অনন্যার প্রতিশোধ

অনন্যার প্রতিশোধ

অনন্যা আমার জীবনের সব থেকে বড় শত্রু কিভাবে ওকে হারাতে পারবো সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমার দিন চলে যায় কিন্তু তাকে হারাতে পারিনা কাল আমার ছোট বোন এর জন্মদিন মানে অনন্যার বেষ্টু এর জন্মা দিন যে করে হোক একটা ব্যবস্থা করতে হবে এসব ভাবছিলাম আমার রুমে বসে এমন সময় অনন্য এসে হাজির

:- ছাব্বির ভাইয়া একটা কথা বলার ছিল।

:- বলে কেটে পড়

:- আমার সাথে একটু মার্কেটে যাবে

:- এখন সময় নেয় ভাগ এখান থেকে।

:- তুমি আমার সাথে এমন করো কেন।

:- যাবি না লাথি খাবি

:- তুমি আমাকে লাথি মারবে।

:- বিশ্বাস না হলে কাছে আয় একটা দিয়ে দেখায় দিই। (আমার কথা শুনে অনন্য রাগে গজ গজ করতে করতে চলে গেল। কিন্তু ৫ মিনিট পরে আবার আসলো হাতে ওর প্রিয় কোকাকোলা সাউন্ড বক্স এটা দেখলে আমার গা জলে যায় একে বারে সারা দিন এটা আছে অনন্যার কাছে আর আমার রাক্ষসী বোনতো আছে তাল মিলানর জন্য মন চায় দুইটারে এক সাথে অভেনে পুরে সিদ্ধ করি তা আর হয়না আমার বোন অনেক মোটা আমার থেকে অনেক বেশি শক্তি অর গায়ে তাই ভয়তে কিছু করতে পারিনা অনন্যারর কথায় বাস্তবে আসলাম

:- ভাইয়া তুমিকি আমার সাথে মার্কেটে যাবেনা।

:- এক কথা বার বার বলতে ভালো লাগেনা।

:- ভাইয়া একটা গান শুনবে

:- ফ্রিতে হলে শুনবো না হলে নেয়। (অনন্যা কি একটা রেকর্ড চালু করলো হায় আল্লাহ এতো আমি আর আমার বন্ধু কথা বলছিলাম সেটার রেকর্ড আব্বুর পকেট কি ভাবে মারি সেরার বিবরন এ রেকর্ড এ আছে আমি অনন্যাকে বল্লাম

:- তুই এই রেকর্ড কোথায় পেলি।

:- সেটা তোমার না জানলেও চলবে আমার জানটুস এর এখন বার্গার খেতে মন চেয়েছে

:- সত্যি আমার কাছে টাকা নেয়।

:- চাচি আম্মা তুমি কোথায় ( মানে আমার আম্মুকে ডাকছে আমি অনন্যা কে থামিয়ে দিয় বল্লাম চুপ কর হারামি)

