“পুন্নি…….অ পুন্নি…….বলি গেলি কোথায় মেয়ে? ব্যালা যে যায়…..চান করবিনা ?”
পুন্নির মা, মিনতি পিসির আচমকা ডাকে পিলে চমকে গেল মাধুর। প্রায় আধঘন্টা হয়ে গেলো পুন্নিদের বাড়ির সামনে দড়মার বেড়ার পেছনে উবু হয়ে বসে, জামার কোচড়ে লাল, লাল টোপা কুল আর ঝালনুনের ডিবে নিয়ে অপেক্ষা করছিলো সে।
“খেলে যা, পুন্নি চান করতে চলে গেলে আজ আর দেখা হবেনা মোটেই। সারা দুপুর ধরে, লাল পিঁপড়ের কামড় খেয়ে টোপা কুল কুড়ানোই বৃথা ।”
গত দুইদিনও ঠিক একই জায়গায় এসে লুকিয়ে বসে ছিলো, একদিন বাগানের থেকে গাছপাকা জলপাই এনেছিলো খানকতক, আরেকদিন এনেছিলো দুটো কমলালেবু। কিন্তু পুন্নির পাত্তা নেই।
ওই তো, ওই তো পুন্নি বেরচ্ছে ঘর থেকে। বুক ভরা আশা নিয়ে মাধু এবার উঠে দাড়ায়, কিন্তু নাহ্, কোথায় কী! মহারানী পুন্নি মাথায় গামছা বেঁধে, বালতি হাতে সোজা রওনা দিলেন কলতলার দিকে। একবার কী এদিক-ওদিক দেখতেও নেই ! অনেক ভেবে, মাধু গলা বাড়ি্য়ে বেড়ার উপর দিয়ে তাকাতেই চোখাচুখি হলোতো মিনতি পিসির সঙ্গে।
“অ্যাই, কে রে? কে ওহানে ?”
শুকনো গলায় মাধু বললো,
“আমি মাধু, পুন্নি নেই পিসি ?”
“অ, তা পুন্নি নাই ঘরে অহন, চান করতে গ্যাছে কলতলায়। তা তুমি দিদি কী কত্তিছো ওহানে?”
আমতা আমতা করে বলে মাধু,
“পুন্নির জন্য কুল এনেছিলাম পিসি, আমি বসবো এখানে?”
“থাক দিদি, বড়মাইনসের গাছের বড়োই আমাদের প্যাডে হজম হবেনেগো । আমরা ছোটোজন, বড়লোকের সাথে মিতালী কইরা লাভ কী বলো দিদি! আবার কী বলতে কী নিয়া ঝগড়া কাজিয়া হইবো, তার কী ঠিক আছে ?”
ঘরের দাওয়া থেকে পুন্নির ঠাকুমা বললো,
“অ বৌ, কচি মাইয়াডারে ওসব কতা কস ক্যান ? পোলাপানের ঝগড়ায় তুই ক্যান নাক গলাস ?”
