সুবহে সাদিকের আর বেশি দেরি নেই। বাসার সবার সেহরি খাওয়া অনেক আগেই শেষ হয়েছে। সবাই বলতে আমি আর আব্বা-আম্মা। শরীফ আছে চিটাগাং এ, ফিল্ডে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর যোগাচ্ছে। গত সপ্তাহেই চিঠি দিয়েছে লোক মারফত। ভালো আছে জানিয়েছে। শামীম সরাসরি ফিল্ডেই আছে। ওর কোন খবর আমরা পাচ্ছি না।
শেষবার যখন এসেছিল তখন বলেছিল শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছে ওরা। আম্মা ওর বড় উলের সোয়েটারটা নিয়ে যেতে বলেছিলেন। শামীম নিতে রাজি হয়নি। বলেছিল, “আম্মা, ক্যাম্পে আমরা আছি এখন পঁচিশজন। আমি একা সোয়েটার গায়ে দিয়ে ঘুমাবো আর বাকি সবাই শীতে কষ্ট করবে?” শেষমেশ গুনে গুনে পঁচিশখানা সোয়েটার কিনে বালিশের খোলে ভরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই সোয়েটার কেনারও আরেক হ্যাঁপা; একসাথে অতগুলো কিনতে দেখলে খুব সহজেই চোখে পড়ে যাবে। তাই দুই তিনটা করে আলাদা আলাদা লোক মারফত কেনাতে হয়েছিল।
কলপাড়ে বসেছিলাম এঁটো বাসনগুলো ধোঁয়ার জন্য। কিন্তু যত উল্টোপাল্টা চিন্তা মাথায় ঘুরছে। হাত যেন চলতেই চাইছে না। হঠাৎ কানে ফিসফাস শব্দ এলো। কলপাড়ের গা ঘেঁষে ছয় ফিট উঁচু করে দেওয়া আমাদের বাড়ির সীমানা প্রাচীর। তার একটু পরেই সালাম চাচার বাড়ি। আমাদের এদিকের দেয়ালের পাশে একটা ইটের পাঁজা। ঘর মেরামতের জন্য ইট আনা হয়েছিল। যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় ওভাবেই পড়ে আছে। আয়তুল কুরসি পড়ে খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে আস্তে আস্তে ইটের পাঁজার উপরে উঠে ওপাশে উঁকি মারলাম। ভয় করছে কোন শব্দ হলে ওপাশে যেই থাকুক সে জেনে যাবে।
আঁধার তখনো ঠিকমতো কাটেনি। তবু ওই আবছা আলোতেই সালাম চাচাদের বাড়ির সীমানায় ঘুরঘুর করতে থাকা মূর্তি দুটোকে আমি চিনতে পারলাম- মতিন আর জুলফিকার। মতিন আগে আমাদের বাড়িতে ফাইফরমাশ খাটত। দু’মাস আগে পিস কমিটিতে যোগ দিয়েছে। জুলফিকার তো আগে থেকেই মিলিটারির পা’চাটা কুত্তা। দেখে বুঝলাম ওরা সালাম চাচার বাসায় আড়িপাতার চেষ্টা করছে।
মতিন পিস কমিটিতে ঢোকার পর দুই একবার বাসায় এসেছে। আব্বাকে সে অনেকটা ভয়ই পায়, শ্রদ্ধাও করে। আব্বা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। তার ওপর সৈয়দ বংশের একটা নামডাক পুরো এলাকাতেই আছে। মতিন কখনো এ বাড়িতে সাহায্য চাইতে আসলে খালি হাতে ফিরে যায়নি। প্রথম যেদিন তাকে রাইফেল দেওয়া হয়, তার খুশি আর দেখে কে! সে অবশ্য রাইফেল বলতে পারতো না, বলতো “আইফেল”।
– “আফনে কুনো চিন্তা নিয়েন না আব্বাজান , আমারে যহন আইফেল দিছে তহন আপনেগো দিকটা আমি দেহুম, আপনেগো লেইগা আমার কলিজায় টান আছে। সৈয়দ বাড়িতে মিলিটারি আইবার দিমু না।”
পরক্ষণেই বোকা বোকা একটা হাসি দিয়ে আমাকে বলেছিল,
“শেলি আফা আফনের হাতের চা যেই মজা,এক কাপ খাওইবান না? লগে একখান ডিম সেদ্ধ কইরা দিয়েন, অহন গতরে শক্তি থাহন দরকার।”
মতিনের কারণেই হোক আর আব্বার প্রভাবের কারণেই হোক, এ বাড়ির দু’ দুটো ছেলে এতদিন ধরে বাইরে থাকা সত্যেও এখন পর্যন্ত মিলিটারি আসেনি বাড়িতে। জুলফিকার অবশ্য আব্বাকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসা করেছে। সে ইদানীং উর্দু বলার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেই চেষ্টার ফলাফল যেটা বেরোয় সেটা মোটামুটি হাস্যকর।
– সৈয়দ সাব আপকা দুই বেটা কই গ্যায়া?
