রোজ রাতে বাঁশি বাজতো। উমা! সেকি সুর। বর্ষায় বানের জলে ভেসে ভেসে ঘাটে এসে ভিড় জমায়। আর আমি! বিক্রিত হই সুরের নেশায়।
দেহের এক টুকরো মন ভিটায় প্রেম জন্ম নিয়েছে বহুত আগেই। শুধু মানুষটার মুখপানে মুখোমুখি হয়ে বসে থাকা হয়নি। জানাও হয়নি আদতে মানুষটা কে।
পড়ার টেবিলে বসে পড়া হয়নি বেশকিছু দিন হলো। শুধু ডায়েরিতে আঁকিবুঁকি। তাকে নিয়ে সীমানাহীন কল্পনায় ভাসতে ভালো লাগে।
মনটা যখন বিয়োগ ব্যাথা-বেদনায় পালিয়ে পালিয়ে দৌড়াচ্ছে ঠিক তখনই স্কুলে গিয়ে খোঁজখবর নিত শুরু করি বাঁশিওয়ালাটাকে কে?
আমি আনন্দে আহ্লাদে মেতে উঠি। প্রথমবারের মতো প্রিয়মুখ দর্শন। ঝং পরা দেহের কলকব্জাগুলো একটু শিহরণ একটু ছোঁয়াছুঁয়ি’র অপেক্ষায়। মনের মধ্যে শুধু ভয়ের আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে।
আমার ক্লাসের প্রথম সে। এখন সারাদিনের অনেকটা সময়ই কাটে তাকে দেখে দেখে। যখনই চোখে চোখ পরে আমি বোবা মানুষের মতো হয়ে যাই। বুকে শুধু ধুকপুক কাঁপুনি বাজে।
আর বলা হয়ে উঠেনি অব্যক্ত কথাগুলো। বর্ষাও শেষ হয়েছে মাস তিনেক হলো। থইথই পানিতে ভেসে আসে না মধুর সুর। যে সুরে আমি রোজরোজ স্নান করি। ডুবে ডুবে মুখ লুকিয়ে মিষ্টি হাসি।
এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট হয়েছে গত মাসে। সেও পাড়ি দিয়েছে শহরে। হয়তো অন্য কেউ আবার ডুবে ভাসবে তার বাঁশির সুরের মূর্ছনায়।।