আজ সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। আকাশটা কালি গোলা মেঘের মত হয়ে আছে। কুমুদিনি টী স্টেটটাকে কেমন বুড়ো জুবুথুবু লাগছে। দোকানের দিকে গুটি গুটি পায়ে ছাতা নিয়ে এগুচ্ছি, পেছনে গোপাল
ডাকল-
-দাদা চা খাইতেন্নি, টাটকা লোফ আছে।
এখানকার স্থানীয় লোকজন রুটিকে লোফ বলে। সম্ভবতঃ বিলেত থেকে এসেই এই শব্দটা অজ পাড়া গাঁয়ে খুঁটি গেড়েছে।
সকাল সকাল কেন যেন কিছুই ভালো লাগছে না। বসে পড়লাম গোপালের দোকানে। টিনের বর্ধিত ছাউনির নীচে বেঞ্চিতে যদিও বৃষ্টির ঝাপ্টা আসছে এলো মেলো
বাতাসে, তবুও কেন যেন বসে থাকতে ভালোই লাগছে। খুব গরম চা নয় কিন্তু কয়েক চুমুক দিতেই মাথা ভার ভার ভাবটা কেটে গেল। ভাদ্র মাসের গুমোট ভেজা হাওয়ায়
কেমন মন হুহু করা ভাব। গোপাল যত্ন করে স্বচ্ছ পলিথিনে মোড়া “দৈনিক সিলেটটা” দিল। হেড লাইনটা শেষও করতে পারিনি, হঠাৎ রফিক মিঞা আর তার বউয়ের
কান্না শোনা গেল। বুকের ভেতরটা ধ্বক করে উঠল। আবার কি হল? দুবছর আগে এ বাড়িতে এভাবেই কান্নার রোল উঠেছিল। আবার কি হল? গোপাল বলল, যাইবেন্নি?
ও টিনের খুপ্রি থেকে লাফ দিয়ে নেমে আসে। আমরা দুজনেই বাংলো বাড়িটার দিকে এগিয়ে যাই। সব শেষ!!! দুবছর ধরে মেয়েকে খুঁজতেখুঁজতে ক্লান্ত হয়ে শেষ চোখ
বুজেছেন, সাদা ম্যাডাম। আহারে! বিছানায় মলিন রজনীগন্ধার মত নেতিয়ে আছেন। আমার দু চোখ বেয়ে নিজের অজান্তেই জল গড়িয়ে নামল। এমন করুণ মৃত্যু
আমি দেখি নাই। মৃতদেহের পাশে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে, মহিলার বিশ্বস্ত দুই সঙ্গী টম আর টাইগার। টম এবং টাইগার দুজনের চোখ দিয়েই জল ঝরছে। খুব কাছে
থেকে দেখলে বোঝা যাবে ওরা দুজনও মৃত। খুব নিঃসঙ্গ এবং অসহায়একজন মানুষ, এভাবে চলে গেলেন? কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। মনে হয় এই তো সেদিনের
কথা। এই জায়গাটার নাম হাবুয়ার বাজার। এখানেই আমার দোকান। আমার দোকান থেকে ৫০০ গজ সামনে গেলে কুমুদিনি টী স্টেট। টী স্টেটের পাশ দিয়ে চলে গেছে
একটা সরু পাকা রাস্তা। রাস্তাটা চলে গেছে সামনের টিলাটার বাঁক ঘেঁষে। ঠিক যেখানে বাঁক নিয়েছে পথটা তার পাশে টিলাটার কোল ঘেঁষে একটা ছোট্ট বাংলো মত বাড়ি
আছে। সেই বাংলো বাড়িতে নতুন মানুষ এসেছে। রকমারি মুদির দোকানদার হিসেবে আমার পাড়ার সব খবরই রাখতে হয় কিম্বা বলা চলে- খবর কানে চলে আসে। এই
খবরটাও যথারীতি এসেছে। তার মধ্যে নির্জন বাংলো বাড়িতে একজন মাঝ বয়সী সুন্দরী বিদেশীনি সাদা চামড়ার মহিলা এবং তার অতীব সুন্দরি একমাত্র কন্যাকে নিয়ে
