রাত্রে সবাই ঘুমায়…কিন্তু হিমুরা জেগে থাকে।কারন হিমুদের জন্যেই তো রাত।রাত চিন্তা ভাবনা করার একটা দারুণ সময়।তবে কালকে রাতে আর খুব একটা জাগতে পারি নি।শহরের জীবনে তথাকথিত চ্যাট করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়ছি মনে নেই।ঘুম থেকে উঠে দেখি বারান্দায় ২টা কাক।ঢাকার কাক গুলো সব সময় বারান্দায় বা কোথাও থাকলে কাকা করে।তবে এরা ২জন করতেছে নাহ।হয় তো নীরবতা পালন করতেছে।কাকারাও মাঝে মাঝে নীরবতা পালন করে।যা নিজেদের শোকে নাহ।মানুষের শোকে।তবে আমার এখন ওই দিকে মনোযোগ দিয়ে লাভ নেই।কাটা কুদ্দুস কে খুজতে যেতে হবে।তাকে খুবই দরকার।
এছাড়া অনেক কিছুই জানা যাবে নাহ।সে নাকি ভুত দেখছে।অনেক দিনের ইচ্ছা নিজের চোখে ভুত দেখব।আর ভুতেরা যখন সামনে আসবে তখন তাদের বলবো”হ্যালো ভুত জনগন” তাই আর দেরি নাহ করে বেরিয়ে পড়লাম।শুরুতেই যেতে হবে ক্যাম্পের বাজার।কারন মোহাম্মদপুরে যত চোরই আছে সবাই বেশি ভাগ সময়ে ওইখানেই থাকে।হয় তো বা কাটা কুদ্দুস ও ওই জায়গায় থাকবে।তবে রাস্থায় প্রচুর রোদ।কালকে ডানমন্ডির আবহাওয়া খুবই ভালো ছিলো।যদিও সব থেকে ভালো লাগার বিষয় ছিল ছিনতাইকারীরা।
সামান্য ক্যাম্পের বাজারে আসতেই ঘাম যেন শরীরের উপড় দিয়ে এক নদী তৈরি করে ফেলছে।তাই এখন মুখ মুছাও সম্ভব নাহ।পকেটবিহীন পাঞ্জানিতে তো আর রুমাল থাকবে নাহ।তবে রুপা কে খুজে পাইলে হয় তো কাটা কুদ্দুস কে খুজে পাওয়া আরো সহজ হই তো। ক্যাম্পের ভেতরে যেতেই কাটা কদ্দুসের দেখা।তাই দেরি নাহ করে প্রথমেই আমিই প্রশ্ন করে বসলাম।
আমি : শুনলাম আপনি নাকি ভুতের দেখা পাইছেন! তবে সে উত্তর নাহ দিয়ে ভিন্ন কথায় যাওয়ার চেষ্টা করলো।রুপ কথায় গল্পে শুনেছি ভুত নাকি বলে দেয় কাউকে তার কথা নাহ বলতে।
তবে সে যতই জেদাজিদি করুক নাহ কেন।ভুত আমাকে দেখতেই হবে।তবে তাকে রাজি করানোর জন্যে আমার কাছে তেমন কিছুই নেই।তাই বন্ধুর দেয়া ১০০০টাকা তাকে ধরিয়ে দিয়ে জানতে পারলাম ভুতের ব্যাপার। ভুত সে দেখেছে একটা আদিপুরানো বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে।তবে সেই বাড়িতে তেমন কেউই থাকে নাহ।দিনের বেলা ওই বাড়িতে একবার যেতে হবে।।আর রাতের বেলা একবার।দিনের বেলা যাবো বাড়িটা চেনার জন্য।আর ভুত দেখতে যাবো রাতের বেলা।শুনেছি রাতের বেলাতেই ভুতেরা বেশি দেখা দেয়।হয় তো আমাকে দেখা দিয়ে মহাপুরুষ হওয়ার দৌড়ে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বাড়িটা রাজিয়া সুলতানা রোডে। একটা ভাঙ্গা ৩ তলা বাড়ি।বাড়ির এক তালা টার সামনে একটা ভাঙ্গা গ্রিল আছে।তবে দ্বিতীয় তলা টা বেশ সুন্দর। একটা পাশে জানালা।যদি খোলা বাতাসে কোন মেয়ে চুল খোলা রেখে ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে হয় তো তার রুপ আরো ৪গুন বৃদ্ধি করবে ওই বারান্দা। আর তৃতীয় তলা সামনের দিকে পুরোটাই বারান্দা। তাই ৩ তলা টা আমাকে আকর্ষণ করলো নাহ।বাড়িটা দেখতে দেখতে বেলা ২.৩০ বেজে গেছে।এখন আর মেসে যাওয়া সম্ভব হবে নাহ। তাই দুপুরের খাবারটা কানা কাউসারের দোকানেই খেতে হবে। আর রাতে যেতে হবে ভুত দেখার জন্য।
রাত ১১টা বাজে। এখন একটা দারুন সময় বাড়িটাতে ডোকার জন্যে।আমি প্রথমেই দেখব দ্বিতীয় তলা টা। কারন কাটা কুদ্দুস নাকি সেখানেই ভুল দেখেতে। সাথে ২ তলাটা আসলেই আকর্ষণ করে।কানা কাউসারের ভাই সাইফও আমার বেশ ভক্ত। বেচারির ইচ্ছা ছিল আমার সাথে আসার।তবে বাচ্চা মানুষ তাই তাকে আর আনি নাই। তবে সে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকবে। বেশি দেড়ি নাহ করে বাড়িতাতে ডুকে পড়লাম। কথামত প্রথমেই গেলাম ২তলাতে। সব কিছুই অন্ধকার। তেমন কিছুই দেখা যায় নাহ। পুরাতন বাড়ি সে জন্য মেঝে তে ছোট ছোট গাছ হয়ে গেছে। বারান্দা দিয়ে ল্যাম্পোস্টের আলো এসে পড়ছে ২তলায়। তবে বারান্দায় তাকাতেই যেন চোখ দুটো আটকে গেলো। দুপুরে ঠিক ভাবে একটা মেয়ের দাঁড়িয়ে থাকার কথা ভেবেছিলাম ঠিক ওভাবেই একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে হয় তো আমাকে দেখে। তাই তো কাছে আসছে।আরো কাছে। তবে আমার চোখ আটকে গেছে তার রুপের দিকে।