চুন্নি পরী

চুন্নি পরী

– কিছুদিন ধরে দেখতেছি… আমার সব ধরনের জিনিস কেমন হারিয়ে যাচ্ছে… আপনারা বিশ্বাস
করবেন নাকি জানি না তবে হ্যা একে বারেই হারিয়ে যাচ্ছে ।
এই যেমন একদিন বাহিরে থেকে একটা আইসক্রিম কিনে খেতে খেতে রুমে আসলাম… পকেটে
ছিলো ১৫ টাকা, আমার ক্লিয়ার ভাবে মনে আছে, একটা দশ টাকার নোট আর একটা ৫ টাকার কয়েন।
এক সাথে বেডের উপরে রাখে প্যান্টটা খুলে অন্য একটা প্যান্ট পড়ে বেডে তাঁকিয়ে দেখি টাকা নেই।
কেমনডা লাগে কন একে তো গরিবের টাকা..
পুরো ঘর খুঁজে কিচ্ছু পেলাম
না…. মনে মনে ভাবলাম বাহিরে পরে গেছে হয়তো..
কিন্তুু কেমনে পড়বে আমার ঠিক মনে আছে আমি এখানেই রাখছিলাম, আর ঘরে আমি ছাড়া আর কেউ নেই,
তবু মনকে ঘোড়া বুঝ দিলাম যে আমি যেমন বোকা সিওর বাহিরে পড়ে গেছে, তবু মন মনতে চাচ্ছে না।
এখানেই তো রাখছিলাম..
সেদিন এর ঘটনা ভুলতে পড়ছি না, হাজার হলে ও পনের টাকা।

আবার একদিন ফোনটা খুলে একটা একটা করে সিম লাগাচ্ছি আর ওয়াও বক্স থেকে.. তিন সিমে মোট ৬০ এমবি নিলাম..
আর সাথে আমার পারসোনাল সিমটা টেবিলে রাখছিলাম।
এমবি নেওয়া শেষে যখন আমার ঐ পারসোনাল সিমটা নিতে যাবো…
ওমা হায় হায় সিম গেলো কই, পরো ঘর খুঁজলাম, কোথাও নাই,
ঐ সিমেই আবার বিকাশ খোলা ছিলো আর বিকাশে ১২ টাকা ছিলো..
আগেই বলছি গরিব মানুষ।

কিন্তুু সিমটা গেলো কই টেবিলেই তো রাখছিলাম….
সেদিন না হয় বাহিরে গেছি, আজকে তো এখানেই বসে আছি….
আরে ভাই বিশ্বাস করে পুরো ঘটনা সত্যি।

হঠাৎ জ্বীনের কথা মনে পড়লো,

– আরে ভাই জ্বী আমার মতো এই গরিব পোলার জিনিসই তোর ভালো লাগলো…
আচ্ছা ভাই আগে শুনছি তোরা নাকি মানুষরে ধরিস..
ভাই আমার অবোলা জিনিস গুলা তোর কী ক্ষতি করছে হুমমমম।
আমার ধরলে না হয় মানা যেতো।
কারণ আমি যেখানে সেখানে হিসি করি।
এর প্রতিশোধ কী তুই আমার জিনিসের উপরে নিবি।

এমন ভাবে টুকটাক জিনিস গুলো হারাতেই থাকে… এই যেমন কলা এনে রাগছি কলা নাই।

ভাই আপনাদের কাছে এই গুলো কিছু না কিন্তুু আমার কাছে এই গুলাই কোটি টাকা… হাজার হলে ও গরিব মানুষ তো নাকি।

প্রতিদিন রাতে আচ্ছা মতো বকা দিয়ে ঘুমাই যাই….
আমার জিনিস গুলাই ক্যান নিতে হবে তোদের।
এমন একদিন রাতে শুয়ে আছি, হঠাৎ জানালাই ঠক ঠক ঠক শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
ভয়ে তো আমি শেষ।

না না ভেতরে ভয় আছে থাক কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবে না।
লাইট জ্বালাতেই সব শব্দ বন্ধ হয়ে গেলো।
– কীইইইই জানালাই ঠক ঠক করলেই কী আমি ভয় পামু হুমমমমমম,
জীবনে ও না।
এদিকে আমার প্যান্টে হিসি করার মতো অবস্থা।
সেদিনের মতো ঘুমিয়ে গেলাম।

পরেরদিন রাতে ঠক ঠক না একে বারে কেউ ডাকছে জানালার পাশে থেকে।
– আমি তো এবার মনে হয় শেষ।
কেমন মেয়েলি কষ্ট।
– সাহরিয়া…. সাহরিয়া…।
– কেমন গম্ভীর কন্ঠে।
– কাঁপতে কাঁপতে বললাম,
আমি আমাকে মাফ করে দিন,
আজকের পর থেকে আর জিবনে আপনাদের বকা দিমু না,
খালি, সিম, কলা, আর টাকা ক্যান এই পুরো বাড়িটাই নিয়ে যান।
– সাহরিয়া জানালা খোলো।
– এবার মনে হয় আমি শেষ.. সালার মাথাটা আমার এতো
স্ট্রোং ক্যান অজ্ঞান ও হইতেছি না।
– আর হা লাইট জালাবে না।
– এ বার গলাটা একটু ভালো লাগলো।
– ভয়ে ভয়ে জানালা খুলতেছি,
আর ভাবতেছি এই ছিলো আমার কপালো।
জানালা খুঁলেই দেখি সেই সুন্দরী একটা মেয়ে মাটি থেকে তিন হাত উপরে দাঁড়িয়ে আছে।
আর তাঁর পুরো শরীল কেমন আলোই চক চক করতেছে।
হঠাৎ বলে ফেললাম।

