৭/১২/১৯৬৯
এই জীবনে আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই । আমার ছোট্ট খোকা আজকে আমাকে ‘মা’ বলে ডেকেছে । কী যে মধুর, কী যে স্বর্গীয় এক অনুভূতি . . ।
এদিকে ওর আব্বু মুখ কালো করে বসে আছে ; খোকা কেন প্রথমে ‘আব্বু’ বলে ডাকলো না । হা হা হা . . . . ।
– –
১৬/১২/১৯৭১
আজকে আমার খোকা একটা স্বাধীন দেশ পেয়েছে । তবে তার বিনিময়ে খোকা তার আব্বুকে হারিয়ে ফেলেছে । এই যে একটু আগে উপরের লাইনে ‘স্বাধীন’ শব্দটা লিখলাম, মাত্রই সেখানে দু’ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল আমার বাঁ’গাল বেয়ে । জানি না কেন ঠিক ঐ শব্দটাকেই বেছে নিতে হল ।
ক্লান্ত সূর্যটা একটু আগেই ঘুমিয়ে পড়েছে বাঁশঝাড়ের ওপারে । চারদিকে কেমন অন্ধকার নেমেছে । খুব ভয় করছে আমার । জানি, এই রাত সহজে ফুরাবে না ।
– –
৩/৪/১৯৭২
খোকার দাদার বাড়িতে আমার জায়গা হলো না । তাদের ছেলে নেই, তাই আমারও ঐ বাড়িতে থাকার অধিকার নেই । দেশ স্বাধীন হল, আর আমি হয়ে গেলাম পরাধীন, রিফিউজি । নিজের স্বামীর বাড়িতেই আমার ঠাঁই হলো না । লোকটা নিজেতো গেলোই, আমাকেও মেরে গেলো । আচ্ছা, এটাই বুঝি স্বাধীনতা?
স্বাধীনতা এমন কেন?
খোকার দাদা-দাদী অবশ্য খোকাকে রেখে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি রাজী হইনি । আমার খোকা আমার বুকে থাকবে, অন্য কোথাও না ।
– –
১০/১২/১৯৭৪
ইদানিং মা-বাবা আমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য ওঠে-পড়ে লেগেছেন । আর আমার বড় দুই ভাবীতো পারলে এখনি আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় । জীবনে কখনো বাবার চোখে তাকিয়ে কথা বলিনি । কিন্তু কাল বাবার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছি ।
‘আপনি আমার বাবা; এটা ভাবতে আমার কষ্ট হয়! কি করে সন্তানের সামনে তার মা’কে আবার বিয়ে দেয়ার কথা বলেন? আমার জায়গায় যদি আজকে আপনার মা থাকতো, তাহলে ছয় বছর বয়সী আপনার কাছে কেমন লাগতো তখন? আপনার ঐ ছোট্ট বুকটা কি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেত না?’
‘মা . . রে আমাকে মাফ করে দেয় । তুইতো আমার মা-ই । বিয়ের কথা আমি আর কখনো মুখেও আনবো না ।’
বাবা আমাকে বুকে নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন ।
– –
১৫/১২/১৯৭৪
একটু আগে বাবা আমার জন্য একটা সেলাই মেশিন নিয়ে এসেছেন । কী বলে যে বাবাকে ধন্যবাদ দেবো । এখন থেকে আর ভাবীদের কটুকথা শুনতে হবে না । নিজের ব্যবস্থা নিজেই করতে পারবো ।
– –
৫/৪/১৯৮০
খোকার বারো বছর পূর্ণ হল আজ । ক’দিন থেকে একটা সাইকেলের বায়না ধরেছে । কিন্তু এত টাকা আমি কোথায় পাবো? এদিকে সে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে । বাধ্য হয়ে ওর বাবার দেয়া নাকফুলটা বিক্রি করে দিলাম । ওটা ছিল আমাকে দেয়া ওর বাবার সবচেয়ে দামি উপহার ।
না, ভুল বললাম । আমার খোকাই যে আমার সবচেয়ে দামি উপহার ।
– –
১৪/৮/১৯৮২
চারদিন যাবৎ ছেলেটার প্রচণ্ড জ্বর, খোদার অশেষ রহমতে এখন কিছুটা ভালোর দিকে । এই চারদিনে চোখে একফোঁটাও ঘুম নেই আমার । খালি ভয় হয় । অজানা এক ভয়, খোকাকে হারিয়ে ফেলার ভয় । আমার কেন যেন মনে হয়, আমি চোখ দুটো বন্ধ করলেই খোকা আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে ।
– –
৩০ /৬/ ১৯৮৬
স্ট্যান্ড করেছে! আমার খোকা মেট্রিকে ষ্ট্যান্ড করেছে! ঢাকা বোর্ডে নবম হয়েছে আমার খোকা! হে আল্লাহ্, তুমি আমার দোয়া কবুল করেছো . . . আমার ৬টা নফল রোজা, আমার জীবনের সমস্ত ইবাদত তোমার দরবারে পৌঁছেছে দয়াময় । হাজার শুকরিয়া মালিক ।
– –
২/৭/১৯৯৬
আজকে হঠাত্ আয়নায় চোখ যেতেই আঁতকে উঠলাম । চুলগুলো সব সাদা হয়ে যাচ্ছে ।
সময় কি আর কম হয়েছে? আমার সেই ছোট্ট খোকা আজ কত বড় হয়ে গেছে ।
ক’দিন পরই খোকার মাস্টার্স শেষ হবে । মস্ত অফিসের মস্তবড় সাহেব হবে আমার খোকা । তারপর আমার ছুটি । সেলাই মেশিনটাকেও ছুটি দিয়ে দেবো । ইদানিং ওটাকে আমার আরেকটা সন্তান মনে হয় । মাঝে মাঝে হাত বুলিয়ে আদর করি, চুমু দেই । ২২টা বছর ধরে বেচারা অনেক খেটেছে আমাদের জন্য ।
– –
৫/১১/১৯৯৮
সপ্তাহ-খানেক পর আমার খোকার বিয়ে । খুশিতে আমার কান্না করতে ইচ্ছে করছে । আজ যে আমি কতটা খুশি সেটা নিজেও ঠিক বুঝতে পারছি না । সেই ছোট্ট খোকা কয়দিন পর তার খোকন সোনার বাবা হবে । কী-যে ভাল লাগছে আমার!
ওর আব্বু থাকলে হয়ত দুষ্টুমি করে বলত, ‘ বউ-ছেলের জন্য বাসর সাজানো হচ্ছে অথচ ছেলের বাপের দিকে কারো নজরই নাই!’
আর আমি ওর লম্বা নাকটা টেনে বলতাম, ‘ওরে আমার রসিক বুড়ারে . . ।’
লজ্জায় ওর লাল গাল দুটো আরো লাল হয়ে যেত । ব্যাপারটা যাতে আমি বুঝতে না পারি সেজন্য কথা ঘুরিয়ে অন্য প্রসংগে চলে যেত ।
– –
১০/১১/১৯৯৮
হে আল্লাহ, এ কোন পাপের সাজা তুমি আমাকে দিচ্ছ? খোকার বিয়েটা ভেংগে গেছে । এর জন্য নাকি আমিই দায়ী? যদি আমি দায়ী হই, তাহলে বলবো আমি একা নই . . . ১৯৭১ও দায়ী! ৩০ লক্ষ শহীদও দায়ী! এই স্বাধীনতাও দায়ী! এই পতাকাটাও দায়ী! এমনকি খোকার বাবাও দায়ী!
আমি না-কি ওদের সাথে প্রতারণা করেছি । আমার না-কি আগেই সবকিছু খুলে বলা উচিত্ ছিল ।
কী বলব আমি? কী বলব!
আমি একজন ধর্ষিতা! একাত্তরে হায়েনারা আমাকে ছিড়ে ছিড়ে খেয়েছে!
এসব শুনতে চাস তোরা? এই দেশ আমার সম্ভ্রমের মূল্যে কেনা, এই দেশ আমার । খোকার বাবা তাঁর শেষ রক্তবিন্দুর বিনিময়ে এই মাটি আমাকে দিয়ে গেছে । আমার দিকে আঙ্গুল তোলার আগে তোদের উচিত্ এদেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়া ।
– –
২০/৯/২০০০
আমার খোকা দিন দিন কেমন যেন বদলে যাচ্ছে । আমি বুঝতে পারছি, আমার সেই আগের খোকাটি আর নেই । সবাই বদলে গেছে, আমি কোনো দুঃখ পাইনি । কিন্তু খোকা কেন বদলাবে? কই . . . আমিতো বদলাইনি । না-কি আমারও বদলে যাওয়া উচিত্ ছিল অনেক আগেই?