“রাখো ওইসব তোমার ছেলেভোলানো কতা, বড়মাইনসের লগে মিতালী কইরা কাম নাই …”
মিনতি পিসির পুরো কথা না বুঝলেও নিজের ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে মাধু বুঝলো যে আজ আর পুন্নির সাথে দেখা হচ্ছেনা। উপচে আসা কান্নাটাকে কোনোরকমে চেপে রেখে, কুল আর নুন সবকিছু মাটিতে ফেলে বাড়ির দিকে দৌড়োলো মাধু।
মাধু মানে মাধবী আর পুন্নি মানে পুর্ণিমা দুজনে গলায় গলায় বন্ধু। দুজনেরই বয়স পাঁচ বছর আর ওরা দুজনেই গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে ক্লাস ওয়ানে পড়ে ।
মাধুর বাবার নাম সুনীল বিশ্বাস। কুসুমন্ডী গ্রামে বড়ো বড়ো দুটো মুদীখানার দোকান ছাড়াও তার অনেক জমিজায়গা আছে, আর মা নয়নতারা বিশ্বাস মাধুর স্কুলেরই প্রধান শিক্ষিকা। কাজেই গ্রামের মধ্যে বেশ নামী পরিবার তাদের । ওদিকে পুন্নির বাবা নারায়ণ সেন মাধুদের দোকান দুটিতে হিসেব রাখার কাজ করেন আর মা মিনতি দেবী প্রাইমারী স্কুলের মিড-ডে মিল রান্না করেন।
মাধু-পুন্নির মিতালী নিয়ে মিনতির আপত্তি ছিলো বরাবরই। নিজের মেয়েকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেওছেন অনেকবার, কিন্তু ওইটুকু মেয়ের মাথায় ঢোকেনা এসব কথা।
মাধুরা বড়লোক তাতে পুন্নির বয়েই গেলো। মাধুর বাবার দোকানে পুন্নির বাবা কাজ করেন, তাই বলে পুন্নি আর মাধু একসঙ্গে দোলনায় বসে দোল খাবেনা ? কুলের আচারের বড়ো ভাগখানা নিয়ে ঝগড়া করবেনা ? তারপর মনে করো স্কুলে মাস্টারমশাই যখন পেছন ফিরে ব্ল্যাকবোর্ডে লেখেন, তখন যদি মাধু হঠাৎ করে পুন্নির ঝুঁটি ধরে টানে, তবে কী পুন্নি তাকে ভেংচি কাটবেনা ? মা কী যে ভাবে বোকার মতো !
দুই বন্ধুর দিন কাটে একই সঙ্গে। দুপুরবেলা স্কুল শেষ হয়ে গেলে, মাধু-পুন্নিকে একসঙ্গে দেখা যায় বকুল গাছের তলায় বকুল ফুলের মালা গাঁথতে কিংবা আশ্রমের পোষা কুকুরছানা ভুলুর সঙ্গে খেলা করতে। খেলা বা দুষ্টুমি যাই হোকনা কেন, দুইজন সাথে থাকে সবসময়।
এহেন মাধু-পুন্নির মধ্যে খুব ঝগড়া হয়ে গেলো এবার। মানে, ছোটোখাটো ঝগড়া তো প্রতিদিনই হয়, কিন্তু এবারের ঝগড়াটা হলো একটু বড়ো রকমের।
বুধবার স্কুল থেকে ফেরার পর হাতমুখ ধুয়ে দুজনেই বেরিয়েছিলো পুলক কাকুর বাগানে টোপাকুল কুড়োতে। টোপাকুল কুড়োতে কুড়োতে পুন্নির ঠাকুমার বানানো নতুন ছড়া নিয়ে হাসাহাসিও হলো অনেক,
“ লক্ষ্মী পক্ষী ডাবরের ঘি,
পুন্নিরে বিয়া দিয়া করলামডা কী?”
এরপরের দুটো লাইন অনেক ভেবেচিন্তে মাধু বানালো, তাতে সম্পূর্ণ ছড়াখানা হলো এরকম:
“লক্ষ্মী পক্ষী ডাবরের ঘি,
পুন্নিরে বিয়া দিয়া করলামডা কী?
