সময়ঃ ২০৪১ সাল। ঘড়িতে সময় সকাল ১১:৩০ মিনিটের একটু বেশি।
স্থানঃ ঢাকার কোনো এক অভিজাত শপিং মল।
.
.
.
শুভ্র সাহেব একটি শাড়ি কিনবেন। তার মেয়ের জন্য। জামদানি শাড়ী। মেয়ের জন্মদিনে পাঠাবেন। অনেকক্ষণ ধরে এই দোকান সেই দোকান ঘোরাঘুরি করছেন। কিন্তু পছন্দের শাড়িটি এখনো কিনতে পারছেন না। আগেও অনেক শাড়ি কিনেছেন। বউ এর জন্য, মেয়ের জন্য। প্রেমিকার জন্য। এমনটা আগে হয়নি।
হয়তো বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্ক তার ডিসিশন নেবার ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে। কে জানে..!!
যাইহোক, অনেক ঘোরাঘুরি করেও যখন কিছুই কিনতে পারলেন না, তখন ঠিক করলেন এক কাপ কফি খেলে হয়তো উপকার পাওয়া যেতে পারে।
ফুড কর্নারগুলোতে যুবক যুবতীদের পদচারণায় ভরপুর। তাদের চোখেমুখে শুধুই আনন্দের ছাপ। একদিন আমিও তো এমন কত সময়
কাটিয়েছিলাম। কত বন্ধুবান্ধব ছিল। আজ কে কোথায়! একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে কফির কাপে চুমুক দিলেন। দুপুর হয়ে গেছে। মোবাইল ফোনে সময়
দেখলেন। সময় ১২:৫৫ মিনিট। আবারো সেই শাড়ির খোঁজে এই দোকান সেই দোকান ঘোরাঘুরি শুরু।
একজন দোকানি শুভ্র সাহেবকে একেরপর এক শাড়ি দেখাচ্ছেন। নাহ!! এখনো মন মত শাড়ি পেলেন না। পাশের সিটে বসা এক মধ্যবয়সী নারীর কন্ঠ তার মনযোগ কেড়ে নিলো। কন্ঠটি চেনাচেনা লাগছে। চোখ ফিরিয়ে তাকিয়ে দেখলেন। হুম চেনা মানুষই।
.
.
.
— কেমন আছো?
— উমমম….
— না চেনারই কথা। চুল, গোঁফ সাদা হয়ে গেছে যে।
বলেই শুভ্র সাহেব হু হু করে হেসে উঠলেন।
— শুভ্র!! OMG!
— হ্যাঁ। কি করছো এখানে? তোমার হাজব্যান্ডকে দেখছি না যে?
— নিজের জন্য শাড়ি দেখছিলাম। কিন্তু পছন্দ হচ্ছে না।
শুভ্রঃ আমি কি হেল্প করতে পারি?
বন্যাঃ কিভাবে?
শুভ্রঃ আমি পছন্দ করে দেই?
বন্যাঃ দিতে পারো। মুচকি হেসে বললো।
শুভ্রঃ তোমার হাজব্যান্ড কোথায় দেখছি না যে?
বন্যাঃ সে বিরাট ব্যস্ত মানুষ। এইতো আছে তার ব্যবসাবাণিজ্য নিয়ে।
শুভ্রঃ হুম….
বন্যাঃ কই! শাড়ি পছন্দ করে দিচ্ছ না যে? (মুচকি হাসি)
শুভ্রঃ দুঃখিত। এইতো দেখছি। উমমমম.. ওই যে কালো শাড়িটা দেখি তো।
দোকানিকে বললেন।
হ্যাঁ, এটাই তোমাকে পারফ্যাক্ট মানাবে। এটা নিতে পারো।
বন্যাঃ সেই কালো!! হাঃ হাঃ হাঃ তোমার মাথা থেকে এখনো কালো রং এর ভূত নামলো না বুঝি? হাঃ হাঃ হাঃ
শুভ্রঃ তুমি কিন্তু কপালে আজো কালো টিপ পড়েছো। আচ্ছা ওসব বাদ দাও।
.
.
বন্যাঃ কতদিন পর আমাদের দেখা। কতদিন পর নয়। বহু বছর।
শুভ্রঃ হ্যাঁ, মাঝখানে ২৬ বছরের বিরতি।
বন্যাঃ OMG!! এখন কোথায় আছো? তোমার কি খবর তাই বলো?
শুভ্রঃ এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে বলবো? কোথাও বসে কথা বললে ভাল হতো না?
বন্যাঃ কেনো নয়!! চলো। কফি শপে যাই। অনেকদিন হলো ২৭ নম্বর রোডে আড্ডা দেই না।
শুভ্রঃ বুড়ো বুড়ির আড্ডা। খারাপ হবে না। চলো যাওয়া যাক তাহলে। হাঃ হাঃ হাঃ
বন্যাঃ ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলবো?
শুভ্রঃ না। আমার গাড়িতে গেলে কি প্রবলেম হবে?
বন্যাঃ নাহ!! চলো তাহলে।
.
.
.
শুভ্র আর বন্যা। দুজন মুখোমুখি বসা। সামনে ধোয়া ওঠা কফির কাপ।
বন্যাঃ বলো তোমার কি অবস্থা? কেমন আছো? দিনকাল কেমন যাচ্ছে? তোমার বউ কেমন আছে? বাচ্চাকাচ্চারা কি করছে?
শুভ্রঃ এত প্রশ্নের জবাব একসাথে কিভাবে দেবো?!?!
বন্যাঃ বলো, তোমার ফ্যামিলির কি অবস্থা? চশমার গ্লাস তো দেখি তোমার
ভুড়ির মত বেড়েই যাচ্ছে। হিঃ হিঃ হিঃ
শুভ্রঃ ফ্যামিলি বলতে একমাত্র মেয়টাই আছে। তবুও আমার কাছে নেই।
কানাডাতে আছে। ওর স্বামী, ও আর ওদের একটা ফুটফুটে বাচ্চা। বয়স ১ বছর পেরুলো।
বন্যাঃ তোমার বউ?
শুভ্রঃ নেই। ও এখন নেই।
বন্যাঃ নেই মানে কি?!?
শুভ্রঃ ২০৩৩ সালের ডিসেম্বর এর ১৫ তে মারা গেছে।
বন্যাঃ দুঃখিত। আমি সত্যিই দুঃখিত। তোমার কষ্ট বাড়িয়ে দিলাম।
শুভ্রঃ না না। যা হবার তা তো হবেই। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
বন্যাঃ এখন আছো কোথায়?
শুভ্রঃ মিরপুরে। ওখানে ছোট একটি ফ্লাট আছে। সেখানেই আছি।
বন্যাঃ একাই থাকো?
শুভ্রঃ হ্যাঁ।
বন্যাঃ তোমার মেয়ে তোমাকে দেখতে আসে না।
শুভ্রঃ হ্যাঁ। আসে। প্রতিবছর একবার করে দেখে যায়। ব্যস্ত থাকে। স্বামী,
সংসার, বাবুটাকে নিয়ে। সময় পেলেই আমার কাছে ছুটে আসে। মেয়েটা বড্ড বাবা পাগল হয়েছে।
বন্যাঃ দেখতে কেমন হয়েছে? তোমার কাছে ওর কোনো ছবি আছে এই মুহূর্তে?
শুভ্রঃ আছে। দেখাচ্ছি। মোবাইল ফোনে মেয়ের জামাই, বাচ্চাটা আর আড়শির ছবি দেখাচ্ছে।
বন্যাঃ মেয়ে তো দেখছি একেবারে বাবার ফটোকপি। কত্তো কিউট।
শুভ্রঃ না, ও ওর মার মত হয়েছে। যেমন লক্ষি, ঠিক তেমনই সুন্দরী।
আচ্ছা তোমার খবর কি?
