সন্দেহ

সন্দেহ
কিছু দিন আগে মোবাইল চার্জে দিতে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রীর মোবাইল চার্জে দেওয়া। ফুল চার্জ হয়ে গেছে বলে কানেকশন টা খুলে রাখতে গিয়ে দেখি “টু মিসড কল ফ্রম টু ময়না পাখি” । বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামালাম না। কি না কি দেখছি, ব্যাপার না! এমনও হতে পারে ভুলভাল দেখছি। ব্যাপারটা ভুলেই গেছি..!  সচরাচর পত্রিকা টত্রিকা খুব একটা পড়ি টড়ি না। কি মনে করে যেন সেদিন পত্রিকার পাতা উল্টাচ্ছিলাম। সেখানে একটা নিউজ ছিল এরকম- স্ত্রী ৭ বছর ধরে পরকীয়া প্রেম ধরা পড়ার পর স্বামীর আত্মহত্যা। মনটা বিষন্ন হয়ে গেল! ভাবলাম স্ত্রীকে একটা ফোন দেই!
ওমা সে দেখি ফোন ধরে না।প্রথমবার ওয়েটিং তারপর রিং হয় ধরে না!! ৫ বার দিলাম টেনশনে পড়ে গেলাম! তারপর বাসার খালা কে ফোন দিলাম!সে জানাল- একটা ছেলে বাসায় আসছিল। তার সাথে হদতন্ত হয়ে বের হয়ে গেছে।ছেলেটাকে কে চিনে কিনা জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দিল-আগে কখনো দেখেনি..! হায় আল্লাহ বলে কি !! তৎক্ষনাত আমার সেই মিসড কলের কথা মনে পড়ল, ময়না পাখি !! আমার স্ত্রী ও কি এই দলে আছে নাকি? ব্যাপক চিন্তায় পড়ে গেলাম। মনে মনে আসিফের গানটা উকিঁ দিচ্ছে- বিশ্বাস ভেঙে দিবে এমন করে ছিল না তো আমার জানা!!
যাহোক,ডিউটি শেষ করে বাসায় গেলাম। দেখি সে গোসলে। আবার গুন গুন করে গান গাচ্ছে আর গোসল করছে!
ফোনটা চার্জে দিতে গিয়ে দেখি স্ত্রীর ফোনটা ওখানেই। মেসেজবক্সে ঢুকে দেখি অ্যান্জেলের মেসেজ! কাল রাত ১১.৩০ টায়ও মেসেজ দিছে “মিস ইউ। স্ত্রীও উত্তর দিছে “মিস ইউ টু” আবার দুজনেরই লাভ ইমো!! ও আল্লাহ্ গো! মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল ! সাদা কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজ পড়ার মিউজিক হবে। গোসল শেষে বের বের হয়ে আমাকে দেখে উৎফুল্ল হয়ে বলল-ওহ্ আজ আগেই চলে এসেছ?
-হুম..। অসুবিধা হৈছে ?
-কি বল এসব! অসুবিধা হবে কেন?
-অসুবিধা তো হতেই পারে,ময়না পাখির সাথে কথা বলতে হবে না?
সে যার পরনাই অবাক হয়ে- ময়না পাখিটা কে! তার সাথে কি কথা বলব? তুমি কি পাগল হৈছ!! বলতে বলতে তার ফোন! ময়না পাখি কলিং আমি ঠান্ডা মাথায় বললাম – এই যে তোমার ময়না পাখি কল করছে কথা বলো। সে ফোনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে! নিজে নিজেই বলছে আমি তো এমন কোন নাম সেভ করিনি। বিশ্বাস করো।
-তোমারে কচুঁ বিশ্বাস করবো!আজ তার সাথে দেখাও করতে গিয়েছিলা,বাসায় কে আসছিলো? তার সাথে তাড়াহুড়ো করে বের হৈছিলা। ইভেন আমার ফোনও ধরো নাই! আমি কি কিছু বুঝি না?
-ধূর বোকা! সাত তালার ভাড়াটিয়া খালার ছেলে আসছিলো। তার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট,তোমাকেই তো দেখায়। আজ বাথরুমে পড়ে গিয়ে ব্লিডিং শুরু হয়ছিলো।তুমি নাই জন্য আমি গাড়ি ম্যানেজ করে তাদের হাসপাতালে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দিতে গিয়েছিলাম। এদিকে ময়নাপাখি কল দিয়েই যাচ্ছে। এতবার রিং হয় কেউ ফোন ধরে না কেন সেটা দেখতে আমার মেয়েটা রুমে আসলো।
ফোন দেখেই -ওহ্ জান্নাতুন ফোন দিছে,দাও দাও। আমি বললাম- ময়না পাখিটা কে ? মেয়ে হাসতে হাসতে জানাল- সে ওর ক্লাসের জান্নাতুনকে ময়না পাখি ডাকে। আর মায়ের ফোন দিয়েই মেসেজ করে। কারন আমার মেয়েটার এখনো নিজের কোন ফোন নেই। সে ফোন নিয়ে কথা বলতে বলতে চলে গেল। এদিকে আমার স্ত্রী আমার দিকে কিরাম কিরাম যেন লুক দিল। আর আমি মাননীয় স্পিকার হয়ে গেলাম।
গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত