একটা গলির মুখে এসে রিকশা থামাতে বলল কল্পনা।রিকশা থেকে নেমে ভাড়া দিলাম।
একটু সামনে এগিয়ে যেতেই একটা বড়সর এপার্টমেন্ট।তিনতলায় উঠলাম।ও একটা রুমের কলিংবেল টেপার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দরজা খুলে গেল।
মনে হলো দরজা খোলার জন্য ভেতর থেকে কেউ প্রস্তুতি নিয়েই ছিল।
খোলা দরজার ওপারে যাকে দেখলাম,অবাক না হয়ে পারলাম না।আর ভদ্রমহিলাও আমাকে দেখে চমকে গেছেন,পরক্ষণেই দেখলাম ওনার চোখে পানি।
আমি ভাবতেই পারছিলাম না, আন্টি কিভাবে এতো পাতলা, রোগাটে হয়ে গেছেন !
—ভেতরে এসো ,বাবা (চোখের পানি মুছে,আন্টি)
আমি ভিতরে আসলাম।ছিমছাম একটা রুম।আসবাবপত্র বেশি কিছু নেই।
একটা পড়ার টেবিল, একটা আলমারি,বইভরা একটা তাক, একপাশে একটা বিছানা, পাশে আর একটা ছোট টেবিল।এই আর কি।আন্টি –
—ভালো আছো,বাবা ? (ততক্ষণে নিজেকে সামলিয়ে নিয়েছেন)
—হ্যাঁ, আন্টি।আপনারা ?
—এই তো বাবা, যেমন দেখছো।
—তোমার আব্বা আম্মা ভালো আছে?
দাঁড়িয়ে কেন ? বস।
—হ্যাঁ ,সবাই ভালো।
—তো ঢাকায়? এডমিশন কোথায় নিছো?
—কল্পনার সাথে, ঢাকা ভার্সিটিতে।(একটু হেসে)
—তাই নাকি? ভালো হইছে, বাবা।
কথা বলতে বলতে তিনি নাস্তা দিলেন, পানি আনলেন।
—কই গেলি রে মা ? আয় না, জুবাইর সাথে কথা বলবি না ?
(পাশের রুমে কল্পনাকে চেঁচিয়ে বলল আন্টি)
—আন্টি, আমি কিন্তু খুব মন খারাপ করছি।এই কবছর আপনাদের ছেড়ে যে কিভাবে কাটাইছি, আমি নিজেই জানি না।
আপনারা চলে আসবেন তো আমাকে বলবেন না ? আপনাদের ফোন নাম্বার বন্ধ।কেউ বলতে পারে না, আপনারা কোথায় গেছেন . . .
আন্টি এতোক্ষণে চুপচাপ শুনছিলেন, এবার মুখ খুললেন।
—হ্যাঁ, বাবা।সে অনেক কথা।আমরাও অনেক কষ্ট পাইছি।কিন্তু করার কিছু ছিল না।তুমি জানো ?
প্রায় তিন-চার বছর পর পরিচিত একটা মুখ দেখলাম, কথা বলছি !
—কিরে, বস না। (কল্পনাকে আমি, কখন যেন ওও এসে দাঁড়িয়েছে)
—তো ওর সাথে কিভাবে দেখা হলো , বাবা? ওতো এখন হিজাব পরে সবসময়।(আগে পড়ত না)
—হ্যাঁ, আন্টি।আমি ক্লাশ শেষে ক্যাম্পাসে এমনিতেই আনমনে হাটঁছিলাম।কে যেন হঠাৎ ডাকল –
—জুউউউ !
আমি তো অবাক ! আমাকে ‘জু’ নামে কে ডাকতে পারে ? জু নামে তো শুধু কল্পনায় ডাকত।তাও আবার সবসময় না।
তাহলে কোথায় ও ? মাথা তুলে আশেপাশে তাকালাম।একটা মেয়ে , আমার দিকে হেঁটে আসছে।কালো বোরখা, সাদা হিজাব পড়া।পরিচিত ভঙ্গিতে।
—কেমন আছিস,জু ?
—কল্প,তুমি? তোমরা ঢাকায় ?
—হ্যাঁ।ভালো আছিস ?
—হুমম।তোমরা? আন্টি ,নিরাদ ?
—হ্যাঁ।সবাই ভালো আছে।
—তুমি . . . ঢাকা ভার্সিটিতে নাকি ?
—হুমম
—ওয়াও ! ভালো তো।প্রায় দেড় বছর থেকে ক্লাশ করছি বাট এতোদিন পর দেখা যে ?
—আমি প্রথম বর্ষে জু . . . .
—ওওও।তোমরা এভাবে চলে আসলে কেন ? এটা কি ঠিক হইছে ?
—সে অনেক কথা।চল ।আমাদের বাসা চল।আম্মু তোমাকে দেখলে খুব খুশি হবে।
—হুমম।আচ্ছা।চল।
—তারপর তো চলেই আসলাম (আন্টিকে বললাম)
—নাও বাবা , নাস্তা খাও।(আন্টি)
.
কি বোঝা যাচ্ছে না ?
আচ্ছা, আগে পরিচয় দিয়ে নিই।আমি জুবাই।এবার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে।আর কল্পনা ?
ও আমার হাইস্কুল জীবনের বন্ধু।স্কুল জীবনে আমার প্রায় একজনই ভালো বন্ধু ছিল।আর সেটা কল্পনা।আমাদের বাড়ি উত্তরবঙ্গের, নীলফামারী।
আমি পড়াশুনার জন্য ঢাকায় থাকি।আর ওরা?
প্রায় পাঁচ বছর আগে ওরা নীলফামারী ছেড়ে চলে আসে।কি কারণে, সেটা এখনো জানি না।পাঁচ বছর আগের কথা —
আমি তখন ক্লাশ নাইনে।সে সময় আমি অনেক চুপচাপ ছিলাম, ক্লাশের বাইরে খুব একটা বের হতাম না।টিফিনে, ক্লাশে বসে একা একা বিভিন্ন বই পড়তাম।
নতুন একজন চুপচাপ বন্ধুকে দেখতে পেলাম।সে ও বই পড়ে।মনে হয় নিজের বই ।লাইব্রেরিতে থেকে বই নিতে তো ওকে দেখি না।
বই দেওয়া নেওয়া, একটু একটু কথা বলা, এভাবেই ওর সাথে বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায়।আর কল্পনা হচ্ছে সেই ও।
ওর অবশ্য একটা ভালো নাম ও আছে।তবু, আমি ডাকতাম কল্পনা, অল্প না, কল্প।ইত্যাদি।সে যাক।
ধীরে ধীরে ওর, ওদের বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারি।বাড়িতে মা আর ছোট্ট, দুরন্ত দুষ্টু একটা ভাই আছে।
ওর আম্মুকে আমি আন্টি ডাকি।কিন্তু মায়ের মতোই শ্রদ্ধা, সম্মান করি। ওর বাবা বেঁচে নেই।
ও যখন ক্লাশ এইটে তখন, রোড এক্সিডেন্টে ওর বাবা মারা যায়।তারপর থেকে ওদের চাচা, দাদি আর ফুফুরা (ছোট ফুফু বাদে )ওদের দেখতে পেত না।
কথায় কথায় ওদের সাথে ঝগড়া লাগাত।বিভিন্নভাবে ওদেরকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করত।
ওর বাবা কলেজের লেকচারার ছিল।সবাই ওর বাবার মৃত্যুর কারণ হিসেবে আন্টিকে দায়ি করত।
কারণ আন্টিই সেদিন ওনাকে বাজারে পাঠিয়েছিল, বাজার করতে ! অথচ ওনার মৃত্যু ছিল শুধুই রোড এক্সিডেন্ট।
কল্পনার আব্বু আম্মু প্রেম করে বিয়ে করায়, ওর নানাবাড়ির সাথেও ভালো সম্পর্ক ছিল না।তাই সে সময় তারা ছিল খুবই অসহায়।
আন্টি বাড়ির পাশেই, নীলগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষিকা হিসেবে চাকুরি করতেন।এছাড়া বাসা ভাড়া থেকে কিছু টাকা পেতেন।
এ দিয়েই তাদের চলে যেত।
কল্পনা অনেক মেধাবি আর পরিশ্রমী ছিল।কিন্তু কারো সাথে বেশি কথা বলত না।আমার সাথেই একটু কথা বলত ।
আমরা তখন ক্লাশ টেনে।খুব ক্লোজ হয়ে গিয়েছিলাম।দুজনেই দুজনার বেস্ট ফ্রেন্ড।আমাদের বাসা থেকে ওদের বাসা আড়াই তিন কিলোমিটার ছিল।
আমি প্রায়ই ওদের বাসা যেতাম।আন্টিও আমাকে ছেলের মত দেখত,আদর করত।আর নিরাদ ?
ক্লাশ টু তে পড়লে কি হবে অনেক দুষ্টু ছিল।আমার নোট, বই লুকিয়ে রাখত।
আমি ওদের বাসায় ঢোকার সাথে সাথেই পকেট থেকে চকলেট বের করে নিত।আর আমারও ওর জন্য চকলেট নিয়ে যেতে ভূল হতো না।
আর কল্পনার সাথে তো . . .।হ্যা, তবে আমরা মিশতাম ভাইবোনের মত।গল্প করতাম, মজা করতাম? সব কিছু শেয়ার করতাম।
মাঝে মাঝে আড্ডা হতো।সময় পেলে আন্টি, নিরাদ আর ছোট ফুফুও থাকত।আমি প্রায় ওদের ফ্যামিলির একজন হয়ে গিয়েছিলাম।
.
প্রায়ই শুনতাম ওর কল্পনার দাদির সাথে, চাচাদের সাথে আন্টির ঝগড়া লেগেছে।কোনো সময় কল্পকেও আন্টিকে থামানোর জন্য কথা বলতে হতো।
কল্পনার দাদি আর চাচারা খুব লোভি ছিল।ওরা সব সময় চাইত আন্টি – ফ্লাট,জমি আর মার্কেট লিখে দিক।
বিভিন্নভাবে ওদের তাড়াতে চেষ্টা করত।আর দিন দিন সেটা বেড়েই চলল।
শেষে এমন দাড়াল যে,প্রতিদিন ঝগড়া,হাতাহাতি,কান্না রুটিনে এসে গেল।আন্টি উচ্চ শিক্ষিত আর ধৈর্যশীল ছিলেন।তাই শত কষ্ট তিনি সহ্য করেছিলেন।কিন্তু . . .
.
আমরা তখন ক্লাশ টেনে, প্রথম সাময়িক পরীক্ষার পর থেকে কল্পনা বেশি স্কুলে আসত না।বাড়িতে সমস্যা।বাড়িতে ঔর থাকা খুব প্রয়োজন ছিল।
তাছাড়া স্কুল আসা যাওয়ার পথেও অনেকে ওকে ডিস্টার্ব করত।আমি যখন ওদের বাড়ি যেতাম, এসব ঝগড়া,কান্না শুনে ভালো লাগত না।
তাই ওদের বাড়ি যাওয়া অনেক কমাই দিছিলাম।
কিন্তু আমাদের সম্পর্কে সেরকম একটা প্রভাব পড়ে নি।
.
কল্পনার একটা চাচাত ভাই ছিল,ইমরান,খুবই খারাপ।সব সময় মাস্তান,বখাটে ছেলেদের নিয়ে ঘুরে বেড়াত।
.
একদিন, সন্ধ্যার একটু আগে আগে, আমি ওদের বাড়ি থেকে ফিরছিলাম।কলেজ গেটের একটু আগে রাস্তায় কয়েকটা ছেলে আমার সাইকেল আটকায়।
কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমাকে মারতে শুরু করে।রড তালা, বেল্ট আর হকিস্টিক দিয়ে ওরা নির্মম ভাবে আমাকে মারে।
মাথা ফেটে গিয়েছিল,পায়ের একটা হার ভেঙ্গে গিয়েছিল।
শুধু অজ্ঞান হওয়ার আগে শুনতে পেয়েছিলাম ইমরাইন্যার হাসির শব্দ।সেদিন আমার কি দোষ ছিল, এখনো জানি না।
.
