“একটাও ফুল ফুটলো না, অথচ তুমি বললে বসন্ত এসেছে– জাপানে এখন সেই অবস্থা।” এখন এখানে ফেব্রুয়ারীর কনকনে ঠান্ডা। যখন তখন এ শহর শ্বেত শুভ্র রূপ ধরতে পারে, হিমেল বাতাসে তারই বার্তা। গাছ গুলো এখনও নিরাবরণ। ফুলেরা এখনও ফোটেনি এখানে। অথচ বসন্ত চলে এসেছে প্রায়।
প্রতিদিন মিলা, দূরদর্শনে বাংলাদেশ দেখে। দেখে বাংলাদেশের বসন্তের সাজ সাজ রব। পড়ে বই মেলার খবর। অপেক্ষা করে বসন্ত উৎসবের। মনের মধ্যে মিলার কেমন যেন করে, সময়টাই বুঝি খারাপ। কি যেন নেই- কি যেন নেই একটা ভাব। রবীন্দ্রনাথ যখন তখন ভর করে,”বনে যদি ফুটলো কুসুম, নেই কেন সেই পাখি–“।
হঠাৎ হঠাৎ এই দূর প্রবাসের এক ঘেঁয়ে দিন রাত্রির কোন মানে খুঁজে পায়না সে। জীবনের ২৮ বসন্ত তার বৃথাই মনে হচ্ছে। বসন্ত এলে কি মানুষের মন বেশী উচাটন হয়? এই যেমন, আজকের সকালটা। কেমন জানি অন্যরকম মনে হচ্ছে। অথচ চারিদিকে কোন ব্যত্যয় ঘটেনি। সূর্য রোজকার মত উঠেছে। ঠান্ডা চারিদিক জমিয়ে রেখেছে। কিন্তু মিলার মনের কাননে বোধ হয় কিছু একটা ঘটছে। ন্যাড়া গাছ গুলোকেও বড্ড আপন মনে হচ্ছে। পায়ে হাঁটা পথটাকে রোমান্টিক মনে হচ্ছে। ধুত্যের! বলে এসব সাত প্যাঁচালী রেখে, মিলা রওনা হলো ইউনিভার্সিটিতে।
ল্যাবে ঢুকতেই এমি ফাজিল টা কল কল করে এগিয়ে এলো। ওরা কয়েকজন একই ল্যাবে কাজ করে। মিলার এম্নি আজ মন উচাটন-তাতে এমির সাথে জাপানিজে ভজর ভজর করতে একটুও ইচ্ছা করছিল না। ইয়ামামতো এমির ভাষ্য হল, আজ সে মিলার সাথে লাঞ্চ করবে। মিলার মেজাজ খারাপ হয়। লাঞ্চ করবি তো লাঞ্চের সময় বল! সক্কাল বেলা বলার তো দরকার নেই। হঠাৎ কি মনে হয়ে মিলা ঘড়ি দেখে। না খুব একটা সকাল নেই আসলে। বেলা ১১ টা বাজে। গত কিছু দিন ধরে মিলার এমনই হচ্ছে, কিচ্ছু মিলছে না।
কেবল একটু কাজে মন বসিয়েছে, অম্নি ছটফটে এমি আবার কোথা থেকে উদয় হয়ে বল্লো, “তোমাকে একটা কথা বলতে চাই, কিছু মনে করবে না তো?” দাঁতে দাঁত চেপে একটু হাসার চেষ্টা করলো মিলা। হাসিটা ঠিক ফুটলো না, ভেংচির মতো দেখালো– না না কিছু মনে করবো না। বলো। “ইচিমুরা যদি আমাদের সাথে লাঞ্চ করে, তোমার কি কোন আপত্তি আছে?” যেমন নাম, তেম্নি এইটা একটা আস্ত গাধা। উফ! রাগে মিলার মাথা ধরার অবস্থা, কিন্তু প্রকাশ করে না।
এই ইচিমুরা আর এমি দুইজন বেস্ট ফ্রেন্ড। এরা একই সাথে জুনিয়র হাই, সিনিয়র হাই স্কুলে পড়েছে, এখন আবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। তাও আবার একই ল্যাবে। কপাল আর আর কাকে বলে! মিলা এটাকে দুই চোখ দেখতে পারে না। গত একবছর ধরে এটার একটাই কাজ মিলার পেছনে ঘুর ঘুর করা। ল্যাবে হয়তো মিলার কিছু একটা দরকার, এদিক ওদিক মাথা ঘোরালেই- এই ইচিমুরা কেনতারো কোথাথেকে যেন দৌড়ে আসে। কথা কম বলে, কিন্তু প্রায় অতি আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চায়। একদিন এসে আমতা আমতা করে বল্লো, জানো আমি বাংলাদেশ নিয়ে ইন্টারনেটে অনেক পড়াশুনা করছি।