বন্যাঃ আমার এক ছেলে আর এক মেয়ে। সুখী পরিবার। ছেলে বড়। মেয়ে ছোট। ছেলেটা বেসরকারি একটা ব্যাংকে জব করছে। আর মেয়েটা এবার বিবিএ ফাইনাল দেবে। আর হাজব্যান্ড ব্যবসা নিয়ে আছে।
শুভ্রঃ বাহ্। আসলেই সুখি পরিবার। দোয়া করি আরো সুখি হও।
বন্যাঃ এই!! তুমি না আগে আমাকে তুই করে ডাকতে!! এখন তুমি করে বলছো কেনো?
শুভ্রঃ দুই বাচ্চার মা হয়ে গেছো। ছেলেকে বিয়ে দেয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।
বুড়িকে তুই ডাকতে কেমন শোনায়! তাই ডাকছি না। যাইহোক, তুমিও কিন্তু
আমাকে তুই বলেই ডাকতে। ভুলে গেছো হয়তো।
বন্যাঃ না ভুলিনি। সে দিনগুলো কি ভোলার মত?
শুভ্রঃ হুম তাই তো। তবুও তো মাঝখানে এত বছর পেরিয়ে গেলো। কখন
যে দিনগুলো কেটে গেলো বুঝতেই পারিনি।
বন্যাঃ হ্যাঁ তা তো।
শুভ্রঃ তোমার হাতের আঙ্গুলগুলো এখনো সেই আগের মতই দেখতে।
বন্যাঃ হিঃ হিঃ হিঃ বুড়ো কালে আবার প্রেম ঝেঁকে বসেছে নাকিরে?
শুভ্রঃ আরে না, কি যে বলো। তবে তুই করে বলাতে খুব ভাল লাগলো। Thank u so much..
বন্যাঃ হয়েছে। আর থ্যাংকস দিতে হবে না। যদি পারো আমাকে তুই করেই বলো। তাতেই বেশি খুশি হবো।
শুভ্রঃ আরে ধুর! অভ্যাস নেই। আচ্ছা ট্রাই করবো।
হাঃ হাঃ হাঃ
চলো, এখান থেকে বের হই। বাইরে কোথাও ঘুরে আসি।
বন্যাঃ কোথায় যাবে? চলো পার্কে গিয়ে বসি। রমনাপার্ক।
শুভ্রঃ চলো ওঠা যাক তাহলে।
.
.
.
ওই বেঞ্চটাতে বসি চলো।
শুভ্রঃ হুম।
বন্যাঃ কত বছর পর এইখানে। খুব ভাল লাগছেরে শুভ্র। বলেই শুভ্রর হাতে হাত.রাখলো। পরক্ষণেই হাত সরিয়ে নিলো।
শুভ্রঃ লজ্জা পেয়েছো বুঝি?
হাঃ হাঃ হাঃ বুড়োর হাতে হাত রাখতে লজ্জা পাবারই কথা।
বন্যাঃ তোর বাঁদরামি টাইপের কথা এখনো গেলো না বুঝি… তুই পারিসও।
শুভ্রঃ সব কিছুই পারতে হয়
বন্যাঃ আমার কাছে খুব অবাক লেগেছিল। তুই আমাকে এত বছর পর কিভাবে চিনলি??!!
শুভ্রঃ তুই হয়তো ভুলে গেছিস। তুমি যখন বলতে যদি আমি কখনো হারিয়ে যাই আমাকে তুমি কিভাবে খুঁজে বের করবে? আর আমি বলতাম, হাজার মুখের ভিড়েও ঠিকই আমি তোমাকে খুঁজে বের করবোই। হয়তো আজ
তেমনই ঘটেছে। শুভ্র চোখ থেকে চশমা নামিয়ে চোখ মুছলো। বন্যা এক পলকে তাকিয়ে আছে শুভ্র দিকে।
শুভ্রঃ একটা সিগারেট খাওয়া যাবে? যদিও আমি সেদিনের পর কোনো মেয়ে মামুষের সামনে সিগারেট খাইনি। যেদিন বলেছিলে, যেসব ছেলেরা মেয়েদের সামনে সিগারেট খায় তারা ব্যক্তিত্বহীন।
বন্যাঃ খাও। সমস্যা নেই। সিগারেট আর ছাড়তে পারলে না। কি হয় না খেলে?