একা থাকেন। এটা এ পাড়ায় এখন গরম খবর। বাড়িটা রইসুদ্দীন আহমেদ চৌধুরীর বড় ছেলে রাফিয়ান আহমেদ চৌধুরী বানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ থেকে ৩০ বছর এই
বাড়িটা বন্ধই ছিল কারণ ৩০ বছর ধরে রাফিয়ান আহমেদ চৌধুরী বিলেতে থাকেন। কেবল এক বুড়ো কেয়ারটেকার রফিক মিঞা আর তার স্ত্রী এবং বিধবা মেয়ে
বাড়িটার সব দায়িত্বে আছে। সেই বাড়িতে ৩০ বছর পর হঠাৎ রাফিয়ান আহমেদের বিদেশী স্ত্রী তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে পাকাপাকি ভাবে চলে এসেছেন, ওই বাড়িতে
এখন আলো জ্বলেছে। মানুষ থাকছে, এটা একটা খবরই বটে!! সেদিন মহিলা এসেছিলেন, আমার দোকানে টুকিটাকি কিনতে- সন্ধ্যার দিকে। লঙ স্কার্ট আর সাদা টি
শার্টে নরম মোমের মত দেখাচ্ছিল তাকে। ইলেক্ট্রিসিটি ছিল না বলে, হাতে ছিল একটা পাওয়ারফুল টর্চ আর সাথে ছিল দু দুটো কুকুর। একটা জার্মান শেফার্ড এবং
আরেকটা এলসেশিয়ান। দুটোই দেখতে ভয় জাগানো। অন্ধকারে দুই জোড়া চোখ যেন ইটের ভাটার মত জ্বলছিল। বাপরে! দেখে আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
কথা-বার্তা বিশেষ হয়নি। মহিলা বেশ রাশভারি।
-ম্যাডাম এখানে নতুন এসেছেন?
-হুম
-কুকুর দুইটা কি বিদেশ থেকে আনা?
– হুম।
-ম্যাডাম, আপনে তো সুন্দর বাংলা বলেন।
-স্বামীর কাছে থেকে কিচু কিচু শিখেছি।
-আচ্ছা ম্যাডাম, স্যার ফিরবেন না এদেশে?
– না। খুব সংক্ষেপে এবং গম্ভীরভাবে বলে বেরিয়ে গিয়েছিলেন দোকান থেকে।
বছর তিন হয়ে গেল, সাদা ম্যাডাম মেয়েকে নিয়ে একাই আছেন। খুব একটা আত্মীয় স্বজন আসেনা এ বাড়িতে। বিদেশিনী বলে, পাড়া প্রতিবেশীদের তুমুল আগ্রহ থাকা
সত্বেও কেঊ তাকে সহজে ঘাঁটায় না। ম্যাডাম তার বাংলো বাড়িটাকে অপরূপ করে তুলেছেন। লনে কেয়ারী বাগান নিজের হাতে পরিচর্চা করেন। বাগানের মধ্যে বেতের
চমৎকার দুটো চেয়ার পাতা। মা-মেয়ে সেখানে বসে রোজ বিকেলে চা খান। সেটা দেখতে আমার আর গোপালের দোকানে অনেকেই ভিড় জমায়। ম্যাডামের ইচ্ছায়
বাংলোকে ঘিরে রাখা কোম্র সমান পাঁচিলটাকে আর উঁচু করা হয়নি বলেই, পাড়া-প্রতিবেশীদের গায়ে পড়ে অন্যের ব্যাক্তিগত ব্যাপার জানার তৃষ্ণাটা বেশ মিটে যায়।
আজকাল গোপালের চায়ের দোকানে উঠতি যুবকদের বেশ ভিড় জমে। কারণটা বুঝতে পারি। রোজ ম্যাডামের মেয়ে সুবল দাশের স্কুটারে করে কলেজে যায়। রফিক