“মেজাজ টা কেমন লাগে!” আবার একদিন খুব চকচকে চোখে বল্লো, তুমি ত্যাগোরের নাম শুনেছ? মিলা হাসবে না কাঁদবে সেদিন বুঝতে পারেনি। রাগের চোটে মিলা একদিন এমিকে ধরে। আচ্ছা ইচিমুরার সমস্যাটা কি? বলো তো। আমার পেছনে এরকম লেগে থাকে কেন? যেখানেই যাই ওকে দেখি। আমাকে ফলো করে নাকি?
এমি চোখে মিনতি ঝরিয়ে বল্লো, প্লীজ ওর উপর রাগ করো না। ও খুবই ভালো ছেলে। আমরা যখন হাই স্কুলে ছিলাম। তখন আমাদের এক বন্ধুকে ইচিমুরা ভীষন ভালোবাসতো। তা সেই বন্ধু একদিন সুইসাইড করে বসলো। আমি মনে মনে আঁতকে উঠি। ইচিমুরার জন্য? কি করেছিল?
এমি আমার চেয়ে দ্বিগুন আঁতকে উঠে বলে, না না ওটা অন্য ব্যাপার। তোমাকে আরেকদিন বলবো। আসলে আমার সেই বান্ধবী বুলিং এর শিকার হয়েছিল। মিলার রাগ হয়- তার সাথে আমার পেছনে ঘুর ঘুর করার রহস্য কি? এমি করুণ গলায় বল্লো- তুমি দেখতে খানিকটা আমার ঐ মৃত বান্ধবীর মত। মিলার মরে যেতে ইচ্ছে করে। শেষ কালে তার চেহারা চোখ ছোট, নাক বোঁচা জাপানিজদের মত হয়ে গেল?
দেশে কত ছেলে, কত রোমান্টিক চিঠি লিখেছে– “চুল তার কবে কার ——, চোখ তার শ্রাবস্তির কারূকাজ” / কেউ বলেছে নাটোরের বনলতা সেন। কেউ তাকে চোখ ছোট বলেনি। কত ছেলে যে, কত বন্দনা করেছে– মিলা কাউকেই পাত্তা দেয়নি।২৭ বসন্ত বড্ড সামলে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত তার কপালে জুটলো এই— মৃত মানুষের সাথে তুলনা!
আজ আবার এইটার সাথে লাঞ্চ?! মিলা মনে মনে কপাল চাপড়ায়। আর কেষ্ঠ হাসি হেসে বলে- না না ঠিক আছে। ও ওর পয়সায় লাঞ্চ করবে, তাতে আমার কি? ইউনিভার্সিটির ক্যাফেটেরিয়া তো আর আমার বাপের সম্পত্তি নয়— বাড়তি কথাটুকু বলতে চায় কিন্তু পারে না। এই সব বিন্যাসিত বাক্যের জাপানিজ রূপ দিতে মিলাকে সত্যিকারের নাক বোঁচা, চোখ ছোট হয়ে আরেকাবার জন্মাতে হবে। কুকুরে কামড়ালে যেমন জলাতংক হয়, তেমনি জাপানে আসলে জাপানিজতংক হয় না, এরকম বাঙ্গালী খুঁজে পাওয়া ভার।
দেখতে দেখতেই লাঞ্চের সময় হয়ে গেল। ঘড়িতে ১ টা দেখে, চেয়ার ছাড়ে মিলা। সাথে দুই জাপানিজ। ক্যাফেতে যেতে যেতে মিলা ভাবে, ১৩ ই ফেব্রুয়ারী এই দিনটাতে এরকম কুফা না লাগলেও তো পারতো! এখন থেকে ১৩ নাম্বারে সাবধান থাকবে সে। এই দিনটাতে রোমান্টিক কি কিছুই ঘটতে পারতো না?