খোকা এখন আর আগের মত আমার কাছে আসে না, এড়িয়ে চলে আমাকে । এই ভাঙাচোরা চশমাটা নিয়ে আর পারি না, পাওয়ারটা বাড়ানো খুব দরকার । কিন্তু খোকার সামনে যেতে কেমন যেন সংকোচ লাগে ইদানিং ।
ওর সংসার হয়েছে । কিছুদিন আগে বাবাও হয়েছে । ওর নিজেরই তো খরচের শেষ নেই ।
থাক, আমার চশমা লাগবে না । খোকাই-যে আমার চশমা, আমার দু’চোখের আলো ।
আমার চাওয়া একটাই, আমার খোকা ভালো থাক ।
– –
৪/১/২০০১
বিয়ের পর থেকেই বৌ’মা যন্ত্রণা দিচ্ছে, ইদানিং সেটা খুব বেড়েছে । আমার কারণে না-কি সমাজে ওরা মুখ দেখাতে পারে না । সবাই না-কি নানান প্রশ্ন করে । অথচ বিয়ের আগেই ওদেরকে সব খুলে বলা হয়েছিল । সব শুনেই ওরা রাজী হয়েছিল ।
নাতিটাকে যে একটু কোলে নিবো, সেই ভাগ্যটাও আমার নেই । খোকা সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে ।
মাঝেমাঝে খুব কান্না পায় । আমি বালিশে মুখ চেপে রাখি । ভয় হয় . . . যদি খোকার কোন অমঙ্গল হয় !
কিন্তু এই পোড়া চোখ দু’টো বড় ছেলেমানুষ, কোন কথাই যে শুনে না । আলো ফুরিয়েছে ঠিকই, জল যে আজও ফুরায়নি . . . ।
– –
৬/৮/২০০১
একটু আগেই খোকার কাছ থেকে জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি পেলাম । এত বড় পুরস্কার পাবার পর খুশিতে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে । খোকা আমাকে আজ ‘বুড়ি’ বলে ডেকেছে । বৌ’মার সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে খোকা বলে উঠলো , ‘বুড়িটা মরে না কেন!’
‘শুনেছ খোকার আব্বু? তোমার ছেলের কথা শুনেছ? আমি না-কি বুড়ি! আমাকে ‘মা’ বলতে তোমার ছেলের সংকোচ হয় আজকাল . . . তোমার ছেলে এখন আমার মরণ চায় , হা হা হা . . !
আমি কি এতই নগণ্য ? আমি কি এতই জঘন্য? কী ভেবেছ তুমি? এরপরও আমি তোমার সংসারে পড়ে থাকবো?’
দিনরাত আমি একাই কথা বলে যাই । মানুষটা কিচ্ছু বলে না, চুপচাপ তাকিয়ে থাকে কেবল । আমিও বোধহয় তাঁর চোখে বুড়ি হয়ে গেছি । সত্যিইতো . . . মানুষটার বয়স সেই ত্রিশেই আটকে আছে, সিঁথি করা চুলগুলো আজও কেমন চিকচিক করছে । সেদিন যদি আমিও মানুষটার সাথে চলে যেতে পারতাম, তাহলে আমাকে আজ কেউ ‘বুড়ি’ বলতে পারতো না ।
.
.
.
.
আতাউল গনি সাহেব শখের বশে গল্প লিখেন । যথেষ্টই ভালো লিখেন বলতে হবে । পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর গল্প ছাপা হয় । ইতোমধ্যে একক দু’টো বইও বের হয়েছে , দু’টোই প্রেমের উপন্যাস । এখন অবশ্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিছু একটা লেখার চেষ্টা করছেন । বইয়ের জন্য সম্ভাব্য বেশকিছু নামও সিলেক্ট করে ফেলেছেন । এর মধ্যে দু’টি নাম তার খুবই পছন্দের । একটি ‘আমার দেশ, আমার অহংকার’ এবং অন্যটি ‘মা ও মাটি ।’
কোন নামটা রাখবেন এটা নিয়ে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন ।
.
শেষ বিকেলের নরম আলোয় দখিনের বড়সড় খোলা বারান্দাটার এক কোণায় ইজিচেয়ারে বসে এতক্ষন বেশ মনোযোগ দিয়ে ডায়েরিটা পড়ছিলেন আতাউল গনি সাহেব । কেয়ারটেকার নূরু মিয়া এক টোকাই’র কাছ থেকে ওটা পাঁচ টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছিল । কোন এক ডাস্টবিনে না-কি পড়েছিল । সকালে ডায়েরিটা হাতে পেয়ে বেশ কিছুক্ষন উল্টে-পাল্টে দেখে গনি সাহেব যখন তার দিকে একটা কচকচে হাজার টাকার নোট বাড়িয়ে দিলেন, নূরু মিয়ার চেহারায় তখন এক মুহূর্তের জন্য সত্যিই নূরের ঝলক খেলে গিয়েছিল ।
নূরু মিয়ার ধারণা, তার বড় সাহেব লোকটা কিছুটা বেকুব ধরণের । সে প্রায়ই ফুটপাত থেকে অনেক দিনের পুরণো, ছেঁড়া, বাতিল বই-পুস্তক নিয়ে বড় সাহেবের কাছে হাজির হয় । আর বড় সাহেব প্রতিবারই তাঁর বেকুবির প্রমান দেন . . . কখনো একশ , কখনো দুইশ, কখনোবা পাঁচশ দিয়ে । এই ডায়েরিটার বিনিময়ে নুরু মিয়া বড়জোর একশই আশা করেছিল । সেখানে কি-না হাজার!
‘লোকটা পুরাই বেকুব! হে হে হে . . . ।’
নুরু মিয়া মনে মনে চালাকের হাসি হাসে ।
পুরনো বইপত্র সংগ্রহ করা গনি সাহেবের এক ধরণের নেশার মত । ওগুলো থেকে না-কি লেখালেখির অনেক রসদ পাওয়া যায়, গল্পের প্লট পাওয়া যায় ।
.
ডায়েরিটার বেশ কিছু পাতা মিসিং । কিছু পাতার অংশবিশেষ ছেঁড়া । কিছু জায়গায় তারিখ ঠিক স্পষ্ট না । কিন্তু অদ্ভুতভাবে শেষ পাতাটা এখনো পুরোপুরি অক্ষত আছে, সেই সাথে অক্ষত আছে দুটি প্রশ্নও ।
‘জীবনের এই পর্যায়ে এসে আজ মনে হচ্ছে আমি ‘মা’ হতে পারিনি । আমার পরিচয় . . . আমি একজন ধর্ষিতা বুড়ি ।
মুক্তিযোদ্ধা বললে সবাই স্যালুট দেয় । আর বীরাঙ্গনা বললে দেয় থূথূ! এ-কী আজব দেশ আমার , এ-কী অভিশপ্ত স্বাধীনতা!
এই দেশ কি আমার?
এই স্বাধীনতা কি আমার . . . . ?’
গনি সাহেব বেশ গম্ভীর মুখে প্রশ্ন দু’টির দিকে তাকিয়ে আছেন । তাঁর কেবলই মনে হচ্ছে . . . প্রশ্ন দু’টিকে তাঁর কাছে পৌঁছে দিতেই হয়ত শেষ পাতাটা আজও অক্ষত আছে ।
গভীর মনোযোগে কি যেন ভাবছেন । হয়তো গল্পের জন্য নতুন কোন রসদ খুঁজে পেয়েছেন । কে জানে . . . হয়ত পুরো একটা গল্পই পেয়ে গেছেন ।
.
.
সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ আতাউল গনি সাহেব তাঁর হাজার টাকার ডায়েরির ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন । বড় সাহেবের এই সিদ্ধান্তের খবরটা যদি নূরু মিয়া জানতে পারে, তবে তার স্বঘোষিত চালাকির হাসিটা হয়তো আরেকটু বিস্তৃত হতো । কিন্তু খবরটা নূরু মিয়া জানবে না । কেউ জানবে না ।
গনি সাহেব খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন এটা কোন নিছক ডায়েরি না । এটা একখন্ড মুক্তিযুদ্ধ । যে যুদ্ধ আজও চলছে . . . খোলা ডাস্টবিনে, কংকালসার কোন এক টোকাইয়ের পিঠের ঝুলিতে, গনি সাহেবদের হাজার টাকার চকচকে নোটে, এক বৃদ্ধা মায়ের ভাঙা চশমার ঘোলা দৃষ্টিতে, কিংবা আরও বিস্তৃত কোন পরিসরে ।
যে যুদ্ধকে অনেকেই এড়িয়ে চলতে চান, অস্বীকার করতে চান ।
.
.
গনি সাহেব জানেন, এই দলিলটি যদি একবার প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে ঐ মুক্তিযোদ্ধা মায়ের খোকন সোনাকে সবাই টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলবে । খোকন সোনা যে এখন বেশ সম্মানওয়ালা একজন ব্যক্তি, সরকারী গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ দখল করে আছেন কয়েক বছর ধরে ।
কী করবেন গনি সাহেব? ডায়েরিটা কি প্রকাশ করে দেবেন? সত্যটা কি সবাইকে জানিয়ে দেবেন? তিনি কি পারবেন ঐ কুলাঙ্গারের মুখোশটা সবার সামনে খুলে দিতে?
কেন পারবেন না? তার তো সেটাই করা উচিত । তিনি-তো একজন লেখকই । তাছাড়া এই মুহূর্তে-তো তিনি মুক্তযুদ্ধ নিয়েই লিখছেন ।
তাহলে সমস্যাটা কোথায়? কী এত ভাবছেন তিনি?
আছে, নিশ্চয় কোনো সমস্যা আছে । আছে কোনো গোপন গল্প । যেটা কেউ কোনো দিন জানবে না । যেভাবে কেউ জানবে না একটু আগেই ডায়েরিটাকে পুড়িয়ে ফেলার গল্পটি, যেভাবে কেউ জানবে না চৌদ্দ বছর আগে কোন এক কাকডাকা ভোরে ভাঙা চশমা চোখে হারিয়ে যাওয়া গনি সাহেবের মায়ের গল্পটি ।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প