এক গ্রামে এক বিধবা বৃদ্ধা বাস করতো , বৃদ্ধার সাথে থাকতো তার ছেলে আর ছেলের বউ, বৃদ্ধার পরিবারটি খুব গরীব ছিলো ,তার ছেলের পেশা ছিলো মাছ ধরা এবং সে ছিলো নিঃসন্তান । বৃদ্ধা চোখও একটু একটু করে নস্ট হয়ে যাচ্ছিলো । বৃদ্ধা মনে দুঃখের কোন শেষ ছিলোনা । তবে বৃদ্ধা ছিলো খুব ধার্মিক , সে নিয়মিত দেবতার কাছে প্রার্থনা করতো । একদিন দেবতা তার প্রার্থনায় সন্তুস্ট হয়ে , বৃদ্ধাকে দেখা দিলো ,এবং বললো “তুমি কি চাও ?তুমি আমার কাছে যেকোন একটি জিনিস চাইতে পারো ” , এই কথা শুনে বৃদ্ধা খুব খুশী হলো ,কিন্তু সে সিদ্ধান্ত নিতে পারলোনা যে সে কি চাইবে । সে দেবতার কাছে কিছুদিনের সময় চাইলো , এবং দেবতাও তাকে সময় দিলো ।
তারপর বৃদ্ধা অনেক ভাবতে লাগলো ,কি চাওয়া যায় । তখন বৃদ্ধা তার ছেলের সাথে পরামর্শ করলো , ছেলে বললো “জীবনে যদি বাবা না হতে পারি ,তাহলে আর এই জীবনের মূল্য কি ? মা ,তুমি দেবতার কাছে আমার জন্য সন্তান চাও ”।
তারপর বৃদ্ধা তার এক প্রতিবেশীর সাথে কথা বললো ,প্রতিবেশী বললো “তোমার ছেলের সন্তান হয়ে কি হবে , তোমরা নিজেরাই খেতে পারোনা ,সন্তান হলে তাকে কি খাওয়াবে? এর থেকে বরং তুমি অনেক টাকা পয়সা চাও ,যেটা দিয়ে ভালো একটা বাড়ি কিনতে পারবে , ভালোভাবে খেতে পারবে”
বৃদ্ধা এইসব কথা শোনার পর খুব চিন্তায় পড়ে গেলো , আবার ভাবলো সে তো এম্নিতেই অন্ধ হয়ে যাচ্ছে , সে যদি তার ছেলের ইচ্ছা পূরন করে বা অনেক টাকা পয়সা চায় ,কোনটাই সে তো দেখতে পারবেনা ।
তারপর বৃদ্ধা অনেক ভাবতে লাগলো ,কি চাওয়া যায় টাকা পয়সা , ছেলের জন্য সন্তান নাকি তার নিজের দৃষ্টিশক্তি । অবশেষে বৃদ্ধা একটা সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারলো । কিছুদিন পরে যখন দেবতা আবার আসলো এবং বৃদ্ধার ইচ্ছার কথা জানাতে বললো তখন বৃদ্ধা বললো “আমি যেন দূর থেকে দেখতে পাই ,আমার নাতনী একটা রাজ প্রাসাদে বসে সোনার চামচে দুধ খাচ্ছে”
এই কথা শুনে দেবতা হাসলেন ,এবং বললেন আচ্ছা আমি যেহেতু কথা দিয়েছি তাই তোমার তথাকথিত একটা ইচ্ছাই পূরণ করা হবে ।