নাঈম এবং নাফিসের বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকে ,তারা একসঙ্গে খেলাধুলা করতো ,মাছ ধরতো , ছোট বেলা সকল খেলাদোলা থেকে শুরু করে এমনকি রাতের আকাশের চাঁদ দেখতো ,আকাশের চাঁদ দেখতে দেখতে নাঈম ,নাফিসের কোলে শুয়ে পড়ে জীবনের নানা স্বপ্নের কথা বলত , নাঈম অসুখ হলে আসিফ কষ্ট পেতো, যেন তারা মনে করত এক পাত্রের জল নিজেদেরকে, এভাবে নাঈম এবং আসিফ আস্তে আস্তে বড় হলো। তারা নিজরা খুব সুখী পরিবারের সন্তান , তারা উভয় কলেজে ভর্তি হলো ! কলেজে ভর্তি হয়েই নাঈম পরিবর্তন হতে লাগলো ,আগের মতো আসিফ আর নাঈম সাথে কথা বলেনা ! ঐ দিকে নাঈমের পরিবারে আর্থিক অবস্থা অবনতি হতে লাগল , আস্তে আস্তে তার পরিবার নিম্নমধ্যবিত্ত হয়ে গেল । আসিফ তা খুব ভাল করে জানে । তাতে কোন খোজ খবর নিল না তবু নাঈম সব ভুলে তার পবিত্র বন্ধুত্বকে টিকে রাখার চেষ্টা করল । নাঈম মনে কষ্ট নিয়েও ভালবাসতে থাকল । নাঈম কিছুতেই আসিফকে সাথে মনমালিন্য ব্যবহার না করে বার বার আসিফের বাড়িতে যায় ,ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে .কিন্তু আসিফ তাতে কান দেইনা ! নাঈম ,আসিফকে প্রচন্ড ভালোবাসতো কিন্তু আসিফ নাঈমের সেই বন্ধুত্বের ভালোবাসাকে বার বার প্রত্যাক্ষান করে ! তাই,, নাঈম একদিন আসিফের কাছে গিয়ে বলল,, আমি একজন শেষ্ট বন্ধু হিসাবে তোকে অনেক ভালোবাসি রে .তুই আমার কাছে বন্ধুর থেকেও অনেক বেশি কিছু ! তুই আমাকে এতো অবহেলা করিস না রে ! আমি আর একা একা বাঁচতে পারছিনা !তুই কেনো তা বুঝতে পারছিস না ! তোর খারাপ লাগবে বলে আমি তোকে ফোন করিনা ,তোর খারাপ লাগবে বলে আমার কথাগুলো শোনার অনুরধও করিনা । কিন্তু আজ অনুরোধ করছি আমার কথাগুলো শোনার জন্য । কারণ আমি আর থাকতে পারছিনা, ঠিকমত খেতে পারছিনা যেদিন থেকে তুই আমার সাথে আর কথা বলিস না সেদিন থেকে ঘুমোতে পারছিনা ঘুমোবার সময় তোর কথা ভাবতে ভাবতে চোখে জল চলে আসে শুধু ভাবি মানুষ এত সকাল কিভাবে সব বির্সজন দিতে পারে, তুই কেন বুঝতে পারিস না আমি তোকে কতটা ভালোবাসি তোর মনে কি আমার জন্য একটুও জায়গা নেই,,, আসিফ কিছু না এক গোচ্ছ ছেলের সাথে একটি রেস্টুরেন্টের দিকে চলে গেলো ,তখন নাঈম বুঝতে পারলো আসল কারন এইটাই ,কিন্তু আমি তো তোকে কার ও সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করিনি ,বাঁধাও দেইনি তাহলে কেনো এমন করছিস ? নাঈম মনে মনে বলতে থাকে ! কয়েকদিন পর ! নাঈম আবার আসিফের কাছে গেলো এবং বলল, তোকে ছাড়া আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে দোস্ত তুই আমার ছোট কালের সাথী,তাই বারবার তোর কাছে ছুটে আসতে ইচ্ছে করে,,তোর সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে আসিফ বলল, আমার সঙ্গে এইসব নাটক করা বাদ দে ! নাঈম বলল,,আমার মুখের কথা মিথ্যে হতে পারে,,,কিন্তু এই চোখের জল মিথ্যে নয় আর নাটকের কথা বলছিস তো,ঠিকআছে তোকে ছোট বেলা থেকে ভালোবেসে যাওয়া যদি নাটক হয় তো এই নাটক আমি সারাজিবনের জন্য করে যাব,তুই আমার বন্ধু , আর একটা কথা আমার এই চোখের জল একদিন তোকেও কাঁদাবে আর সেদিন হইতো আমি আর থাকবনা (তার আর বুঝতে দেরি হলনা যে অর্থ মানুষকে পিচাশ করে ) একদিন রাত্রে,, আসিফ নাঈমকে ফোন করলো , নাঈম খুব খুশি হলো ,তাঁর চোখ দিয়ে খুশির অশ্রু ঝড়তে থাকলো , নাঈম খুশি হয়ে বলল,, তুই আমাকে ফোন করেছিস এটাকি সত্যি নাকি স্বপ্ন ! আমি খুব খুশি হয়েছি,আসিফ বললো,, তুই যদি আমাকে সত্যি ভালোবেসে থাকিস ,বন্ধু ভেবে থাকিস ,তাহলে আমার একটা কথা রাখবি ? নাঈম বললো হ্যাঁ রাখবো ! আসিফ বললো, তুই আমাকে ভুলে যা আর আমি চাই তুই কখনও আমায় ডাকার চেষ্টা করবিনা কারন আমার বন্ধুত্ব চাইনা তোর সাথে আমি কথা বলি নাঈম বললো ঠিক আছে,তবে তোকে আমি আর একটি বার দেখতে চাই আসিফ বললো বল কখন ? নাঈম বললো কাল সকাল ১০টার সময় কলেজের বড় বটগাছটার কাছে ! আসিফ বললো ঠিক আছে আমি আসব ! পরের দিন আসিফ সেখানে গিয়ে দেখে নাঈম সেখানে একটা বড় কাগজে রক্ত দিয়ে লেখা আছে “”””আজ আমি ভিষন খুশি কারন আমার প্রিয় মানুষটির দেওয়া কথা আমি রাখতে পেরেছি””””””” আর সেখানে একটি ছোট্ট চিঠিও ছিলো যেটিতে লেখা ছিল,,,,, দোস্ত তুর সাথে বন্ধুত্ব করে আমার শিক্ষাহল যে , ধন-সম্পদ, সৈৗন্দর্য আর ক্ষমতার কাছে মানুষ সব কিছু বলি দিতে পারে ।অর্থ তুকে এত পিচাশ করেছে যে তর মানুষ্যত বিলুপ্ত হয়েগেছে । আমি চেয়েছিলাম তর মনের ক্ষত দুর করতে কিন্তু তুর অহংকার তর সকল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়াছে। এখন থেকে দরিদ্র হলেও আমি আমার মত চলব। মনে রাকিছ তর আমার কৃতকর্ম আমারা ভুলে গেলেও প্রকৃতি অমর করে রাখবে। বললি ছেড়ে যেতে ,তাই চিরদিনের জন্যে চলে গেলাম রে , আল্লাহ তোমাকে সুখে রাখুক এই প্রার্থনা করি।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প