কিছু সময় পরপর ফোনের প্যাটার্ন লক খুলে চাপাচাপি করে রেখে দিচ্ছি। পাশের সিটে বসা আংকেল কয়েকবার লক্ষ্য করে বলে উঠলো, ওয়ালপেপারে মেয়েটা কী হয় তোমার? আমি বললাম, কেউ না। উনি ভাবলেন আমি রাগ করে বলছি। তাই নিজেকে মেলে ধরে বললেন, আমাদের সময় তো এভাবে ফোন ছিল না, আমি তার ছবি সবসময় মানিব্যাগে রাখতাম। কী যে হিম শীতল এক প্রশান্তি লাগত ছবিটা বের করে দেখার পর। আংকেল, আমি রাগ করি নি। ও সত্যিই আমার কেউ হয় না। একপাক্ষিক ভালোবাসা বলতে পারেন।
সে জানে ব্যাপারটা?
জানে কিন্তু মানে না। জানে ভালোবাসি কিন্তু সেটার গভীরতা সম্পর্কে এক ইঞ্চিও ধারণা নেই। দেখলে তো, যা একটু আগেও বলতে চাও নি সেটাই গরগর করে বলে দিচ্ছো এখন। এটাকে বলে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। মানে? আমি বানিয়ে বানিয়ে আমার মিথ্যে ভালোবাসার গল্প না বললে তুমি তোমার ভালোবাসার কথাটা বলতে চাইতে না। তাই এ গল্প বললাম কী লাভ হলো তাতে? নাহ, এখনকার ছেলেমেয়েরাও এভাবে ভালোবাসতে জানে এটা জেনে খুব আনন্দ হচ্ছে। সবাই তো জেনারেশনকে ধুয়ে দিচ্ছে। এরা ফাত্রামি করে প্রেম ভালোবাসার নামে, ভালোবাসার কিচ্ছু বুঝে না। খুশি করার জন্য বলছেন?
একদম না। তুমি সত্যিই ভালোবাসো তো মেয়েটাকে? কাউকে ভালো না বাসলে তার চেহারা বারবার দেখার ইচ্ছে হয় না। আর অপরিচিত কাউকেও বুক ফুলিয়ে বলা যায় না। ও ভালোবাসে না তবুও এসব কেন করে যাচ্ছো… পাগলামো মনে হয় না? পাগলামো না করলে ভালোবাসা জমে নাকি! একপাক্ষিক ভালোবাসা হলো নীরবে বয়ে চলা নদীর মতো যেখানে কূলও টের পায় না। বাহ্, ভালো বলছো ও হয়তো এ জীবনে জানবে না, বুঝবেও না কিন্তু আমার রাত জাগা আবেগ, একা ছাদের আকুলিবিকুলি আর ভালোবাসার সাজানো পসরা নিশ্চয়ই তাতে মিছে হয়ে যাবে না।
খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারো দেখি। মেয়েকে চিঠিতে লিখে জানাও এসব সে আমার কিছুই গ্রহণ না করার ব্রত গ্রহণ করেছে। আরেহ সেটা সমস্যা না। চিঠি আমি দিয়ে আসবো। আপনি? হম, আমি। ভাবছি, তুমি একা যেহেতু পেরে উঠছো না এবার আমার মেয়ের প্রেমের ঘটকালিটা আমাকেই করতে হবে। ঠিকাছে ডিয়ার প্রেমিকপুরুষ, এখানেই নামতে হচ্ছে আমাকে, বাসায় এসো। আর হ্যাঁ, আমার ভালোবাসার গল্পটা বানোয়াট নয়..
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প