শুভ্রঃ কিছুই না। আবার অনেক কিছু।
বন্যাঃ আচ্ছা, তুমি যে মেয়ের জন্য শাড়ি কিনতে এলে, কিন্তু কিনলে না যে?
শুভ্রঃ কিনবো।
বন্যাঃ ওহ…
শুভ্রঃ তোমার চুলেও তো দেখি পাক ধরেছে। হাঃ হাঃ হাঃ
বন্যাঃ তুমি বুড়ো হয়েছ আর আমি বুঝি হইনি? বোকা কোথাকার। হিঃ হিঃ হিঃ
.
.
.
আকাশে মেঘ ঘন হয়ে উঠছে। বৃষ্টি নামবে।
বন্যাঃ শুভ্র, চলো আজ বৃষ্টিতে ভিজি.. এখনই বৃষ্টি নামবে।
শুভ্রঃ আরে না!! মানুষ পাগল বলবে। আমাদের কি সেই বয়স আছে নাকি!!
বন্যাঃ আমি কোনো কথাই শুনবো না। গুরিগুরি বৃষ্টি হচ্ছে। শুভ্র আর
বন্যা পাশাপাশি হাঁটছে। শুভ্র তার অজান্তেই বন্যার হাত নিজের হাতের
তালুতে বন্ধি করলো। বন্যা শুধু একবার শুভ্রর দিকে তাকালো। তারপর শুধু হাঁটা আর হাঁটা। বন্যা গুন গুন করে গান গাইছে।
” যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়। ”
শুভ্র মুগ্ধ হয়ে গান শুনে যাচ্ছে। গানটা তার খুব পছন্দের। বন্যা তা জানে। তাই হয়তো গাইছে। শুভ্রর জন্য। হয়তো…
.
.
.
বন্যাঃ বিকেল সন্ধ্যে হয়ে আসছে। আমাদের যাওয়া উচিৎ। আমি ড্রাইভারকে বলে দেই রমনাপার্ক এর সামনে আসতে। এখান থেকেই
চলে যাবো।
শুভ্রঃ হুম। আমিও চলে যাবো। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমাকে সময়
দেবার জন্য।
বন্যাঃ ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করছো?
শুভ্রঃ একদম না।
.
.
.
বন্যার গাড়ির ড্রাইভার এসে গেছে। এবার যেতে হবে।
বন্যাঃ শুভ্র, তাহলে আজ যাই। আবার কবে দেখা হচ্ছে শুনি?
শুভ্রঃ কোন একদিন। এমন একটি দিনে।
বন্যাঃ তোমার ফোন নাম্বারটা দাও।
শুভ্রঃ না। আমি চাই না আমাদের মধ্যে কোনো ধরনের যোগাযোগ থাকুক।
সেটা তোমার আমার দুজনের জন্যই ভাল হবে।
বন্যাঃ তোমার যা খুশি তাই করো। হেয়ালি আর কমাতে পারলে না।
শুভ্রঃ যাও। ড্রাইভার চেয়ে আছে।
বন্যাঃ হ্যাঁ, যাচ্ছি। এই নাও।
শুভ্রঃ কি এটা। শাড়ি। কালো শাড়ি। এটা আমার পক্ষ থেকে তোমার মেয়ের জন্য। যদি সাহস থাকে তাহলে তাকে বলবে যে, শাড়িটা তার মা দিয়েছে।
শুভ্রঃ ঠিক আছে বলবো। সে তোমার কথা শুনেছে। আমার মেয়েটা তার হতেও পারতো মা কে খুব ভাল করেই জানে।
বন্যাঃ তুমি ওকে সব বলেছো, তাই না?