মিঞার পছন্দের লোক, বিশ্বস্ত সুবল দাশ –ছোট মেমকে আনা নেওয়া করে। মেয়েটা যখন বাড়ি থেকে বের হয় এবং যখন বাড়ি ফেরে তখন এই বাজারের মোড়ে মোড়ে
উঠতি বয়সী ছেলেপুলেদের ভিড় চোখে পড়ার মত বেড়ে যায়। প্রায় বিকেলে মা আর মেয়ে যখন কুমুদিনি টী স্টেটের পাশের রাস্তাটা দিয়ে বিকেলে হাঁটতে বের হয়,
তখন পাড়ার বৌ ঝি এবং ছেলেপুলেরা অনেকেই জুটে যায়। কেবল টম আর টাইগারের ভয়ে কেঊ ওদের বেশী কাছাকাছি ঘেঁষে না। মা-মেয়েকে যখনই দেখা যাক না
কেন? দুজনকেই বেশ হাসি খুশী দেখা যায়। হাসলে দুজন কে অপরূপ লাগে। ওয়ার্ড কমিশনারের ছেলে পপলু বেশ নাম করা মাস্তান এখানে। ক’দিন সুবলের স্কুটারের
পেছনে পেছনে হোণ্ডা নিয়ে ঘুরল খুব। কলেজ গেটে দাঁড়িয়ে মেয়েকে বিরক্ত করা, এখানে ওখানে স্কুটার থামিয়ে ছোট মেমকে বিরক্ত করা পপলু আর তার সাঙ্গ
পাঙ্গদের একটা নিত্য-নৈমিত্তিক কাজ হয়ে গেল। সুবল এসবে বাধা দিত বলে, তাকে একদিন পেটালো খুব। সাদা মেম স্থানীয় মুরুব্বী এবং পপলুর বাবাকে বিষয়টা
জানাতে, ব্যাপারটা আরো হিতে বিপরীত হয়ে গেল। গত পরশুদিন পপলু তার আরো চার জন সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে সাদা মেমকে তার বাংলোবাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে
শাসিয়ে গেল। কেউ ভয়ে একটা টু শব্দ করেনি। রইস আহমেদ চৌধুরী মারা গেছেন অনেক বছর হল। তার জ্ঞাতি গুষ্ঠি সবাই বিলেত থাকে। দেশে রাফিয়ান চৌধুরীও
নাই। সাদা মেমের পাশা দাঁড়ানোর মত হয়ত কেউ ছিল না। নইলে কেউ পুলিশকে খবর দেয়? পুলিশ বেশ কিছু দিন পাহারা দিল, বাড়ির সামনে। তাতে পরিস্থিতি কিছুটা
নিয়ন্ত্রনে এলেও সব কেমন যেন থমথমে হয়ে রইল। একদিন রফিক মিঞার মেয়ের কাছে খবর পেলাম, সাদা মেম তার মেয়েকে নিয়ে বিলেত ফিরে যাবেন। যেদিন
বিলেত যাবেন বলে তারিখ ঠিক করেছিলেন, তার দুদিন আগে হঠাৎ করে বাড়ির কাছের এক শপিং মল থেকে ফেরার পথে ছোট মেম উধাও হয়ে গেলেন। দিনটা ছিল
২৮ জুন। বৃহস্পতিবার। সেদিনও আকাশ মেঘলা ছিল। ইলেক্ট্রিসিটি ছিল না এই হাবুয়ার বাজারে। দুদিন বাদে সুবলের লাশ উদ্ধার করা হল, কুমুদিনি টী স্টেটের এক
বাগান থেকে। ছোট মেমের আর খোঁজ কিছুতেই পাওয়া গেল না। মাসখানেক পরে কেউ একজন সাদা মেমকে ফোন করে বলেছিল, “ রুপাইকে ধর্ষণ করে, খুব কষ্ট
দিয়ে মেরে তারপর পুঁতে ফেলা হয়েছে”। এরপর থেকে সাদা মেম রোজ সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অব্দি তার সেই টর্চ, টম আর টাইগারকে নিয়ে পাগলের মত খুঁজেছেন,