:- হা হা চলো ভাইয়া পেট ভজন টা সেরে আসি।( ৩০০ টাকা সকাল সকাল বাশঁ গেল আর বাজারে ২ ঘন্টা ধরে ওদের পিছন পিছন ঘুরা লাগলো।এসব অত্যাচার ভালো লাগেনা তাও আবার মেয়ে মানুষের কাছে তার পরে আবার ছোট দের কাছ থেকে এসব ভাবতেই নিজের গা দিয়ে গন্ধ বের হচ্ছে কাল দেখাবো আমি James Sabber কি জিনিশ। পরের দিন সন্ধায় মুটকির পয়দা দিবসের অনুষ্টান শুরু হলো তেমন কোন মেহমান আসেনি নিজেদের ভিতরে অনুষ্ঠানটা করছিতো তাই অল্প কিছু মেহমানকে দাওয়াত করা হয়েছে।আমি আমার পরিকল্পনা মতন সব কিছু রেডি রেখেছি ঐতো অনন্যা আসছে কেক এর দিকে কি সুন্দর করে হেলে দুলে হাটছে খুব মায়া হচ্ছে বেচারি এই এই পড়লো যা ঢপাস সোজা কেক এর উপরে পড়লো মেকআপ খরচ বাদে প্রলেপ সহ মেকআপ হা হা হা। কি ভাবে পড়লো আপনাদের বলি তাহলে শুনুন ধুর শুধু ভুল হয় লিখছি আপনারা পড়ুন। মাছ ধরার জন্য এক রকম পিলাস্টিক শুতা পাওয়া যায় সেটা গোল করে পেতে রেখেছিলাম অনন্যা আসলে শুতা ধরে চান দিলাম আর সে কেক এর সাথে বন্ধুত্ত করলো হাহা হাহা এতো আনন্দ আর কখনো পাইনি। কেক আর কাটা হলোনা কি করে কাটবে সেতো একা সব খেয়ে নিয়েছে এমনি খাবার সবায়কে দেওয়া হলো তবে অনন্যা আর আমার মুটকি বোনকে আর দেখলাম না হয়তো আমাকে কি ভাবে ফাসাবে সেটা নিয়ে ভাবছে মনে হয় ভাবুক আমাকে নিয়ে একটু ভাবুক। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমাতে গেলাম মাঝরাতে কারোর কান্নার শব্দে ঘুমটা ভেংগে গেল। মনে হচ্ছে আমার জানালার কাছে কেও কান্না করছে কিন্তু আমিতো তিন তলার উপরে রয়েছি এখানে একটা মেয়ে কি করে আসবে আর আমার জানালার কাছে এসে কেন কান্না করবে। আস্তে আস্তে জানালার কাছে গিয়ে কান পাতলাম হ্যা কে জেন আমার জানালার বাইরে কান্না করছে কান্নার আওয়াজটা কেমন কষ্টের কে কান্না করতে পারে এখানে দেখার জন্য জানালা খুল্লাম জানাল খুলার সাথে সাথে একটা কেমন অবাস্তব মানবী আমার সামনে এসে হা হা হা হা হা হা করে হেসে দিলো আমি এসব দেখে এতোটা ভয় পেয়েছি যে একটা চিল্লানি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়ে ছিলাম যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দেখি আমার পাশে আব্বু আম্মু আমার বোন অনন্যার আর অনন্যার আব্বু আম্মু ।

:- কি হয়েছিল যে এমন ভাবে চিল্লানি দিয়ে জ্ঞান হারালি।( আব্বু বল্ল)

:- একটা মেয়ে কান্নার আওয়াজ আসছি জানালা দিয়ে সেটা দেখার জন্য জানালা খুলি। জানালা খুলে দেখি ভুতের মতন দেখতে একটা মেয়ে আর কেমন কেমন করে হাসছিল।

:- হয়তো চোখের ভুল তোর।

:- না আমি ভালো করে দেখেছি।

:- আচ্ছা এখন ঘুমা আর রাতে জানাল খুলার দরকার নেয়।( আব্বু আম্মু আর অনন্যা এর আব্বু আম্মু চলে গেল কিন্তু হারামি দুইটা গেলনা অনন্যা বল্ল)

:- ভাইয়া তুমি ভুত দেখেছো।

:- দেখ ফাল্তু কথা বলবি না।

:- কেন তুমি তা হলে পেত্নি দেখছো। ( কথটা বলে হি হি করে হেসে দিল দুই জনে। ওদের হাসি দেখে আমার গা জলে যাচ্ছে মন চায়ছে দুটরে এখনি ওভেনে পুরি)

