীত ভবিষ্যৎ দেখতে পায়।
এসব কথা যখন বলছি, নিজেদের বিশাল দ্বিতল ক্যারাভ্যানে বসে আছে সব কটা এজেন্ট। গোয়েন্দা শামীম সদ্য রিপোর্ট পাওয়া কেসটায় চোখ বুলাচ্ছেন, প্রজেক্টরে যার বিভিন্ন ক্লুর দিকে তাকিয়ে আছেন ব্যঘ্রমানব ওরফে শরীফ। জাহেদ এবং আসিফ সেগুলো একে একে ফরোয়ার্ড করছে সুপার কম্পিউটারের কন্ট্রোলার প্যানেল থেকে। রিশাদ সেইমুহুর্তে ফ্রন্টসিটে বসে ভাবছে কিভাবে প্ল্যানটা এগোবে।আরমিন অসুস্থ তাই বাসায় রেখে এসেছে।
ক্যারাভ্যানের বাইরে একটা কিশোর মাটি থেকে দশ ফিট উঁচুতে সটান পায়ে হাত দুটো মুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। হ্যাঁ আমাদের কিশোর স্পাই রণিন। একটার পর একটা ক্লিক করে যাচ্ছে নিচ থেকে আইটি স্পাই সাদিয়ার সদ্য কেনা মাইক্রো ডিএসএলআর দিয়ে।
“বিপ”
৪২ইঞ্চি স্ক্রীনের দিকে চকিত ঘুরে শামীম দেখলেন ডিজিএফআই হেডকোয়ার্টার থেকে ভিডিও কল। শরীফের দিকে তাকাতেই দেখলেন ততোক্ষণে “এন্টার” বাটনে টিপ দিয়েছেন কমান্ডার ইন চীফ।
-গ্রিটিংস টু দি এজেন্টস অব ডি। ডিরেক্টর জিওসি তানভীরের গমগমে গলা।
-স্যার।
-সবাইকে ডাকুন।
হাতের ইশারায় দৌড়ে এলো সাদিয়া। এক ঝলকে উড়ে এলো রণিন। ঢুকেই থতমত খেয়ে গেলো দুজনে।
-নাও লিসেন কেয়ারফুলি।
-স্যার…
-পার্বত্য চট্টগ্রাম বর্ডারে, বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে রাতের বেলা কিছু ছোট ছোট বিন্দু উড়ে উড়ে মায়ানমার থেকে আসছে এবং নির্দিষ্ট জায়গায় নেমে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী বিপুল তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু পাহাড়ে ঘেঁসো জমি ছাড়া আর কিছু নেই। তবে স্যাটেলাইট ভিউতে রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে ওগুলো স্কুল/কলেজ ব্যাগ জাতীয় কিছু।
-হোয়াট ইজ ইওর প্রেডিকশান অর ক্যালকুলেশান? শরীফ উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছে।
-বিফোর টেল ইউ অ্যানিথিং… খুচরো সোর্সগুলো জানাচ্ছে যে প্রচুর পরিমাণে ইয়াবা আমদানি হয়েছে দেশে ঐ ব্যাগগুলো দেখা যাওয়ার পর।
-খোদা…জাহেদের মুখ হাঁ হয়ে গেছে।
-এখন যেটা করতে হবে, ইয়ু গাইজ আর অ্যাসাইনড টু গো দেয়ার, ইনভেস্টিগেট দ্য হোল ম্যাটার।
-কবে রওনা দেবো স্যার?
-আজ এক্ষুনি।
-ওকে স্যার আমরা তৈরি হচ্ছি।
-অ্যান্ড দেয়ার উইল বি এ সারপ্রাইজ ফর ইয়ু। নাও গো প্রিপেয়ার…
-রজার স্যার।
হঠাৎ করেই বিসিআই আর ডিজিএফআই এর একটা জয়েনড মিশনের দ্বায়িত্ব হুট করে কাঁধে চাপাতে অস্বস্তি বোধ করছে মাসুদ রানা। স্যুটকেসে যাবতীয় অস্ত্র ভরবার পর, টিকিটটার দিকে তাকালো সে। হ্যাঁ, পষ্ট করে লেখা আছে তাতে ৯:৩০ এর বাস। এখন বাজে ৭.৩০। দ্রুত পায়ে গিয়ে ট্রাভেল ব্যাগটা নামালো কাবার্ড থেকে। পরিষ্কার করে তাতে কিছু কাপড় ঢোকাল। নাইটভিশন গ্লাস, একটা স্পাই ক্যামেরা, পাজল কপিয়ার(যেটা দিয়ে নিজের দেহের একটা কৃত্রিম অবয়ব তৈরি করে মানুষকে হতভম্ব করে দেয়া যায়), ইনস্ট্যান্ট স্মোক প্রডিউসার(কড়া গ্যাসের ধোঁয়া) আর একটা লং রেঞ্জের বাইনোকুলার। ৮টা বাজতেই ফ্ল্যাটের ডিজিটাল লকারটাকে নিশ্চিত করলো সে বেরিয়ে যাচ্ছে আপন নিবাস থেকে।
এজেন্টসরা জিওসির সাথে কথাবার্তা সেরে ডিনার সেরে ফেললো। জাহেদ শামীমকে অ্যাসাইনমেন্টের একটা ইন্টারেস্টিং পার্ট দেখালো যেখানে ব্যাগের ভেতর থেকে হালকাভাবে বেরিয়ে আসা একটা প্যাকেটের অংশ আছে। ইমেজটা প্রসেস করতেই সবাই উৎসাহী হয়ে সেদিকে চলে এলো।
– ড্রাগ!