কেঁদেছেন, প্রার্থনা করেছেন। সিলেট দরগা শরীফে গিয়ে পড়ে থেকেছেন। কিন্তু কোথাও আর ছোট মেমকে দেখা যায়নি। পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি তাকে। এমনকি
পুলিশ গ্রেফতারও করতে পারেনি আসামীদের কাউকে।
আজ সারাদিন ধরেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরছে। শ্রাবণ মাস। বৃষ্টি নামলে আর থামাথামির লক্ষণ নেই। নতুন বউ নিয়ে বেড়াতে এসেছে পপলু কুমুদিনি টি স্টেটে।
ঊঠেছে কুমুদিনী টী স্টেটের ম্যানেজার সবুর ভাইয়ের বাসায়। তিনি এখনো কুমার। পপলুর বউ মুনিয়া ঢাকার মেয়ে। সিলেট কখনো আসেনি। চা বাগান দেখে সে
খুশীতে আত্মহারা। ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছে পপলু। কিন্তু মুনিয়াকে নিয়ে যে বাগানের এদিক ওদিক একটু ঘুরবে তার উপায় নেই। বৃষ্টির জন্য তার সব প্ল্যান
ভণ্ডুল হয়ে গেছে। সেই দুপুরে রসনা মিটিয়ে খেয়ে দেয়ে দুজন মিলে বারান্দায় বসে আছে। মাঝে আরও দুই একবার বাবুর্চি এসে চা নাস্তা সাপ্লাই দিয়ে গেছে। গল্পে গল্পে
কখন সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমেছে টেরই পায়নি ওরা দুজন। চমৎকার গান গায় মুনিয়া। আজ বৃষ্টিস্নাত রাতে বসে, বউয়ের হাতে হাত রেখে গান শুনেছে পপলু। আহ!
বেঁচে থাকাটাই আনন্দের। চা বাগানের মধ্যে এখন নিস্তব্ধ অন্ধকার। ইলেক্ট্রিক বাতিগুলোও কেমন ধূসর আলো দিচ্ছে। বৃষ্টিতে চারিদিক কুয়াশাচ্ছন্ন। পাশের ঝোপ
থেকে ব্যাঙ আর কি যেন সব পোকা ডেকে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দু একটা শেয়াল ডাকছে। আশে পাশে কোথাও যেন মচ মচ করে জঙ্গল ভেঙ্গে কিছু একটা আসার শব্দ
হল। মুনিয়া ভয়ে পপলুর হাত আঁকড়ে ধরল। পপলু পরম মমতায় মুনিয়ার হাতটা ধরে বলল- শেয়াল টেয়াল হবে। হুস হুস শব্দ করতেই পাশের ঝোপ থেকে নাইট গার্ড
জমশেদ মিঞা বেরিয়ে এল।
-স্যার রাইত মেলা হইছে ঘরে যান। বাইরে বসে থাকা ঠিক না। হঠাৎ ভুতের মত জমশেদ মিঞা জঙ্গলের মধ্যে থেকে বের হয়ে রীতিমত চমকে দিয়েছে দুজনকেই।
নাইট গার্ড যেভাবে এসেছিল, ঠিক সেভাবেই চলে গেল। সামনের ঝোপের দিকে তাকাতেই পপলু দেখল, ভয়ঙ্কর দুই জোড়া চোখ অন্ধকারে জ্বলছে। ওর গা’টা কেমন
ছমছম করে উঠল। ভালো করে দেখবে বলে, আরেকবার তাকাতেই, দেখল ছোট টর্চ হাতে ছাতা মাথায় এগিয়ে আসছেন সবুর ভাই। সবুর ভাইও যোগ দিলেন মুনিয়াদের
সাথে। কিছু ক্ষণের মধ্যে বাবুর্চি এসে জানান দিল, ডিনারের দেরী হয়ে যাচ্ছে। অগ্যতা ওদের উঠতে হল। খাওয়া- দাওয়া শেষে, সবুর ভাই সহ পপলু একটা সিগারেট
