কিছুক্ষণ পরপর বেলের শব্দে মাথা ধরার উপক্রম। আর সারাক্ষণ মানুষের চেঁচামেচি তো আরও বেশি বিরক্তকর। না জানি, এখানে যারা সর্বক্ষণ থাকে তাদের কাছে ব্যাপারটা কেমন লাগে? হয়ত থাকতে থাকতে এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এজন্য হয়ত মানুষের চেঁচামিচি, বেলের শব্দ তাদের কাছে বিরক্ত লাগে না।
হুম, আমি এ মুহূর্তে একটি ভাতের হোটেলে বসে আছি।
.
এগুলো ভাবতে ভাবতে লক্ষ করলাম কয়েকজন ছেলে ভেতরে ঢুকলো। টেবিলে বসতেই ক্যাশে বসে থাকা বড়কর্তা বললেন, ‘অই অপু, এখানে এনাদের কী লাগে জিগা?’ অপু বড়কর্তার কথা শুনে ছেলেগুলোর সামনে এসে দাঁড়ায় তারপর বললো, ‘কী খাবেন?’ তখন ছেলেগুলোর মাঝে থাকা একজন বললো, ‘কী খাবি তোরা?’ এরপর আরেকজন বললো ‘কী আছে?’ অপু জবাব দিলো, ‘চিকেন রোল, সিঙ্গারা আর পরোটা।’ সবার সম্মতি অনুসারে চিকেন রোল অর্ডার করা হলো।
.
অপু কথানুযায়ী তার কাজ সম্পন্ন করে অন্যকাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো। ছেলেগুলো বেশ আনন্দে হাসাহাসি করে রোল খাওয়া শেষ করে আবার অপুকে ডাক দিলো। ‘ঐ পিচ্চি এদিকে আয়।’ কাজে ব্যস্ত থাকায় অপু শুনতে পায়নি। তখন আরেকজন উচ্চ স্বরে ডাক দিলো, ‘ঐ পিচ্চি এদিকে আয়।’ ডাকটি অপুর কর্ণপাত হলো। সে সাথে ক্যাশে বসে থাকা বড়কর্তারও ডাকটি কর্ণপাত করলো। বড়কর্তা চুপসে না থেকে অপুর দিকে ধমকির বাণী ছুঁড়ে মারলো। ‘ঐ শুয়োরের বাচ্চা, ডাকতেছে শুনতে পাস না? কামকাজ রেখে শুধু খানা নিয়ে থাকিস। যা ঐখানে যা কী লাগে দে।’ অপু কোনো কিছু না বলে টলমল চোখে ছেলেগুলোর সামনে এসে দাঁড়ায়, তারপর বলে ‘জে কন কী লাগবো?’ তখন উচ্চ স্বরে বলা ছেলেটি বলে, ‘ডাকলে শুনতে পাস না? দে টিস্যু দে আর যা চারটা চা নিয়ে আয়।’ অপু কিচেন রুম লক্ষ করে জোরে বললো, ‘চাইরডা চা বানান।’ একটুপর কিচেন রুমে থাকা লোকটি অপুকে ডাক দিয়ে বললো, ‘চা নিয়া যা।’ অপু চা নিয়ে এসে সবাইকে দেয়। চা খাওয়া শেষ করে অর্ডার করা ছেলেটি বললো, ‘কতো হয়েছে?’’ অপু কিছুক্ষণ ভেবে বললো, ‘জে ১৮০ টেহা’ অপুর কথা শুনে উচ্চ স্বরে কথা বলা ছেলেটি বললো, ‘এতো টাকা কেমনে আসে?’ তখন অপু বললো, ‘রুল চাইরটা ১২০ টেহা, চা চাইরডা ৪০ টেহা আর সস চাইরডা ২০ টেহা।’ হিসাব শেষে অপু টেবিল পরিষ্কার করছিলো ছেলেগুলো উঠেছিলো তখন হাত ফসকে একটি চায়ের কাপ অর্ডার করা ছেলেটির উপর পড়ে কাপটি ভেঙ্গে যায় আর কাপে অবশিষ্ট কিছু চা ছিলো সেটা ছেলেটির প্যান্টে পড়ে। ছেলেটি চমকে গিয়ে বললো, ‘এহ কি করলি!’ এটা দেখে উচ্চ স্বরে কথা বলা ছেলেটি অপুর গালে ঠাস করে একটি কষে চড় বসিয়ে দিয়ে বললো, ‘দেখে কাজ করতে পারিস না।’ অপু কেঁদে কেঁদে বললো ‘আমি ইচ্ছা করে ফালাইনি ভাইজান’ তখন অর্ডার করা ছেলেটি বললো, ‘চা পড়ছে আমার প্যান্টে তুই ওরে মারলি কেন?’ উচ্চ স্বরে কথা বলা ছেলেটি চুপ থাকলেও বড়কর্তা একদমই চুপ ছিলো না। হুট করে এসেই অপুর ঘাড়ে একটা ধাক্কা দিতে দেরি করলো না। অপু সাথে সাথে ফ্লোরে পড়ে যায়। অকথ্য ভাষায় গালি দিতেও ভুল করেননি। দৌঁড়ে গিয়ে অপুকে উঠালাম, বড়কর্তাকে লক্ষ্য করে বললাম, ‘ওরে মারছেন কেন? বাচ্চা ছেলে হাত ফসকে পড়তেই পারে।’ তখন বড়কর্তা গরম হয়ে আমাকে বললো, ‘আরে মিয়া দু’দিন পরপর একটা না একটা জিনিস ভাঙ্গে। না মারলে শিক্ষা হবে না।’ তখন ছেলেগুলোর মাঝে থাকা একজন বললো, ‘বাদ দেন কাপের টাকা আমরা দিয়ে দিবো ওরে আর মারবেন না।’ অপু আমার কোমর ধরে আছে আর কাঁদতেছে। আমি তখন বড়কর্তাকে বললাম, ‘ওরে আমি আমার সাথে নিয়ে যাবো। কিরে যাবি আমার সাথে?’ অপু একচোখ মুছে আমাকে বললো, ‘হ যামু’ বড়কর্তা বললো, ‘নিয়া যান, আমার এখানে থাকলে আমার লালবাতি জ্বালাবে।’ ছেলেগুলো কাপের টাকা দিবে বললেও আমি কাপের টাকা দিয়ে অপুকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম।
.
সুবিধা বঞ্চিত অপুদের এভাবেই মার খেতে খেতে বড় হয়। এদের মারলেও ধরার মতো কেউ থাকে না। আর দু’মুঠো ভাতের আশায় আর কিছু টাকার জন্য সব কষ্ট সহ্য করে। সারাদিন খাটা খাটনি করে সামান্য কিছু খেলে বড়কর্তার মতো লোকেরা কথা শুনাতে বিন্দুমাত্র ভাবে না। তারা চায় অপুদের দিয়ে শুধু কাজই করাতে কিন্তু বিনিময়ে কিছু দিতে তাদের কলিজা ছিড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কারণ তাদের মনে হয় কাজ না করিয়েই যেন দিয়ে দিচ্ছে।
.
রাস্তার এক ধারে হাটছি আমি আর অপু। অপুর দিকে তাকালে বেশ মায়া লাগে। ছেলেটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার চেহারায় অদ্ভুত একটি মায়া আছে। হোটেলে যতক্ষণ বসে ছিলাম তখন একটা জিনিস লক্ষ করলাম অপু অনেকটা চঞ্চল টাইপের ছেলে। ওর টাকার হিসেব দেখে খুব অবাক হই। কারণ খুব একটা দেরি না করেই অপু বিলের হিসাব করে ফেলতো। পড়াশুনা করলে আজকে সে হয়ত পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র থাকতো।
.