মিলা আনমনা হয়, ভাবে হয়তো গিয়ে মেইল বক্স চেক করে এক বাক্স চকোলেট পাবে। নয়তো নীল খামে কোন চিঠি। কিম্বা অচেনা কেউ হয়তো তাকে ফোন করবে। অকারণে মিলার আজ খুব রোমান্টিক হতে ইচ্ছা করে। অথচ ভালো করেই জানে, এসব কিছুই ঘটবে না। খেতে বসে, এমি কল কল করে। জান, তোমার জন্য একটা গুড নিউজ আছে।
বলো? মিলা খুব একটা আগ্রহ দেখায় না। মুখোমুখি চেয়ারে বসে, ইচিমুরা চুপচাপ খায়। এমি বলে, ইচিমুরা গত ১৫ দিন আগে মুসলিম হয়েছে। ওয়াও! এর বদলে মিলার কণ্ঠ থেকে উফ! শব্দ টা বেরিয়ে আসে। এই আরেক ভন্ডামি। যাদের কোন ধর্মই নেই– জন্ম থেকে বেড়ে ওঠে ধর্ম ছাড়া। বিয়ে করে ক্রিশ্চিয়ান রীতিতে, মরে আবার বৌদ্ধ হয়ে। এ আবার আরেক কাঠি সরেস। মাঝখান থেকে মুসলিম—-
কিছু না বল্লেই নয়, তাই মিলা ভদ্রতা সূচক প্রশ্ন করে। কেন? হঠাৎ এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিল কেন? এমি এক চোখ টেপে। তুমি সত্যি বুঝতে পারছ না? মিলা সত্যি বুঝতে চায় না। ওর মন পড়ে রয় দূরে কোথাও, অন্য কোন খানে। এমি আবার বলে, জান- ইচিমুরা গত পাঁচমাস অনেক কষ্ট করেছে। সারাদিন ল্যাব করেছে আর ভোর রাত পর্যন্ত পার্ট টাইম জব করেছে।
মিলা ছোট খাটো বিষম খায়, কেন? রসিক এমি হাসে, কিছু বলে না। মিলার রাগ লাগে, তার সামনে ইচিমুরা মুখ ভোঁতা করে বসে আছে– একটা কথাও বলছে না। মিলা ইচিমুরাকে উদ্দেশ্য করে বলে, এই জন্য তুমি ল্যাবে প্রায় প্রায় ঘুমিয়ে পড়তে? ইচিমুরা লাজুক হাসি হাসে।
মিলার দয়া হয়, বলে- এমি এত কথা বলছে, তুমি একটা কথা বলো? ইচিমুরা খুব নরম গলায় বিভ্রান্ত ভঙ্গিতে বলে, তুমি আমাকে কাল একটু সময় দিতে পারবে? কাল মানে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী? মানে ভ্যালেন্টাইন’স ডে?
কেন বলো তো? কালকের টা কালকে বলি, ইচিমুরার কৌশলী উত্তর শুনে মিলা একটু থমকে যায়। হিসাবী মিলা, হঠাৎ বেহিসেবী হয়। ইচিমুরাকে সময় দেয়। কোথায় দেখা হবে?