শুভ্রঃ হুম। আমার বন্ধু বলতে ওই একজনই আছে। আমার মেয়েটা। সুখ দুঃখ সব তার সাথেই শেয়ার করি। মা মরা মেয়েটার মুখের দিকে তাকাতে কষ্ট হয়। জানো, রাইসাও তোমার কথা জানতো। কিন্তু সে কখনো এই
নিয়ে আমাকে কোনো ধরনের নেগেটিভ প্রশ্ন করেনি। ও ভাল কথা। রাইসা আমার স্ত্রীর নাম।
কথাগুলো বলে শুভ্র তার চোখের জল আড়াল করতে পারলো না।
বন্যা দুহাত দিয়ে শুভ্রর চোখ থেকে চশমা নামিয়ে চোখ মুছে দিলো।
শাড়ির আঁচল দিয়ে চশমাখানা মুছে দিল।
এবং চশমাটা আবার শুভ্রর দুই কানের মাঝে মুড়ে দিলো।
বন্যাঃ কেঁদো না প্লিজ। তুমি কাঁদলে কিন্তু এখন আমিও কেঁদে ফেলবো। এই বলেই বন্যা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিলো।
শুভ্রঃ আরে বোকা, আমি কাঁদছি কই! চোখে কি যেন একটা গেলো। তাই পানি পড়ছিল। তুমি কাঁদছো কেনো!!
এদিকে আসো। আমি মুছে দেই। শুভ্র তার দুহাত বন্যার দু গালের উপর রেখে দুই বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে বন্যার চোখের পানি মুছে দিলো।
বন্যাঃ এই!
মেয়েকে কি বলবা মনে আছে তো!
শুভ্রঃ হুঁ। বলবো, নে মা, তোর সেই হতেও পারতো মা তোর জন্মদিনের উপহার পাঠিয়েছে।
বন্যাঃ গুড বয়। হিঃ হিঃ হিঃ বয় না। বুড়ো হাঃ হাঃ হাঃ
শুভ্র মুচকি হেসে বললো, তোমার যাবার সময় হয়েছে। ড্রাইভার বেচারা অপেক্ষা করছে।
বন্যাঃ হ্যাঁ। যাচ্ছি। আবার কবে দেখা হবে বললে না তো!
শুভ্রঃ বললামই তো। কোন একদিন।
ইনশাআল্লাহ্।
.
.
.
বন্যা অনেকটা মন খারাপের মত মাথা নিচু করে হেঁটে চলে যাচ্ছে। শুভ্র
তাকিয়ে আছে।
গাড়িতে উঠে বন্যা শুভ্রকে হাত নাড়িয়ে বিদায় জানালো।
গাড়ি চলে যাচ্ছে। শুভ্র একা ফাঁকা রাস্তায় দাড়িয়ে সেই চলে যাওয়া আবারো দেখছে।
সেই ২৭ বছর আগের ছবিগুলো চোখের সামনে যেনো স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সেদিনও তো ঠিক এভাবেই চলে গিয়েছিল। আজকের চলে যাওয়ায় কি আর কখনো ফেরা হবে?
হয়তো না। হয়তো বা হ্যাঁ। এই হ্যাঁ আর না এর হিসেবনিকেশ মেলাতে মেলাতে শুভ্রর চোখ আবারো ভিজে ওঠে। কিন্তু চোখ মোছার মত কেউ এখন আর অবশিষ্ট নেই। ছিল না। থাকবেও না। শুধু মনে মনে বললো যেখানেই থাকো ভাল থেকো।
.
.
.
রাত ৮:১৫ মিনিট। শুভ্র রুমে ঢুকেই দেয়ালে ঝোলানো রাইসার ছবিটার
দিকে এগিয়ে গেলো। বললো, ভাল আছো তো?
বাসার ল্যান্ড ফোন বাজছে। শুভ্র রিসিভ করলো না। মোবাইল ফোন বাজলো। সেটাও তুললো না।
আড়শিকে একটা ফোন দেয়া দরকার। না থাক। এখন বলবো না। যেদিন শাড়িটা ওর হাতে দেবো সেদিন বলবো।
রান্না ঘরে গিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে পান করলো। এখন একটু ভাল লাগছে। অনেকদিন পর বৃষ্টিতে ভেজা হয়েছে। তাই মাথাটা বেশ ধরেছিল।
শুভ্র এখন গান শুনছে। মৃদু আওয়াজে গান শুনছে।
” যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প