:- তোরা এখান থেকে যা আমি ঘুমাবো।

:- ভাইয়া ঐটা ভুত ছিলনা আমি ছিলাম ছাদে দড়ি বেধে ঝুলছিলা হা হা হা হা ( রাগে দিলাম এক ধমক দুইটাই পলালো আমার রুম থেকে। আমার সাথে এতো বড় বেইমানি আমার সাথে। আর আমি ছি ছি ধোকা খেলাম এতো তুকু একটা পিচ্চি মেয়ের কাছে এর একটা বিহিত করতে হবে এবার এমন শিক্ষা দেবো সারা জীবন মনে রাখবে। আস্তে আস্তে আমার ঘর থেকে বের হয়ে রান্না ঘরে গিয়ে মাংসের ঝোল নিয়ে অনন্যার জুতা আর স্কুল ড্রেস এর পিছনে লাগিয়ে দিলাম নাঘুমিয়ে সকালের অপেক্ষা করতে লাগলাম দেখাবো মজা কারে বলে। ভর বেলা অনন্যার চিল্লা চিল্লি শুনলাম আজ নাকি ওকে স্কুলে যেতে হবে কিন্তু ড্রেস কে ময়লা করে রেখেছে তাই নিয়ে চিল্লা চিল্লি হচ্ছে। চিল্লানিতে মন না দিয়ে কোন রকম নাস্তা না করে যে পথ দিয়ে অনন্যা আর মুটকি যায় সে পথের ডাস্টবিন এর ওখানে দাড়ালাম হ্যা দুটো আসছে আর আমি কি করবো কুত্তা দের খেপিয়ে দিলাম অনন্যা কুত্তা দেখে দোড় দিলো আর কুত্তা অনন্যাকে কামুড় দিল হা হা হা হা মাংসের ঝোল নিয়ে ঘুরে বেড়াবা আর কুত্তা কিছু বলবে না তা হবে নাতো। এবার বুঝবা সুচ ফুটালে কেমন লাগে।

মুটকিটা আমারে গাদা খানিক গালা গাল দিয়ে অনন্যা কে নিয়ে চলে গেল আর আমি হোটেল থেকে ভালো মন্দ খেয়ে বাসায় গেলাম যাহ বাবা কেও নেয় বাসায় সব কোথায় গেল ও মনে পড়েছে চুন্নিটারে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছে আমি এখন বাসার রাজা ফ্রিজে যা খাবার ছিল গপ গপ করে খেতে লাগলাম অল্পতে কেমন পেট ভরে গেল এই একটা সমস্যা যেদিন বেশি খাবার থাকবে সেদিন অল্পতে পেট ভরে যাবে। খাওয়া শেষে কম্পিউটার টা নিয়ে বসলাম সয়াবিন তেল ছাড়া তরকারি যেমন গেম ছাড়া আমি তেমন। কিছু সময় পরে অনন্যা কে নিয়ে বাসায় আসলো সবায় এসে আমাকে বকে যাচ্ছো কিন্তু আমার কানে হেড ফোন পুরা কিছু শুনতে পাইনি কে কি বল্ল। গেম খেলা শেষে হেতারে একটু দেখতে গেলাম সে সুয়ে আছে আর মুটকিটা কি যেন খাচ্ছে আমি ঘরে ঢুকার সাথে মুটকিটা বল্ল

:- তোর এমনটা করা উচিত হয়নি মেয়েটার অবস্থাটা একটু দেখ।

:- দেখতে পাচ্ছিতো সুয়ে সুয়ে গান শুনছে

:- ডক্টর বলেছে ৬ টা ইন্জেকশন ফোটাতে হবে। আর কতো টাকা খরচ হয়েছে জানিস।

:- না বল কয় টাকা।

:-১২ হাজার টাকা

:- মাত্র এটা কোন টাকা হলো।

:- তুই জানিস আমার পনের দিনের খাবার খরচ থেকে আম্মু টাকা খরচ করেছে এখন আমি কি খাবো।