আব্বা বিরক্তি নিয়ে বলেছিলেন,
– ওরা গ্রামে দোকান করছে। আপনি চাইলে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। এদিককার অবস্থা তো ভালো না, তাই ওখানে পাঠিয়ে দিয়েছি।
– ঠিক হ্যায় ঠিক হ্যায় হাম আপকো ভরসা কারতে হ্যায়, লেকিন বাত হলো যে আপ তো পুলিস মে থা, মেজর সাব ক্যাহতে হ্যায়, পুলিস গাদ্দার হ্যায়। ইসলিয়ে শক হোতা হ্যায় জনাব।
আব্বা কটমট চোখে তাকিয়ে দৃঢ় ভাবে বলেছিলেন,
“পুলিস গাদ্দার হো সাকতা হ্যায় লেকিন সৈয়দ কাভি গাদ্দার নেহি হো সাকতা, ম্যায় সৈয়দ হুঁ।”
আব্বাকে ঘাঁটানোর মত বুকের পাঁটা এখনো হয়ে ওঠেনি ওর। তবে সালাম চাচাদের বাসায় আড়িপাতার সাহস যেহেতু হয়েছে, যেকোন দিন আমাদেরকেও বিপদে পড়তে হতে পারে। শামীমের লোকজন মাঝেমধ্যে লুকিয়ে বাসায় আসে। একবার এদের কানে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আজানের শব্দ কানে ভেসে এলো। মতিনরা বিড়ালের মত নিঃশব্দে বাড়ির সীমানা পেরিয়ে বড় রাস্তার দিকে চলে গেলো।
আমার বুকের ভেতর ঢিবঢিব করছে। নিজের ঘরে বসেও আম্মাকে পর্যন্ত বলতে পারছি না ভোরবেলার ঘটনার কথা। আজ শেষ রমজান। অথচ আব্বার পাঞ্জাবীটা পর্যন্ত মাড় দেওয়া হয়নি। সেমাইয়ের প্যাকেট, আতরের শিশি কিচ্ছু কেনা হয়নি। গুজব আছে কাল ঈদের জামাতে নাকি হামলা হতে পারে।
বিকেলবেলা হঠাৎ জুলফিকার এলো বাসায়,
– জনাব, ভাইজানেরা কাহা হ্যায়, ঈদ কে দিন নেহি আয়েঙ্গে?
– আসতে আর পারবে কিভাবে? ওদিকে রাস্তাঘাট সব ভাঙা, ব্রিজ উড়ে গিয়েছে। চিঠি দিয়েছিল, আমি বলেছি আসার দরকার নাই।
– হাঁ, ঠিক বাত বলেছেন, হারামী মুক্তিলোগ সব ভাইঙ্গা দিছে। সামনে পাইলে ওই গাদ্দার গুলিরে….
জুলফিকার একটা কুৎসিত গালি দিতে গিয়েও আব্বার দিকে চোখ পড়াতে থেমে গেল। ওর সাহস দিন দিন বেড়েই চলেছে। আব্বা অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলেন। জুলফিকার কিছুক্ষণ বসে থেকে বলার মত আর কিছু খুঁজে না পেয়ে অবশেষে বলল,
– আজ উঠতা হ্যায় জনাব, কোই মুশকিল হো তো হামকো ইয়াদ করবেন।
আব্বা জবাব দিলেন না, তিনি তখন মাটির দিকে তাকিয়ে তসবি পড়ছেন।
ইফতারের পর শরীরটা খুব অবসন্ন লাগছিল। বোধহয় একটু তন্দ্রামতও এসে গিয়েছিল। হঠাৎ খুটুরখাটুর শব্দ কানে আসায় জেগে উঠলাম,রান্নাঘর থেকে আসছে। উঠে গিয়ে অবাক হয়ে দেখলাম আম্মা চুলায় সেমাই বসিয়েছেন। এককোণে রোস্টের মশলা মাখানো মুরগি। আস্তে করে আম্মার কাঁধে হাত রেখে বললাম,
“কি করছেন আম্মা? এত রান্নাবান্না এই রাতের বেলা?”
– এখন করব না তো কখন করব? কাল সময় পাওয়া যাইব?
-আপনি ঈদের রান্না করছেন?
– আঃ তোর বুদ্ধিশুদ্ধি নাই নাকি, আমার হাতের সেমাই শামীম শরীফের কত পছন্দ করে জানস না? কাল ওরা কেউ আসলে ভালমন্দ তো কিছু খাইতে দিতে হবে। ওইখানে কি খায় না খায় কে জানে….
সত্যিই তো, ওরা যদি কাল আসে! পরক্ষণেই একটা ভয় আমাকে চেপে বসলো, আম্মার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম,
“আস্তে বলেন আম্মা!”
প্রায় সারাটা রাত জেগে আমরা রান্নাবান্না করলাম। সবকিছুই পরিমাণে অনেক বেশি করে রান্না করা হয়েছে। পোলাওয়ের চাল পাওয়া যায়নি, সকালে সাদা ভাতই বসিয়ে দিতে হবে। শেষ রাতের দিকে শুতে এলেও কিছুতেই ঘুম আসলো না। ঘন্টাখানেক এপাশ-ওপাশ করে অবশেষে ফজরের আজান দিলে বিছানা ছাড়লাম।
“চাঁদ তুমি ফিরে যাও/
দেখো মানুষের খুনে খুনে রক্তিম বাংলা”
রেডিওতে এই গানটা আজ সকালে বাজানো হয়েছে।আজ ঈদ, অথচ চারিদিকে যেন কবরের নিস্তব্ধতা।দিনরাত হল্লা করে পাড়া মাতিয়ে রাখা ছোট বাচ্চাগুলোও মনমরা হয়ে ঘরে বসে রয়েছে। ওদের কারো নতুন জামা কেনা হয়নি। সকালে ঈদের জামাতটা পর্যন্ত হয়নি। আম্মা একবার সালাম চাচাদের বাড়ি যাচ্ছেন আবার ঘরে এসে মাংসের হাড়ি চুলোয় চাপাচ্ছেন, পর মুহূর্তেই বিছানায় গিয়ে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ছেন। আমি বুঝতে পারছি ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড অস্থির হয়ে আছেন তিনি। আমার ভেতরে এক অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে, শামীমদের দেখতেও ইচ্ছে করছে আবার মনে হচ্ছে ওদের না আসাটাই ভালো। সারাটা দিন এরকম দোটানা আর দুশ্চিন্তায় কেটে গেল। আম্মার এখনো বিশ্বাস ওরা আসবে।
– আরে দিনে দুপুরে আসব কিভাবে? তুই দেখিস রাতে ঠিক আসব। খাবারগুলা নষ্ট করিস না, ওইখানে পাঠাইয়াও তো দিতে হবে।
আম্মা না ঘুমিয়ে পেছোনের বারান্দার চৌকিতে বসে রইলেন। এই শীতে বাইরে বসে থাকলে নির্ঘাত শ্বাসকষ্টটা ফিরে আসবে। অনেক কষ্টে তাকে ঘরে পাঠিয়ে আমি বসে রইলাম। দু’টোর দিকে পেছোনের দরজায় মৃদু টোকা শোনা গেল। আমার হৃদপিণ্ড লাফিয়ে উঠল। দরজার একদম কাছে গিয়ে যতটা সম্ভব নিচু গলায় বললাম, “কে?”
জবাব এলো তারচেয়েও চাপা স্বরে,
-আপা আমি সেলিম, দরজাটা খোলেন আপা।”
সেলিম শামীমের কোম্পানির লোক। চেষ্টা করলাম শব্দ না করে দরজা খোলার, তবু ক্যাঁচ করে একটা শব্দ হয়েই গেল।
সেলিম ঘরে ঢোকার পর খানিকক্ষণ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে। শতচ্ছিন্ন ময়লা পোশাক, কাঁধে চটের বস্তা। বুঝলাম ছদ্মবেশে এসেছে। শামীমের কথা জিজ্ঞাসা করায় ও একটু কেঁপে উঠলো। বহু কষ্টে ঠোঁট কামড়ে বলল,
– আপা শামীম ভাই ধরা পড়ছে, শামীম ভাই বাড়িতে আসতে চাইছিলো, ওই শালা জুলফিকারের বাচ্চা বাজারের মোড়ে পাকিগুলিরে নিয়া বইসা ছিল। আমি একটু পিছনে গিয়া লুকাইয়া পড়ি। তাই আমারে দেখে নাই। উনারে হারামী জুলফিকারের বাড়ির দিকে নিয়া গেছে, আমি পালাইয়া যাইতাম, আসছি শুধু আপনাদের খবরটা দিতে……….
আমার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেলো, শামীম ধরা পড়েছে! বুক ফেটে চিৎকার করতে ইচ্ছা করলো, কিন্তু এখন কোন শব্দ করা যাবে না। তাহলে সেলিমও ধরা পড়ে যাবে। সেলিম কিছু বলতে চাইছে কিন্তু ইতস্তত করছে। বুঝলাম ওর খিদে পেয়েছে। কোন কথা না বলে সোজা রান্নাঘরে ঢুকে গেলাম। যতটা সম্ভব খাবার টিফিন ক্যারিয়ারে ভরে সেলিমকে বললাম,
-তুমি এখন যাও, এখানে থাকলে ধরা পড়বে। সাবধানে যেও।
-ইয়ে… মানে আপা…..