ইচিমুরা পকেট থেকে, একটা ম্যাপ বের করে মিলার হাতে দেয়। এমি যাবে না। এমি একটু কেশে বলে, না আমার কাল একটা জরুরী কাজ আছে। রুমে ফিরে মিলা বেশ একটু ভাবনায় পড়ে যায়। মনের কোণে একটা আশংকা জন্ম নেয়— ছেলেটা আবার তার প্রেমে পড়েনি তো? আর পড়লেই কি? না বলতে মিলার মত পারদর্শী আর কেউ নেই।
মিলা প্রস্তুতি নেয়, দু চার কথা ওকে শুনিয়ে দিতেই হবে। পুরোনো কষ্ট টা আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে— অনেক ‘না’এর ভিড়ে কোন এক বসন্তে মিলা একজনকে জানিয়েছিল, ভালবাসি ভালবাসি—- কিন্তু সেবার তার ভালবাসা জলে স্থলে কোথাও ঠাঁই পায়নি। মিলার কান্না গান হয়ে বেজেছিল-“আমার ডাকে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝিরি ঝিরি/ তোমার কানে পৌঁছে না তাই, খালি হাতে ফিরি।
মিলা ফিরেছিল খালি হাতে। নিঃসঙ্গ। এক ফাগুনের সমস্ত আগুন বুকের মধ্যে সঙ্গোপনে ধারণ করে। আজ অতীত বর্তমানের অদ্ভূত এক গোপন অসুখ নিয়ে মিলা সারা রাত পার করে। আবার সে একই ভুল করতে নারাজ। পর দিন বিকেল বেলা একটু সময় নিয়ে সাজে মিলা। কোন কারণ নেই তবুও।
কালো জিন্সের সাথে সবুজ জমিনে, কালো কাজের একটা ফতুয়া পরে। ঝলমলে রোদ হওয়াতে, আর বাতাসের চোখ রাঙ্গানি নেই দেখে হাল্কা মানানসই একটা কালো জ্যাকেট পরে নেয়। গলায় কালো স্কার্ফ। কপালে সবুজ টিপ দিয়ে তারপর চোখটা আঁকে। যেন কোন গোপন অভিসারে যাচ্ছে। অকারণ এই সজ্জায় কি একটু লজ্জা ছিল?
মনে হয় না, মিলার একটুও লজ্জা লাগেনা। এসব দেশে সজ্জা’র প্রথম শর্ত প্রেমিকের মন ভোলানো নয়– এরা সাজে নিজেকে পরিপাটি রাখতে। এটা নাকি মানসিক সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। যথা সময়ে মিলা হাজির হয়। ইচিমুরা একটা সিঁড়িতে উদাস ভঙ্গিতে বসে আছে।
মিলা এগিয়ে যায়। ওরা হাঁটে, কথা বলে। চায়নীজ একটা রেস্টুরেন্টে ডিনার সারে। ধোঁয়া ওঠা কর্ন স্যুপ, স্কুইডের দারুণ একটা প্রিপারেশন, সাথে ফ্রেশ ফ্রুটস, চীজ ও চিংড়ি দিয়ে জম্পেশ সালাদ, সুষি, মিক্সড ভেজিটেবল রাইস, আদার তৈরী মেরুন রঙ্গের সুস্বাদু একটা আচার এবং চকোলেট কেক আর আইসক্রীম ছিল ওদের মেন্যুতে।
ডিনার সেরে ইচিমুরা ওকে একটা কনসার্ট এ নিয়ে যায়। বাদ্য যন্ত্রটিকে বলে স্ট্রিং গ্রাফ। চার দিকে চারটা বাঁশ পুঁতে তাতে বাঁধা টানা সুতোর সাথে কাগজের কাপের মালা গেঁথে তিন চার জন সাদা পোশাকের পরীর মত মেয়ে বাজায়, মন মাতানো বাজনা। কখনও সমুদ্রের গর্জন। কখনও করুণ সুর। সে এক অপার্থিব দৃশ্য। খুব উপভোগ করে মিলা।
কনসার্ট শেষ করে, মিলা ঘরে ফেরার তাগিদ দেয়। ঘড়িতে তখন রাত ন’টা। এবার ইচিমুরা মিলাকে বলে, তোমাকে একটা কথা বলতে চাই। বলো, মিলা অপেক্ষা করে। টুকটাক আনুষাঙ্গিকতা সেরে হঠাৎ খোলা আকাশের নীচে হাঁটু মুড়ে নাটকীয় কায়দায় মিলাকে ভড়কে দিয়ে, ইচিমুরা বলে ওঠে “উইল ইউ ম্যারী মি?”