একমাসের মতো হাসপাতালে ছিলাম।কল্পনারা কেউ আমাকে দেখতে যায় নি।আমার খুব খারাপ লেগেছিল।
মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ওদের কথা।মা বলেছিল ওরা ভালো আছে।দেখতে আসবে তোকে।
কিন্তু ওরা আসেনি আর ।
একমাস পর যখন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরলাম,জানতে পারলাম ওরা নাকি বাসা ছেড়ে কোথায় চলে গেছে কেউ জানে না।মোবাইল বন্ধ !
আমার অসুস্থতার কারনে আম্মু এ কথা আমাকে জানায় নি।ওদের বাসায় গিয়ে দেখি সব কিছু দখল করে আছে ওদের চাচারা।
তারপর পরিচিত অনেক জায়গায় খুজেছি।অনেককে জিজ্ঞেস করেছি।কোথাও ওদের পাইনি।
.
আমি অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলাম।সব সময় ওদের কথা ভাবতাম ।
কোথায় আছে কল্পনা ? নিরাদ কি এখনো দুষ্টামি করে ? আন্টিকে বুঝি আর ঝগড়া করতে হয় না ?
ওরা ভালো আছে তো ? নাকি কল্পর চাচারা . . . . . . না না।ওরা ঠিক আছে।
.
ওদেরকে হারিয়ে আবার আগের মতো চুপচাপ ,শান্ত হয়ে যাই।কিছুই ভালো লাগে না।কারো সাথে বন্ধুত্ব করতেই ভয় লাগে।
হারানোর ভয়।সে সময়ে আম্মু ছাড়া আমার কোন ভালো বন্ধু ছিল না।আম্মু সব সময় আমাকে সঙ্গ দিত, আমাকে বুঝাত।
বেশিরভাগ সময়ে ঘরের ভিতর থাকি।বই,সিনেমা ,ল্যাপটপ দিয়েই সময় কেটে যায়।
ধীরে ধীরে অনেকটা স্বাভাবিক হয়।কিন্তু আগের স্মৃতি কখনোই মুছে যায় নি।
.
তারপর ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স হয়ে গেল।ঢাকা চলে আসলাম।এখানেও মেস, ভার্সিটি আর লাইব্রেরিতে কেটে গেল দেড় বছরের মতো।
ভালোভাবে গড়ে উঠে নি কোনো নতুন সম্পর্ক,বন্ধুত্ব।মনে মনে খুঁজতে থাকি পুরাতন সেই মানুষগুলোকে।
তারপর আজ,হঠাৎ করেই বুঝি অবসান হলো এতো দিনের অপেক্ষার . . . .নাস্তা খেতে খেতে কথা হচ্ছিল-
—আচ্ছা আন্টি, সেদিন কি হয়েছিল যে সবাইকে ফেলে,কাউকে কিছু না জানিয়েই চলে আসতে হলো ঢাকায় ?
—সব বলছি বাবা।শোন।
তোমাকে যেদিন ওরা মারল, সেদিনেই কল্পনার বড় চাচা এসে তিনদিনের ভিতর বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলল।
সে সময়ে সাহায্যের জন্য অনেকের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম।কেউই এগিয়ে আসে নি।তাছাড়া ওদের হুমকেকে সবাই ভয় পায়, কেউ হয়ত কিছু করতে পারত না।
চতুর্থ দিনে ওরা এসে আমার সাথে ঝগড়া বাধিয়ে দিল।
ভাংচুর করল অনেক আসবাব পত্র।পরের দিনেই বাড়ি ছেড়ে না দিলে শেষে তো মেরে ফেলার ই হুমকি দিল।
সেদিন রাতেই কে যেন এসে কল্পনার দিকে এসিড ছুড়ে মারল।একটু দূর থেকে ছুড়েছিল বলে ওর মুখে পড়েনি।
গলা ও ঘাড়ের কিছু অংশ ঝলসে যায়।এই কাজ যে করেছিল মুখ না দেখলেও চিনতে পেরেছি কে সে . . .