সেলিম আমার চোখের দিকে তাকাতে পারছে না।
– এখন সময় নষ্ট করো না সেলিম, উত্তর দিকের রাস্তাটা দিয়ে যাও, ওদিকে ঝোপঝাড় বেশি, রাতের বেলায় কেউ যাবে না।
সেলিম চলে গেলে আমি নিজের বিছানায় এসে ধপ করে বসে পড়লাম, হাত লেগে পাশের টেবিলে রাখা আব্বার পানের ডিব্বা পড়ে গেলো। শব্দ শুনে আম্মা ধড়মড় করে জেগে উঠলেন।
– কি হইছে কি? শামীম-শরীফ কই? ওরা আসে নাই?
– আম্মা….
-কি হইছে বল? ওরা কেউ আসে নাই?
– সেলিম আসছিলো আম্মা…..শামীম ধরা পড়ছে।
আম্মা টলে পড়ে যেতে যেতে কোনমতে সামলে নিলেন। রাতের আর বেশি বাকি নেই, চাঁদের রূপালী আলো কেটে গিয়ে টকটকে লাল সূর্য উঁকি দিচ্ছে। আলো ফুটতে না ফুটতেই জুলফিকারের বাড়িতে গেলাম আমি আর আব্বা। আম্মার অবস্থা এতটাই খারাপ যে উঠতে পর্যন্ত পারছেন না।
জুলফিকার তখন দাওয়ায় বসে কান খোঁচাচ্ছে। আশেপাশে কোন মিলিটারি দেখলাম না। মতিন ওর গায়ে সরিষার তেল মালিশ করে দিচ্ছে, মতিনের কাঁধে রাইফেল। আমার ভেতর কোথাও একটা বিশ্বাস ছিল যে মতিন বাধ্য হয়ে পিস কমিটিতে যোগ দিলেও আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে কিছু করবে না। মতিনও তাহলে শেষমেশ বিশ্বাসঘাতকতা করলো!
আব্বা জীবনে কখনো কল্পনা করেননি জুলফিকারের কাছে তাকে দয়া ভিক্ষা চাইতে হবে। হাত জোড় করে অনুনয় বিনয় করলেন শামীমকে ছেড়ে দিতে। শুধু পায়ে ধরতে বাকি রাখলেন আর কী। আব্বার মত মানুষকে ওই অবস্থায় দেখে জুলফিকার শয়তানের মত মিটিমিটি হাসতে লাগলো।
– আরে কেয়া কারতে হ্যায় সৈয়দ সাব। আপ তো হামারা আপনালোগ হ্যায়, আপ এভাবে না বলিয়ে।
জুলফিকারের বোধহয় একটু করুণা হলো এমন একটা অভিব্যক্তি চোখে ফুটিয়ে বলল,
– ঠিক হ্যায় সৈয়দ সাব, আপনার ছেলেকে নিয়ে যান। উস কামরা ম্যায় হ্যায়।
আমি আর আব্বা দৌড়ে গেলাম দোচালা ঘরটায়। কিন্তু কোথায় শামীম! সারা ঘরভর্তি রক্ত আর রক্ত, কিছু জায়গায় পুরু হয়ে জমে কালচে হয়ে আছে- বীভৎস দৃশ্য। আমরা পাগলের মত চারপাশে চোখ বোলাতে লাগলাম। হঠাৎ এককোণে চোখ আটকে গেলো, ওখানে শামীমের সেই উলের সোয়েটারটা। আব্বাকে দেখে মনে হলো যেন কাঁদতেও ভুলে গিয়েছেন। জুলফিকার কখন আমাদের পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে টেরই পাইনি।
খলখল হাসির শব্দে চমকে পিছন ফিরে দেখি ও দাঁড়িয়ে আছে, আব্বার অসহায় অবস্থা দেখে মজা পাচ্ছে।
আচমকা কান ফাটানো একটা শব্দ শুনলাম সাথে বারুদের পোড়া গন্ধ। জুলফিকার কাটা গাছের মত ধপাস করে আব্বার পায়ের কাছে এসে পড়ল। দরজার গোঁড়ায় মতিন ঘৃণাভরা জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে আছে জুলফিকারের লাশের দিকে। আমার টলমলে দুই চোখে মতিনের মুখের অবয়ব ঝাঁপসা হতে হতে যেন হয়ে উঠল শামীমের মুখ। একটা দু’টো নয়, কয়েক হাজার শামীম। চারিদিকে শামীমদের সংখ্যা এখন অনেক বেশি।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প