-জানতাম। রিশাদ ভ্রু কুচকে আছে।
-আচ্ছা এটা কি মিয়ানমার থেকে আসছে?
-হুম। গোল্ডেন ট্রায়াংগেল খ্যাত থাইল্যান্ড, মিয়ানমার আর লাওস এই তিন দেশ বরাবরই ড্রাগ প্রডিউসের শীর্ষে। গোটা বিশ্ব্বের ৫০% ভাগ হেরোইন আসে এই ট্রায়াঙ্গেল থেকে। এর পর, আফিমে সবচেয়ে বড়ো উৎপাদন কারী দেশ এই মিয়ানমার। এবং এখানকার ড্রাগ লর্ডরা রেঙ্গুনের সমস্ত হোটেল, রেস্তোরা, হাসপাতাল, ক্লিনিক এর পেছনে খরচ করেছে। শামীম বললেন।
-ওরে বাপরে! রণিনের চোখগুলো বড়ো বড়ো হয়ে উঠলো।
-ওকে গাইজ, লেট’স মুভ টু হিলট্র্যাক। বাঘা বলে উঠলেন।
প্রায় চার ঘন্টা লাগলো চট্টগ্রাম পৌঁছাতে। ক্যারাভানটা গোল্ডেন ইন হোটেলের সামনে রেখে। হোটেলে ঢুকলো সবাই। রিসিপশনের লোকটা একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। এতো লোক। তার উল্টোদিকে সোফায় বসে আছে জ্বলজ্যান্ত স্পাই শিরোমণি রানা। রে-বান সানগ্লাসটা বুকের মাঝখানে টাংগানো।
-গ্রিটিংস গাইজ। তোমাদের রুম বুক করা হয়েছে আগেই।
-সেকি! কবে করলেন?
-আরে এতো কথা বলার কি আছে? রুমের চাবি নিয়ে যাও।
ফ্রেশ হওয়ার পর সবাই মিটিং এ বসলো। স্পাই মধ্যমণির দিকে সবাই তাকিয়ে আছে অধীর আগ্রহে।
-তো যেটা বলতে চাইছি। মিয়ানমার বর্ডারের খবর তো সবাই জানে।
-হুম। আমরা মোটামুটি ব্রিফ পেয়েছি।
-গোল্ডেন ট্রায়াংগেল এর ড্রাগ সিন্ডিকেট তাদের সেফ রুট হিসেবে আমাদের বেছে নিয়েছে। সাথে এও বোঝা গেলো দেশে প্রচুর মাদক ঢুকতে যাচ্ছে।
-আচ্ছা। বাঘা জুল জুল চোখে তাকালেন।
-তুমি, রণিন…
-জ্বি স্যার? উড়ন্ত জুতোজোড়ার মালিক তাকিয়ে রয়েছে।
-তোমার জন্য আলাদা প্ল্যান আছে। কাল সকালে আমরা রওনা দেবো।
-ওকে। সবাই সায় দিলো।
খাগড়াছড়ি পৌঁছাতে পরেরদিন প্রায় দুপুর হয়ে গেলো। রেস্টহাউজ আগে থেকেই বুকিং ছিলো। চারিদিকে শান্ত সুন্দর প্রকৃতি যা দেখলেই মনে হবে এখানে কোনদিন অসুন্দরের ছায়া পড়েনি।
-স্যার। মিশন ইজ অন। বাঘা শরীফ ওরফে ব্যঘ্রমানব ঘোষণা করলো।
-ওকে। মাসুদ রানা তোমাদের লিড দেবে এখন থেকে। আমার দ্বায়িত্ব শেষ এখানে।
লাইন কেটে গেলো ভিডিও কলের। স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক, লোকাল নয়। কারণ পার্বত্য অঞ্চলে তেমন ভালো সার্ভিস পাওয়া যায় না। ঘুরে পেছনে তাকাতেই দেখা গেলো রানা বিশাল ম্যাপ খুলে বসেছে ডাইনিং টেবিলটার মাঝখানে। বিকালের লাল মিষ্টি রোদ জানালা দিয়ে আসছে। একটু পরেই নামতে হবে অপারেশন-ডার্ক এ।
-ওকে গাইজ। শরীফ আর রিশাদ যাবে উত্তরের দিকে। জাহেদ আর শামীম যাবে দক্ষিণে। আইটি আর টেকনিক্যাল সামলাবে আসিফ সাদিয়া। আমি মাঝখানে থাকবো, ঠিক এইখানে। ঠিক মাথার উপর পেট্রোল দেবে রণিণ। রণিন মনে আছে তো কি বলেছি?
-জ্বি। ভ্যবদা মুখে হাসি হাসি ভাব এনে তাকালো রানার দিকে।
সন্ধ্যা নামতেই সবাই অপারেশন স্যুট পরে নিলো। নির্দেশ মতো যে যার যার মতো পজিশন নিলো। মুভিং অবজেক্ট সেন্সর ট্রান্সমিটার ফিট করতে লেগে গেলো তারা। ভারি অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে নেমে পড়েছে সবাই। কারণ ড্রাগলর্ডরা আর্মি নিয়ে এসব চালানের কাজ করে। বলা তো যায় না হুট করে কখন কি হয়ে যায়।
-ওকে লেট’স গেট আ ইনভেস্টিগেট মুভমেন্ট।
-ইয়েস স্যার।
তখন পূর্ণিমার চাঁদ উঠে এসেছে। রণিন উড়ে প্রায় আকাশে অবস্থান নিয়েছে। রিশাদ আর বাঘা উত্তরে গিয়ে আলাদা হয়েছে। ওদিকে জাহেদ আর শামীম আলাদা হয়েছে দক্ষিণে গিয়ে। ঠিক সেই মুহূর্তে বিকট শব্দে এলাকা প্রকম্পিত হলো।
-রনিণ রোল অন!
“ফ্ল্যাপ ফ্ল্যাপ ফ্ল্যাপ” অসংখ্যবার আওয়াজ তুলে রওনা হলো উপর থেকে মাল্টি লেভেল জাল। নেটের ভেতর ব্যাগ গুলো সেঁধিয়ে গেলো।
-গুড জব। আরে ওটা কে?
-নাং খোয়াং। তংখং পাংখোয়াং। উরং নাচোয়া ফেং আকানং বৈম্য আঞ্চোয়া। অন্ত ন সুরং।
টর্চ মেরে দেখতেই দেখা গেলো বিশুদ্ধ এক বার্মিজ। পরনে রয়েছে বার্মিজ লুঙ্গি।
-চং পাখায়াং মাতনো। রানা বললো।
-অং নাসাং ফাং।
-খাইছে কি কয়? জাহেদ হেডসেটে শুনে ভড়কে গেলো।
-আসছে বিপদ। রানা বলছে।
-কি বিপদ?
-ওদের ড্রাগলর্ড এর নাকি বিশাল এক আর্মি আছে। একে খুজে না পেলে এখানে হামলা চালাবে।
-আমার খেতা পুড়বে। রিশাদ বলে উঠলো।
-লেট’স ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন।
প্রায় এক ঘন্টা পার হওয়ার পর। সবাই ক্যারাভানে। আসিফ সাদিয়া বসে কথা বলছে। শামীম আর শরীফ মিটিং করছে। রানা, রিশাদ ও জাহেদ ইন্টারোগেশনে রেখেছে বার্মিজকে। এমন সময়,
-এক মিনিট। রণিন বলেই চুপ হয়ে গেলো।
-কি?
-পিঁপড়ার সারির মতো মানুষ আসছে। রেস্ট হাউজ থেকে পাঁচশ মিটার দূর হবে। পেরিমিটারের ভেতর প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
-অউ! এদের আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করা হোক।
ড্রোন ক্যামেরা ডোঙ্গা ছেড়ে দেয়া হলো। উড়তে উড়তে চারিদিকে প্রায় দশটা ক্যামেরা অবস্থান নিলো।
-রনিণ অ্যাটাক!
পর পর চারটা সি৪ গ্রেনেড ছাড়লো রণিন উপর থেকে। ভুম ভুম করে ভারি আওয়াজ তুলে তোলপাড় হয়ে গেলো এলাকা জুড়ে। একেবারে আর্মির পায়ের কাছাকাছি এসে পড়েছিলো। টের পেয়ে সব পেছনে সরে গেছে। রণিনও জায়গা থেকে সরে নেমে এসেছে রেস্ট হাউজের পেছনের দিকে। ঢুকেই সেকি দৌড়।
-অ্যাকুরেসি এল সিক্স, বেরেটা সিএসএক্স৪, ব্রাশমাস্টার এম১৭এস, সেস্কা, দুইটা আরসেনাল এএফ। ওকে বড়জোর আধাঘণ্টা যুদ্ধ করতে পারবো।
-কি বলেন? আপনার কোন আর্মস আনেন নাই?
-এনেছি। প্রিয় ওয়ালথার আর এটা… আঙ্গুল দিয়ে নিজের মাথা দেখিয়ে দিয়ে হাসলো রানা।
হঠাৎ ঝন ঝন করে পুরো বাড়ির জানালার কাচ ভেঙ্গে পড়লো। সশব্দে।
-গেট ডাউন।
-হেল নো!
আর্মি প্রায় কাছে চলে এসেছে। এমন অবস্থায় রানার মাথায় ঝড় শুরু হলো। যা এস্টিমেট ধরেছিলো তার চেয়ে কম সময়ে ঘেরাও দিয়ে ফেলেছে আর্মিরা। রিশাদ আর জাহেদকে এক কোনে যেতে ইশারায় বললো। জাহেদ তার এল সিক্স স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি করে বসলো দরজায় দাঁড়ানো চারজনকে লক্ষ্য করে। হঠাৎ বাইরে চিৎকার শোনা গেলো। কিন্তু এদিকে আর্মি থেমে নেই। ওরাও তান্ডব লীলা চালাচ্ছে। হুট করে রানা দুদিক থেকে বেরেটা সিএসএক্স৪ আর পিপিকে বের করে গুলি শুরু করলো।
-ফায়ার!!!
এজেন্টস অব ডি এর সবাইও প্রায় একই সময়ে ঝাপিয়ে পড়লো বার্মিজ ট্রুপের ওপর।
জানালায় অবস্থান নেয়া সবগুলো ঝাঁঝরা হয়ে। গেলো। দরজার দিক থেকে মুহুর্মুহু গুলি আসছে। এমন সময় ওখানেই আর্তচিৎকার শোনা গেলো।
-কিরে?
-কি হলো?
মাথা নিচু করে আস্তে আস্তে পাশ দিয়ে তাকালো রণিন।
-আরি প্রহরী গ্রুপ।
গোলাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রানা ভুরু কুচকে তাকিয়ে আছে দরজার দিকে।
-এরা কারা?
-সেভিওরস। প্রহরী গ্রুপ বলি এদের।
প্রহরী গ্রুপের সামনে এসে দাড়িয়েছে সবাই। হাসমান ফরাজী, একে বলা হয় দ্য গ্লোভ নামে। তার মেয়ে জাইমা, একে বলা হয় চাবুকি। জাইমার ভাই আইমান, যাকে বলা হয় বাজ আর সর্বশেষ ,মিশু যাকে রাতে বলা হয় রাতের প্রহরী বা ক্যাপ্টেন অব নাইট।
-পরিচিত হয়ে খুশি হলাম। বিপদে এগিয়ে এসেছেন ধন্যবাদ।
-এটা এগিয়ে আসা ছিলো না। দেশের ড্রাগডিলারদের সাথে পুরোনো বোঝাপড়া ছিলো। আমরা এসছি সেটা মিটমাট করতে।
-মানে তাহলে এদের সাথে এতোক্ষণ যুদ্ধ হলো কেনো?
-এরা সিন্ডিকেটের একটা অংশ ছিলো। তবে ব্যাপারটা আমাদের মিশনের অংশ ছিলো। আমরা সরকারের হয়ে কাজ করতে চাইনা। আমরা স্বাধীন ক্রাইম ফাইটার।
-আচ্ছা। আমাদের কাজ শেষ হয়ে গেছে বোধহয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখানে বেজ ক্যাম্প দেবে।
-কাজ শেষ হলেও যুদ্ধ এখনো শুরু হয় নি মাসুদ রানা।
-তাহলে?
-বার্মিজ ড্রাগডিলাররা এবার তাদের পোষাদানব পাঠাবে। এরা আমাদের সাথে যুদ্ধ শুরু করবে। গিরিসংঘাতের শুরু হলো বুঝি।
-হুম গিরিসংঘাত।