আগে যদি জানতাম,
পুন্নির টিক্কি ধরে টানতাম।”
এই নিয়ে হাসাহাসি হলো অনেক, তারপর তারা দুজনে মিলে ঠিক করলো আশ্রমের বাগানে পাকা তেঁতুল কুড়োতে যাবে। পুন্নি অবশ্য একটু কিন্তু কিন্তু করছিলো । আসলে আজকে মায়ের কাছে আবদার করে সে তার সাধের মিকি মাউস্ আঁকা নীল জামা পরে খেলতে বেড়িয়েছে। ওদিকে আশ্রমের তেঁতুল বাগান শেঁয়াল কাঁটায় ভরা। কাঁটায় লেগে জামা ছিঁড়লে কপালে দুঃখ আছে তার। একটু ভেবে পুন্নি ঠিক করলো জামাটা ধরে থাকলেই হবে।
সেই কথামতো দুই বন্ধু গিয়েছিলো আশ্রমের মাঠে। খান পাঁচেক তেঁতুল কুড়োনোর পর পুন্নি ভুল করে একটা শুয়োপোকা কুড়িয়ে ফেলে। আঙুলে কাঁটা লাগতে সে এদিক ওদিক কিচ্ছুটি না দেখে শুয়োপোকাটাকে ছুড়ে ফেলে পেছনে। পোকাটা গিয়ে সোজা পড়ে মাধুর ঘাড়ে। আর পোকাটা লাগা মাত্রই বাঁদিকের ঘাড়ের ওখানে লাল হয়ে ফুলে ওঠে মাধুর । ব্যস্ এই নিয়েই ঝগড়া শুরু।
মাধু ভাবলো পুন্নি ইচ্ছে করে পোকাটা তার গায়ে ফেলেছে। তাতে পুন্নির খুব রাগ হয়, আর রাগ করে সে সবটুকু কুড়োনো তেঁতুল ফেলে দেয় কাদায়। মাধু চেষ্টা করছিলো আটকাতে। টানাটানিতে মাধুর ধাক্কা লেগে পুন্নিও গিয়ে পড়লো কাদায়। মিকি মাউস্ জামার দফারফা একদম।
কাদায় মাখা জামাটার দিকে তাকিয়েও কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিলোনা পুন্নির, তার প্রিয় বন্ধু মাধু এরকম করলো তার সাথে! মা বকবে আর তার থেকেও বেশী দুঃখ হলো আর একটাও ভালো জামা নেই তার, আবার সেই পুজো অবধি বসে থাকো এবার। ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছিলো পুন্নি।
ওদিকে পুন্নির জামার অবস্হা দেখে কিছুক্ষণ বোকার মতো হাঁ করে দাঁড়িয়ে ছিলো মাধু। অপরাধ বোধ, মন খারাপ আর রাগ তিন মিলে কী করবে বুঝতে না পেরে সে পুন্নিকে ফেলে রেখেই পাগলের মতো ছুটতে ছুটতে এসে পড়ে নিজেদের গোয়াল ঘরের পেছনে। চোখের জল আর নাকের জল একাকার ততক্ষণে। আহারে পুন্নির ওই একটাই ভালো জামা ছিলোগো। মনের দুঃখে আর কিছু না পেয়ে গোয়াল ঘরের পেছন থেকে কাদা তুলে নিয়ে সেও গায়ে মাখলো খানিকটা। কিন্তু তাতেও কষ্ট মেটে কই ?