খাবে বলে, বারান্দায় আরেক দফা বসল। কেবল মুনিয়া ওদের থেকে মাফ চেয়ে নিয়ে শোবার ঘরে ফিরল একটু তাড়াতাড়িই। ওর নাকি শরীরটা খুব একটা ভালো লাগছে
না। ঘুম পেয়েছে। বারান্দা থেকে ফিরে এসে পপলু দেখল, মুনিয়া কেমন যেন পুরো শরীর এবং মাথা ঢেকে পাশ ফিরে ঘুমোচ্ছে। খুব অদ্ভূত ঠেকল ওর কাছে। জ্বর
এসেছে কিনা বুঝতে পারছে না। ও কাছে এসে দেখল মুনিয়া গভীর ঘুমে আছন্ন। ভারী নিঃশ্বাসের সাথে নির্দিষ্ট ছন্দে ওর বুকটা ওঠানামা করছে। ঘরের বাতি নিভিয়ে
পপলুও খুব আলগোছে মুনিয়ার পাশে এসে শুয়ে চাদরের কিছুটা অংশ ওর গায়ে টেনে নিল। তারপর আরেকটু এগিয়ে ওর গা ঘেঁষে শুলো। কে যেন ঠাণ্ডা কিছু ওর গায়ে
ছুঁড়ে ফেলল যেন। মুনিয়ার শরীর এত হিম শীতল কেন? খুব আস্তে করে মুনিয়ার মুখের ওপর থেকে চাদরটা সরালো পপলু। পপলু দেখল, সরাসরি তার চোখের দিকে
তাকিয়ে আছেন সাদা মেম। কেবল তার চক্ষু কোটরে চোখ দুটো নেই আর হা হা করে হাসছেন তিনি কিন্তু তার মুখ গহ্বর কঙ্কালের মুখের মত। লাফ দিয়ে খাট থেকে
নামতে গিয়ে দেখল সে, এক পাশে টম আর আরেকপাশে টাইগার দাঁড়িয়ে। প্রথমে সাদা মেম তার লম্বা লম্বা নখ দিয়ে পপলুর চোখ দুটোকে নষ্ট করল, তারপর টম এবং
টাইগার তাকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করল। ধ্বস্তা ধ্বস্তি আর চিৎকার শুনে সবুর তার নিজের ঘর থেকে উঠে উঠে আসতে আসতে দেখলেন, হাবুয়া বাজারের বাংলো
বাড়ির সাদা মেম তার দুটো কুকুর নিয়ে দরোজা খুলে বেরিয়ে যাচ্ছে। একবার ঘুরে তাকিয়ে ছিলেন তিনি সবুরের দিকে, কি সুন্দর দেখতে। তার পরণে ছিল লঙ স্কার্ট আর
সাদা টী শার্ট। পরদিন মুনিয়াকে পাওয়া গেল অপ্রকৃতস্থ অবস্থায়। সে বিড় বিড় করে কি যেন বলেই যাচ্ছে ক্রমাগত। সে শুধু একটা কথাই বারবার বলছে, সাদা মেম
এখন থেকে রোজ আসবেন পুরুষগুলোকে শাস্তি দিতে। এরপর পর পর চার দিন সাদা মেমকে দেখা গিয়েছিল হাবুয়ার বাজারের কয়েক বাড়িতে হানা দিতে। আর
তারপর দিন নৃশংসভাবে খুন হয়ে যাওয়া টুকরো টুকরো চারটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এখনো হাবুয়া বাজারের অনেকেই তাদের নিজেদের ঘরে চাদর মুড়ি দিয়ে
কাউকে শুতে দেখলেই ভয় পায়। তবে নিজের বিছানায় সাদা মেমকে না দেখলেও, অনেক পুরুষই রাতের অন্ধকারে সাদা মেমকে টম টাইগারকে নিয়ে ঘুরতে দেখেন
জঙ্গলে জঙ্গলে। সবার ধারণা তিনি রুপাইকে খুঁজে বেড়ান।