– কলেজে ঢুকতেই একটা ইটের সাথে ধাক্কা খেলাম …
পরে যাবার উপক্রম কিন্তুু নিজেকে সামলে নিলাম ।
সাইটে থাকা ছেলে মেয়ে অনেকেই হেঁসে একাকার করে দিচ্ছে ।
আমি ওই সব হাঁসিতে আর পাত্তা দেই না ,
কারণ আমাকে বোকা পেয়ে সবাই মজা করে ।
নিজের মতো করে ক্লাস এর দিকে হেঁটে যাচ্ছি ..
হঠাৎ মেয়েলী কণ্ঠে কেউ ডাক দিলো ।
কারণ আমাকে বোকা পেয়ে সবাই মজা করে ।
নিজের মতো করে ক্লাস এর দিকে হেঁটে যাচ্ছি ..
হঠাৎ মেয়েলী কণ্ঠে কেউ ডাক দিলো ।
– এই যে সাদা চশমা এই দিকে এসো ।
– আমি সিওর যে আমাকে ডাকা হচ্ছে কারণ আমি ছাড়া আসে পাশের কেউ সাদা চশমা পরে নেই ।
এদিক ওদিক তাকালাম ।
– এই যে সাদা চশমা এইদিকে তাকাও ।
– হাতের বাম সাইটে তাকাতেই দেখি কয়টা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাঁসছে,
তাঁদের মধ্যে একটা মেয়ে হাতের ইশারা দিয়ে ডাক দিলো ।
– জ্বী আমাকে ডাকছেন ।
– না না আপনাকে কেন ডাকবো,ওই যে সাদা চশমা পড়ে কবুতর গুলো আছে তাঁদের ডাকছি ।
– আচ্ছা সরি আমি ভাবছি আমাকে ডাকছেন, তাহলে আমি গেলাম ।
– কীরে নীলা এই বলদ টাকেই আজকে পেলি(মেয়ে গুলোর মধ্যে একজন)
– ওই তোরা থাম দেখছিস না বাবু এমনিতেই শুকাই গেছে ।
– আচ্ছা বাবু তোমার নাম কী ? (নীলা) ।
– সাহরিয়া ….।
– ওলে বাবা দেখছিস কেমন বাচ্চা দের মতো করে তাকাইতেছে ।
– আচ্ছা আমি যাই আমার ক্লাস আছে ।
– ওই তোরে যাইতে বলছি একবার ও এক পা সামনে দিলে তোর পা ভেঙ্গে দিমু ।
– আচ্ছা ….।
– আবার আচ্ছা মানে কী হুমমমম , কলেজে নতুন ।
– হুমমমমমমম ।
– ঠিক আছে আজকের মতো নতুন বলে মাফ করে দিলাম , আমরা তোর বড় আপু ।
কলেজে
এসে প্রথমে আমাদের এই খানে আসবি আর সালাম দিয়ে যাবি ।
মনে থাকবে …।
– আচ্ছা মনে থাকবে … এবার তাহলে যাই ।
– ঠিক আছে এবার যা ।
তারপরে এক দৌড়ে চলে আসলাম ।
– কলেজ শেষ করে বাসাই আসতেছি ।
কয়েকটা ছেলে আমাকে ঘিরে ধরে মাথাই পানি ঢেলে দিয়ে চলে গেলো ।
চশমাটা খুলে চোখটা মুছতে ছিলাম ।
সাইট দিয়ে দেখি নীলা আপু আমাকে দেখে হাঁসতে হাঁসতে চলে গেলো ।
– বাসাই গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে আছি ।
আগে থেকেই আমার লেখালেখি করার অভ্যাস ।
হাতের লেখা তেমন ভালো না বলে কম্পিউটার এ সব লিখে রাখতাম ।
প্রতিদিনের সব ঘটনা লিখতাম, আমি কোনদিন মেয়েদের দিকে তাকাতাম না, কারণ মেয়েদের দেখলে আমার ভয় করত ।
কেন করত সেটা জানতাম না
এই ফাস্ট নীলা আপুর দিকে তাকাইছি ।
দেখতে অনেক সুন্দরী তবে অনেকটা দুষ্টু … তবে সুন্দরী হলেই আমার কী ।
পরের দিন কলেজে গিয়ে ওই জায়গায় গেলাম ।
সবাইকে সালাম দিয়ে চলে আসতে যাবো ।
এমন সময় নীলা আপুর ডাক ।
– ওই কালকে তোর গায়ে কে পানি দিছে ।
– আমি তো কাউকে চিনি না ।
– এমন বলদ মার্কা হলে চিনবি কেমনে ।
– আপু আমি বলদ না , আমি সাহরিয়া ।
– হুমমমম জানি সেটা , দেখলে চিনতে পারবি ।
– হুুমমমম কিন্তুু কেন ।
– কেন মানে তোর গায়ে যেহেতু পানি দিছে সেহেতু তুই ও তাঁদের গায়ে পানি দিবি ।
– না মানে আমি কেন , দিবো তা ছাড়া ওরা অনেক ।
