আরবে আব্দুল্লাহ নাম একজন দূর্ধষ ডাকাত সরদার বাস করতেন। ডাকাত সরদার একদিন তার দলবল নিয়ে ডাকাতি করতে বের হলেন। চলতে চলতে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাই পথের ধারে এক গহীন জঙ্গলে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেখানে তারা তিনটি খেজুর গাছ দেখতে পান। দুইটি ফলবতী আর একটি মৃত ও সূস্ক । ডাকাত দল খেজুর খাওয়ার মনস্থির করলেন। খেজুরের দিকে তাকিয়ে তারা দেখতে পেলেন একটি পাখি খেজুরের কাদি হতে পাকা খেজুর ঠোটে করে নিয়ে উড়ে উড়ে সূস্ক গাছে বসছিল এবং পুনরায় পাকা খেজুর নিতে আসছিল। এভাবে প্রায় দশ বার আসা-যাওয়া করে।
ডাকাত সরদার পাখির এরূপ খেজুর সংরক্ষণ দেখে বিস্মিত হলেন এবং রহস্য দেখার জন্য সূস্ক গাছে চুপি চুপি আরোহন করলেন। গাছের চূড়ায় গিয়ে ভয়ে চমকে উঠেন। তিনি দেখেন, একটি অন্ধ সাপ সেখানে মুখ খুলে হা করে বসে আছে। ডাকাত সরদার বুঝতে পারলেন পাখিটি নিজের জন্য নয়, অন্ধ সাপের জন্য খেজুর এনে তার মুখে ফেলছিল। এ দৃশ্য দেখে সরদার অবাক হলেন এবং তার কান্না চলে এলো। ডাকাত সরদার বুঝতে পারলেন রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ। তিনি কাওকেই না খাইয়ে মারেন না। তাহলে রিজিকের জন্য আমি কেন চুরি-ডাকাতি করছি ? তিনি তার ভুল বুঝতে পারলেন এবং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নিকট তাউবা করে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।
সঙ্গে সঙ্গে গাইবি আওয়াজ শুনতে পেলেন আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আনন্দে তিনি তরবারী ফেলে ডাকাত দলে ফিরে গেলেন এবং ঘটনা খুলে বললেন। সবাই সরদারের গল্প শুনে যার যার তরবারী ফেলে দিলেন এবং আর কোন দিন চুরি-ডাকাতি করবে না বলে শপথ নিয়ে এহরাম বেধে মক্কার দিকে রওয়ানা হলেন। তিনদিন চলার পর তারা একটি গ্রামে গিয়ে পৌছলে এক বৃদ্ধা তাদের সামনে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে কি আব্দুল্লাহ নাম কেহ আছে ? সঙ্গীরা বললেন, হ্যা আছে. তখন বৃদ্ধা বেশ কিছু সম্পদ এনে বললেন, তিনদিন পূর্বে তার ছেলে মারা গেছে এবং তিনদিন যাবতই তিনি শেষ পয়গম্বরকে স্বপ্নে দেখছেন। স্বপ্নে পয়গম্বর তাকে বলেছেন, ছেলের রেখে যাওয়া সম্পদ যেন তিনি আব্দুল্লাহকে দিয়ে দেন। একথা শুনে ডাকাত দল উহা গ্রহণ করলেন এবং আনন্দ চিত্তে আবার চলতে শুরু করলেন।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প