সিংহমাছ। বিষাক্ত সামুদ্রিক মাছ। পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাছদের মধ্যে অন্যতম এটি। কিন্তু বিষাক্ত হলে কী হবে, এর সৌন্দর্য দেখার মতো। এ যেন গোলাপের মতোই, সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে কাঁটার বিষ। এর পাখনায় রয়েছে সুচের মতো তীক্ষè কাঁটা। এ কাঁটা দিয়ে এরা শত্রুর দেহে শক্তিশালী বিষ ছড়িয়ে দেয়। এ বিষের প্রভাবে এদের সাধারণ শত্রু প্রাণী মারা যায়। তবে এদের বিষের প্রভাবে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা বিরল। এরা স্করপিয়ন, ড্রাগন ও টার্কি ফিশ নামেও পরিচিত। সিংহমাছের দেহে রয়েছে বিচিত্র ডোরা দাগ। এদের পাখনাগুলো পাখির পালকের মতো নরম। যখন এরা বিচিত্র রঙের পাখনাগুলো মেলে ধরে তখনই এদের আসল সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। এদের দেহের রঙ এদেরকে সমুদ্র তলদেশের প্রবালের সাথে মিলে যেতে সাহায্য করে। তখন এদের প্রবাল থেকে আলাদা করা কঠিন। এদের দেহের গড় দৈর্ঘ্য এক ফুট। তবে সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। গড় ওজন এক দশমিক দুই কেজি। সিংহমাছ যখন খুব ধীরগতিতে চলাচল করে তখন এদের অনেক সুন্দর লাগে। মাঝে মাঝে এরা পানিতে স্থির হয়ে ভেসে থাকে। রাতে এ রকম ভেসে থাকা সিংহমাছকে ভুতুড়ে মনে হয়। সিংহমাছ মাংসাশী প্রাণী। এরা শিকার ধরে দিনের বেলায়। কাঁকড়া, সামুদ্রিক চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ এদের খাবার। এদের খাবার গ্রহণ কৌশল ভিন্ন ধরনের। প্রথমে শিকারের জন্য অপেক্ষা করে। শিকার নাগালে এলেই ধরে আস্ত গিলে ফেলে। সিংহমাছ সাধারণত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পাওয়া যায়। তবে আজকাল এদের ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগরেও পাওয়া যেতে পারে। সমুদ্রের শৈলশ্রেণীতে এরা বসবাস করে। কিছু দেশে সিংহমাছকে সুস্বাদু খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে জমকালো সৌন্দর্যের কারণে অ্যাকুইরিয়াম ব্যবসায়ও এদের চাহিদা অনেক। অ্যাকুইরিয়ামে এ মাছ পালন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এর বিষ মানুষের জন্য প্রাণঘাতী না হলেও প্রচণ্ড ব্যথাদায়ক। এর বিষের প্রভাবে মানুষের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টসহ বিতৃষ্ণাভাব দেখা যায়। সিংহমাছ সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প