ইচিমুরার গলা পরিস্কার। কোথাও কোন জড়তা নেই। সরাসরি মিলার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। মিলা কোন কথা খুঁজে পায় না। সে স্থাণুর মত দাঁড়িয়ে থাকে। এরপর ইচিমুরা দাঁড়িয়ে চমৎকার একটা জমকালো প্যাকেট মিলার হাতে ধরিয়ে দিয়ে, কোন কথা না বলে বিদায় নেয়।
শূন্য মাথায় কেমন ফাঁকা একটা বোধ নিয়ে, মিলাও একা একা বাড়ি ফেরে। ঘরে এসে গিফটের প্যাকেট টা খোলে। এত সুন্দর উপহার সে জীবনে কখনই পায়নি। পাহাড়ি ফুলের নক্সায় একটা কিমোনো। ছোট্ট জরির বাক্সে একটা ফিঙ্গার রিং। ও মা! কি সুন্দর। একটা এমারেল্ড কে ঘিরে আছে দুটো ডায়মন্ড। মিলার ধারণা, এই আংটি দেশী টাকায় লাখের ঘর ছাড়িয়ে যাবে। এজন্যই কি ইচিমুরা রাত জেগে কাজ করেছে? মিলা এবার সত্যি অবাক হয়।
সাথে একটা মিনি ডিস্ক। সেটাকে চালু করতেই ব্রায়ান এ্যাডামস গেয়ে উঠলেন, হোয়েন ইউ লাভ সামওয়ান—— সাথে কয়েক লাইনের সহজ ইংরেজীতে একটা চিঠি। “যদি তুমি রাজী থাকো মেয়ে, তাহলে কাল তুমি আমার দেয়া রিং টা তোমার আঙ্গুলে পরে আসবে।”
মিলা কাল কি করবে জানে না। আনন্দ উত্তেজনায় আজই সে রিং টা যত্ন করে, আঙ্গুলে পরে নেয়। তারপর একটা কাগজ টেনে নিয়ে, ইংরেজী এলফাবেটস গুলোকে বাংলায় সাজিয়ে লিখে ‘ভালবাসি ভালবাসি—- এই কথাটি—– ‘এবার মিলা কিছুতেই নিঃসঙ্গ ফাগুনের আগুন বুকে নিয়ে একা ঘুরবে না। সে তার সুরক্ষিত বসন্তের ভার অন্য কাউকে দিতে চায়।
তাকে আর একা পথ চলতে হবে না। তার হাত ধরে থাকবে, ভালোবাসায় উষ্ণ ব্যাকুল একটি হাত। হোক না সে ভিন্ন ভাষী। চোখ ছোট নাক বোঁচা। মিলা ভাবে, এমন করে ভালো ক’জন বাসতে পারে। যে ছেলেটা গত এক বছর ধরে তার জন্য নিজেকে তৈরী করেছে। অপেক্ষা করেছে। তার অবহেলা সহ্য করেছে। তারপরও তাকে সামনে রেখে ভালোবাসার স্বপ্ন বুনেছে, তাকে মিলা ফেরাবে কেমন করে?
আজ রাতে মিলা ইচিমুরার গাধা টাইপের মুখটা কিছুতেই মনে করতে পারছে না। মিলার কোন হিসাবই আজ মিলছে না। মিলার সামনে এখন দীর্ঘ ঠান্ডা রাত, কখন শেষ হবে? মিলার সময় যেতে চায় না। রাত জেগে সে একটি সুন্দর সকালের অপেক্ষা করে।
………………………………………….(সমাপ্ত)…………………………………