একদা এক ঘরে অনেকগুলো ইদুর বাস করত।সে ঘরে এক বুড়ো ও তার স্ত্রী বাস।তারা ইদুরকে ভালোবাসত।ইদুরগুলো তাদের কোনো ক্ষতি করত না।বুড়ো একদিন ইদুরের গর্তের সামনে এসে বলল,ইদুর ভাই দেখ তোমাদের জন্য আমি ভুট্টার দানা এনেছি।খেয়ে দেখ খুব মজা।তখন অনেক ইদুর গর্ত থেকে বের হয়ে তার কাছ থেকে ভুট্টা খেল।তারপর তারা বলল এই বুড়ো তুমি এখানে থাক,আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে আসছি।কিছুক্ষণ পর ইদুরগুলো বলল আমাদের রাজা তোমার ইদুর ভালোবাসার জন্য তোমাকে তার রাজ্য দেখতে আমন্তণ জানিয়েছে।তুমি কী যাবে? বুড়ো খুশি হয়ে বলল অবশ্যই।কিন্ত এই ছোট গর্তের মধ্য দিয়ে আমি কীভাবে যাব?ইদুরগুলো বলল কোনো সমস্যা নেই।তুমি চোখ বন্ধ কর।একটু পরে দেখবে তুমি ইদুরের রাজ্যে এসে গেছ।বুড়ো চোখ বন্ধ করল।কিছুক্ষণ পর বুড়ো শুনতে পেল চেচামেচির আওয়াজ। তাই বুড়ো চুখ খুলল।সে দেখল চারপাছে ফুল গাছ আর প্রজাপতি বসে আছে। কী সুন্দর রাজ্য।তারপর সে পুরো ইদুরের রাজ্য ঘুরো দেখল। যেন চোখ জুড়ানো যায় না।তারপর সন্ধা বেলায় সে ইদুরের রাজার কাছে গেল।ইদুরের রাজা তাকে বলল আসুন বুড়ো।আপনি আসাতে আমি খুব খুশি হয়েছি।আপনি নাকি ইদুরদের খুব ভালোবাসেন। তাদের নাকি খেতে দেন কোনো ক্ষতি করেন না।এসব শুনে আমি খুশি হয়।বুড়ো বলল, আমাকে বুড়ো বলবেন না।বয়সে আমি বুড়ো কিন্ত কাজে আমি যুবকদের মতো। রাজা বলল, দুঃখিত।তারপর রাজা আর বুড়ো মাঝে অনেক কথা হল।যাওয়ার সময় ইদুরের রাজা তাকে বলল আপনি এখান থেকে ইচ্ছে মতো মণি,মুক্তো নিতে পারেন।বুড়ো এখান থেকে এক পুটলা নিয়ে গেল।যাবার সময় সে আবার চোখ বন্ধ করল এবং কতক্ষণ পর সে চোখ মেলে দেখল সে তার বাড়ির উঠানের সামনে দাড়িয়ে।তারপর বউকে বলল পাশের বাড়ি থেকে দাড়ি পাল্লাটা আনতে।তার বউ যখন দাড়ি পাল্লা আনতে পাশের বাড়ি গেল তখন পাশের বাড়ির কর্তা চিন্তা করল এই বুড়ো কী এমন এনেছে যে দাড়ি পাল্লার প্রয়োজন হল।যারা এক খেলে আরেকবার খেতে পায়না।সে মনে মনে তাকে এটা দেখতে হবে।সে তখন দাড়ি পাল্লা দিয়ে দিল।পাশের বাড়ির কর্তা বুড়োর ঘরের পাশে কান পেতে সব শুনছে ও ঘরের ছিদ্র দিয়ে সব দেখছে।সে দেখল তারা মণি মুক্তো দাড়ি পাল্লায় মাপছে।তখন বুড়োর বউ বলল আচ্ছা তুমি আমাদের ঘরের ইদুর গুলো সাথে গিয়েছিলে? বুড়ো বলল হ্যাঁ।কীভাবে গিয়েছিলে জিজ্ঞাসা করল তার বউ।বুড়ো সব খুলে বলল।তখন পাশের বাড়ির কর্তা সব শুনল।তারপর দিন পাশের বাড়ির কর্তা বুড়োর বাড়িতে এসে তার জন্যভালো খাবার এনে বলল এই বুড়ো ভাই আমি আগে ইদুরকে খুব ঘৃণা করতাম।কিন্ত এখন ইদুরকে আমি খুব ভালোবাসি।তোমার বাড়িতে তো অনেক ইদুর। আজ আমি তোমার বাড়ির ইদুরকে নিজ হাতে খাওয়াব।তখন বুড়ো খুশি হয়ে বলল আচ্ছা ঠিক আছে।তখন পাশের বাড়ির কর্তা ইদুরের গর্তের সামনে এসে বলল ইদুর ভাই দেখ তোমার জন্য আমি কী এনেছি।দেখ ভুট্টা এনেছি।তখন অনেক ইদুর এসে তার হাত থেকে ভুট্টা খেল।তখন সে বলল আমি তোমাদের রাজাকে নিজ হাতে ভুট্টা খাওয়্তে চায়।আমাকে তুমাদের রাজ্য নিয়ে চল। ইদুরগুলো বলল বললেই তো নেয়া যায় না।আমাদের রাজা অনুমতি দিলে তুমি আমাদের রাজ্যে যেতে পারবে।তখন ইদুরগুলো তাদের রাজা অনুমতি নিয়ে এসে বলল আমাদের রাজা তোমাকে তার রাজ্য দেখতে আহবান জানিয়েছে।তখন সে বলার আগেই চোখ বন্ধ করল।কিছুক্ষণ পর সে চোখ খুলল এবং ইদুরের রাজ্যে এসে গেল।সে তখন ইদুরগুলোকে বলল আমাকে তাড়াতাড়ি তোমাদের রাজার কাছে নিয়ে চল।আমি এসব দেখতে চায়না।তখন তারা তাকে রাজার কােছ নিয় গেল।রাজা তাকে অভিবাদন জানাল।রাজা তার সাথে নানা কথা বলা শুরু করল।তখন সে বলল আমি এত কথা বলতে চায়না।আমাকে কিছু দিয়ে দেন চলে যায়। তখন রাজা বলল ঐখান থেকে তুমি ইচ্ছা মতো মণি, মুক্তো নিয়ে যাও।তখন সে ভাবল বেশি নিতে গেলে ওরা বাধাও দিতে পারে। তাই সে একটি বুদ্ধি বের করল।তখন সর ম্যাঁও ম্যাঁও বলতে লাগল।তখন রাজা বলতে লাগল সবাই পালাও রাজ্যে বিড়াল ঢুকেছে।তখন সব ইদুর চলে গেল।সে খুশিতে বলতে লাগল বোকা ইদুর।এখন আমার পথ পরিষ্কার হয়ে গেছে।আমি এখন ইচ্ছে মতো মণি,মুক্তো নিতে পারব।কিছুক্ষণ পর চারদিকে খুব অন্ধকার নেমে এল।তখন সে কিছুই দেখতে পারছে না।তখন সে কেদেঁ বলতে লাগল, আমি এখন কীভাবে বাড়ি যাব? আমিতো রাস্তা চিনি না।ইদুরগুলো শুধু রাস্তা চিনে।এখন আমাকে এখানে অন্ধকারে না খেয়ে মরতে হবে।পারলে বলুন তো তার কিসের জন্য এই অবস্থা হয়েছে??
গল্পের বিষয়:
গল্প