৪ বছর পর নিজের প্রাক্তনের সামনে তারি ভাইয়ের বৌ হিসাবে পাত্রী হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। পরনে আমার নীল থ্রিপিস। আমি বদলে গেছি গত ৪ বছরে আমার চোখের নিচে পরেছে কালো দাগ নির্ঘুম রাত কাটানোর জন্য। আমার চুলে ধরেছে সামান্য পাক। তার কারন অবশ্য জানা নেই। কাঁদতে কাঁদতে রাত জাগতে জাগতে শরীরের অবস্থা অনুশোচনা করার মতো। কিন্তু আমার সামনে থাকা সে তার কিন্তু শরীরে কোন পরিবর্তন আসে নি। সে হয়েছে সুন্দর।তাঁর আগে থেকে চেহারা হয়েছে আকর্ষণীয়। স্বপ্নে আমি তাকে যা কল্পনা করতাম ঠিক তেমন।নিজেকে গুছিয়ে আমি যখন বসে ছিলাম তখন সে আমার প্রশ্ন করলো,
–কিসে পড়েন আপু। তার মুখে আপু তাক শুনে মৃদু হেসে উত্তর দিলাম।
–অনার্স ২য় বর্ষে। সে বড্ড করুন শুরে বললো,
–মাত্র অনার্স ২য় বর্ষে। আমার ভাইয়া তো বিসিএস ক্যাডার। আপনি কি তার যোগ্য। এবার আমি আগের মতোই মৃদু হেসে উত্তর দিলাম।
–জি না আমি হয়তো কারোর যোগ্য না। না কখনো ছিলাম আর না কখনো হতে পারবো। আমার কথার গভীরতা তাকে চুপ করালো ঠিক।কিন্তু বিপরীতে তার মা আমাকে বললেন,
–মা তুমি ওর কথায় কিছু মনে করো না ও কি বলে ফেলেছে। আজিজ ভাই আমরা এই বিয়ে নিয়ে কথা বলি এগোতে পারি। সে তার মাকে চপু করিয়ে দিয়ে বললো,
–না মা আমার ওনার সাথে কথা আছে একান্ত।
–একান্ত? (আমার মা)
–জি আন্টি একান্ত।
–মেঘ ওকে তোর রুমে নিয়ে যা।
–আসুন। সে আর আমি আমার রুমে এলাম।
–আগের মতোই আছো।
–না আমি আগের থেকে অনেক বদলে গেছি।
–হুম দেখার মতো।
–হুম।
–বেইমানি করলে আল্লাহ তায়লা তাকে ক্ষমা করে না।
–বেইমান। কাকে বলছেন বেইমান।
–আপনি আর আমি ছাড়া এখানে কেউ আছে।
–টিনএজ বয়সে একটা মেয়ে তার রিলেশন টিকাতে ঠিক কি কি করতে হয় তা কি আপনি জানেন।
না জানেন না আপনি শুধু জানেন একটা মেয়ের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সে যখন বলে আমাকে ক্ষমা করো সেই কথাটাকে বেইমানি বলতে। আমি বেইমান ছিলাম না কখনো ছিলাম না। আপনি কি জানেন জীবনে যে আমি কখনো মায়ের কাছ বকা পর্যন্ত শুনি নি সে আমি ৩ দিন একা ধারে মার খেয়েছি শুধু মাত্র আপনার নাম আর পরিচয় লুকানোর জন্য। না জানেন না শুধু জানেন আমি বলেছিলাম আমার পক্ষে সম্ভব না। আপনি কি জানেন আমি রাতের পর রাত দিনের পর দিন শুধু আপনার আসা করে থাকতাম। না আপনি জানেন না কারন আপনি শুধু এটা জানেন আমি বলেছিলাম সম্ভব না। এগুলা হয়তো মোটিভেশানাল শুনায় কিন্তু এগুলাই বাস্তব। আপনার পরিবারে কিছুই হয় নি কারন আপনি ছেলে চাপ দিয়েছে আমার পরিবার আমাকে কারন আমি মেয়ে।
–মেঘ।
–কিছু ভালোবাসার নাম বা শেষ পরিনতি কিছুই ভালো হয় না আমান কিন্তু শেষ বারের মতো বলতেই হয় যদিও বলেছিলেন আমি বিশ্বাস ঘাতক তবুও ভালোবাসি।
–আমি সত্যি কিছু,
–না বলবেন না কিছু কারন আমাদের ভালেবাসার পরিনতি ভালো হোক তা আমি চাই না।
কথাটা বলেই রুম ত্যাগ করলাম। এটাই তাকে শেষ দেখা। কিছু ভালোবাসার পরিনতি কখনোই ভালো হয় না কিন্তু তার পরও বলা চলে ভালোবাসি।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প