আমি বুঝতে পারছিলাম,ওরা যেকোনো ভাবে আমাদের এখান থেকে তাড়াবেই।তাই তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিলাম।
কল্পনাকে ডাক্তার দেখিয়ে, প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র,কাগজপত্র আর টাকা পয়সা নিয়ে সে রাতেই ঢাকা রওনা দিলাম।সাথে ঘুমন্ত নিরাদ আর অসুস্থ কল্পনা !
.
—হুমমম।তারপর ? (আমি)
—আসার পথে মোবাইলটাও হারিয়ে গেল।তাইতো আর যোগাযোগ করা সম্ভব হইনি,কারো সাথে।আন্টি বলেই যাচ্ছে – ঢাকায় আমার এক পুরোনো বন্ধু থাকে।
ওর বাসায় উঠলাম।কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারলাম বন্ধুর স্ত্রীর সাথে বনিবনা হবে না।উনাদের বাসা ছেড়ে দিয়ে উঠলাম এক মেসে, ছাত্রীদের।
আমি ওদের রান্না করে দিতাম, একটু আধটু পড়াও দেখাই দিতাম।এর বিনিময়ে আমাদের খাওয়াটা হতো।কিছুদিনের মধ্যে একটা চাকুরি পেয়ে গেলাম।
স্থানীয় কিন্ডার গার্টেনে।এভাবেই অনেক কষ্টে বেচেঁ আছি।এখন অবশ্য নিজেদের ভাড়া করা ফ্লাটে থাকি।চাকুরিও পাল্টাইছি।
.
—এখন বুঝছো তো, কেন তোমাদেরকে জানাইনি ?ওরা যদি জানে যে আমরা ঢাকায় আছি তো এখানেও আসতে পারে।
কারণ আমি বাসা, মার্কেট ছেড়ে দিলেও লিখে দেইনি।যাতে নিরাদরা একদিন তাদের পিতৃনিবাসে ফিরে যেতে পারে।
—হুমম, আন্টি ।ভালো করেছেন।
এতোক্ষণে চুপচাপ শুনছিলাম।প্রথম লক্ষ করলাম কল্প হিজাব পড়া নাই।ওর ঘাড়ে কালো একটা দাগ।
—বাবা,তুমি কাউকে আমাদের ঠিকানা দিয়ো না।আর সময় পেলে আমাদের এখানে এসো।
.
—আচ্ছা,আন্টি।আসার চেষ্টা করব।
—আচ্ছা,কল্প নিরাদ কই ?
—নিরাদ তো এখন স্কুলে।আসবে হয়ত একটু পর।
—হুমম।ও এবার কিসে পড়ছে ?
—সিক্সে।পিএসসিতে বৃত্তি পাইছে।
—ওউউ . . . গুড।
ওদের সাথে অনেক্ষণ কাটালাম, অনেক সুখ দুঃখের কথা হলো, গল্প আড্ডা হলো।মাঝখানে অনেক বড় ব্যাগ নিয়ে, ক্লান্ত চোখে নিরাদ আসল স্কুল থেকে।
অনেক বড় আর হ্যান্ডসাম হইছে।পকেট থেকে চকলেট বের করে দিলাম।ও অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিল।আমাকে নাকি ভালো মতো চিনতেই পারছে না !
.
খাওয়া শেষ করে, বিকেলের দিকে যখন মেসে ফিরলাম, ততক্ষণে অনেক বড় একটা চিন্তা মাথা থেকে নেমে গেছে।
অনেকদিন পর প্রাণ খুলে হাসছি।অনেক অপেক্ষার পর ফিরে পেয়েছি আমার হারানো বন্ধু, হারানো ফ্যামিলিকে . . . . .