ক্রাশের দিকে তাকায় আছি। তার মাথার সাইডে তিল, ঠোঁটের উপরে তিল, গলার একজায়গায় তিনটা তিল। উফ!! পাগল হয়ে যাবো আমি পাগল হয়ে যাবো! “অর্পি! হা করে আমার মুখের দিকে না তাকায়ে খাতার দিকে তাকাও।” ধ্যাত, একটা খাইশটা আমার ক্রাশ। তার উপর একসাথে তিনজন পড়ি। পাইলাম একটা লজ্জা। আরে বেটা একটা আঠারো বছর বয়সী, সুন্দরী, গুনবতী, মায়াবতী, পূন্যবতী তোর দিকে প্রেমময় দৃষ্টি দিয়ে তাকায় আছে কোথাই তুই বাইরে গিয়ে ফকির খাওয়ানোর প্লান করবি তা নাহ!
জৈব যৌগ এমনেই একটা বেয়াদপ অধ্যায় তার উপরে ক্রাশ যখন কেমিস্ট্রি টিচার তখন একটায় কথা মাথায় আসে -“হয়ে গেলো।” তিনমাস হলো সে আমার ক্রাশ। প্রথম দিন ততটা ভালো না লাগলেও আস্তে আস্তে কেমনে কেমনে যেনো ক্রাশ খাইতে শুরু করলাম। আমার শয়নে স্বপনে আমি তারেই দেখি। এমনকি আমার রেগ ডের টি শার্ট ভর্তি করে আমার হারামি বন্ধু গুলা তার নাম লিখে দিসে। সবাই বুঝে দুনিয়ার, সে বাদে। টেস্ট পরীক্ষা চলতেছে। প্রচুর পড়া বাকি। তার উপর কালকে কেমিস্ট্রি পরীক্ষা। আমি সেই পড়ার মানসিকতা নিয়ে টেবিলে বিদ্যমান। এদিকে মন আর মস্তিষ্ক যুদ্ধে লিপ্ত। যেহেতু কাল রসায়ন পরীক্ষা, সেহেতু তিনি এসেছিলেন পড়াইতে।
আকাশী কালার শার্ট, হাতা কনুই পর্যন্ত ভাঁজ করা, হালকা চাপ দাঁড়ি, চুলগুলো এলোমেলো, হাতে কালো ঘড়ি।
তারে দেখার পরে আমার আত্না যাওয়ার পথে। কোনোভাবেই মাথা থেকে যাচ্ছে না এদিকে জৈব যৌগ আমায় ডাকছে-এদিকে আয় সোনা, তোরে খাবো। মাথায় বুদ্ধি এলো। টিচার মানে ভাইয়া আমার ভার্সিটিতে পড়ে। ভার্সিটির ক্রাস এন্ড কনফেশন পেইজ আছে। ভাবলাম লিখবো আজকে দিল খুলে। যেই ভাবা সেই কাজ। রাত প্রায় সাড়ে বারোটা। লিখলাম। একে আমি হুমায়ূন প্রেমী তার উপরে নিজেও টুকটাক কবিতা লিখি। ফাটাফাটি একটা কনফেশন লিখে সাথে সাথে পেজে গিয়ে পোষ্ট করে দিলাম। কেরামতি দেখার অপেক্ষায়।
গুনে গুনে ঠিক পাঁচটা মিনিট পর ক্রাশ মানে কেমিস্ট্রি ভাইয়ার মেসেজ-হা হা হা হা, হো হো হো হো, হি হি হি হি।আমার প্রাণ পাখি উড়ার পথে। জিগাইলাম কাহিনী কী ভাইয়া ? তিনি-“এরপর কখনও কারও নামে কনফেশন লিখলে আমাকে প্রশ্ন করে জেনে তারপরে দিয়ো। চোখে ঝাপসা দেখলাম ।আমি বোধহয় মারা যাচ্ছি। তবুও মনে সাহস সঞ্চার করে প্রশ্ন করলাম মানে? তিনি স্ক্রিনশট দিলেন আমার কনফেশনের আর বললেন-“পেজের ইনবক্সে কনফেশন দেওয়া লাগে পরে ওরা পোস্ট করে। তুমি ডিরেক্ট পোস্টাইসো। যাও ডিলিট দাও কেউ দেখার আগে।চুপচাপ গিয়ে ডিলিট করলাম। আর পড়িনি সেদিন। রেজাল্টের কথা বলার ইচ্ছা নাই।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প