আমাকে আবার পরে মাইর দিবে ।
– চুপ আমি আছি কিচ্ছু হবে না, তোরে ওদের গায়ে পানি দিতে বলছি মানে তুই পানি দিবি ।
না হলে আমি তোর পা ভেঙ্গে দিমু ।
– আচ্ছা ঠিক আছে , কিন্তুু পড়ে তো ওরা কিছু বলবে না ।
– ওই আমি আছি না কিচ্ছু হবে না ।
তবে তুই ওদের মাথাই আজকে পানি ঢালবি, এখন চল ।
– ঠিক আছে ।
– এবার বল কারা পানি ঢালছিল ।
– ওই যে ঐ সামনের চার জন ।
– হুমমমম ঠিক জানতাম ওরাই করবে । রাজু তোদের সাহরিয়ার সাথে ওমন মজা করা ঠিক হয় নাই ।
– ওহহহহহ তুই মজা করলে দোষ নাই কারণ তুই পিনসিপাল এর মেয়ে তাই ।
আর আমরা করলেই দোষ ।
– শোন আমি মোটে ও তোদের মতো এমন মজা করি না ।
তোর ওইটা অপরাধ আর অপরাধ যখন করছিস শাস্তি পাবি ।
সাহরিয়া এই নে বোতল সবার মাথাই পানি ঢেলে দে ।
– না মানে থাক না শুধু শুধু ঝামেলা করে কী লাভ, আর আমি কিছু মনে করি নাই ।
– আমি জানতাম তুই এইটাই বলবি ।
– এই বলে আমার হাত থেকে বোতল নিয়ে সবার মাথাই পানি দিল ।
তারপরে আমার হাত ধরে নিয়ে চলে এলো ।
আমি তো হা করে আছি, এই প্রথম কোন মেয়ের হাতের স্পর্শ পেলাম ।
নীলা আপুর হাত অনেক নরম হি হি হি ।
আমরা সেই আগের জাইগায় আসলাম ।
– আচ্ছা আপু ঝামেলা করার কোন মানে হয় বলো ।
– কেমন রাগি লুক নিয়ে আমার দিকে তাকালো ।
– না মানে সরি আমার না মুখ ফসকে তুমি বের হয়ে গেছে ।
– হয়েছে ভালো কথা এখন থেকে তুমি করেই বলবি ।
– আচ্ছা ওকে ।
আচ্ছা আজকে আর ক্লাস হবে না আমি বাসাই যাই ।
– ওকে ভালো করে যাবি ।
– ঠিকআছে ।
বাসাই আসছিলাম ……
আবার ওই ৪টা পোলা আমার সামনে আসলো ।
– বাহ নীলা যখন হাত ধরল খুব তো মজা নিচ্ছিলি ।
– না মানে ভাইয়া ।
– চুপ না মানে না মানে না বলে চুপ করে থাক ।
– ওলে বাবা বাবু আবার চশমা পরে ।
– দেখি তোর চশমা ।
– ভাইয়া আমি চশমা ছাড়া ভালো দেখতে পারি না ।
– ওই এই খানে না নীলা নাই , এবার ভালই ভালই চশমা দে ।
– চশমাটা খুলে তাঁদের হাতে দিলাম ।
– এইতো লক্ষি ছেলে ,
বলে একটা ধাক্কা দিলো ।
– রাস্তার মাঝ খানে চলে গেলাম,
আর একটা রিক্সা এসে ধাক্কা দিলো । মুহূর্তের মধ্যে পরে গেলাম আর রিক্সার কী জানি লেগে কপালের সাইটে কেটে গেলো ।
– আরে মাম্মা পোলাটা তো সত্যি কানা ।
– হুমমমম তাইতো দেখছি ।
– এই বলে আমাকে রাস্তার সাইটে
এনে হাতে চশমা দিয়ে চলে গেলো ।
চশমাটা পরে কোন রকমে বাসাই গেলাম ।
কপালটা অনেক ব্যাথা করছে ।
তাই ডাক্তার এর কাছে গেলাম ।
– গিয়ে দেখি নীলা আপু বসে আছে ।
– সাহরিয়া এখানে কেন আসছো ।
– না মানে বাতরুমে পরে গেছি । তুমি এই খানে কেন ।
– আরে এইটাতো আমার নানুর চেম্বার আচ্ছা তোমার কপালে কী হইছে ।
– না মানে ওই যে বাতরুম এ গিয়ে পরে গেছি ।
– ওইতো নানু চলে আসছে ।
নানু দেখতো ও না বাতরুমে পরে গেছে ।
– আচ্ছা তুমি একটু বসো , আমি আর একটা রুগী দেখে আসছি ।
– নানু ……. ও বসবে না তুমি এক্ষুনি দেখ কী হয়েছে ।
– আচ্ছা বাবা দেখছি ।
– এই দিকে আসো দেখি … এটা কেমনে হল ।
