সিগারেট শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দিলাম। দিতে পারলাম আর কি! কঠিন ছিল। কঠিন হবে না? এত দিনের অভ্যাস। ঘুম থেকে উঠে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে… জেগে থাকা অবস্থায় একটু সুযোগ পেলেই…অফিস থেকে নানা সময় নানা অজুহাতে বেড়ানো…এ নিয়ে কম হাঙ্গামা! তা ছাড়া অর্থহানি, স্বাস্থ্যহানিও বটে। অতএব ছেড়ে দিলাম। দেওয়াই তো উচিত। কেউ নিষেধ করেনি। বন্ধুবান্ধব তো বাহবাই দিল, যদিও মনে হলো, কেউ কেউ ভালোভাবে নেয়নি বিষয়টি। না নিলই বা, আমার কী বা এল গেল! আমি পেরেছি, এটাই বড় কথা। নিজের পিঠ নিজেরই চাপড়ে দিতে ইচ্ছা করে। নিজেকে এখন মুক্ত, স্বাধীন মনে হচ্ছে। পেরেছি। কঠিন ছিল। কিন্তু পেরেছি। মুন্নীকে বলে দিয়েছি, ওর সঙ্গে মুঠোফোনে আর কথা বলব না, প্রেমট্রেম সব শেষ। মেয়েটার সবই ভালো ছিল, যখন-তখন, কারণে-অকারণে খালি খালি সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার কথা বলত…ওকেই দিলাম ছেড়ে, দিলাম ল্যাঠা চুকিয়ে। কঠিন ছিল, কিন্তু পারলাম। পারব না কেন?
নীলাকে ভালোবেসেছিলাম। তারপর ক্রমাগত অনেককে। আমার জীবনে ভালোবাসা এসেছে অক্লান্ত। একেকটি ভালোবাসা একেকভাবে। প্রতিটি ছিল আগেরটির চেয়ে উজ্জ্বল, মধুময় ও চমৎকার। জীবনকে মনে হতো ইক্ষুযষ্টি—গাঁটে গাঁটে মিষ্টতা। আমি যেন প্রজাপতি, গাঁদা থেকে রজনীগন্ধা, পরে গোলাপ। নীলার পর কুসুম, কুসুম কণ্টকাকীর্ণ হলে স্নিগ্ধ স্নিগ্ধা। মনে হয়েছিল বনলতা সেন; পাখির নীড়ের মতো চোখ। আমি কিন্তু থেমে যাইনি। স্নিগ্ধার মুখোমুখি অন্ধকার হওয়ার আগেই রূপসী রোদেলা। আহ্! জীবনটা একেবারে ঘিয়ে ভাজা খাস্তা—মুড়মুড়ে…তিল মেশানো খাজা। একটু কামড় দিয়ে মুখে নিয়ে তারিয়ে তারিয়ে স্বাদ নাও। সে স্বাদের ঘোর ঘুরপাক খেতেই থাকে। রোদেলা যেতে যেতেই বৃষ্টি হাজির। খাসির রেজালার সঙ্গে দই। হাজির বিরিয়ানির পর বোরহানি। আঙুল চেটেপুটে খাও। উফ্…
তার পরই ঘটে গেল সেই বীভৎস ঘটনাটা!
জীবনটা থমকে গেল। একই জায়গায় ঘুরছে তো ঘুরছে…
আর লিখতে পারব না। নীলা এসে গেছে।
হ্যাঁ, সেই নীলা…ওর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে গেছে।
অতঃপর, সবকিছুর বাল পাকনামো শেষ।
#সিগরেট
#Md_Ferdous_Rana