আজ নিজের জীবন টাকে বড্ড ভারী মনে হচ্ছে। ভালোলাগা আর ভালোবাসার মাঝে যেমন অদৃশ্য এক দেওয়াল থাকে।
তেমনি আজ হাসপাতলের সিসিইউ তে জীবন আর মরণের মাঝেও যেনো কেবল সময়ের দেওয়াল।
তবুও এ অবেলায় এসে কেন যেনো বাঁচতে বড্ড ইচ্ছে করছে, ভালোবাসায় যে এত কষ্ট তা আগে কোন দিন বুঝিনি।
হায়রে ভালোবাসা!
ভালোবাসা, তোর পরিসমাপ্তি কেবলি কি
জীবনের পরাজয়ে?
হাসপাতালের সিসিইউ এর নীরবতায় নিজেকে কেমন যেন অসহয় করে তুলছে। আমার চারপাশের রূগীদের বাঁচার তীব্র আকূতি আমাকে ব্যাকূল করে তুলছে।
সাদা শুভ্র বিছানার মাঝে পড়ে আছি আমি।
অক্সিজেন কেমন যেন অসহনীয় করে তুলছে আর মেশিন এর নাইট্রো গ্লিসারিন স্যালাইনের এক এক ফোটা যেনো শরীলের সমস্ত শিরাতে প্রবাহিত হতে লাগলো প্রবাহমান নদীর মতো।
চেতনা নাশকের প্রভাবে চোখ দুটি কিছুেতই খোলা রাখতে পারছিনা। বেঁচে থাকার নিরন্তর চেষ্টা কিছুতেই চোখের পাতা এক করতে দিচ্ছেনা।
হঠাৎ হার্ট মনিটরের টু টু শব্দটা কানের শ্রবন শক্তিকে জাগিয়ে তুলছে। আবার একটু পরেই শব্দটা আস্তে আস্তে মৃদু থেকে মৃদুতর হতে লাগলো।
আর আমার ক্লান্ত দেহটা আস্তে আস্তে ঢলে পড়লো গভীর শুন্যতার মাঝে…..কতোটা সময় যে গভীর ঘুমের মাঝে ছিলাম তার হিসাব আমার কাছে নেই।
হঠাৎ কপালে শীতল কিছুর ছোঁয়ায় চেতনা ফিরে পেলাম। সমস্ত ক্লান্তহীনতাকে পাশে রেখে ভারী চোখ দুটি মেলে তাকিয়ে দেখলাম,
আমার কপালে ছোট হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে আমার ১১ বছরের মেয়েটি।
আর ওর চোখ দুটি পানিতে ছল ছল করছে, হয়তো যে কোন সময় তা ঝড়ে পড়বে অঝর ধারায়।
এই প্রথম নিজের বুকের মাঝে অনুভাব করলাম ভােলাবাসার এক অন্য রূপ,
দেখলাম শর্তহীন ভালোবাসার এক জীবন্ত অবয়ব।
আমি নির্বাক হয়ে ছিলাম।
কেমন যেনো নিজের মাঝে বেঁচে থাকার এক আকূলতা আমাকে গ্রাস করছে।
মনে হলো আধার ঠেলে যেনো উদয় হলো নতুন এক সোনালী দিনের।
এটাই হয়তো বেঁচে থাকার মানে।