– না মানে বাতরুমে পরে গেছি … নীলা আপু সামনে আছে তাই মিথ্যা বলা ছাড়া উপাই নাই, না হলে আবার ঝামেলা শুরু করবে মেয়ে তো না যেন একটা গুন্ডা ।
– না না এটা তো পরে যাওয়ার মতো ক্ষত না, মনে হয় শক্ত কোন জাইগায় আঘাত লাগছে ।
– ওই সত্যি করে বলো কী হয়ছে (নীলা আপু) ।
– কলেজ থেকে আসার পথে রিক্সার সাথে ধাক্কা লাগছি ।
– ওহহহহ তাই না …. নানু ওকে তাড়াতাড়ি ঔষধ দিয়ে ছেঁড়ে দাও ।
– এরপরে ঔষধ দিলো , আমি চলে আসছি ।
হঠাৎ নীলা আপু সাহরিয়া রিক্সাই উঠো, উঠলাম …. কেউ কোন কথা বলছি না চুপচাপ আছি ।
একটু পরে রিক্সা থেকে নেমে একটা পার্কে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো ।
– এবার কী হয়েছে সত্যি করে বলো ।
– না মানে কিছু না না হি হি ।
– ওই তুই বলবি নাকি …. ওদের দিয়ে বলামু (ধমক দিয়ে) ।
– আমি কলেজ থেকে আসছিলাম ওরা আমার চশমা কেরে নিয়ে রাস্তাই ধাক্কা দিছিল ।
এটা সোনার পর নীলা আপু একটু কাছে আসলো … কপালে হাত দিয়ে বলল আর কোথাও লাগেনি তো ।
– মাথা নেরে না জবাব দিলাম ।
তারপর আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে কী যেন দেখল ।
– আচ্ছা কিছু যদি হয়ে যেত ।
– দূর কী হবে তাই , মরেই না হয় যেতাম আর কেউ মজা করতে পারত না ।
– একটা চর দিবো বোকা একটা ।
এর কিছুক্ষণ পরে বাসাই চলে আসলাম পরের দিন কলেজে গেলাম ।
নীলা আপুরা যেখানে বসে থাকে সেখানেই আমি বসে আছি একা একা।
একটু পরে নীলা আপু আসলো ।
সবার সামনে হাত ধরে ওই ছেলে গুলার কাছে নিয়ে গেলো ।
– রাজু শোন এর পর যদি তোরা সাহরিয়া এর সাথে লাগছিস … তা হলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না ।
কালকে যদি ওর কিছু হয়ে যেত । মনে রাখিস …।
এই বলে আমার হাত ধরে নিয়ে আসছিলো ।
পিছন থেকে রাজু বলল …
– বাহ এতো দরদ আগে কারো
উপরে দেখি নাই তো … এইটা কী তোর প্রেমিক নাকি ।
– প্রেমিক না তার থেকে ও অনেক বেশি কিছু ।
বলে আমরা চলে আসলাম ।
– আমি তো শুধু নীলা আপুর দিকে তাকাই আছি …
কী সুন্দর কিউট লাগছে ।
এরপরে একটা গাছের নিচে
বসে আছি কেউ কোন কথা বলছি না ।।
নীলা আপু নীরবতা ভাঙল … ।
– কাউকে ভালোবাসো
– কোন মেয়েকে কোনদিন প্রপোজ করছ । – না …।
– কোন মেয়েকে মনে মনে পছন্দ করো । – হুমমমমম ।
– কে শুনি ।
– ইউ ……..।
– বোকা একটা ।
– অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাও । – না …. ।
– তাকানোর দরকার ও নাই ।
– কেন ।
– ওই আমি আছি না আমার দিকে তাকাবি ,
অন্য কারো দিকে তাকাবি তো মেরে ফেলবো ।
– আচ্ছা ….. ।
– হি হি হি হি ……
– হাঁসছ কেন ।
– তোমার মতো কিউট বোকা আমি আর
একটা ও দেখি নাই তাই …।
– আচ্ছা পাপ্পি দিবা ।
– তুমি কেমনে বুঝলা ।
– যেমন বোকা বোকা ভাবে তাকাই থাকো
সবাই বুজে যাবে পাগল ।
ওই পাপ্পি দাও ..।
জানি এখানে ও ভয় করবা ।
বলেই নীলাই আমাকে পাপ্পি দিলো ।
বুঝতেই পারলাম না কেমনে কী হয়ে গেলো ।
– এই যে আমার বোকা বাবুটা
এবার চলো বাসাই যাই … ।
আমরা বাসাই যাইতাছি আপনারা
ও আপনাদের কাজে চলে যান কেমন
হি হি হি … টা টা …।
>>সমাপ্ত
গল্পের বিষয়:
গল্প