:- চুপ থাক মুটকির মুটকি খাওয়ার নাম নিলে তোর জীব আমি কেটে ফেলবো।

আমার কথায় মুটকিটা চুপ হয়ে গেল কিন্তু অনন্যা গেজাতে শুরু করলো

:- ছাব্বির আমি তোরে দেখে নেব।

:- কানসা ভাংগা লাথি মারবো আমি তোর বড়ো সম্মান দিয়ে কথা বল।

:- কিসের বড় সব বাদ শুধু বদলা হবে।

অনন্যার কথা শুনতে আর ভালো লাগছিলো না তাই চলে আসলাম আমার জানে জিগার কম্পিউটার এর কাছে সুধু এই একজন আমাকে বুঝলো আর কেও বুঝতে পারলো না। অনন্যা আর কিছু বলেনি উল্ট আমার সাথে আরো ভালো ব্যবাহার করছে মনে হয় বুঝতে পেরেছে আমাকে শাস্তি দিতে গেলে তাদেরও শাস্তি পেতে হবে হা হা হা হা হা। বন্ধু দের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় ঢুকলাম অমনি আব্বু উরা ধুরা কেলাতে লাগলো আমি নাকি ইয়াবা খায় প্রেম করি সিগারেট খায় কি মিথ্যা কথা আমিতো এসব কখনো করিনা আব্বু অনন্যার কথা বিশ্বাস করলো। ভিম কেলানি খেলাম সারা গা বেথা মারা শেষে আবার বাড়ি থেকে বের করে দিলো। বাড়ি থেকে যদি বের করে দাও তা হলে কেলানি দেওয়ার কি দরকার সোজা বল্লে হতে চলেযা চলে আসতাম এখন গা যেমন ব্যাথা করছে দাড়াতে পারছি না এতো রাতে কোথায় যাবো পেটের মধ্যে মৌমাছি ভৌ ভৌ করছে খুদার ঠেলা সামলাতে না পেরে। আর আব্বু আমাকে এতো অপমান করলো অনন্যার কথা শুনে না আর বাড়ি যাবোনা চলে যাবো বহু দুর যেখানে মানুষ থাকেনা থুক্কু শয়তান থাকেনা। সোজা কাউন্টারে গিয়ে চুরি করে বাসের ছাদে উঠে যশোহরে চলে আসলাম এখানে এসে একটা কলেজে ভর্তি হয়ে পড়ালিখা করতে লাগলাম।

আজ সাত বছর বাসা থেকে চলে এসেছি কারোর সাথে কোন যোগাযোগ করিনি কাল আমার মাস্টার্স এর রিজাল্ট তাই কাল বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেব। এখন বাজে সকাল ৯ টা আমি আমার বাসার সামনে দাড়িয়ে আছি বাসাটা অনেক বদলে গিয়েছে। কাল মনে হয় বাসায় অনুষ্ঠান ছিলো কিছু লোক অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে বলে মালামাল গাড়িতে ভর্তি করছে নিয়ে যাবে মালামাল গুলা সে জন্য। আমি বাসার দিকে পা বাড়ালাম বাসার মধ্যে গিয়ে কলিং বেল বাজালাম মা দরজা খুল্ল আমাকে দেখে জরে চিল্লানি দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো সাথে সাথে আব্বু আম্মু অনন্যা সাথে ওর আব্বু আম্মুও আসলো সাথে আর একটা ছেলে আসলো। এতো বছর পরেও কারোর চেহারা আমি ভুলিনি তার মানে আমি গোয়েন্দা হতে পারবো হা হা হা। আব্বুও আমাকে ধরে কান্না করে দিলেন এক মাত্র ছেলে এতো বছর পরে বাসায় এসেছো খুশিতে চোখো পানি চলে আসার কথা।

সবায় বসে গল্প করছি তখন অনন্যার আম্মু বল্ল এক দিন আগে আসতে পারলে না কাল তোমার বোনোর বিয়ে ছিলো বাহ ভালো মনে মনে শান্তি পেলাম আপদ বিদায় হয়েছে । অনন্যার আম্মু আবার বল্ল জানো আমাদের অনন্যা প্রেম করে বিয়ে করেছে আজ এক বছর হলো অনন্যা বিয়ে করেছে ।

শুনে খুব খুশি হলাম ঝামেলা মুক্তো ভাবে এবার থাকতে পারবো কিন্তু আমাকে কেলানি খাওয়ালো তার শোধ তুলতে হবে যে এখন শুধু সুজকের অপেক্ষার পালা

………………………………………  সমাপ্ত ………………………………….

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত