হঠাৎ কেন জানি খুব মনে পড়ছে তোমায়। মনটা যখন খুব অস্থির তখন ভেবে কুল পেলাম না কি করবো।
ঘরে থাকলেই যে বিপদ, যদি ছোট বোনটা এসে বলে, ভাইয়া তুই কাঁদছিস কেন?
কারন তোমার কথা মনে পড়লেই যে দুচোখের পাতা ভিজে যায়।
তাই কিছুটা নির্বোধ এর মতো বাহিরে চলে গেলাম।
বাহিরে এলাম কারন আজকে তোমাকে নিয়ে ভাববো…. ভাবা ছাড়া আর কিইবা আছে বলো!
বাহিরে বেরিয়েও আর শান্তি পেলাম না,এতো চেচা মেচি আর গাড়ির শব্দগুলো খুব বিরক্ত করছে আমায়।
তাই আর এখানে না থেকে সোজা হাঁটা দড়লাম।
হাটতে হাটতে যখন কিছু দূর এলাম.. তখনতো আর ঠিক থাকতে পারলাম না। একি দেখছি আমি সত্যি দেখছি তো! সত্যিই তো দেখছি আর কিছুটা অবাক হয়েইতো তাকিয়ে রয়েছিলাম তোমার দিকে।
জানো, অনেক কথা জমে ছিল কিন্তু বলতে পারি নি। আর পারবোইবা কি করে। তোমাকে দেখেইতো আমি অবাক। কোন সময় সামনে দিয়ে চলে গেলে বলতেও পারবো না।
মনটার ভিতর যে পাগলামিটা এতো বছর গুরপাক খাচ্ছিলো তা এক নিমিষেই দুগুণ করে দিলে। এখন যে হাটতেই পারছি না, বসে বসে খুব কান্না করতে ইচ্ছে করছে।
কিছুক্ষন হতোভাগার মতো দাঁড়িয়ে থেকে ঘরের দিকে রওনা হলাম। ছোট বোনটার আর বুজতে বাকি রইলো না যে আমার মনটা খারপ। ছোট বোনটা আমার বেশ পাকা বটে। চোখের দিকে তাকিয়েই আমার মন খারাপে বিষয়টা বুজে গেলো আর একটু বিস্মর নিয়ে বলতে লাগলো, ভাইয়া তোর কি হয়েছে? মন খারাপ কেনো তোর?
আর আমি বললাম, কই না তো কিছু হয় নাই।
বোনটা একটু রেগে বলল,হুম তুই বললি আর আমি বিশ্বাস করলাম।
তোর কি হয়েছে? আমি একটু রেগে গিয়ে বললাম,,, কিছু হয়নাই বললাম না।
রাগ করে বোনটা চলে গেলো।
মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো, কারন ছোট বোনটাকে যে আমি খুব ভালবাসি।সে অবশ্য খুব রাগ করেছে।
মন খারাপের দেশেই এখন থাকতে ভাল লাগে। তাই মনটা ভাল করার কোন ইচ্ছে নেই। চলে গেলাম ছাদের উপর…….
যার জন্য এতো অস্বস্তি আমার তার উদ্দ্যেশেই গুনগুন করে কিছুকথা বললে হয়তো ভুল হবে না। তাই করতে লাগলাম…
জীবনে কিছু একটা করার ইচ্ছে যে খুব ছিল। পড়াশোনা করবো একটা ভাল ছেলে হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবো। বাবা মার মুখে হাসি ফুটাবো আর ছোট বোনটার সাথে সারাদিন ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে থাকবো সবশেষে তাকে একটা ভাল পাত্রের কাছে তুলে দিব। এই সব স্বপ্নগুলো যে আজ মিথ্যা হতে শুরু করছে।
কারণটা তো ভাল করেই জানার কথা আজ আমার ক্যারিয়ার বলতে কিছুই নেই। আর আমি যদি কিছু করতে না পারি তাহলে তাদের জন্যই বা কি করে করবো বল।
রিয়া……….. শুধু তো ভালবাসছিলাম তাই না! দেখ আজ আমার দিকে তাকিয়ে, দেখ,দেখ…. আজ কিছু নেই আমার। খুব নিঃস্ব আমি, মনে হয় এক নিমিষেই আমার সব শেষ হয়ে গেল।
রিয়া তুই জানলে অবাক হবি কিনা জানি না, কিন্তু আমার কাছেই অবাক লাগে বটে।
আমি যখন আমার ছোট বেলা নিয়ে একটু পিছনে তখন খুব হাসি পায়।
আর যারা শুনবে তারা হয়তো একটু অবাক হবে। কারণ এতো অল্প বয়সে এতো কিছু বুজলাম কি করে। যখন ক্লাস টুতে পড়ি তখন আমরা তোদের বাসার পাশেই ছিলাম।
তুই যখন নানুর বাড়ি থেকে ক্লাস টু তে আমাদের ক্লাসে ভর্তি হলি।
তখন আমার কাছে খুব ভাল অনুভব হয়েছিল। তখন তোকে আমার খুব ভাল লাগতো। জানি না তোর মনে আছে কি না। কিন্তু আমার যে মনে থাকবেই, কারন অনুভুতিগুলো তো আমারই।
যখন আমরা একসাথে জোলাফাতি খেলতাম তখন আমার খেলার দিকে কোনো মন ছিল। তোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম, তাছাড়া তোকে খুব ভাললাগতো আমার কাছে।
খেলার নাম দিয়ে তোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এভাবে যখন একটা বছর কেটে গেল তখন আমরা ক্লাস থ্রিতে আর সেই সময় একটা বিবাদ রটে গেল তোদের পরিবারের সাথে… জানিস কি তুই, তোদের সাথে আমাদের আত্মীয়তার সর্ম্পক আছে? আচ্ছা বাদ দিলাম সেই কথা।
যখন তোদের কাছ থেকে দূরে চলে গেলাম তখন তোর সাথে খেলার সুযোগটা যে হারিয়ে গেল। আবার তুই রেজাল্ট ভাল করাতে যখন “ক” শাখায় নিয়ে গেল তখন তো তোকে দেখা এক কথায় কঠিন হয়ে গেল।
তারপরও তুই কি জানিস লুকিয়ে লুকিয়ে কতোবার তোকে দেখতাম। এইভাবে তোকে মনের ভিতর লালন করতে করতে যখন ক্লাস ফাইভে উঠলাম তখন আমিও “ক” গেলাম। তখন শান্তির একটা নিশ্বাস ফেলি অবশেষে পাওয়া গেলে। দেখতে দেখতে এই বছরটা কেমন জানি তাড়াতাড়ি চলে গেল সমাপনী পরীক্ষা দিলাম পাশ করলাম।
তারপর ভর্তি হলাম একি স্কুলেই তখন খুব আনন্দ হয়েছিল.. কিন্তু ভাগ্য খারাপ যা মনে মনে ভেবেছিলাম তা যে হলো না। এটা তো হাইস্কুল তাই ছেলে মেয়েদের আলাদা ক্লাস। খুব খারাপ লেগেছিল তখন।
এভাবেই কেটে গেল সিক্স,সেভেন,,
এভাবেই গেল অষ্টম শ্রেণীও কিন্তু মাঝে একটা ঘটনা ঘটেছিল যার প্রভাবে তোমার প্রতি আরো ভাললাগার জম্ম নেয়। ও একটা কথা অষ্টম শ্রেণী থেকে আমি গল্প,কবিতা লিখা শুরু করেছিলাম।
অল্প কয়েকদিনেই সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠি। স্যার, ম্যাডাম রাও খুব পছন্দ করেছিল আমার কবিতা ও গল্প।
যখন ক্লাস নাইন এ ভর্তি হবো তখন তুমি কোন গ্রুপে ভর্তি হয়েছিলে তা আগে জেনেছিলাম তারপর তোর গ্রুপেই ভর্তি হলাম।
গল্পের বিষয়:
গল্প