তিনদিন আগে এই নিয়ে ঝগড়া হয়েছিলো শুরু। তারপর থেকে মাধু কতো চেষ্টা করছে পুন্নির সাথে একবারটি দেখা করার জন্যে। কিন্তু পুন্নির সাথে কথা আর হয়না। স্কুলে গেলে পুন্নি তার থেকে দুরে দুরে পালিয়ে থাকে। এমনকি তার পাশে না বসে আজকাল সে বসছে মামণি আর পুতুলের পাশে। কষ্টে বুক ফেটে যায় মাধুর। কিন্তু মুখে এমনি ভাব দেখায় যেন কিছুই হয়নি।
পাকা জলপাই, তেঁতুল, বকুল ফুলের গাছ, কুকুরছানা ভুলু সবকিছু থেকেও কিচ্ছুটি নেই যেন এখন মাধুর কাছে। সন্ধ্যেবেলা হরির লুট দিতে গিয়ে স্বভাবমতো পুন্নির জন্য দুটো নকুলদানা বেশী চেয়ে নেওয়ার পর মনে পড়ে পুন্নি তো নেই তার সাথে। বাড়ির কাশী পেয়ারার গাছে ঝুলতে থাকা পেয়ারা গুলো দেখেও কান্না পায়; পুন্নি কী ভালোই না বাসে ওই পেয়ারা খেতে। মাধু আর ভেবে কুলকিনারা পায়না, কী করলে ঠিক হবে আবার সবকিছু। যতদিন যায়, তার বন্ধু বুঝি আরও দূরে চলে যায়।
মাধুর মা নয়নতারা গত দুতিনদিন ধরে লক্ষ্য করছিলেন যে মেয়ে সবসময় মন খারাপ করে, শুকনো মুখে ঘুরে বেড়ায়। যে মাধু এমনিতে দিনরাত পায়রার মতো বকমবকম করতে থাকে, সেই মেয়েই এখন বোবা চোখে তাকিয়ে থাকে এদিক ওদিক। প্রথমে ভেবেছিলেন বাচ্চার খেয়াল, কিন্তু দু-তিনদিন পরেও অবস্হা একইরকম দেখে চিন্তায় পড়লেন তিনি।
রবিবার সকালে জলখাবার খেতে বসে মাধুকে কোলে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন নয়নতারা,
“মাধু কী হয়েছে তোমার, সবসময় মন খারাপ কেন দেখি তোমার?”
মুখে লুচি আর সন্দেশ পুরে চুপ করে বসে ছিলো মাধু । খেতে ইচ্ছে করছিলোনা মোটেই, কিন্তু বাবাও পাশে বসে আছে। সেই ভয়ে লুচির মধ্যে সন্দেশ জড়িয়ে একটু একটু করে খাচ্ছিলো সে। মায়ের কথা শুনে ভেতরের কষ্ট লুকিয়ে রাখা গেলোনা আর। সন্দেশ মুখেই ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেললো সে।
কোনোরকমে কান্না থামিয়ে মেয়ের মুখ থেকে সবকিছু শোনার পর নযনতারা চুপ করে রইলেন কিছুক্ষণ। মাধুর কান্না একেবারে থামলে নয়নতারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
“বলো তো মাধু, তুমি কী অন্যায় করেছো এখানে ?”
“পুন্নির নতুন জামায় কাদা লাগিয়ে দিয়েছি ভুল করে।”
“তা তো ভুল করে হয়েছে। কিন্তু অন্যায় তুমি করেছো বন্ধুকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে। পুন্নি যখন পড়ে গিয়েছিলো তখন তুমি পালিয়ে না গিয়ে যদি পুন্নির কাছেই থাকতে, তবে কিন্তু তোমার বন্ধু এত দুঃখ পেতনা।”
“ কিন্তু মা, পুন্নি যে রাগ করেছিলো তখন !”
“ তুমি তখন কাছে থাকলে হয়তো পুন্নির সাথে আরেকটু ঝগড়া হতো তোমার, কিন্তু পুন্নি কক্ষোনো দুরে চলে যেতনা তোমাকে ছেড়ে।”
মায়ের কাছে মন খুলে সবকিছু বলে কষ্টটা একটু কম হয়েছিলো মাধুর। দুপুরবেলা রঙপেন্সিল দিয়ে খাতার পাতায় ছবি আঁকছিলো সে। হঠাৎ, পাশের ঘর থেকে বাবা বললো,
“মাধু, তৈরী হয়ে নাও, এক জায়গায় যেতে হবে।”
মাধু চটপট একটা ভালো জামা পরে, চুল আঁচড়ে তৈরী হয়ে নিল। এই দুপুরবেলা আবার কোথায় নেমন্তন্ন খেতে যেতে হবে কে জানে? মা তো একটু আগেই তাকে খাইয়ে দিলো। তাহলে ?
বাইরে বেরিয়ে সে দেখলো মা বাইরে দাঁড়িয়ে নারায়ণ কাকু আর বাবার সাথে কথা বলছেন। বাবার হাতে একটা বড়ো কাগজের প্যাকেট। মাধুকে দেখে নারায়ণ কাকু বললেন,
“এই তো, মাধু দিদিমণিও এসে গেছে। এবার চলুন তবে রওনা দেওয়া যাক।”
দরজায় তালা দিয়ে, দুগ্গা দুগ্গা বলে সবাই মিলে বেরোলো তারা বাড়ির থেকে। মাধুর বুক ঢিপঢিপ করছিলো। তাও মা সাথে আছে, তাই ভরসা।
পুন্নিদের বাড়ির উঠোন পেরোনোর আগেই নারায়ণ কাকু জোরে হাঁক দিয়ে বললেন,
“ওরে পুন্নি, আর মন খারাপ করে থাকিসনি। দ্যাখ কারে নে এয়েছি…..”
পুন্নি বাইরে বেড়িয়ে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলোনা। ওই তো তার বন্ধু মাধু দাঁড়িয়ে আছে। মাধু তবে ভুলে যায়নি তাকে।
নয়নতারা দুই বন্ধুকে একসাথে ডেকে কাগজের প্যাকেটটা তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
“ এই নাও, দুজনের জন্য কার্টুন আঁকা নীল জামা দুটো। আর কোনো ঝগড়াঝাটি, কান্নাকাটি নয়, আজ থেকে পড়াশোনা আর খেলাধূলোয় মন দাও আবার।”
মিনতি অপরাধী মুখে একটু দূরে দাড়িয়ে ছিলেন। নয়নতারা মাধু আর পুন্নিকে নতুন জামা পরতে পাঠিয়ে মিনতির কাছে গেলেন এবার। কিন্তু তিনি কিছু বলার আগেই মিনতি নিজেই অপরাধী গলায় বললেন,
“আমারই ভুল গো দিদিমণি, ক্ষমা কইরা দ্যান। মাধুদিদিরে অমনি বলাডা উচিত হয় নাই আমার সেদিন। পুন্নির মুখ দ্যেইখ্যা থাকতে পারছিলাম না আর। কিন্তু মাধুদিদির কাছে যাই বা কোন মুহে?”
নয়নতারা বললেন,
“ মাধু তোমার মেয়ের মতো মিনতি, তার কাছে ক্ষমা চাইবার প্রয়োজন নেই তোমার। তুমি আর নাড়ু ঠাকুরপো দুজনে মিলে দিনরাত পরিশ্রম করে তোমাদের সংসারটাকে এত সুন্দর সাজাচ্ছো, এতো গর্বের কথা। এখানে ছোটোবড়োর কথা আসছে কেন? আর গরীব-বড়োলোক এসব কথা কী শিশুদের সামনে না বললেই নয়?”
মিনতি নিজের ভুল বুঝে অপরাধী চোখে তাকিয়ে রইলেন মাটির দিকে। নয়নতারা তার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বললেন এবার,
“বাইরেই দাঁড় করিয়ে রাখবে আমাদের, চা খেতেও ডাকবেনা নাকী?”
লজ্জায় জিভ কেটে সঙ্গে সঙ্গে রান্নাঘরে দৌড়লেন মিনতি।
পুন্নি আর মাধু ততক্ষণে ঝগড়া-কান্নাকাটি সব ভুলে আবার ভাব করে নিয়েছে। দুজনের বকবকানিতে বাকী সবার প্রায় কানে আঙুল দেওয়ার অবস্হা হলো আবার। গত তিনদিনের জমানো গল্প একসাথে বলার চেষ্টা করলে যা হয় আরকীস।
রকম-সকম দেখে পুন্নির ঠাকুমা ছড়া কাটলেন আবার “পুন্নি-মাধু বন্ধু দুজন
পদ্মপাতায় জল।
দস্যি মিঠে দখিন হাওয়ায়।
মুকুতা টলোমল।”