হাটতে হাটতে আমরা আমার প্রিয় পার্কে গিয়ে পৌঁছালাম। দুপুরের রোদে প্রকৃতি এখন প্রচণ্ড উত্তপ্ত। পার্কে হালকা বাতাস আর গাছের শীতল ছাঁয়া থাকায় গরমটা অনুভব হচ্ছে না। আমরা পার্কে ইট বালিতে তৈরি একটি বেঞ্চিতে বসলাম। আসার সময় অপুকে একটা কথাও জিজ্ঞেস করিনি। বেঞ্চিতে বসেই ওকে জিজ্ঞেস করলাম,
.
– ‘অপু কিছু খাবি?’
– ‘হ খামু, সকাল থেইকা কিচ্ছু খাই নাই। সকালে কিছু খাইতে দেয় না। এসেই কামে লাইগা যেতে হয় আমাগো।’
– ‘রোল খাবি?’
– ‘হ খামু, ঐটা আমি কোনোদিন খাই নাই।’
– ‘আচ্ছা তুই এখানে বস আমি যাবো আর আসবো।’
– ‘আইচ্ছা’
.
অপুকে বেঞ্চিতে বসিয়ে আমি আরেকটি হোটেল থেকে রোল আর পানি কিনে এনে অপুর হাতে দিয়ে বললাম।
.
– ‘এই নে ধর।’
– ‘আপনে খাইবেন না?’
– ‘নাহ, তখন না আমি নাস্তা করলাম, তুই খা আমি তোর খাওয়া দেখি।’
.
অপু এতো তৃপ্তি করে খাচ্ছিলো, যেন সে অনেকদিন ধরে না খেয়ে আছে তাই সে এতো ক্ষুধার্ত। আমি অপলক দৃষ্টিতে অপুর খাওয়া দেখছিলাম। সৃষ্টিকর্তার নিয়ম বড় অদ্ভুত। কেউ না খেতে পেরে ডাস্টবিনে খাবার পেলে যায়। আর কেউ খাবার না পেয়ে ডাস্টবিন খেতে খাবার কুড়িয়ে খায়। আর কেউ সম্মানের তাগিদে ঐসব না করে কাজ করে খেটে জীবন বাঁচাতে চায়। অপুও তাদের মধ্যেই একজন।
.
– ‘অ ভাইজান আপনে কাঁদতাছেন ক্যান?’
.
অপুর ডাকে ভাবনার অবসান ঘটে। কখন যে চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরেছে বুঝতেই পারিনি। কথা ঘুরাতে অপুকে বললাম।
.
– ‘কই না তো? মনে হয় চোখে কিছু পড়ছে দেখ তো।’
– ‘কই দেহি, নাহ চোখে কিছু পড়ে নাই তো।’
– ‘আচ্ছা বাদ দে।’
– ‘ভাইজান আপনে না অনেক ভালো।’
অপুর কথায় একটু মুচকি হেসে বললাম,
– ‘কেন তোর এমনটা মনে হলো কেন?’
– ‘আমারে হোটেল থেকে এহানে এনে খাওন দিছেন এ জন্যে।’
– ‘তুই থাকিস কোথায়?’
– ‘ঐ যে, রাস্তার মাঝখানে একটা পুলিশ মুখে বাঁশি নিয়া দাঁড়াই থাকে ঐখান থেইকা অল্প একটু দূরে একটা বস্তিতে।’
– ‘কে কে আছো তোর?’
– ‘রহিমা খালা ছাড়া আমার আর কেউ নাই।’
– ‘আমাকে নিবি তোর সাথে।’
– ‘হ, নিমু’
– ‘আচ্ছা চল।’
.
অপু আমাকে নিয়ে ট্রাপিক মোড় পর্যন্ত গেলো তারপর ডানদিকে একটা রাস্তা ধরে আমরা চলে লাগলাম। একটু যাবার পর একটা চিকন গলি দিয়ে আমরা চলতে লাগলাম। গলি শেষ হলে আরেকটা গলির শুরু হয়। এভাবে পাঁচটা গলি পার হয়ে আমরা বস্তিতে প্রবেশ করলাম। আমি অপুকে বললাম,
.
– ‘কিরে বস্তিতে তো চলে আসলাম। তোদের ঘর কোনটা?’
– ‘এহান থেইকা আরেকটু গেলে প্রথম যে ঘরটা দেহা যাইবো, তার পরের দুইটা ঘর পার হলেই আমাগো ঘর দেহা যাইবো।’
.
অপুর কথানুযায়ী আমি চলতে লাগলাম। অপুদের বাড়ির কাছাকাছি আসতেই মানুষজনের ভীড় দেখতে পেলাম। অপুকে জিজ্ঞেস করলাম,
.
– ‘কিরে এখানে এতো মানুষ কেন?’
– ‘কইতে পারি না।’
.
ভীড়ের কয়েকজন লোক সরিয়ে ভেরতের দিকে যেতে লাগলাম। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি হয়েছে ভাই এখানে?’ লোকটি আমাকে বললো, ‘আর কইয়েন না ভাই, খুব ভালা মহিলা আছিলো রহিমা খালা। মেলা দিন অসুখে আছিলো, আইজকা হঠাৎ দেহি ঘরের বাইরে শুইয়া রইছে। ভাবছি ভিরতে গরম তাই হয়ত বাইরে আইয়া ঘুমায়। মেলা সময় ধরে উঠে না দেইখা জাগাইতে গেলাম। গিয়া দেহি চিরদিনের লাইগা ঘুমাই গেছে।’
.
আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অপু এটা শুনে সাথে সাথে ‘খালা গো, ও খালা’ বলে কাঁদতে শুরু করলো। আমি অপুকে কিছু বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। ছেলেটার আপন বলতে শুধু রহিমা খালাই ছিলো। আজকে তিনিও পৃথিবী ছেড়ে তাকে ছেড়ে চলে গেলো চিরদিনের জন্য। অপু কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বললো, ‘আমি এহন কার লগে থাকমু? আমি এহন কারে খালা কইয়া ডাকুম? আমার তো খালা ছাড়া আর কেউ নাই। খালা ক্যান আমারে ছাইড়া মইরা গেলো।’
.
অপুর কান্না আমার সহ্য হচ্ছিলো না তাই। ওর চোখ মুছে দিয়ে বললাম, ‘কে বলছে তোর আর কেউ নাই, আমি আছি না। আজকে থেকে তুই আমার সাথে থাকবি। আমাদের বাসায় থাকবি।’ অপু আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেললো। আমিও ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
.
রহিমা খালার দাফনকাজ শেষ করে অপুর জন্য কিছু জামাকাপড় কিনে আমরা বাসায় ফিরছিলাম। তখন পকেটে থাকা মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি সারাদিনে আমাকে অনেকবার স্মরণ করেছে। আসলে মোবাইল নয়, আফরিন স্মরণ করেছিলো। আফরিন আমার স্ত্রী, পারিবারিক ভাবেই আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের ৮ বছরেও আমাদের কোনো সন্তানাদি হয়নি। ডাক্তার কবিরাজ থেকে শুরু করে হুজুর মাওলানা পর্যন্ত গেলাম কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। যাইহোক সারাদিনে ৮৯টা মিসডকল, মিসডকল বললে ভুল হবে কলই করেছিলো। মোবাইল সাইলেন্ট থাকায় রিসিভ করা হয়নি। দেরি না করে আফরিনকে কল দিলাম। কল রিসিভ হওয়ার সাথে সাথে এফএম রেডিও শুরু হয়ে গেলো।
.
– ‘আরিফ কোথায় তুমি? সারাদিন কোথায় ছিলে তুমি? অফিসে কল করলাম তুমি নাকি আজকে অফিসেও যাওনি? সারাদিন কোথায় ছিলে তুমি? এখন কোথায় আছো তুমি? দুপুরে খেয়েছিলে? তুমি জানো সারাদিন আমি কতো টেনশনে ছিলাম?’
– ‘এতো গুলো প্রশ্নের জবাব ফোনে কিভাবেই দিই।’
– ‘এখন কোথায় তুমি বলো?’
– ‘এই তো বাসায় ফিরছি। এসেই বলি সব।’
– ‘ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসো।’
.
বাসায় ফিরে আফরিনকে সব খুলে বললাম। আফরিন শুনে সেও কেঁদে দিলো। চোখের জল আর নাকের জল মিশে একাকার হয়ে গেছে। আফরিনের কান্না থামাতে আফরিনকে বললাম। ‘আজকে থেকে অপু আমাদের সাথেই থাকবে।’ আফরিন কথা শুনে অবাক হয়ে। নাক চোখ মুখে আমাকে বললো,
.
– ‘সত্যি!!!’
– ‘হ্যাঁ সত্যি। ও আজকে থেকে আমাদের সাথেই থাকবে।’
– ‘তাহলে তো খুব ভালোই হবে।’
.
আফরিনের খুশি আমি যত বেশি খুশি হই। তা আমি অন্য কিছুতেই হই না। আফরিন যখন কষ্ট পায় তখন আমার কাছে পৃথিবীর সবকিছুই মূল্যহীন। আমার হাতে যদি কেউ চাঁদও এনে দেয়, সেই চাঁদের চেয়ে আমার কাছে আফরিনকে হাসিটাই বেশি মূল্যবান। অপুকে বললাম, ‘স্কুলে যাবি?’ অপু বললো, ‘হ্যাঁ যামু।’ তারপর আফরিনকে বললাম,
.
– ‘তোমার বান্ধবী রিতা না একটা স্কুলের টিচার ওরে বলো সে স্কুলে আমরা অপুকে ভর্তি করাবো।
– ‘আচ্ছা পরে বলবো।’
– ‘ঠিক আছে তুমি খাবার রেডি করো। খুব ক্ষুধা লেগেছে। আমরা ফ্রেশ হয়ে আসছি।’
– ‘ঠিক আছে।’
.
অপুও খুব খুশি। অপুর পাশাপাশি আফরিনও। আর আমার কথা কী বলবো। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে, বাস্তবে আমরা অপুর আসল মা-বাবা না হতে পারলেও তাকে মা-বাবার আদর দিয়ে বড় করতে পারবো।
.
বাস্তব জীবনে এমন হাজারও অপু আছে, যাদের অদ্ভুত এই পৃথিবীতে বিচিত্রময় জীবন কাটাতে হয়। যাদের রহিমা খালার মতোও কেউ থাকে না। সবার ভাগ্য এমন মানুষও মিলে না। যারা একটু আদর স্নেহ দিবে ভালোবাসা দিয়ে বুক টেনে নিবে। অপুদের রাস্তার ধারের ফুটপাত, রেলস্টেশনই বাসস্থান। ডাস্টবিনেরর পচা খাবারের ভিড়ে থাকা হালকা দুর্গন্ধময় খাবারগুলো হয় তাদের প্রতিদিনের অন্ন। যা খেয়েই জীবিকানির্বাহ করতে হয়। একজন সাধারণ মানুষের মতো সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে না তারা। কখনো বৃষ্টিতে ভিজে আবার কখনো সারাদিন প্রচণ্ড রোদে পুড়ে দিন কাটাতে হয়। শীতের সময় রাত কাটাতে হয় বস্ত্রহীন। অপুরা এমনি, তারা স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে পারে না। আমাদের সমাজ তাদের স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে দেয়ও না। সুবিধা বঞ্চিত অপুদের সবসময় নির্দয় ব্যক্তিদের অত্যাচার সহ্য করেই বেঁচে থাকতে হয় পৃথিবীতে।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প