বিয়ের দুই বছর যেতে না যেতেই আপু আর দুলাভাইয়ের সম্পর্কে ফাটল ধরে। প্রায় প্রতিদিন রাতেই দুলাভাই বিনা কারনে আপুর ওপর নানানভাবে শারীরিক ও মানসিক টর্চার শুরু করে। যার মূল কারন ছিল, দুলাভাইয়ের জীবনে নতুন একজনের আগমন। অর্থাৎ, আপু আর দুলাভাইয়ের সংসারে তৃতীয় বা অনাকাঙ্ক্ষিত একজনের আবির্ভাব। যা আপুর সুখের সংসার একদম দুমড়ে মুচঁড়ে দেয়।
চার বছর প্রেম করে তারা দু’জন পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করলেও খুব শীঘ্রই তাদের সম্পর্কে ভালোবাসা আর বিশ্বাসের ঘাটতি ঘটতে থাকে। যার কারন ছিলো দুলাভাইয়ের উচ্ছৃঙ্খল স্বভাব আর সন্দেহপ্রবণ আচার আচরন। যা আপু কখনও মেনে নিতে পারেনি। আর নানান অত্যাচার সয়েও ফাইনালি যখন দুলাভাইয়ের জীবনে অন্যকারও আগমন আপু বুঝতে পারে, তখন আর আপু এই লজ্জাজনক বিষয় তার ধৈর্যের বাধেঁ বেধেঁ রাখতে সক্ষম হতে পারেন নি। আর সহ্য করতে না পেরে সব মায়া কাটিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় আপু। কারন, সম্পর্কের টানাপোড়নের চেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়াটাই তখন আপুর কাছে বেশি সহজ বলে মনে হয়েছিলো।
-সত্যি বলতে, দুনিয়ার সবচেয়ে জটিল আর গোলমেলে বিষয় হলো এই সম্পর্ক। যার সমীকরণ মেলানো খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। যা পুরো জীবনের গল্প’ই পাল্টে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।
আর এই একজন আরেকজনের সম্পর্কে যখন অনাকাঙ্ক্ষিত কারও আগমন ঘটে, তখনই সে সম্পর্ক ঘিরে তৈরী স্বপ্নগুলো অতিসহজেই মধ্যরাতের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। তখন আর জীবনের আসল মানে খুঁজে পাওয়া যায় না। সম্পর্কের টানাপোড়নে আপু যে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলো তা তো কোনো কিছুর সমাধান এনে দিতে পারলো না। দুলাভাই আর তৃতীয়জন তো দিব্যি হেসে-খেলে জীবন কাটিয়ে যাচ্ছে। ভুলটা আমাদের সেখানেই হয়, অন্য কারও মায়া ত্যাগ করতে গিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে বসি। দিনশেষে যা কোনো সমাধান তো এনে দিতে পারেই না, বরং ব্যাপারটা আফসোসের হয়ে দাড়াঁয়।
তাই আমাদের নিজেদের পাশাপাশি সম্পর্কটাকেও মূল্য দিতে হবে। জীবনের মানে বোঝার সাথে সাথে সম্পর্কেও মানেটাও বুঝতে হবে। আর সম্পর্কে কোনো তৃতীয় ব্যক্তি বা অনাকাঙ্ক্ষিত কারও আবির্ভাব ঘটার সুযোগ না দিয়ে নিজের সম্পর্কটাকে নিজেদেরই আকঁড়ে ধরে রাখতে হবে। তবেই তো এই অনাকাঙ্ক্ষিত অভিশাপ থেকে নিজেকে,নিজের প্রিয় মানুষটাকে আর নিজেদের সম্পর্কটাকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প