– আচ্ছা তুমি কী জ্বীনি।
না মানে আমি বলতে চাচ্ছি যে ছেলে হলে তো জ্বীন হবে, তুমি মেয়ে তাই জ্বীনি।
– হা হা হা…. না আমি পরী।
– আচ্ছা আমার নাম জানলে কেমন করে।
– আমরা সব কিছু জানি।
– তুমিই কী আমার জিনিস নিয়ে যাও।
– হ্যা…।
– ও আচ্ছা আমার ভাবনা তাহলে এতদিন ভুল ছিলো।
– কী ভাবনা।
– না মানে আমি আগে ভাবতাম জ্বীন পরীরা অনেক বড়লোক হয় আর এখন তো দেখছি তুমি আমার
থেকে ও বড়ো কাঙালি।
– তুমি না বেশ কথা বলো,
তাই তো তোমাকে আমার এতো ভালো লাগে।
– আচ্ছা আমার জিনিস গুলো নিয়ে গিয়ে কী করছো।
– কিছুই না…… একদিন তোমার টাকা নিয়ে গেছিলাম,
আর তুমি যেমন করছি তার পরে থেকেই আমার তোমাকে ভালো গেলে যায়।
– যানো আমি ও না আগে ভাবতাম পরী কে বিয়ে করবো, কেমন ভাবনাটা সত্যি হয়ে গেলো বলো।
– আরে বাহ্ সবাই আমাদের কে ভয় করে, তাড়িয়ে দেয় তুমি তো একদম অন্য রকম।
– আরে পাগলি আমি তো এমনিতেই সবার থেকে আলাদা,
এমন সুন্দরী পরী কে যারা তাড়িয়ে দিবে ওদের মতো পাটা আর আছে বলো।
– এই জন্যই আমার তোমাকে এতো ভালো লাগে, এমন সুন্দর কথা বলার জন্য, আর সকল মানুষের থেকে আলাদা তাই।

– আচ্ছা আমার নাম তো জানোই, তোমার নামটা বলো না।
– আমার নাম নীলা।
আমি নীল পাহাড়ে থাকি।
– আমাদের মনের মিল ও কত্ত দেখছো, নীলা নামটা আমার সেই লাগে… আচ্ছা তোমাকে একটু ছুঁতে দিবা।
– হুমমমমমম,, এই ধরো আমার হাত।
– কী সু্ন্দর নরম হাত,,, আহা
মনে হয় সারাজীবন ধরে থাকি।

– আচ্ছা আমার সাথে বেড়াতে যাবে।
– হুমমমমম অবস্যই।
কিন্তুু কোথাই।
– আকাশে…… সত্যি।
– হুমমমমম।
– ওকে চলো।
হঠাৎ কেমনে বাহিরে চলে আসলাম।
– আচ্ছা এবার এই চাদরটার উপরে উঁঠো ।

এর পরে দুইজন দুইজনের দিকে তাঁকিয়ে উঁড়তে লাগলাম।
নিজেকে কেমন আলিপ লায়লার ছিনবাদ মনে হচ্ছিলো ।

– নীলা তোমার হাতটা ধরে থাকি…না মানে ভয় লাগছে তো তাই।
– হা হা হা আরে বোকা ধরো তো কী হয়েছে।
– তুমি না অনেক ভালো…. আর হেব্বি দেখতে।
মনে হয় যেনো সারাদিন ধরে পাপ্পি দেই।

ওমনি পরীটা কোথায় যেনো উধাও হয়ে গেলো।
আর আমি নিচের দিকে পড়তেছি,
নিজেরে খুব গালি দিতে মন চাচ্ছে,
সব সময় এমন লুচ্চামি কথা ক্যান বলা লাগবে,
পরীটা ও চলে গেলো,
আমি তো শেষ…. আআআআআআআআআআ
নিচে ধপ করে পড়ে গেলাম…
ও মা গো আমি তো মরে গেছি…

চোখটা খুলেই দেখি উপরে ফ্যান ঘুরতেছি।
যাক আল্লাহ্ বাঁচাইছে।
তাও ভালো সপ্ন ছিলো….
তাই তো বলি এ কপালো দড়ি ও জুটে না আবার পরী….
উহুহুহুহুরে মাজাটা গেছে মনে হয়।

কিন্তুু ভাই জিনিস হারিয়ে যাওয়ার কথা কিন্তুু একদম সত্যি হুমমমম।।
আহা ওমন একটা যদি পরী পাইতাম
– উমমমমমম হারামির শখ কতো যা মুতে আয়…..
নিজেই নিজেরে বলতেছি হি হি হি।।।

গল্পের বিষয়:
গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত